somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেনাবিদ্বেষ :আত্মপক্ষ সমর্থন-৩

২৯ শে জুন, ২০০৯ দুপুর ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২. * শূন্য আরণ্যক লিখেছেন, '‘কিভাবে একজন সেনা অফিসার বিলাসবহুল গাড়ীতে চড়েন আর আমাদের ব্লাডি সিভিলিয়ান বলে গালি দেন তার স্মৃতি ধরে রাখতেই এই পোষ্ট’'.

কজন সেনা-অফিসারের গাড়ি আছে, শতাংশে কত - এমন একটা হিসাব দিলে বক্তব্যের সারবত্ত্বা থাকতো, তা দেননি. পাঁচ লক্ষ টাকার অধিক মূল্যের গাড়িইবা কজনের আছে তাও বলেননি. জাতিসংঘ মিশনের টাকা হাতে না আসা পর্যন্ত যে সেনা-অফিসাররা ব্যাংকে লাগাতার ওডি বয়ে বেড়ান আর জাতিসংঘের টাকা হাতে পেয়ে কেউ কেউ গাড়ি কিনে ফতুর হয়ে আবার বেচে দেন, তাও বলেননি. গাড়িমাত্রই যদি বিলাসবহুল হয় তাহলে ভিন্ন কথা, তবে কোন সেনানিবাসে দশ লক্ষ টাকার অধিক মূল্যের গাড়ি ২-৩টির অধিক পাবেন না এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা পরিবারের আর্থিক সমর্থনে কেনা অথবা হয়ত তাদের স্ত্রীরা রোজগেরে. নিশ্চিত করে বলছি, দশ লক্ষ টাকার অধিক মূল্যের গাড়ি অধিকাংশ সেনানিবাসে নাই. সেনা-অফিসাররা তাদের সমান মেধা, যোগ্যতা ও সামাজিক অবস্থানে থাকা বন্ধু/সহপাটিদের চেয়ে আর্থিকভাবে অধিকাংশ সময়েই পিছিয়ে থাকেন. জাতিসংঘ মিশনের টাকা ব্যয় করেও তারা বেসামরিক বন্ধু/সহপাটিদের চেয়ে অনেক সস্তার গাড়ি চালান. আর বিলাসবহুল গাড়ি? সে সাধ্য তাদের নাই, বোধ করি তাই সাধটুকুও নাই.

ব্লাডি সিভিলিয়ান গালিটি বৃটিশ ঐতিহ্যের কুফল. আমাদের প্রগতিশীল সেনাবাহিনী সে কুফল কাটিয়ে উঠেছে অনেক আগেই. আমি আশ্বস্থ করতে চাই, গালিটিকে '‘বিলুপ্তপ্রায়'’ ঘোষনা করে সেনা যাদুঘরে রাখার সময় এসেছে. এ প্রজন্মের কোন সেনা-অফিসারের মুখে গালিটি শুনা বিরল অভিজ্ঞতার ব্যপার হবে. জাতি হিসাবে যখন চারিত্রিক অবক্ষয়ের প্রলয়স্রোতে গা ভাসাচ্ছি, তখন সেনাবাহিনীর এই উত্তরণ অভিনন্দিত হোক. আর একটি বিষয়, কোন একজন ব্লাডি শব্দটির এক নৃশংস ব্যাখ্যা দাড় করিয়েছেন, চরম অশ্লীল বিধায় উল্লেখ করতে পারছিনা. তিনি সে ব্যাখ্যার উৎস জানাননি, আমিও কোথাও খুঁজে পাইনি. যাহোক, ব্লাডি শব্দটি সাধারণভাবে তিরস্কার অর্থে ব্যবহৃত হয় (Used for disapproving emphasis – WordWeb Dictionary).

৩. * রাগ ইমন রেপ ইত্যাদি বিষয়ে যা লিখেছেন, তা রূচিহীন, উদ্ধৃতির অযোগ্য. সেনাবাহিনী আমাদের বৃহত্তর সমাজেরই অংশ, যে সমাজ ঘুণে ধরা, যেখানে দূর্নীতি, সন্ত্রাস, যৌনাচার, নিপীড়ন প্রতিদিনই খবরের শিরোনাম হয়. তফাত্ হল, সেনাবাহিনীর আবদ্ধ সমাজে সামান্য একটি ঘটনাও মুহুর্তে ছড়িয়ে পড়ে পুরো সেনাপরিবারে, এমন কি কঙ্গোতে, লাইবেরিয়ায় এবং তা সজীব থাকে দীর্ঘ দিন. বেসামরিক পরিমন্ডলে এমন একটি ঘটনা মানুষ সহজে ভুলে যায়, এলাকা বদল হলেত কথাই নাই. কিন্তু সেনাবাহিনীতে অনেক বদলি হলেও, অনেক বছর পরেও এসব লিগ্যাসি থেকে যায়. এমন গল্প উৎসাহীদের মুখে মুখে ফিউশন পদ্ধতিতে ছড়ায়, এক গল্প অনেক রঙ মেখে, অনেক গল্প হয়ে. হাজার হাজার সেনা-অফিসারদের মাঝে এমন কোন ঘটনা ঘটবে না এটা যেমন অসত্য, তার চেয়ে ন্যাক্কারজনক হল আদিরসের বিষয়টিকে সেনা-অফিসারদের সাধারণ চরিত্রের অংশ হিসাবে তুলে ধরার ইচ্ছাটি. নিন্দা জানাই.

পাঠকদের অবগতির জন্য জানাতে চাই, এবং দাবি করছি, সেনাবাহিনীতে এ জাতীয় ঘটনা বেসামরিক পরিমন্ডলের চেয়ে অনেক কম, অংশত শৃঙ্খলার অনুশাসনের জন্য, অংশত সেনাসমাজে বর্ণিত করুণ পরিণতির জন্য.

* রাগ ইমন বলেছেন, '‘দুর্নীতি আর অত্যাচার যে কি পরিমান হয়, সেইটা সেনা অফিসারদের রেপ এর খবর যদি বাইরে প্রকাশ হত তাইলে পাবলিক সেন্টিমেন্ট কই যাইতো, আমার দেখতে ইচ্ছা করে'’.

সেনা অফিসাররা ভিনদেশ থেকে আসে নাই, তাদের মা-বাবা-ভাই-বোন-বন্ধুবান্ধব এ দেশেরই, সিভিলিয়ান. এমন যদি সত্যি খবর থাকত, তবে তা বাইরে প্রকাশ হতোই. বরং সব খবর চলে এলে রাগ-শূন্যদেরই লস –- পাবলিক সেন্টিমেন্ট ক্ষেপিয়ে মজা দেখার ইচ্ছাটি তৈরি হওয়ারও সুযোগ থাকতো না.

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০০৯ সকাল ১১:১৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×