somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিজের জন্য একটি লিখা আর সবার কাছে একটি জিজ্ঞাসা,"এই ব্লগে কি নোংরা গালি খেতে আসি?"

২৩ শে জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সামহোয়্যার ইন ব্লগে আগমন ২ বছর এক সপ্তাহ আগে।আমার ইউনির এক ছোট ভাই শ্রদ্ধেয় ব্লগার আরিফ জেবাতিক সাহেবের ভেলরী মাতার পোস্টের লিঙ্ক মেইল করে দিয়েছিলো।ওই যে এসেছিলাম প্রথমবার,এর পর বহু দিন কেটে গিয়েছিলো আসা হয়নি।মাঝখানে উইকিপিডিয়ায় নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টিকেল নিয়ে লিখালিখি করতে গিয়ে পরিচয় হয় শ্রদ্ধেয় রাগিব স্যারের সাথে।তারপর ওখান থেকেই মনে হয় আবার আসি এখানে এবং রাগিব স্যারকে দেখে স্থায়ী হয়ে যাই।শুরু হয় আমার সক্রিয় ব্লগচর্চা।এই ব্লগে অনেক চমৎকার মানুষজন লিখতে আসেন আর আমিও তাদের লিখা পড়ার জন্য দিনের অধিকাংশ অবসর সময় এই ব্লগেই ব্যয় করি।লিখার হাত ভালো না তাই খুব একটা লেখা হয়নি,কিন্তু আমি মনে করি আমি একজন ভালো পাঠক।তাই যতটা না লিখতে,তার থেকে পড়তে বেশি ভালোবাসি।

আজকে হঠাৎ করে খেয়াল হলো,বেশ অনেকদিন হয়ে গেলো আমি এই ব্লগে আছি।ব্লগ পরিবেশ আমার কাছে বেশ সুস্থই মনে হতো আজকের আগে।এখানে বেশিরভাগ ব্লগলেখককে আলোচনা-সমালোচনা করতে দেখেছি,যুক্তিময় বক্তব্যের সাবলীলতা সবসময় আমাকে মুগ্ধ করেছে।আমি কৃতজ্ঞ অনেক ব্লগারের প্রতি যাদের থেকে অনেক কিছু জানতে পেরেছি,শিখতে পেরেছি।আমার প্রাক্তন স্কুলের জুনিয়র সিনিয়র অনেককেই পেয়েছি,এবং বিশ্বাস করতে পারেন মনে হয়েছে এটা যতটা না একটি ভার্চুয়াল জগৎ তার থেকে বেশি একটি ব্লগ পরিবার।

খারাপ অভিজ্ঞতা কি হয়েছে?অবশ্যই হয়েছে।আমার একটি লিখা ছিলো বিডিআর বিদ্রোহের ব্যাপারে যেখানে একজন ব্লগারের থেকে মন্তব্য পেয়েছি ,এই লোকরে(আমি) ঝগড়া সভা, চুলোচুলি- লাঠালাঠিতে বেশী মানায়”।আমি হতভম্ব হয়েছিলাম,কিন্তু পাল্টা জবাব দেয়নি।কেন?কারন আমি এটা মানি যে এটা একটি ভার্চুয়াল পরিবেশ হলেও শ্রদ্ধা,সম্মান এই শব্দগুলো এখানে অমূলক হয়ে যায়নি।যিনি আমাকে এমন উপাধি দিয়েছিলেন তার লিখা আমি বেশ কিছু পড়েছি এবং নিঃসন্দেহে উনি যথেষ্ট জানেন এবং বোঝেন।উনি আমার বয়োজ্যেষ্ঠও বটে।তাই একজন অনুজ হিসেবে তার এহেন মন্তব্যের প্রতিবাদে কিছু বলিনি।কিন্তু প্রায় সময় ভেবেছি,যিনি আমাকে চেনেননা,জানেননা উনি আমার লিখায় বা মানুষকে দেয়া মন্তব্যে এমন কি পেলেন যে কারণে গুন্ডা বলে উপাধি দিলেন?

আরেকটি অভিজ্ঞতা বলি।অন্য ইউনির এক সিনিয়র ভাই(এখানে ব্লগিং করেন) আমার ইউনির এক আপুর সাথে কোন এক জায়গায় কর্মরত ছিলেন।ওই আপুকে উনি মেইলে একটি কবিতা পাঠিয়েছিলেন যা তার পছন্দ হয়নি এবং তাই পরবর্তীতে এটা নিয়ে বাক-বিতন্ডা হলো।ওই আপুর আচরণটা নিঃসন্দেহে শোভন মূলক ছিলোনা,কিন্তু এই একজনের জন্য আমার ইউনি হয়ে গিয়েছিলো একটি খারাপ ইউনি এবং এটি নিয়ে উনি সরাসরি একটি ব্লগও লিখেছিলেন।কারণ আমার ইউনির এক মেয়ে পুর্ণেন্দু পত্রী নামে কোন কবিকে চেনেন না।পোস্টটি এবং মন্তব্যগুলো দেখে আমি যথেস্ট অবাক হয়েছিলাম এবং ভেবেছিলাম,তার মানে কি এই একটি প্রকৌশল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী একজন কবিকে জানেননা তাই বোঝা যায় ইউনির পরিবেশ ছোট এবং ওখানে যারা পড়াশোনা করে তারা সব ক্ষুদ্র মানসিকতার অধিকারী?জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা হয়েছিলো উনাকে,উনি যেখানে পড়েন ওইখানে আমার যেসব বন্ধু বান্ধব আছে তাদের কাছে আমি এই কবির নাম জিজ্ঞেস করে যখন জানতে পারলাম এরা কবির নাম আজই প্রথম আমার কাছে শুনলো তখন উনার ইউনি কি একই মানদন্ডে দাঁড়িয়ে গেলো না?এই ব্লগে পাবলিক প্রাইভেট সব ইউনির মানুষ আছে।নিজের ইউনি যতটাই খারাপ হোক এহেন মন্তব্য গ্রহণ করার মানসিকতা কি কারো আছে?ওই সিনিয়র ভাইয়ের যেমন নেই,আমারো নেই।কিন্তু আমি উনাকে অবশ্যই কিছু জবাবে বলিনি।কেন?তা বলতে চাইনা।

আজকে এই ব্লগটি যে কারণে লিখা সেটি এখন বলি।কিছুদিন আগে টুয়েন্টি টুয়েন্টি বিশ্বচাম্পিয়নশীপে যখন বাংলাদেশ হেরে যায় তখন মেজাজ খারাপ হয়ে লিখেছিলাম,যে দলে আশরাফুল রুবেলের মত প্লেয়ার খেলে তাদের কাছে আমরা এত জয়ের আশা করে কষ্ট পাবো কেন।ব্লগ বলতে আমি যা বুঝি,এখানে মানুষজন নিজের কথা,তার দৃষ্টি ভঙ্গির কথা লিখবে।আমিও লিখেছি আমার যা মনে হয়েছে।তাই দুদিন আগে যখন ২ সপ্তাহ ৪ দিন বয়সী “মাদকতা” নামের একজন ব্লগার বললেন এমন লেখা ছাগলা মার্কা পোলাপান লেখে,তখন বুঝতে পারছিলাম না ব্লগ শব্দের অর্থ পালটে গেলো নাকি!এমন অপ্রীতিকর শব্দের ব্যবহার কি কোন অর্থে সমালোচনার মধ্যে পড়ে?উল্লেখ্য এই ব্লগারকে আমি চিনিনা,জানিওনা।আর আমি নিজের লিখা নিজে লিখবো,উনার ইচ্ছা হলে লিখা নিয়ে কথা বলতে পারেন,সমালোচনা করতে পারেন।কিন্তু এহেন শব্দের ব্যবহার আশা করিনা।উনাকে তাই প্রতিউত্তরে উনার ব্লগে বলেছিলাম, "“ভাই সাংবাদিক মানুষের তো ভাষায় কিছু শালীনতা থাকে জানতাম।অবশ্য পরিবার থেকে ভদ্রতা না শিখে আসলে যেই পেশাতেই থাকুন মুখ দিয়ে(পড়ুন লিখার হাতে) শুধু ময়লাই আসবে।আপনাকে আমি চিনিনা জানিনা,আচমকা এসে অশালীন মন্তব্য করলেন।আপনার টাকায় তো ব্লগিং করিনা,নিজের পয়সায় করি।আমার লিখার স্বাধীনতা আছে,আমি লিখবো।মন্তব্যে শিষ্টাচার বজায় রাখতে না জানলে আপনাকে অনুরোধ করছি অন্তত আমার ব্লগে এসে হাবিজাবি মন্তব্য(পড়ুন ময়লা) না করার জন্য”"।
আমি আশা করেছিলাম তার সাথে এই মন্তব্যের পর আর কোন কথা হবেনা।কিন্তু কি সেলুকাস ব্যাপার উনি আজকে দেখলাম আমার আরেকটি ব্লগে এসে মন্তব্য করলেন, “"ফুটপাতের পোলার কাছে ভালো কিছু আশা করা যায়........
খা_কির পোলা
আমার ব্লগে ফাউল কথা লিখছস ক্যান
_গীর পোলা...... ”"
Click This Link
এই ব্লগে লিখালিখি করি খুব বেশিদিন না।ব্লগের মাঝে বর্তমান জীবনের অনেকটা অংশ ব্যয় করে যাচ্ছি।আগেই বলেছি চমৎকার কিছু মানুষের চমৎকার লিখাগুলো মুগ্ধ হয়ে পড়তে এখানে আসা হয়।তাই এমন অশ্লীল নোংরা মন্তব্য দেখে আজকে ভাবতে বসে গেলাম, “এই ব্লগে কি এইসব গালাগালি শুনতে আসি?”।ধর্ম থেকে শুরু করে অনেক বিতর্কিত বিষয় নিয়ে এই ব্লগে লিখালিখি দেখেছি,প্রায় লিখাই পড়া হয়েছে এবং বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি ব্যক্তিগত রেষারেষি,বাজে গালাগালি এইগুলো কখনো করেনি।নিজের সাফাই গাইছিনা,বলতে চাই আমি ব্লগ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।যে যতটাই বিতর্কিত লিখা লিখুক,আমার সামর্থ থাকলে আমি আলোচনা সমালোচনা করবো,তাকে খোচা দিয়ে কটুক্তি করে আঘাত করার মানসিকতা নাই।আশা করি কখনো হবেওনা।তারপরেও এমন মন্তব্য কেন পাবো এই ব্লগ থেকে আমি বুঝতে পারছিনা।ব্লগের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী,গালাগালি করতে পারবোনা তাই যে যেমন এসে আমার লিখায় পরিবার তুলে গালি দেবে এটাই কি এই ব্লগে থাকার শর্ত?

লিখাটা নিজের জন্য লিখেছি।যদিও আমি এখানে সক্রিয় ৮-৯ মাসের বেশি নয় কিন্তু ১ সপ্তাহ আগে দুই বছর পুর্তি করেছি এখানে আগমনের।বর্ষপুর্তিতে অনেককে দেখেছি নিজেকে নিয়ে লিখে।আমিও লিখলাম,নিজের ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনা,একান্তই কিছু মনের কথা।অনেকের খারাপ লাগলে তাই প্রতি লিখার শেষে যেমন দুঃখিত বলে নেই,আজকেও বললাম।আমি মানুষ এবং মানুষ মাত্রই ভুল।তাই আমার লিখার কোথাও কোন অনুভূতি বা একান্ত কথার প্রকাশে ভুল হলে কিংবা কারো আঘাত লাগলে আমি দুঃখিত।এই ব্লগে আমি জানিনা এহেন আচরণের পর কতটুকু স্বস্তিবোধের সাথে লিখতে পারবো কিন্তু আমি আসবো।আপনাদের মত কিছু চমৎকার মানুষের লিখা পড়তে।অনেক কিছুই জানার বাকী আছে।আসবো আমার প্রাক্তন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বড় ভাই,ছোট ভাই সবার কুশলাদি জানতে।লিখায় কিছু আবেগ এসে পড়লে আমি আবারও ক্ষমাপ্রার্থী।
৫১টি মন্তব্য ৪৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×