প্রতিবেশী দেশের সীমান্তরী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে সীমান্তের মানুষগুলো অসহায়ভাবে প্রতিদিন নিহত হচ্ছে। আর কত লাশ হলে তাদের গুলি থামবে? তারা আমাদের প্রতিবেশী বৃহৎ দেশ হলেও কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নির্বিচারে বাংলাদেশের সীমান্তে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অনধিকার প্রবেশ ইত্যাদি অপকর্ম দিনের পর দিন করে যাচ্ছে অবলীলায়। বর্তমানে তাদের কেউ বাধা দিচ্ছে না, বাধা দেয়ারও কেউ নেই। এক কথায় সীমান্ত অরতি থেকে যাচ্ছে। বর্তমান বিডিআর ডিজি দায়িত্ব গ্রহণ করে ভারতে গিয়ে বিএসএফ প্রধানকে ধন্যবাদ দিয়ে এসেছিলেন পিলখানার হত্যাকান্ডের সময় তারা বাংলাদেশের সীমান্তে কোন আক্রমন করেনি বা অনুপ্রবেশ করেনি বলে। তার এই নতজানু অবস্থা দেখে গোটা জাতি লজ্জায় অবনত হয়েছিল। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতকে আমরা যতই সমীহ করি, বন্ধু ভাবি আসলে কি তারা তা পাওয়ার যোগ্য? সমরশক্তি আর পেশী শক্তিই যদি হয় সমীহ করার একমাত্র উপাদান তাহলে কোন কথা নেই। আজ বলতে কোন দ্বিধা নেই স্বাধীনতার সময় যে দেশটি আমাদের বন্ধুর মতো এগিয়ে এসেছিল আমাদের সহযোগিতা করেছিল তার অতীত কোন সুকীর্তিই আজ আমাদের আর কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ রাখতে পারে না। দেশ প্রেমিক বাংলাদেশী তাদের এহেন কর্মকান্ডে ব্যথিত, ুদ্ধ প্রতিবাদী। অপরদিকে ভারত বান্ধব সরকার অন্যান্য জাতীয় ইস্যুর মতোই এই বিষয়ে নিঃশ্চুপ থাকছে বরাবরের মতোই।
মানবাধিকার সংগঠনগুলির পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০০ সাল হতে ২০০৯ সালের ১০ জুলাই পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় মোট ৭৮৯ জন বাংলাদেশী নিহত হয়েছে বিএসএফের গুলিতে। ৮৯৫ জনকে নির্যাতন করা হয়েছে, একই সময় লুটপাট, নারী ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটানো হয়েছে। শুধুমাত্র গত ৫দিনে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ৭জন নিহত হয়েছে। এসব করেই তারা থেমে থাকছে না। চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে মরণ নেশার নানা প্রকার মাদক। বাংলাদেশে মাদক ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে সীমান্ত এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে শত শত ফেন্সিডিল তৈরীর কারখানা।
সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশের নিরীহ মানুষকে মারার পর বিডিআর-বিএসএফ পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। লাশ ফেরত দেয় অথবা দেয় না। হত্যা, লুটপাট, নির্যাতন এবং এদের বেপরোয়া নীতির ব্যাপারে পতাকা বৈঠক হলেও বিএসএফ কোন চুক্তি বা প্রতিশ্র“তির কোনটাই তারা পরে আর রা করে না।
এই অবস্থায় আজ ঢাকায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই ফলাফল কি হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। গতানুগতিক প্রতিশ্র“তি তারপরে সব ভুলে গিয়ে আবার বাংলাদেশী পাখি নিধনের জন্য বিএসএফের গুলির নিশানা ঠিক করা। এ সরকার আসার পর বিডিআরকে নিক্রিয় করে ভারতকে একতরফা খবরদারীর সুযোগ করে দিয়েছে। আওয়ামীলীগ সরকারকে ভারতের প্রতি সহানুভুতিশীল এবং ভারত তোষণ নীতিতে অটল থাকলেও ভারত তাদের তোয়াক্কা করে না। সীমান্তের বিএসএফের বৈরীতা দেখলে সহজেই তা অনুমান করা যায়।