somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদিকাল ও বর্তমানে নারীর অবস্থা

১৬ ই জুলাই, ২০০৯ সকাল ৭:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ বিশ্বায়নের যুগে সভ্য মানব সমাজ মহিমাময়ী নারীকে পণ্যের মত ব্যবহার করছে। বিশ্বনবী [সা:] এর আগমনের পূর্বে এ পৃথিবীতে একটি বন্য পশুর যতটুকু আদর-যত্ন, সমাদর ও গুরুত্ব ছিল, মানুষ সমাজে নারী জাতির সে সম্মান, মান-যশ-সম্ভ্রম ও মর্যাদা ততটুকু ছিল না। নারীকে মানুষ হিসেবে গন্যই করা হতো না। আদিকালে পৃথিবীতে কোন দেশেই নারীকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়া হয়নি ও কৌমার্য রক্ষা করা সম্ভব হয় নি। নারীর সাথে সদা সর্বত্র যথেচ্ছা অনাচার-অবিচার, অত্যাচার-নির্যাতন ও নিপীড়ন করা হয়েছে। নারীর সাথে সীমাহীন বাড়াবাড়ি এবং চরম নিচুতা-হীনতার মধ্যদিয়ে নির্যাতনের বিস্ময়কর ও হতবাক হবার মতো ছবি প্রদর্শন করা হয়েছে এবং আজও অনেক ক্ষেত্রে হচ্ছে । নারী একদিকে মাতা হয়ে সন্তান-সন্তুতি প্রতিপালন করেছে, করছে ও করবে। অপরদিকে পুরুষের অর্ধাংগিনী হিসেবে তার জীবনের উত্থান-পতনে তাকে সহযোগিতা করছে । এছাড়াও তাকে শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি দিচ্ছে, ঘর-দোর গোছ গাছ করে সুশোভিত রাখছে ।

অথচ এইতো সেদিন এক ধর্ষণকারীর অপশক্তির বিরুদ্ধে জনতার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে মাগুরায় এক স্কুলে । বেশ কয়েক দিন আগে (গত সপ্তাহে) জনকন্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত নিজস্ব সংবাদদাতার একটি খবরে দৃষ্টি দিতেই গা শিউরে ওঠে । এ খবরে জানা যায় স্কুল ছাত্রী বৃষ্টির দরুণ এক বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানে সে পৈসাচিক ও অমানবিকভাবে এক লম্পট দ্বারা ধর্ষিত হয় । এ ঘটনায় ধর্ষণকারীর বিচারের দাবিতে সেখানে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয় । এ কর্মসুচী পালন করেছে নবীন ছেলে-মেয়ে যারা এক হাইস্কুলের ছাত্র-ছাত্রী । খবরটি থেকে আরও জানা গেল একই সময় এলাকাবাসী এক বিক্ষোভ মিছিল বের করেছে ধর্ষণকারীর শাস্তির দাবিতে । সেখানকার ছাত্র-ছাত্রী এবং এলাকাবাসীর এ কর্মসূচীটি সত্যিকার অর্থে প্রশংসার যোগ্য । ধর্ষণ একটি জঘন্য-ঘৃন্য অপরাধ ও গর্হিতকর অপরাধ । এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে আইন আছে । কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ধর্ষিতা অসহায় তাই ধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে না । (জনকন্ঠ ১৩-০৭-০৯ ) প্রকাশিত এক খবর থেকে জানা যায়, গত এক বছরে ২০০৮ সালে দেশে ধর্ষিত হয়েছে ৪৫০ জন নারী । এই হলো বর্তমান সভ্য জগৎ ।

পুরুষই সমাজে নারীকে সেবিকা এবং দাসী হিসেবে ক্রয়-বিক্রয় করেছে । মালিকানা ও উত্তরাধিকার হতে নারীকে বঞ্চিত করেছে ও করছে । নারীকে পাপ পংকিলতা ও লাঞ্ছনার প্রতির্মূতি করে রাখা হয়েছে ও হচ্ছে । তার ব্যক্তিত্বের পরিস্ফুটন বা ক্রমবিকাশের সুযোগই তাকে দেয়া হচ্ছেনা । নারীর ছিলনা কোন সামাজিক মর্যাদা । ছিল না সহায়-সম্পত্তিতে কোন অধিকার ।

অন্যান্য ধর্ম মতে নারীর অবস্থান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় - ইহুদী ধর্মে নারীর মর্যাদা সম্পর্কে বলা হয়েছে - নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে ভোগ-উপভোগের জন্য । নারীকে উল্লেখযোগ্য মর্যাদায় ভূষিত করা হয়নি । নারীকে যে কোন সময় যে কোন কারণে বা কোন কারণ ব্যতীতই তালাক দেয়া হয়ে থাকে ।

এবার পার্সিক ধর্মে নারীর মর্যাদার দিকটি খেয়াল করে দেখা যাক যে এ ধর্মে কি উপায়ে নারীকে মর্যাদা দেয়া হয়েছে । উক্ত ধর্মেও নারীর মর্যাদা তেমনও একটা রাখা হয়নি ।

নারীর মাসিক হলে এ ধর্মে নারীকে ঘৃনা করা হয়েছে । বলা হয়েছে, কোন ঋতুবতী নারী যেন অন্য কোন পুষ্পিতা নারীর সাথে একত্রে শয়ন না করে । ঋতুকাল নারীর একটি পাপ কাল । হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম-এর আগমনের পঁচিশ বছর আগের যুগটি ছিল যরথুষ্ট্রের যুগ । এ ধর্মে যৌনাচার লাগামহীন রুপে হতো । ফলে যারা নিজেদের যৌবনকে উপভোগ করতে চাইতো তারা তা করতো ।

নারীর যাবতীয় আশা-আকাংখা, ইচ্ছা, স্বাদ-সাচ্ছন্দ্য স্বাধীন নয়, এসবই পুরুষের অধিনে । নারীর ওপরে প্রভুত্ব পুরুষের । যাবতীয় দুঃখ-দুর্দশার জন্য দায়ীই হলো নারী । নারী রূপে জন্মগ্রহণ করাই যেন এক লজ্জার ব্যাপার । নারী পৃথিবীর জন্য অশুভ । নারী জন্মগত ভাবে দুষ্ট প্ররোচনা ।

অথচ সন্দেহহীন আলকুরআন সমগ্র দেশে কন্যা হত্যা, কন্যা বিক্রি ও যৌতুক প্রথা সম্পূর্ণ রুপে তুলে দিয়ে নারীকে এক মহিমাময়ী আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন । ইসলামের সর্বশেষ সংস্কারক হযরত মোহাম্মদ (সা:) তাঁর সদা সতর্ক নির্দেশ ও নীতির দ্বারা নারীদের সামাজিক সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার এক দুর্লব আর্দশ প্রতিষ্ঠা করেছেন । ইসলাম নারীকে পরিপূর্ণ অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও সম্পত্তিতে অধিকার প্রদান করেছে । তবে পরিবারের অর্থনৈতিক দায়-দায়িত্ব পালনের ভার অর্পণ করেছে পূরুষের উপর । স্বামী-স্ত্রীর স্বাধীন অধিকারের এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ইসলাম । আল্লাহ্ পাক বলেন- ‘তোমাদের যুগলে যুগলে অর্থাৎ জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি’। মহান আল্লাহ পাকের ঘোষনা- ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রে ছোট-বড়, ধনী-গরীব, সবল-দুর্বল, আযাদ-গোলাম এবং নারী-পুরূষ সবাই সমান । সূত্র: সূরা: আ'বাসা-৩০ পারা

বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম, এ পৃথিবীতে আগমনের পূর্বে গোটা পৃথিবী ব্যাপী ছিল নারী জাতির করুণ অবস্থা । নারীকে মানব সমাজের মধ্যেই গন্য করা হতো না । ঘৃণা ও লাঞ্ছনার অতল গহবর থেকে নারীকে টেনে তুলে এনে পুরুষের তুলনায় অনেক বেশী মর্যাদা দিয়ে সম্মানের আসনে আসীন করে দিয়েছেন নারী মুক্তির অগ্রদূত বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ।

এর পরও দেখা যায় যে, সমাজে কোন পরিবারে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলে সে পরিবারের সবার চেহারা অনেকটা বিবর্ণ হয়ে যায় । আরবেও আয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে কন্যা সন্তান অমর্যাদার প্রতীক ভেবে তাকে জীবন্ত কবর দেয়া হতো । একজন পুরুষ তার ইচ্ছে অনুসারে যতগুলো খুশী বিয়ে করতো । কিন্তু একটা নারীকে বিয়ের পর স্বামী ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ির যে কোন ধরণের অত্যাচার-অবিচার-অনাচার মুখ বন্ধ করে সহ্য করতে হয় । স্বামী তালাক দিলে বা স্বামী মারা গেলে তার আর দ্বিতীয় বিয়ে করার কোন বিধান ছিল না ।

কোথাও নারীকে স্বামীর মৃত্যুর সাথে সাথে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হতো যা সতিদাহ প্রথা রুপে পরিচিত ছিল । কোথাও নারীর যৌবনকে ব্যবসার পূঁজি বানিয়ে তার যৌবন বিক্রি করে অর্থ উর্পাজন করা হতো বা এখনও যে হয়না তা না । নারীকে নগ্ন দৃষ্টি দিয়ে দেখা হতো এবং হয়ও ।

পরিতাপের বিষয় হলো ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধ্যান-ধারণা ও চিন্তা-চেতনার অভাবের দরুনই এমনটি হতো । নারীর মর্যাদা সম্পর্কে ইসলাম ধর্ম কি বলে সেদিকে আরো গভীরভাবে আলোকপাত করা যাক । নারীর অধিকার সম্পর্কে আলকুরআনের ঘোষণা- পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনিভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর । নারীর মর্যাদা সম্পর্কে মহাগ্রন্থ আলকুরআনে কারীমের ঘোষণা- যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে । নারী স্বাধীনতা নিয়ে কুরআনেকারীমের বক্তব্য কি ? আল্লাহ্ পাক নারী ও পুরুষ উভয়কেই ব্যক্তি স্বাধীনতা দিয়েছেন । তাই পবিত্র কুরআনের দীপ্ত ঘোষণা - আর তোমরা আকাঙ্খা করোনা এমন সব বিষয়ে । নিজেদের পবিত্র রাখার এক সুন্দর ব্যবস্থা হলো পর্দা । এ ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা বলেন, হে বনি আদম, আমি তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবতীর্ণ করেছি সাজ ও সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেজগারীর পোশাক যা সর্বোত্তম । এটি আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নিদর্শন যেন তারা চিন্তা ভাবনা করে । আল্লাহ্ পাক আরও বলেন, হে নবী ! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে নেয় ।

আজ বিশ্বের সভ্য সমাজের কাছে আমার সবিনয়ে জিজ্ঞাসা এই যে, পর্দা নারীকে মর্যাদা দিয়েছে নাকি মর্যাদাহানি করেছে ? বরং পর্দা, নারীকে পূর্ণ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে । তাছাড়া বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে গোটা বিশ্বের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে যে সকল নারী পর্দা মেনে চলে তারা পথে-ঘাটে, গ্রামে-নগরে ও শহরে এমন কি বিভিন্ন কর্ম স্থানেও অশেষ সম্মানই পেয়ে থাকে । নারীদের অধিকার আদায়ে, মর্যাদা রক্ষার্থে এবং তাদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সংস্থা ও অনেক দেশে সরকার দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন ।

ইসলাম নারীর সব দাসত্ব-শৃংখল মুক্ত করে নারীকে স্ত্রী হিসেবে দিয়েছে সমঅধিকার আর মা হিসেবে দিয়েছে অশেষ মর্যাদা । আসুন, আমরা একবিংশ শতাব্দীর সভ্যতার নাম ধারী নারী মর্যাদা, অধিকার ও স্বাধীনতার নামে যে অসভ্য আন্দোলন চলছে তা পরিহার করে প্রকৃত অর্থে নারীর মর্যাদা ও অধিকারের জন্য আলকুরআনের পথ নির্দেশনার দিকে ফিরে যাই । সাথে সাথে নারী বা নারী পক্ষের অহেতুক বাড়া বাড়ির কারণে যেন পুরুষ নির্যাতন না হয় সে বিষয়টিও সচেতন ভাবে সবাই খেয়াল রাখি । মায়ের জাতের জন্য যেন কোন ভাবেই আমরা কেহ কখনই মন কষ্টের কারণ না হই সেদিকে বিশেষ ভাবে নজর দেই ।

হত-দরিদ্র নারীদের উন্নয়নের পথ - বাংলাদেশে জনসংখ্যার প্রায়ই ৪৯% নারী । হতদরিদ্র্য ও দরিদ্র্য নারীকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন প্রচেষ্টা নেয়া বা গ্রহণ করা সমুচিত নয় । একারণে জীবনযাত্রা তথা স্বাস্থ্য সহ সার্বিকভাবে জীবন মানোন্নয়নে কর্মপরিকল্পনায় নারীর অংশগ্রহণ অপরিহার্য বলে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি লাভ করেছে । উচ্চ মজুরীর কর্মসংস্থানে পুরুষদের এবং অতি কম মজুরীর কাজে নারীদের সুযোগ দেয়া হয় । নারীর ও পুরুষের আয়ের তুলনামূলক চিত্র এই যে নারীর আয় অনেক গুন কম । সমান কাজে সমান মজুরী লাভের সুযোগ দেয়া, প্রয়োজনে আর্থিক ঋণের সুবিধা প্রদাণ করা, সম্পদের মালিকানা দেয়া ও উত্তরাধিকার অর্জণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারীর জন্য রীতি-নীতি ও অধিকার বাস্তবে দেখা যায় না, কিংবা দেখা গেলেও প্রচলিত রীতি-নীতি ও সামাজিক গোঁড়ামী-স্থবিরতার কারনে তা কোণঠাসা হয়ে পড়ে আছে । এছাড়াও আনুষ্ঠানিক টেকনিক্যালধর্মী শিক্ষা লাভ করতে না পারায় অধিকাংশ নারীই আয় উপার্জনের সক্ষমতা থেকে বঞ্চিত । দু’দশক আগেও শিল্পোন্নত দেশে মোট কর্মক্ষম নারীর অর্ধেকেরও বেশী সংখ্যক অর্থনৈতিক কাজে সম্পৃক্ত ছিল ।

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কাজে নারীর সম্পৃক্ততা মূলক তথ্যে দেখা যায়- এশিয়ায় কর্মজীবি নারীর হার বর্তমানে ৪৯% থেকে বেড়ে ৫৪% তে দাঁড়িয়েছে । যে সব অঞ্চলে নারীর অর্থনৈতিক কাজে অংশগ্রহণের হার তুলনামূলক ভাবে কম ছিল সে সব দেশেও এ হার বৃদ্ধি পেয়েছে । এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে নারীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ অনেকটা সামাজিক ও ধর্মীয় অজ্ঞতার কারণে নিরুৎসাহিত হলেও ধীরে ধীরে এ ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে । বেশ কিছুদিন আগে মধ্যপ্রাচ্যের এক মহিলা বিমান পরিচালনায় পাইলট হিসেবে দক্ষতা অর্জণ করেছেন ।

হারিয়ে যাওয়া দরিদ্র্য শ্রেণীর নারীদের মর্যাদা বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য দিক দারিদ্র্য বিমোচনের অন্যতম লক্ষ্য হলো জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করা এবং পুষ্টিহীনতা দূর করে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আয়ুস্কাল বৃদ্ধি করা । সর্বোপরি হতদরিদ্র্য ও দরিদ্র্য শ্রেণীর মহিলাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে নিম্মোল্লেখ বহুমুখী আয়বর্ধনমূলক কাজ হাতে নেয়া যেতে পারে ।

- নারীর জন্য উদ্যান উন্নয়ন কর্মসূচী হাতে নেয়া
- মৎস্য চাষ কর্মসূচীতে প্রশিক্ষণ ও কর্মসূচী গ্রহণ করা
- গ্রামে ও শহরতলীতে দর্জি প্রশিক্ষণ ও সহজ কিস্তিতে সেলাই ম্যাশিন ক্রয়ের ব্যবস্থা করে দেয়া
- কম্পিউটার, ফ্যাক্স, ফটোকপিয়ার, স্ক্যানার ও ই-মেইল ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও কর্মসূচী গ্রহণের জন্য সহায়তা করা
- ফার্ম ম্যাকানিক্স রূপে প্রশিক্ষণ দেয়া ও কাজের যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে সহায়তা করা
- ইলেকট্রিক ট্রেডে প্রশিক্ষণ ও কাজের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অর্থলগ্নি দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া
- ওভেন পরিচালনায় প্রশিক্ষণ ও কাজের সুযোগ করে দিতে সহায়তা করা এবং মোবাইল ফোন মেরামত পেশায় প্রশিক্ষণ ও যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জমাদি দিয়ে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা
- তাঁত শিল্পে প্রশিক্ষণ ও কর্মসূচী চালু করতে আর্থিক সহায়তা দেয়া এবং পল্লী চিকিৎসক ও বিপিআর (ব্যাকইয়ার্ড পল্ট্রি রেইজার) পেশায় প্রশিক্ষণ দেয়া
- কমিউনিটি-বেইজড স্কুল প্রতিষ্ঠা করা ও শিক্ষা স¤প্রসারন করা ও টিবিএ পেশায় প্রশিক্ষণ দেয়া; (ট্রেডিশনাল বার্থ অ্যাটেন্ডেন্ট)
- হাঁস-মুরগী ও পশু প্রতিপালন পেশায় প্রশিক্ষণ দিয়ে হাঁস-মুরগী ও পশু পালনার্থে যোগ্য কর্মী তৈরীতে সুযোগ সৃষ্টি করা এবং কামার ও কুমার পেশায় প্রশিক্ষণ দেয়া এবং ওদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের তরে পরিকল্পনা গ্রহণে ওদের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা
- ব্যবসায় বিনিয়োগ সহজ করা এবং মধ্যস্বত্ত্বভোগিদের জুলুম থেকে দরিদ্র্যদেরকে রক্ষা করা, এবং হস্ত ও কুটির শিল্পে প্রশিক্ষণ দেয়া
এবং কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা
- শাক-সব্জী উৎপাদন ও পরিচর্যায় দক্ষ করে তোলা এবং সাথে সাথে খাওয়ার অভ্যাস বৃদ্ধি করে পুষ্টিহীনতা দূর করা
- ক্ষুদ্র সেচ কার্যক্রমে সম্পৃক্ততার দ্বারা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও অর্থনৈতিক অবস্থা সন্তোষজনক অবস্থানে ত্বরান্বিত করতে প্রকল্প গ্রহণ করা
- বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে এসব পেশায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের কাজে নিয়োজিত করার সুযোগ সৃষ্টি করা
- ড্রাইভার পেশায় প্রশিক্ষণ দেয়া
- এয়ারকন্ডিশনিং, রিফ্রীজারেটর ও ঘড়ি মেরামত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সহায়তা করা
- জেলে পেশা সম্প্রসারণে মহিলাদের সম্পৃক্ত করা এবং আধুনিক মেশিনের সাহায্যে ঘর ক্লিনিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি করা
- রেশম শিল্প প্রস্তুত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া এবং উক্ত শিল্পের সম্প্রসারণ ঘটানো এবং কৃষি ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তির দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া ও প্রযুক্তি প্রবর্তনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা
- ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি করে আয়ের পথ সুগম করা হতে পারে গার্মেন্টস শিল্পের স¤প্রসারণ ও কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা ও বিদ্যুৎ সরবাহের পদক্ষেপ নেয়া
- গরু মোটাতাজাকরণ ও গাভী পালন বিষয়ে সহজ শর্তে ঋণের সুযোগ করে দেয়া । এস সকল ক্ষেত্রে সফলতা অর্জণে কমিউনিটিতে পুরুষ ও নারীগোষ্ঠীকে সংগঠিত করা
- টেক্সী ক্যাব চালনায় তরুণদের পারদর্শী করে তোলা এবং এগুলো ধনের ধনী লোকদের মাঝেই কেবল বিক্রয় না করে অল্প টাকা ডাউন পেমেন্ট নিয়ে গরীবদের মাঝে বিক্রয়ের ব্যবস্থা নেয়া
- হিসাব-নিকাশ রক্ষণাবেক্ষণে দক্ষ করে তোলা ও রাজনীতি বিষয়ে সচেতন করে তোলা
- পরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, তত্ত্বাবধানে এবং মূল্যায়ণে জনগণকে পারদর্শী করে তোলা। প্রতি দিনের ম্যান আওয়ার নষ্ট না করার জন্য জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা
- প্রচুর ফল-মূল উৎপাদনের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া এবং বাজার জরীপ করে চাহিদা নির্ণয় অন্তে চাহিদা অনুযায়ী দ্রব্য উৎপাদনে প্রশিক্ষণ এবং বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা করে দেয়া এবং উন্নয়নমূখী চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণায় জনগণকে বিশেষ করে মহিলাদেরকে সরাসরি সম্পৃক্ত করা।

বিশ্বে হতদরিদ্র্য ও তাদের দারিদ্র্যতার অবস্থা ক্রমান্বয়ে ভীতি প্রদ রূপ নিচ্ছে । হতদরিদ্র্য ও দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর জন্য সুষ্পষ্ট দীর্ঘ মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে সরকার, দাতাগোষ্ঠী, কামউনিটির জনগণ ও অন্যান্য ষ্টেকহোল্ডার মিলে সমন্বিতভাবে এগিয়ে আসা আশু দরকার ।

হতদরিদ্র্য ও দরিদ্র্য নারীদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঋণ প্রদাণ করে নারীদের স্বাবলম্বী করার জন্য সচেষ্ট হয়ে সহায়তা দিতে হবে । এটা স্পষ্টত:ই বলা যায় যে, দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে সংঘাতের রাজনীতি পরিহার করে, ঐক্য মতের এবং সহিষ্ণুতার রাজনীতি গ্রহণ করতে হবে । প্রশাসনিক দূর্বলতা দূর করে অবৈধ পথে উপার্জন বন্ধ করতে হবে । শক্ত হাতে অন্যায়কে দমন করতে হবে । গ্রামকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন গ্রাম থেকে হতদরিদ্র্য ও দরিদ্র্য জনগণ আর শহরমূখী না হয় । অর্থাৎ কমিউনিটির বিশেষ করে মহিলাদেরকে ইমপাওয়ারমেন্ট করা আশু প্রয়োজন এবং এর জন্য সুশিক্ষার ব্যবস্থা নেয়া দরকার । তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠিত সংগঠনের মাধ্যমে চলমান প্রদ্ধতিতে শিক্ষার পদক্ষেপ নেয়া, তা নাহলে নারী কোন দিনই তাদের মর্যাদা ও সম্মান ফিরে পাবেনা ।


৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল শুধু ভুল নয়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৬

এক
লেখাটা একটি কৌতুক দিয়ে শুরু করি। ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে শফিপুর আনসার একাডেমিতে বিদ্রোহ হয়। ৪ ডিসেম্বর পুলিশ একাডেমিতে অভিযান চালায়। এতে চারজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছিল। এটি ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। VF 3 Mini: মাত্র 60 মিনিটে 27 হাজার বুকিং!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৪



আমার ব্যাক্তিগত গাড়ি নেই কিন্তু কর্মসূত্রে বেঞ্জ , ক্যাডিলাক ইত্যাদি ব্যাবহার করার সুযোগ পেয়েছি । তাতেই আমার সুখ । আজ এই গাড়িটির ছবি দেখেই ভাল লাগলো তাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ময়লাপোতার কমলালেবুর কেচ্ছা!! (রম্য)

লিখেছেন শেরজা তপন, ২১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩


বাংলাদেশের বিশেষ এক বিভাগীয় শহরে ময়লাপোতা, গোবরচাকা, লবনচোরা, মাথাভাঙ্গা, সোনাডাঙ্গার মত চমৎকার সব নামের এলাকায় দারুণ সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাস।
আমার এক বন্ধুর আদিনিবাস এমনই এক সম্ভ্রান্ত এলাকায় যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট: বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন

লিখেছেন করুণাধারা, ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন! view this link

সামহোয়্যারইনব্লগ থেকে কয়েকজন ব্লগার আলাদা হয়ে শুরু করেছিলেন সচলায়তন বা সংক্ষেপে সচল ব্লগ। এটি বন্ধ হবার মূল কারণ উল্লেখ করা হয়েছে দুটি:

১)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×