somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোট্ট মাথায়, ছোট্ট চোখ দিয়ে দেখা ছোট্ট পৃথিবী

৩০ শে জুন, ২০০৯ সকাল ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আর চার মাস পর আমি একদম, একদম স্বাধীন হয়ে যাবো। মাত্র চার মাস। তারপর যত ইচ্ছা তত ঘুম, পায়ের উপর পা তুলে মুভি দেখা, রাত জেগে গল্পের বই পড়া, বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়া, ছবি তোলা, এডিট করা, ড্রাইভিং! ইশ! আর চার মাস ভালো মত পড়লেই এর পরের সময়টুকু অসাধারন কাটবে। জানি, তবু মনে থাকে না কেন সবসময়?

ইদানিং আমি ভীষন স্বার্থপর হয়ে গিয়েছি। আগেও কিছুটা ছিলাম, কিন্তু এখন মনে হয় নিজেকে ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে ভাবতে পারি না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ভালো, যেমন, আমার পড়াশুনা করার মুড আসলে বন্ধুদের জীবন নিয়ে মাথা ঘামাতে ভালো লাগে না। কিছুদিন আগেও অন্য সবার জীবনে মাথা ভর্তি থাকতো চব্বিশ ঘন্টা। এখন মনে হয় একটু একটু বুঝতে পারছি যে আগামি চার মাস ওদের কথা চিন্তা না করলেও চলবে।

তবে বেশির ভাগ সময় স্বার্থপরতা এখনও খারাপ। উফফ আগামী চার মাস যদি খুব তাড়াতাড়ি চলে যেত! কাছের মানুষদের থেকে যেভাবে আস্তে আস্তে দূরে সরে যাচ্ছি, সেভাবে আস্তে আস্তে কাছে চলে যাবো আবার।

"আকাশটা আজ বড়ই নীল, আজ আমায় পিছু ডেকো না!" কার গান যেন?

মিশ এখনও ওর বয়ফ্রেন্ডের সাথে সম্পর্ক ভাঙে আর গড়ে। মেয়েটাকে আজকাল এত্তো বিরক্তিকর মনে হয়! আর ফ্র্যানের এখনও মনে হয় ও কখনও কাউকে বিয়ে করতে পারবে না, কারন ওর 'পার্ফেক্ট' ছেলে কখনই পাওয়া যাবে না। আনিকার ইয়া লম্বা হাফ জার্মান বয়ফ্রেন্ড এখনও ওকে কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। তারপর মারিসা ফোন করে বললো, আমিরার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। একটা ছেলে ওকে দেখার পর সাথে সাথে প্রেমে পড়ে গেলো। কয়েক সপ্তাহের মাথায় এইচ এস সির পরীক্ষার্থী মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলো। আর 'আ' এখনও ওর জামাইকে খুব, খুব ভালোবাসে। ওর মাথায় এখন জামাই ছাড়া কিচ্ছু ঘুরে না। আমি জিজ্ঞাসা করছিলাম, আমার এতো ঘুম কেন ধরে বলো তো? ও বলতে পারলো না। 'আচ্ছা তাহলে বলো তোমার জামাইয়ের কেন এতো কম ঘুম হয়।' চটপট উত্তর পেয়ে গেলাম। এখন আমার কোন কিছু জানা লাগলে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে 'জামাই' শব্দটা লাগালেই কাজ হয়ে যায়।

আমার এখনও অনেক, অনেক বড় হতে হবে। আমি জানিনা মিশ, আনিকা, আমিরা ভুল কাজ করছে কিনা। আমি জানিনা ওদের জীবনের কতটুকু নষ্ট হচ্ছে আরেকজনের জন্য। কারন আমি নিজে এখনও ভীষন ছোট। আমার ছোট্ট কাঁধে নিজেকেই তুলতে পারিনা।

And I have walked these streets so long
There ain't nothing right, there ain't nothing wrong
But the little wet tears on my baby's shoulder
The little wet tears on your baby's shoulder

সেদিন স্কুলে ট্যালেন্ট কোয়েস্ট হলো। ওখানে একটা মেয়ে এই গানটাতে ব্যালে নাচ নেচেছে। গানটা এত্তো মন খারাপ করিয়ে দেয়!

She says, i can sing this song so blue
That you will cry in spite of you
Little wet tears on your baby's shoulder
Little wet tears on your baby's shoulder

ফ্র্যানের সাথে আজকাল অনেক, অনেক কথা হচ্ছে। আস্তে আস্তে বুঝতে পারছি ও কেন এতো ডিফেন্সিভ। ওর ছোট্ট কাঁধেও ভীষন ভার, অন্য রকম ভার। ওর মামার ক্যান্সার হয়েছে। তার ওপর এইচ এস সির চাপ, আশে পাশের চাপ ইটিসি ইটিসি তে ওর মন খুব খারাপ ছিলো কালকে। অনেকক্ষন কথা বলার পর বলে, তোমার কোন ইন্সপায়রেশনার স্পিকার হওয়া উচিৎ। ও বেশ ভালো বন্ধু হয়ে যাচ্ছে, মারিসা যেমন, তেমন। আজকে কেমিস্ট্রিতে এক গাদা কথা বের করলাম। আমার মনে হয়, ও আমার সম্পর্কে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি জানে।

আবিদাও ভালো বন্ধু হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মেয়েটা ক্লাস টেনে পড়ে। যদিও আমার থেকে মনের দিক দিয়ে অনেক বড় :|! গত শুক্রবার আমাকে প্রমিস করালো যে আমি পরীক্ষার জন্য পড়াশুনা করবো। তারপর এক প্যাকেট 'ডাভ প্রমিস' চকলেট কিনে দিলো। আমিও খুব খুশি হয়ে হাত পেতে নিলাম। চকলেট যেহেতু চকলেট, কার কাছ থেকে সেটা মোটেই জরুরি না। :D

সেদিনই আমাদের এক সেট পরীক্ষা শেষ হলো। মাইকেল জ্যাকসনও দুম করে মারা গেলো। পরীক্ষার পর শপিং সেন্টারে গিয়ে দেখি প্রতিটা দোকানে ওর গান বাজছে। টিভিগুলোতে ওর মেমোরি। আমার সারাটা সময় মনে হচ্ছিলো, লোকটা পৃথিবীর জন্য একটা এন্টারটেইনমেন্ট ছাড়া কিছুই না। এখন সবাই ওর আরও বেশি করে ওর গান শুনবে। যারা আগে শুনতো, তারা বাড়িয়ে দেবে, যারা শুনতো না তারা শুরু করবে। কিন্তু লোকটাতো মরেই গিয়েছে! এগুলা দিয়ে ওর এখন কি হবে?


পৃথিবীটা এতো গোল, এতো ছোট!
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠিক কোন বিষয়টা মৌলবাদী পুরুষরা শান্তি মত মানতে পারে???"

লিখেছেন লেখার খাতা, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৭


ছবি - গুগল।


ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম এখন আর শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, রোজগার এর একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্মও। একটু স্মার্ট এবং ব্রেন থাকলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম থেকে রোজগার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×