somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একখান বুলগীয় আড্ডা আর কিছু আও ফাও কথার রোজনামচা!-২

২৭ শে জুন, ২০০৯ রাত ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একখান বুলগীয় আড্ডা আর কিছু আও ফাও কথার রোজনামচা!-১

যদিও শুভ্র ৫:৫৯ মিনিটে চইলা আসে আমাদের অফিসে আর এসেই আমাকে কল। কিন্তু আমি কল ব্যাক করি ঠিক ৬:১৫ মিনিটে আর বাইর হই ৬:২০ এ। অগোরার ঐসাইডে গিয়া একটা রিক্সা নিয়া শুভ্ররে আঙ্গুল দিয়া দেখাইলাম," দেখছো, কি ফরেন মাল, লম্বায় তুমার ডাবল না?"
: ধুরু খুব বেশী হইলে ১ ফুট লম্বা। আর তুমার চেয়েও তো অমুন হইবো!
: কে কইলো, আমি বুত জুতা পড়লে সালমান খান রাইখা The Great Khali সাইজ হইয়া যামু।
এইসব আউল ফাউল কথা কইতে কইতে গুলশান ব্রীজে রিক্সা ওয়ালা রিক্সা থামাইয়া কয়," নামেন দুইজনে!"
আমরা একটু তব্ধা খাইয়া চাইয়া রইলাম। কি দুষ করলাম যে রিক্সা ওয়ালা নামতে কইলো, শুভ্র বইলা বসলো," মামা চেতো কেন, এই বয়সেই এমুন আলাপ করুম। আপনের মতো বয়সে কি আর এইসব কথা কমু? তখন তো তজবী জপুম।
: আরে ধুরু মিয়া, এইখানে উচা ঢাল, আপনেরা নামলে আমি রিক্সা টাইনা নিয়া যাইবার পারি। আপনেগো মেলা ওজন!

আমি কথা না বাড়াইয়া হাসতে হাসতে নাইমা গেলাম, আর শুভ্র কেমুন জানি হইয়া গেলো।
এমুন সময় আবারও রিক্সওয়ালা জিগায়," যাইবেন কই?"
: (আমি আমতা আমতা করে) মনে হয় বনানী পোস্ট অফিস।
শুভ্র বইলা বসলো," মনে হয় মানে? তুমি কি চেনো না?"
: আরে না চিনি, মাগার প্লেসটার নাম খেয়াল নাই। চিন্তা কইরো না, জায়গা মতো যাইয়া সবই চিনুম। ১.৫ বছর আগের জিনিস ভুলি না।
শুভ্রর বিখ্যাত ঢোক গিলা শুরু হইলো। নানা তাংফাং অলিগলি পার হইয়া একখান বাড়ির সামনে রিক্সা থামাইয়া ভাড়া দিয়া বিদায় করলাম রিক্সাওয়ালা মামুরে। শুভ্র জিগাইলো," চলো বাড়িত ঢুকি!"
: খাড়াও, নাম খান মনে কইরা লই। কাল পুরুষ কইলে দারোয়ানের বাপেও চিনবো না। আসলডা যে কি হেইডাই ভুইলা গেছি।
: কালপুরুষ, এইডা আবার কিয়ের নাম? তুমি আমারে কই নিয়া আইলা?
: এত মাতম করো কেন? যতদূর জানি উনি রাজউকে চাকরি করে। ঐডাই জিগাই।
দারোয়ানের সামনে যাইতেই দেখি বুড়া একজন মুরুব্বী। তারে কইলাম," চাচাজান, ৪-৫ তলায় একজন থাকেন যিনি রাজউকে চাকরী করেন।"
: তা হয়তো করে।
: আমরা উনার বাসায় যাইতে চাই।
: (উদাস কন্ঠে) তা ভালো কথা, যাইতে যখন চান, যাইবেন।
আমি বুঝবার পারলাম না উনি কি যাইতে কইলো না আইতে কইলো। এমন সময় একজন কিউট চেহারার মহিলা আমাদের সামনে নামলেন। এমুন ভাব যে আমরা দুই যুবক খাড়াইয়া আছি সেইডা উনার চোখেই পড়লো না। আমি একবার হের দিকে, হেয় তাকাইলে শুভ্রর দিকে তাকাই আমি। দারোয়ান দেখি উদাস হইয়া আকাশ দেখতাছে। কি করুম বুঝতে না পাইরা আবারও জিগাইলাম,"চাচা, রাজউকের রাজা কই থাকে?"
: হ একজন তো থাকে, অনেক জনই থাকে।
বেতাল কথা শুইনা মহিলার দিকে তাকাইতেই দেখি আমার দিকে সন্দেহের দিকে তাকাইতাছে। আমার কেমন জানি ভয় লাগতাছে উনি আমারে ইন্সুরেন্সের দালাল মনে করে কিনা! তাও একবার সাহস নিয়া জিগাইতেই কইলো," আপনারা কি ব্লগ থেকে আসছেন।"
: হ, আমি ইন্টারনেট ব্রাউজ করি।
: তাইলে আসেন আমার লগে। চাচাজান, আমরা ৪ তলায় যাবো।
দারোয়ান রাস্তা থিকা দৃস্টি আমাগো দিকে তাকাইয়া কইলো," আপনেরা চাইর তলায় যাইবেন, আগে কইবেন তো, আমারে বইলাই গেছে তার কিছু গেস্ট আইবো। যান দুরত যান।"
আমি হাসুম না কান্দুম সেই ডিসিশন না নিয়া লিফটের দিকে আগাইলাম। মনের মধ্যে একটা কি জানি কইলো, মনে হয় আগেই আইসা মামু হইয়া গেলাম।
মাগার ছাদে উইঠা দেখি আমরাই মনে হয় লাস্টের দিকে আইছি! কত অচেনা চেনা নিকের চেনা অচেনা চেহারা, কেউ আসে রাইতের আন্ধারে, কেউ কয় কথা প্রচন্ড হাস্যমালা! শুভ্র দেইখা কইলো," আমি কাইকাই একখান নিক খুলুম!" যদিও আইজ পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী নিক খুলনের আগামী কাল এখনও আসে নাই!

আমার কি, খাইয়া দাইয়া ভূড়ি নাচাইয়া দিলখোশ!

পরিশিস্ট: কেউ হয়তো জিগাইতে পারেন ভূমিকা আছে উপসংহার আছে তাইলে বর্ণনা কই। এইডা নিয়া তাইলে একটা গল্প কই। কুটিকালে ৬ষ্ঠ ক্লাস থিকা যত বাংলা রচনা লেখছি ততডায় একটা ফর্মেট ফলো করতাম ভূমিকা আর উপসংহার। ভূমিকায় থাকতো পুরা ঘটনা আর উপসংহারে পুরাডাই আমার মতামত। তা সেই থিকা ১০০ মার্কের এ্যানসার কইরাও পাইতাম ৫০। আমাগো স্কুলে একটা ঐতিহ্য আছিলো বাংলা স্যারের। যারা ফেল বা কম মার্ক পাইতো তাগো ক্লাশে খাতা দেখাইতো আর বেত দিয়া পশ্চাদে পিটাইতো। দুর্ভাগ্যক্রমে ক্লাশ ৮ পর্যন্ত টানা বছরে দুইবার মাইর খাইতাম। বার্ষিক পরিক্ষার মাইর আমি বাসাতেই খাইতাম। যাই হোউক, ক্লাশ ৯ এ উইঠা পাইলাম পপি গাইড। আমারে দেখে কে রচনার চিপা চিপায় প্যারা দেওন শুরু করলাম। ফলাফল হাতে নাতে। বাংলা দ্বিতীয় পত্রে পাইলাম ৬৫। খাতা যখন দিলো তখন অভ্যাস মতো পিছনে ঘুইরা খাড়াইলাম। আমাগো স্যার যে মনে করতো বাড়ীতে রাইতের বেলার ব্যায়াম আমার হাতের বেত দিয়া শপাং শপাং বাড়ি দিয়া সাড়বো, সেও হতাশ হইয়া গেলো। তার পরের পার্বিকে পাইলাম ৭০। দ্বিতীয় হায়েস্ট মার্ক। আমাগো ক্লাশের ফাস্ট বয় যে টানা তিন বছর ধইরা ঐ স্হান ধইরা রাখছিলো, সে আমারে দেইখা কইলো," তুমার মাথা এতো দেরীতে খুললো কেন, বুঝলাম না!"
আমি কইছিলাম," তুমি কি আগেই জানতা?"
: হ, তুমার খাতা আমরা যখন প্রাইভেটে পড়তে যাই তখন আমাগো দেখইয়া কইতো এমুন বলদ সে কম দেখছে। ভালো লেইখাও যে কেমনে এমুন কইরা ফর্মেট ছাড়া লেখে এইডা আহাম্মক ছাড়া কারো পক্ষে সম্ভব না।
এই কথা শুনার সময় আমার রাগ করনের চাইতে একটু গর্ব ভাব হইছিলো। নিজেরে তখন বিদ্যাসাগরের কাছাকাছি জিনিয়াস মনে হইছিলো। তয় মনে হয় আমি আসলেই জিনিয়াস, কারন ঐ ফাস্ট বয় যতদূর শুনছিলাম ইন্টার পাশ কইরা প্রথমবার কোথাও চান্স না পাইয়া পরে একটা প্রাইভেট মেডিকেলে ভর্তি হয়। আর আমি সরকারীতে পইড়া আইজকা এইখানে। এখন ওরে আমার কেউ গুণাতেই ধরি না!

তা ভাবলাম এই আড্ডা খান এই ফর্মেটেই লেখি!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০০৯ রাত ১:২০
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহর সাহায্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৫ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪০



দুই মেয়ের পরীক্ষা বিধায় আমার স্ত্রীকে লক্ষ্মীপুর রেখে আসতে গিয়েছিলাম। বরিশাল-মজুচৌধুরীর হাট রুটে আমার স্ত্রী যাবে না বলে বেঁকে বসলো। বাধ্য হয়ে চাঁদপুর রুটে যাত্রা ঠিক করলাম। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডয়েজ ভেলে'র প্রকাশিত এই প্রামাণ্যচিত্রটি বেশ উদ্বেগজনক

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৫ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন বাহিনী থেকে প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকান্ডে যুক্ত সৈনিকদের ইউ.এন. এর পিস কিপিং মিশনে পাঠানোর বিষয়ে ইউ.এন. এর কর্মকর্তাগণ বেশ উদ্বিগ্ন। এ বিষয়ে ডয়েচ ভেলে ক'দিন আগেই একটি প্রামাণ্যচিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুলের চিন্তার কাবা প্রাচ্য নাকি পাশ্চাত্য?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে মে, ২০২৪ ভোর ৫:০৫


কাজী নজরুলের বড় বিপত্তি তিনি, না গোঁড়া ধর্মীয় লোকের কবি আর অতিমাত্রায় বামের কবি, না হোদাই প্রগতিশীলের কবি। তিনি সরাসরি মধ্যপন্থীর। অনেককেই দেখি নজরুলের কিছু কথা উল্লেখ করে বলেন কাফের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘূর্ণিঝড় রিমাল সর্তকতা।

লিখেছেন কাল্পনিক_ভালোবাসা, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩

প্রিয় ব্লগারবৃন্দ,
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমাল প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলোর ব্লগারদের কাছে যদি স্থানীয় ঝড়ের অবস্থা এবং ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীতে চিরতরে যুদ্ধ বন্ধের একটা সুযোগ এসেছিল!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৬ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৩


মনে হয় শুধু মানুষের কল্পনাতেই এমন প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন সম্ভব- যদি বাস্তবে হত তবে কেমন হত ভাবুন তো?
প্রত্যেকটি দেশের সমস্ত রকমের সৈন্যদল ভেঙে দেওয়া; সমস্ত অস্ত্র এবং সমর-সম্ভার, দুর্গ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×