somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপূর্ণদৈর্ঘ্যের বাংলা ছিঃনেমা: পরানের চামচিকা---১

০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



টাকা নাকি হাতের ময়লা - এই ভাবিয়া ভন্ড উদাসী দিন গুনিয়া যায় ছয়টি বছর ধরিয়া। মাগার টাকার ময়লা তো দূরের কথা ভন্ড উদাসী স্বপ্নের কপালে বিবাহও জুটিলো না। তবে হ্যা - জুটিয়াছে একখানা উপাধী: ভন্ডবাবা ক্যাবলাকাবা উদাসী হাবা; ভাবে সারাদিন গাছ গাছড়া লতা পাতা আর ভোম্বল কাস্টমারের টাকা ভর্তি পকেটখানা। বৈশাখ মাসের কাঠাল সারা বছর ভাঙ্গিবার বুদ্ধি লইয়া থাকা উদাসী দেখিতে কাচা পাকা চুল দাড়ী, বয়সের ব্যপারে মনে হয় বসন্ত করিয়াছে পার আনুমানিক ৬০ খানি। কিন্তু চোপার জোরে কেউ বলিতে পারিবে না যৌবন পালাইয়াছে কবে জানি, তাই উহা ধরিয়াই করেননাই বিয়া শাদী।

কথার ঠেলা সইতে না পারিয়া জনৈক সাংবাদিক ভাস্কর দাদা মাইক্রোফোন আগাইয়া ইন্টারভিউ নিতে জানিলো উদাসীর ব্যাস্ত শিডিউলের হাসফাস, তাই লেন্জ্ঞা ধরিলো তেনার একমাত্র সাগরেদ দুখু মিয়ার ওরফে দুঃখবিলাস!
: তা দুখা ভাই, আপনে তাহার সাথে বিগত ৬ বছর ধরিয়া আছেন বলিয়াই জানাইতে পারিবেন কি উনার বয়সের উচ্চতা কতখানি?
: (হস্ত কচলানি সাপেক্ষে আর মাথার চুল ঠিক করিতে কাচুমুচু হাসির সাথে শুরু হইলো বয়ান) কি বলিবো উদা ভাইয়ের কথা, বিগত ছয় বছর ধরিয়া তেনার বয়স আছে ৩৫ এ আটকাইয়া। তা দাদা, ইহাতে কেনো আপনার ইন্টারেস্ট লাগিবে নাকি কোনো মালিশীয় ক্লেশ?

ইহা শুনিয়া সাংবাদিক দাদা পালাইয়া বাচিলেও এই জামানায় দুখু মিয়ার মতো সহোচর পাওয়া বড় দুস্কর!

হায় হায়! আসল কথা বলিবো কোথায়! আমাদের উদাসী স্বপ্নের হারবাল কোবরেজী চিকিৎসালয় অবস্হিত ভূতের গলির গোরস্হানের কোনায় ৬ তলা বাড়ির ছাদের এক চিপায়।৬ মাস ধরিয়া উক্ত চিপায় চলিতেছে গবেষনা সহযোগ হারবাল ওষুধের কারখানা আর সাথে প্রাইভেট কোবরেজী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আস্তানা। যদিও ছাত্র বলিতে উক্ত দুখা মিয়া ভর্তি সেশনের লিফলেটে লেখা প্রতিদিন ধরিয়া। মাছিরাও উক্ত স্হানে পড়িবার না আসিলেও উদাসীর ভাষ্যমতে তাহার ব্যাবসা নাকি অতীব রমরমা, কি জানি কে বলে সত্য কথা!

রূগীদের ব্যাপারে উদাসী বড়ই সচেতন, বান্ধা রোগীদের কিছু হইলে হইয়া যান অচেতন। যদিও গত দুমাস ধরিয়া ভাঙ্গা পেন্সিল নামক গো বেচারা নতুন আসিয়া পড়িলো ঢাকায়, এখন উদাসীর খপ্পরে তাহার মাস চলে অতীব গুপন রোগের দুশ্চিন্তায়।কারন উদাসীর কাছে আছে সর্বোরোগের মালিশ, উহা দিয়াই হইবে সর্বোরোগের সালিশ।

ডায়রিয়া হইলেও মালিশ
টাইফয়েড হইলেও মালিশ
ঘর ভাংলেও মালিশ!

: স্লামালিকুম, উদাসী ভাই, আপনের কদমবুসী চাই।
দরজার ফাকা দিয়া উকি দিয়া ভাঙ্গা পেন্সিলের ঘটিলো গমন, উদাসীর লুঙ্গী ফ্যানের বাতাসে এদিক ওদিক করে গমন।
: (ঘুম ভাঙ্গিয়া) ওহে, ঢুকিয়াই তো পড়িয়াছো কামরাতে, বসিয়া পড়ো আমড়া খাইতে খাইতে।
: ঔষুধ খাওতাছি ৩ মাস ধরিয়া, রোগের বিশেষ উন্নতি দেখি না।
: ওহে বুর্বক, আমরা দুনিয়াতে কত কিছুই তো দেখি না, তুমি কি কখনো দেখিয়াছো তোমার পিঠখানা! ইহা বড় গুপন জ্ঞান, কাজ হইবে কিন্তু শুনিবে না উন্নতির ঘ্যান ঘ্যান!
: তাহা বলিয়াছেন খাসা, মনের মধ্যে আউল ফাউল কথার বাসা। উন্নতি হয় বলিয়াইতো কাছে আসি বার বার, খাইয়া টয়লেটে গেলেই পেট পরিস্কার। ঘন ঘন ক্ষুধা লইয়া অখন বড় বিপদে আছি, আগের ক্ষুধা মন্দা আর নিদ্রাহীনতা বড়ই মিস করি!
: তা অখন খবর কি, নতুন সমস্যা উকি দেয় কি?
: বাসায় দেখিতেছে কন্যা বিবাহ দিবে বলিয়া, কিন্তু স্বাস্হ্যের কোনো উন্নয়ন দেখি না। হাতের ডিম খানা দেখিয়া হাসে হাস আর কুড়কা মামা!
: ব্যাপার না, এখনই খুলিতেছি সর্বরোগের ভান্ড খানা! ওরে ও দুখা মিয়া, কই গিয়া মরলা আমার গুপ্তধন সাথে লইয়া!

পাশের রুম হইতে সেন্টু গেন্জ্ঞির নীচে লুঙ্গী ঠিক করিতে করিতে: ওস্তাদ আমি এইখানে, কি বলিবেন অপেক্ষায় পলাশীর ময়দানে!
: চান্দু, রাখো তোমার পলাশীর ময়দান, আমাদের ভাঙ্গু মিয়ার মন ভাইঙ্গা খান খান। ৩৫ নম্বর বোতলখানা লইয়া আসো, মান্ডার তেলের কেরামতী লাগবো! সাথে আনিবা এককাপ চা আর দুটো বিস্কুটের টুকরা!
: ওস্তাদ, আছে একটা সমস্যা। চায়ের বোতলে নাই চা পাতা, চিনির বোতলে বানাইয়াছে বাসা পিপীলিকারা।
: কেনো কেনো, গতকাল চা আনিতে লইলা ২০ টাকা, উহার হিসাব খানি আইজোও পাইলাম না।
: পাইবেন কেমনে, লুঙ্গির গিট্টুতে বাধিতে সিড়ি দিয়া নামিতেই দেখি বাড়িওয়ালীর কন্যা, কুড়মুড়াইয়া শুরু করিলো আমার লুঙ্গি, আমি বলি,"চানাচুর, বড়দের লুঙ্গি টানিতে নাই!" সে হাসিয়া কহিলো," লেমেন্ঞ্চুষ খাইবার টাকা চাই!" লুঙ্গি বাচাইতে খোয়াইলাম টাকা খানা, সাথে ছিড়িয়া দিলো আমার সাধের গেন্জ্ঞিটা!
: আর বাচি না।ছিনতাই করা শুরু করছে বাড়িআলি তার দুই চাল্লুগো দিয়া। চা আনিবার দরকার নাই, তৈলের বোতলা দেখিতে চাই।
দুখু মিয়া অর্ডার শুনিয়া পাশের রূম থিকা আনিলো এক কুচকুচে শিষি, গন্ধে না আটকাইয়া ভাঙ্গু কহিলো," মরিয়া যাইবো এই আমি!"
উদাসী অবাক হইয়া নাক আটকাইয়া কহিলো," ইহা বড় পাওয়ার ফুল, মড়া গাছে করিলে মালিশ নাচিবে কুদিবে ৪২০।"
: দেন ভাই দেন, আপনেই আমার ভরসা, ভাতের মধ্যে ফ্যান!
উদাসী ছিপি খুলিয়া মন্ত্র পড়িলো: হাতি ডাকে পুপু, ছু মন্তর ছু! দিনে একবার করিয়া প্রতিদিন ক্লাসে যাইবার কালে!
: ক্লাসে যাইবার কালে মারিলে, ভার্সিটিতে গেলে দারোয়ান লাথি মারিবে!
: লাথি মারিলে তাহাকে বলিবে, ওহে তুই কাহাকে মারিস, তোর মতো দারোয়ান এরকম ১০টা ভার্সিটিতে লইয়া করিবো মালিশ!
ইহা শুনিয়া ভাঙ্গু কেমন দমিয়া লইলো বিদায়, যাইবার আগে পকেট হইতে হাদিয়া বাবদ ৯৭ টাকা কাটা যায়।
ভাঙ্গু যাইতেই দরজা আটকাইয়া কহিলো দুখাকে," ফের যদি টাকা লুঙ্গীর গিট্টুতে বাধিয়াছো, তোমাকে সোজা ফ্যান এ লটকাইবো!"
: লুঙ্গিতে না লুকাইয়া কোথায় লুকাইবো, শক্তিশালী চানাচুরের থাবা হইতে কেমনে বাচিবো? আমার গায়ে নাই বল, বাতাস আইলে পানির মতো দেহে ঢেউ দেয় ছলছল।
: দুই ঠ্যাং এর কুচকিতে বাধিবে দড়ি, উহার সাথে পুটলিতে থাকিবে যত টাকা কড়ি। ইদানিং ঔষুধের হিসাবে দেখিতেছি গন্ডগোল, গতবার তো দিন ছয় হাসপাতালে থাকিয়া পাইয়া ছিলা ফল। বলি চুরি চামারি বন্ধ করো, চানাচুরের লগে একটু ভাব মারো!
এমুন সময় দরজায় পড়িলো বেমক্কা ধাক্কা, ধাক্কার চোটে উদাসী দুখা পাইয়া যায় অক্কা।
: ওরে ভন্ড গাধা ডাক্তার, ৬ মাস ধরিয়া ভাড়া না দিয়া কি শুরু করিয়াছো বাটপার? তাড়া তাড়ি খোল ঐ চামচিকা, নাহাইলে গালাইয়া ফেলিবো বিচির মতো এক পাড়া দিয়া!
উহা শুনিয়া আতকিয়া পলায় দুখা মিয়া টেবিলের তলে, উদাসী জানালার কাছে দৌড়য় আবার বালিশের তলে লুকায়, বুঝিয়া পায় না কি করিবে! দরজা যখন ভাঙ্গিবার দ্বারপ্রাম্তে, এমুন সময় দরজা খুলিতেই ধাক্কা খাইয়া উদাসী ছিটকাইয়া পড়ে আর বাড়ীআলী শক্তিশালী আউলা বীরদর্পে পদার্পন করে। পিছনে উকি মারে তাহার আরেক কন্যা জেরী, যাহার সাথে দুখা মিয়ার মন করে উকি ঝুকি!
আউলিয়া মহাশয়া উদাসীর কলার ধরিয়া,"বল হারামজাদা, হিসাব আমার কবে মিটাইবা?"



চলিবেক (যদি আপনেরা চাহেন).....

ডিসক্লেমার: আউলার সামু বিবাহ দেইখা উৎসাহিত হইয়া আমি একখান গপ লেখন শুরু করলাম। এইখানে আপনেরা সবাই আছেন। বিভিন্ন চরিত্রে উপস্হাপনের জন্য কাল্পনিক কাহিনী গড়া হইয়াছে, তবে ইহা সত্যি ফান। যদি কেউ মনে হার্ট খাইয়া থাকেন। কমেন্টে জানাইলে আমি উহা পাল্টাইয়া দিবো। তবে এইখানা নিশ্চয়ই ফান। আমি কাউকেই ব্যাক্তিগত ভাবে আক্রমন করিবার চাই নাই, বা চেস্টাও করি নাই। ব্লগের সবার ইন্টারেকশনের মাধ্যমে বিভিন্ন চরিত্রের সৃস্টি করিয়াছি। যদি কুনো দুষ হইয়া যায়, অথবা কেউ যদি অবজেসশন জানায় তাইলে এই পর্ব আমি স্টপ করাবো। সো মনে হার্ট না খাইয়া হাল্কা মজাক মনে কইরা পড়েন!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০০৯ রাত ২:০৪
৩১টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×