somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তোমার ভালবাসা

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিছানায় এপাশ ওপাশ করেই রাতটা কেটে গেলো। কখনই এমন হয়নি সুমির, আজ ই প্রথম।
গতকাল মাহবুব এর সাথে ভিশন ঝামেলা হয়েছে সুমির। মানসিক ভাবে সুমি ভেঙ্গে পড়েছে। কি হলো গতকাল,'মাহবুব আমার গায়ে হাত তুলল' সুমি বার বার বিড়বিড় করে একই কথা বলছে।
পাবলিক লাইব্রেরিতে এত গুলো লোকের সামনে, মাহবুব সুমিকে চড় মেরেছে। কি এমন করেছিলো সুমি! ভার্সিটিতে জুনিওর কয়েকটা মেয়ে মাহবুব এর সাথে মজা করেছে। সুমির মনে হয়েছে মাহবুব তাদের প্রশ্রয় দিয়েছে। মাহবুবকে এ কথাটা বলতেই ক্ষেপে গিয়ে এত গুলো লোকের সামনে....উহ।আর মনে করতে ভাল লাগছে না ।এসব বেপারে তো মাহবুবের সাথে সুমি প্রায়ই মজা করে। কই, কখনই তো এভাবে সে রি-অ্যাক্ট করেনা। কিন্তু কাল কেন মাহবুব এমন করলো? প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায় না সুমি। মোবাইলটা বন্ধ করে রেখেছে কাল থেকে। যদিও ঝগড়ার বিষয়টা নতুন কিন্তু এমন ঝগড়া তো প্রায়ই হয় ওদের। আর মোবাইলও সাথে সাথে বন্ধ থাকে।
ঘড়িতে এলার্ম বাজতে শুরু করেছে। ৭:৩০ বাজে। মানে বিছানা ছাড়তে হবে। তৈরি হয়ে অফিসে যেতে হবে। জীবনটা খুব ব্যাস্ত হয়ে উঠেছে সুমির। প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর হতে চলেছে চাকরির বয়স।অফিস, পড়াশুনা, ভার্সিটি সব মিলিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে সুমি। বাবা মাও মাহবুবের বেপারটা জানতে পেরে ঝামেলা শুরু করেছে। চলা ফেরায় দিয়ে দেয়া হয়েছে সীমানা। তার মাঝে মাহবুব এর এই ব্যাবহারে জীবনটা যেন বিষিয়ে উঠেছে সুমির।
প্রস্তুতি শেষ। এবার বাসা থেকে বের হবার পালা।
অফিসের কাছাকাছি চলে এসেছে সুমি। হঠাৎ মনে হল কে যেন পেছন থেকে ডাকছে। পেছন ফিরে তাকিয়ে খুজলো। নাঃ কাউকে দেখা গেল ন। আবার এক পা সামনে এগুতেই পেছন থেকে কে যেন দৌড়ে এল। কি ব্যাপার,কথা শোনা যাচ্ছে না? সুমি অবাক হয়ে দেখলো, মাহবুব।
সুমি : তুমি এখানে কেন?
মাহবুব: ফোন বন্ধ কেন?
সুমি: কি চাও?
মাহবুব: তুমি কি আমাকে মেরে ফেলবা?
সুমি : কেন, কি করেছি?
মাহবুব: জানোনা কি করেছ? কাল থেকে মোবাইল বন্ধ। তুমি জান না আমি তোমার সাথে কথা না বলে থাকতে পারি না।
সুমি: ঢং করবা না। এখান থেকে দূর হও।
মাহবুব: ও তুমি নিশ্চই অন্য ছেলের প্রেমে পড়ছ, এই জন্যই আমাকে অ্যাভোয়েড করছ।
সুমি : ফালতু কথা না বলে এখান থেকে যাও।
মাহবুব: যাব না।
আজ আমি তোমার অফিসে যাব। সবাইকে তোমার প্রেমের কথা বলে দেব। তোমার বাসায় যাব। আমার হাত থেকে তোমার মুক্তি নেই। তোমার বাবা,মা সবাইকে বলব, এত দিন আমার সাথে প্রেম করে এখন আমার সাথে বেঈমানী।
সুমি : যা ইচ্ছা কর।
ঝগড়া হলেই মাহবুব এভাবে সুমিকে থ্রেট করে।এটা সুমির মুখাস্ত।
তবে মাঝে মাঝে বাংলা ছবির ডায়ালগ গুলো মাহবুবের মুখ থাকে শুনতে সুমির ভালোই লাগে। এই যেমন মাহবুব রেগে গেলে প্রায়ই বলে অন্য কোন ছেলের কাছে চলে যাবা,এক দম খুন করে ফেলবো অথবা আমি তোমাকে না পেলে আর কেউ পাবে না। এসব শুনলে সুমি মাঝে মাঝে ঝগড়ার মাঝেও হেসে দেয়। তখন মাহবুব আরও ক্ষেপে যায়, আর আরও ডায়ালগবাজি করতে থাকে।
মাহবুব: দ্যাখ, ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।
সুমি আজও মুচকি হাসছে। যদিও এ হাসিটাতে কেমন যেন কষ্ট আর রাগ লুকানো।
সুমিরও অনেক রাগ। ভিষণ ক্ষেপাটে টাইপ মেয়।
মাহবুবের নিজের দোষটা কখনোও স্বীকার করতে চায় না। আবার রাগ করে বসেও থাকে না।
প্রানান্তর চেষ্টা সুমির রাগ ভান্ঙানোর। সুমিও একটা সময় আর রাগ ধরে রাখতে পারে না।কিন্তু আজ কোন ভাবেই সুমির রাগটা ভাঙ্গছে না।
মাহবুব বলেই যাচ্ছে,তুমি কেন আমার চরিত্র নিয়ে কথা বললা।জাননা স্বামীর চরিত্র নিয়ে বাজে কথা বলতে নেই।
সুমি: আবার ফাজলামি করছো? তুমি আমার কোন জনমের স্বামী? তোমার মত একটা ছেলের সাথে প্রেম করে আমি ভুল করছি। আর না। তুমি যাও এখান থেকে।
মাহবুব: ওওওওওও তার মানে সত্যিই তুমি নতুন কারও সাথে প্রেম করছো।
আচ্ছা যাও মাফ করে দিলাম। এখন ফোনটা খোল।আর কখনোও আমার চরিত্র নিয়ে কথা বোলবা না। আমার মাথা ঠিক থাকে না।তুমি কখনোও দেখেছ কোন মেয়ের দিকে বাজে দৃষ্টিতে তাকাতে।এমন ভাবে ও কথা বলছে ওর যেন কোন দোষই নেই কিছুটা থাকলেও সেটা পুরোটাই সুমির।

এ চরিত্রটাও সুমির একেবারেই পরিচিত। ঝগড়া লাগলে সব সময়ই মাহবুব এমন করে।

ততক্ষনে সুমির চোখের কোনে এক বিন্দু জল জমা হয়েছে।সেটা আবার মাহবুবের চোখে পড়ে গেল।
আরে আরে পড়ে গেল তো, আরে গেল গেল, প্লিজ ধর।
সুমি চমকে উঠে বলল কি পড়ে গেল
ঐ যে চোখের পানিটা, বলেই মাহবুব হেসে দিল।
সুমি মনে মনে ভাবছে চড় মারার ঘটনাটা আমার জীবনে অনেক বড় একটা কষ্ট আর অপমান হয়েই হয়ত সারা জীবন পোড়াত। শুধু আমার কাছে না যে কেউ শুনলেই হয়ত বলবে কেন তোমার সাথে এখনও সম্পর্কটা রেখেছি। কিন্তু তোমার ঐ বাংলা ছবির ডায়ালগ গুলোর কাছে এই কষ্টটা এক দমই পাত্তা পায় না, এটা হয়ত বাইরে থেকে কেউই বুঝতে পারবেনা।
কারন তোমার বাংলা ছবির ডায়ালগ গুলো শুনলে মনে হয় না তুমি মিথ্যে বলছ বরং মনে হয় এ পৃথীবিতে আমাকে অনেক অনেক ভালবাসার মত একজন মানুষ আছে।

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৯
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×