somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেইসব বন্ধুরা সব কোথায় আমার?! আমার কিচ্ছু ভালো লাগে না!

২৯ শে জুন, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মন খারাপ শেয়ারমূলক পোষ্ট।

মানুষ হিসেবে আমার দোষের শেষ নেই। কিন্তু, বন্ধু বাৎসল্যে আমি কখনো পিছিয়ে ছিলাম- এমন অপবাদ কেউই দিতে পারবে না। বন্ধুদের ঘিরেই তো জগৎ আমার। স্কুল জীবন থেকে শুরু করে কলেজ-ভার্সিটি যেখানেই গেছি, অবশ্যম্ভাবীভাবেই একগাদা বন্ধু জুটে গেছে।

তবে সবাইকে ছাপিয়ে স্কুল জীবনে পাওয়া চারজন সব সময়ই একটু আলাদা। এমন গলাগলি- পারলে রাতেও একসাথে ঘুমাই। একই স্কুল- একই কলেজ -শুধু ভার্সিটিগুলো আলাদা। চাকরিও করছি আলাদা আলাদা। অথচ, পড়াশোনা, পরিবার, জীবিকা - যে প্রয়োজনেই পরস্পর দুরে চলে গিয়েছি, ততই যেন মানসিক দুরত্ব কমে এসেছে।
মোবাইল যুগ শুরু হবার পর আরো সহজ হয়ে গেল ব্যাপারটা।

এমনি করে, ভালোই যাচ্ছিলো জীবন- অফিস, আড্ডা, ঘোরাঘুরি, ঘুম!

এরই মাঝে কখন যে সবারই বিয়ের বয়স হয়ে গেছে টেরই পেলাম না! আসলে গাধাটা আমি নিজেই। ঐ চারজনেই ভার্সিটি জীবনে মনের মানূষ খুঁজে নিয়েছে- আমি কপালে কিছুই জোটাতে পারি নি। সব সময়ই ভাবতাম, "এতো ভালোই হলো!" কোন টেনশন নেই, রেসপন্সিবিলিটি নেই- গল্প-আড্ডা-গান- এই নিয়ে জীবন কেটে যাবে।

কিন্তু, সবাই কি আমার মত গাধা? সময় মত সবারই বিয়ের ধুম পড়ে গেলো। আমিও মহা উৎসাহে বিয়েগুলোতে এটেন্ড করলাম, আড্ডা দিলাম, গান গাইলাম আর পেট পুরে খেয়ে এলাম। এই করতে করতে যে আসলে একা হয়ে যাচ্ছি তাও টের পাই নি। এখন আর অফিস থেকে ফিরে বন্ধুকে বলতে পারি না, "চল কোথাও গিয়ে বসি"। গভীর রাতে ঘুম ভাঙিয়ে সদ্য দেখা ইউরোপিয়ান ফুটবলের ফলাফল নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করতে ও মন সায় দেয় না। মনে হয়, আহারে বেচারা! ঘুমাক, সংসারী মানুষ।

এদিকে ওরা আবার চাপাচাপি শুরু করেছে, "বিয়ে কর্‌ , বিয়ে কর্‌।" শুনতে শুনতে কানঝালাপালা। আমি কথা ঘুরাই, "লেজ কাটা শেয়ালের দল! লেজওয়ালাদের পিছনে লাগছস! যাহ, ফুট!" কখনো বলি, "বিয়া করুম, পছন্দমতন মাইয়া কৈ? সবগুলারেই তো তোরা ভাগায়া নিলি!"

সময় কাটাতে আসতাম সামুতে। সেখানে ও আজ কাল কেমন যেন! ম্যাড়ম্যাড়ে-প্রানহীন। সহ ব্লগারদের মাঝে আগের মত পারস্পরিক যোগাযোগ (Interaction) নেই। সবাই নিজের পোষ্ট নিয়ে ব্যস্ত। এতে পোষ্টের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লে ও আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে মন্তব্যের সংখ্যা।

কতগুলো পোষ্টের আইডিয়া মাথায় নিয়ে বসে আছি। লিখতেই ইচ্ছে করে না; পোষ্ট দেব কী!

এরই মাঝে নতুন করে "ন হণ্যতে", "লা নুই বেঙ্গলী" পড়েছি; পড়েছি তারাশঙ্করের "কবি", মুহাম্মাদ আসাদের "রোড টু মক্কা"। ইচ্ছে ছিলো রিভিঊ দেবো। এখন ভাল্লাগছে না। মনে হচ্ছে পোষ্ট দিয়ে কী হবে? হিট বাড়বে? কী লাভ?

গত শুক্রবারেই লাষ্ট উইকেট ডাউন (চারজনের মধ্যে শেষজনের ও বিয়ে হয়ে গেলো) হলো। ইচ্ছে ছিলো সেটা নিয়েও একটি "স্মৃতি তুমি বেদানামূলক" পোষ্ট ছাড়বো। এখন তাও ইচ্ছে করছে না।

আজ ক’দিন ধরে নজরুলের গানে ডুবে আছি। (আমি আবার এক একবার এক একজনকে নিয়ে পড়ি। এর আগে ছিলো অনুপ জালোটার গযল, তারো আগে ছিলো কিশোর কুমারের হিন্দি গান)

যাইহোক। কী অফিস, কী বাসায় একই গান চলছে এক মাস ধরে।

১. "কেন আসিলে, ভালোবাসিলে দিলে না ধরা জীবনে যদি/ বিশাল চোখে মিশায়ে মরু চাহিলে কেন, ও বেদরদী।....."

২. "আমারে চোখ ইশারায় ডাক দিলে হায় কে গো দরদী?/ খুলে দাও রঙ মহলার ইন্দ্র দুয়ার ডাকেরে যদি......."

৩. "একি সুরে তুমি গান শোনালে ভীনদেশী পাখি /এ যে সুর নহে মদির সুরা, যে সুরে ডাকি......।"

৪. "শাওন আসিল ফিরে সে তো তবু এলো না,/ বরষা ফুরায়ে গেলো, আশা তবু গেলো না......।"

অত্যাচারে আশেপাশের সবাই অতিষ্ঠ। কিন্তু আমি কী করবো? আমার যে কিছুই ভালো লাগে না!

এ কেমন অসুখ আমার? কিছুই ভালো লাগে না!

বিঃদ্রঃ সকাল থেকে সেই রকম বৃষ্টি চিটাগাঙে। ইচ্ছে ছিলো একটু ভিজবো। পকেটের মোবাইল দুইটার যন্ত্রনায় যদি তাও পারা যেত! এগুলোরে মাঝে মাঝে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলতে মন চায়!
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৩:৩৮
২৭টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×