somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Where father is a fictitious character.....

১৩ ই জুলাই, ২০০৯ রাত ৯:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে শুনছি, পাশাপাশি হাঁটতে থাকা দুটো পিচ্চি মেয়ে কথা বলছে.... "জানিস আমার বাবার কাছে আগে যেটাই চাইতাম, সেটাই দিত".... "হুমমম, আমার বাবাও... হ্যাঁ, আমাকে এখনো দেয়, যেটা চাই সেটাই...।"
একেবারেই বাচ্চা ওরা, ওরা সেভাবেই কথা বলছে যেভাবে আমাদের তানু বলত... ওদের মতই বাচ্চা ছিল তানু তখন... ক্লাস ওয়ানে পড়ে.....
ফর্সা সিল্কি চুলের মোটা-সোটা গালের গাপ্পু গুপ্পু মেয়েটা....
" আমার বাবা যখন বেঁচে ছিলেন তখন আমার গায়ে কেউ চিমটিও কাটতে সাহস করেনি, এমনকি দাদাও (ওর ভাই) না".... আমরা শুনতাম, তানুর স্বপ্নালু চোখে ওর বাবার ছবি দেখার প্রাণপন চেষ্টা করতাম আমরা.....
তানুর পুলিশ ইন্সপেক্টর বাবা গাড়ি একসিডেন্ট করেছিলেন, তানু কল্পনায় সেই গাড়িটাই ছোটায়... " আমার বাবা যখন গাড়ি নিয়ে যেত, সবাই ভয়ে কাঁপত" বলতে বলতে তানুর ফর্সা গালগুলো লালচে হয়ে যেত,গাড়ির ভয়ে কাঁপা জনতার মতই উত্তেজনা আর আবেগে কাঁপত তানুও...।


তানু বড় হতে থাকে। খালার বাড়ির পাশেই ওদের বাসা, খালার চার মেয়ের চেয়েও বয়সে ছোট ও, খালুজিকে ডাকে আব্বু.....। ওই বাড়িতে তানুর আদরের অভাব নেই, ঈদে সবচেয়ে সুন্দর জামাটা ও-ই পায়, মাথায় তুলে রাখা তানুকে ছোট্ট খালাত বোনটাও হিংসে করে একটু একটু.....

তারপর.... তানু আরো বড় হয়....

সবাই এবার বলতে থাকে মেয়েটার ব্রেইন খুব ভাল, কিন্তু মোটেই লেখাপড়া করেনা, উশৃঙ্খল হয়ে উঠছে দিন দিন; বেশি আদর দিয়ে ওর মাথাটা খেয়েছে সবাই.... সবাই আক্ষেপ করে " তানু সময় আছে, মানুষ হ।" তানু শোনেনা, তার অবাধ স্বাধীনটায় বাঁধা পড়তে দেয়না সে, জেদি তানু অবধ্য হয়ে ওঠে....

তারপর.....

একদিন.....
ঈদের দিন, তানুর বাড়ি ফিরতে রাত দশটা বেজে যায়, বন্ধুর বাড়িই গিয়েছিল, বন্ধুর জন্যই দেরি হল; বাড়িতে মা বলেন না কিছুই।
আবার পরেরদিন .....
পাশেই আরেক বন্ধুর বাড়ি যায়, ওদের বাড়ি থেকে দুই কদম দূরেই হবে বাড়িটা। তানুর ফিরতে আজও রাত দশটা বাজে।
বাড়িতে পা দিয়েই তানু বুঝল বাড়ি থমথম করছে, দাদা আর আব্বু, মানে খালুজি দাঁড়িয়ে আছে.... দাদার হাতে স্টিলের স্কেল। কথা শুরু করল দাদাই,"তো, তুই কী ঠিক করলি, বাইরে যাওয়া বন্ধ করবি নাকি পড়ালেখা, কোনটা?" ঘাড় ত্যাড়া তানু বলে আমি লেখা পড়াও করব বাইরেও যাব.....

পরদিন সকালে.....

বেল বাজাতেই তানু দরজা খুলে দিল হাসিমুখে, ফোলা ঠোঁট নিয়ে হাসতে কষ্ট হচ্ছে, কানের পেছনে এখনো চপচপে রক্ত, কপালের কাছটায় অনেকটা ফোলা। অবাক হলাম আমি,"কি হইছে তর??"বুঝলাম কাল দেরি করে ফেরার ফল...."কে করল এমন, দাদা??" তানু আবার হাসল, "হুমম, সাথে ফামির আব্বা।" আমি কোনদিন শুনিনাই সে খালুজিকে আব্বু ছাড়া আর কিছু ডেকেছে কিংবা খালুজি ওকে মেরেছে....আজ তাই অবাক হয়ে বললাম,"ফামির আব্বা??ফামির আব্বা হাত তুলছে তর গায়!!!????"

হুমমমম..... বলেই দীর্ঘশ্বাস ফেকে তানু ওপরে তাকায়। তানুর চোখে জল ছিলনা কখনো, আজও নেই। সম্ভবত ওপরে তাকিয়ে অভিযোগ জানায় সেই বাবার প্রতি, যিনি কখনো তানুর গায়ে আঁচড় লাগতে দিতেন না কিংবা তানুকে নিয়ে গাড়ি হাঁকাতেন তেপান্তরের মাঠে.... কিন্তু সেটাও... শুধুই তানুর কল্পনায়.....









** তানু, মাফ কইরা দিস দোস্ত।
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×