দীর্ঘ একটি ছুটি পেয়েছি পুরো জুলাই মাস। আনন্দে আত্নহারা হওয়ার কথা আমার।কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এর চেয়ে সকুল খোলা থাকাই ভাল ছিল। সারাদিন শুধু দরজা জানালা বন্ধ করে এ ঘর থেকে ও ঘর। ভাগ্যিস নেট ছিল তাই বাঁচোয়া। এই ফ্ল্যাটটিতে যখন উঠেছিলাম জানালা দিয়ে ঝলমলে আলো এসে ঘরগুলিকে উজ্বল করে তুলত। তাই তো কমপক্ষে ১৫/১৬ টা বাসা দেখার পর এটাই ভাল লেগে যায় আমার। অতঃপর তল্পিতল্পা নিয়ে পুরানো বাসাকে বিদায় জানিয়ে নতুন বাসায় আগমন। প্রথম প্রথম ভালই কাটছিল দিন। দুই দিকে খোলা। আলো বাতাসের অভাব নেই। বিদ্যুৎ চলে গেলেও গরমেরও কষ্ট নেই, বারান্দায় বসলে শীতল বাতাসে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। আর কি চাই
কিন্তু সুখ আর বেশিদিন সইলনা। এক মাস যেতে না যেতেই দেখি লোহালক্কর আর ইট কাঠে দখল হয়ে যাচ্ছে পাশের ফাঁকা মাঠটি। কোটি মানুষের এই শহরে এমন একটি লোভনীয় জায়গা দীর্ঘদিন ফাঁকা পরে থাকবে তা ভাবাই বুঝি পাপ হয়েছিল। তাই সেই পাপের মাসুল এখন দিয়ে যাচ্ছি। আজ আমি নিজ গৃহেই অনেকটা বন্দী। তর তর করে উঠছে বিল্ডিং। আড়াল হচ্ছে আকাশ। আড়াল হচ্ছে আমার আলো বাতাসের উৎস। অট্রালিকা বাড়তে বাড়তে এখন আমার ফ্ল্যাট বরাবর। দুই বিল্ডিং এর মাঝে নূন্যতম ছয় ছয় বার ফিট জায়গা রাখার নিয়ম কিন্তু এই দুই বিল্ডিং এর মালিকদের এসব তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় কোথায়? কোন বাসারই আর প্রাইভেসি নেই। জানলা খুললে ওই বিল্ডিং এ কর্মরত মিস্ত্রীদের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় আমার বাসা তাই জানালা খুলতেও পারিনা। মাঝে মাঝে মনে হয় ছিটকে বেড়িয়ে যাই এই শহর ছেড়ে কিন্তু যাব কোথায়? এই নগরী যে আমাকে আস্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০০৯ দুপুর ২:১৯