somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিংগাপুর টুর আর অদীতি

২৪ শে জুন, ২০০৯ বিকাল ৩:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত কয়েক সপ্তাহ কাজের চাপে আর বাড়িতে গেস্ট থাকাতে লেখা হয়ে ওঠেনি।
গত দু তিন দিন ধরে অনেক সময় পাচ্ছি...আগামী ১লা জুলাই থেকে পুরো মাসটা আর একদম সময় পাবো না। ভিয়েতনাম যাচ্ছি প্রায় ১ মাসের জন্য।
কলকাতা থেকে বন্ধু এসেছিলো গত মাসে। প্রায় ৭ বছর পরে দেখা হলো। যোগাযোগ ছিল সবসময় ইমেইল এ। ওর মা আমার জন্য এচড়ের নিরামিষ, বুটের ডাল আর ছানা বানিয়ে পঠিয়ে দিয়েছিল ওর হাতে। এচড় আমার ভিষন প্রিয়। বুভুক্ষের মত তাই দিয়ে ভাত খেলাম। আমার বন্ধুটির নাম অদীতি।


অদীতিকে নিয়ে নতুন করে সিংগাপুরে টুুর করে বেড়ালাম। দুজন মিলে বার্ড পার্কে গেলাম .......


হেটে হেটে গল্প করলাম আর মাজার মজার ছবি তুললাম।

পখিগুলোকে কাধে বসিয়ে খাওয়ালাম। নানান রঙের টিয়ে দেখে সত্যিই অবাক হতে হয়। মজা লাগে ওদের রং দেখে।

পালকের রং যে এত লাল হয় আগে কখন দেখিনি।










আফরিকান কুড়ে ঘড় আর নানান রকম পাখির মাঝে আমাদের হাড়িয়ে যাওয়া ২/৩ ঘন্টার জন্য।






যদিও আমি আগে গেছি তবু আসাধারন লাগল অদীতির সাথে ঘুরতে।




প্রচুর ছবি তুললাম পাখিদের আর আমাদের দুজনের।






জানিনা আবার কবে দেখা হবে।


অদীতির খুব মিউজিয়াম প্রিতী আছে। ওকে নিয়ে গেমাল এশিয়ান সিভিলাইজেশন মিউজিয়ামে।


চমৎকার করে অরগানাইজ করা মিউজিয়ামটি। অসাধারন লাগম শত বছর আগের রাজা রানিদের জুয়েলারি, পোশাক আর জীবন যাপনের স্টাইল দেখে। কতরকমের কালচার আর জীবন প্রনালী পেরিয়ে আজ আমরা এখানে দাড়িয়ে। পুরোনো দিনের সিংগাপুরের সাদা কালো ছবি গুলোর মাঝে আজকের সিংগাপুরকে খুজতে মজা লাগল।


ওদের একটা ছোট্ট দোকান আছে মিউজিয়ামটির নিচতলায়। ওখানে ওরা ইতিহাস ও মিউজিয়াম রিলেটেড জিনিস পত্র আর এ্যনটিক বিক্র করে। হঠাৎ করে চোখে পরলো আমার ডিজাইন করা একটা বইয়ের উপর। কয়েক বছর আগে আমি এশিয়ান সিভিলাজেশন মিউজিয়ামের একটা বই ডিজাইন করেছিলাম। বইটি বিক্ষাত চাইনিজ পেইন্টং কালেকশনের উপর। বইটির নাম "The Xiang Xue Zhuang Collection" বইটি মিউজিয়াম সংরক্ষন ও বিক্র করছে। আমার ডিজাই করা একটি বই সিংগাপুরের এশিয়ান সিভিলািজেশন মিউজিয়াম সংরক্ষন ও বিক্রি করছে এই কথাটা ভাবতেই আমার সারা গা সিন সিন করে উঠলো। সেখনে আমার নাম পর্যন্ত লেখা আছে....আহ্ ভাবা যায়!!! :(( আমার চখে পানি এসে যাবার মত ব্যপার। বইটি কিনে ফেললাম আর জানলাম ঐ পাবলিকেশনের শেষ বই ছিল ওটা সব শেষ হয়ে গেছে। বইটি নিয়ে ক্লিফ আর অদীতিকে দেখালাম। ওরা দুজনেই অবাক হলো। ক্লিফ বললো "তুমিতো কখনো বলনো তুমি এত বড় একটা কাজ করেছ" ভাবলাম মনে মনে আরে দুর আমিকি নিজেও জানতাম আমি এত বড় একটা কাজ করছি যেটা যত্ন করে মিউজিয়াম সংরক্ষন করবে :D!!! ভাল লাগায় মন ভরে গেল। দেশের হয়ে খুব গর্ব বোধ করলাম এই ভেবে একজন বাংলীর কাজ সিংগাপুর এশিয়ান সিভিলাইজেশন মিউজিয়ামে রাখা হয়।

এর পর অদীতিকে নিয়ে গেলাম বিক্ষাত মালায়ন দেখাতে।


পথে পরল ডুরিয়ান বিলডিং যেখানে সিংগাপুরের থিয়েটার গুলো।


ওখান হয়ে বোটকি আর ক্লার্কির পুরোনো দিনের রংবেরং এর দোকান গুলো দেখাতে নিয়ে গেলাম যেখানে একসময় সওদাগড়রা ব্যবসা বানিজ্য করত ঘাটের পাশে নৌকা বেধে।


পানশালা, রক্ষিতা আর বারবনিতাদের আখড়া ছিল।




আজ সেখানে জমকালো বার, ক্লাব আর রেসটু্রেন্ট সেই একই বিলডিংএর উপর রেনোভেট করা।


আর তার পাশে গরে উঠেছে নতুন নতুন আকাশ ছোয়া দালান কোঠা নিয়ে নতুন সিংগাপুর!!




সিংগাপুর পুরোনো দিনের কোন ইতিহাস কে ভেংগে নতুন সিংাপুর গরে নি, বরং পুরনো গুলোকে একই রকম ভাবে সংরক্ষন করে তার পাশে নতুন আর আধুনিকতাকে গড়ে তুলেছে।


পথে দেখা হলো এক নব বিবাহিতা মালেয় দম্পতির সাথে ওদের বিয়ের পোশাকে।



অসাধারন লাগল নতুন করে সিংগাপুরকে দেখতে অদীতির সাথে।

১৫ দিন পর অদীতি চলে গেল। এয়ার পোর্টে গেলাম ওকে তুলে দিতে। দুজনেই কান্না লুকিয়ে দুজনকে বিদায় দিলাম মন খারাপ করবেনা এই কথা দিয়ে। শেষটায় সেটা পারা গেল না। ভেউ ভেউ করে দুই বুড়ি এয়ার পোর্টে দাড়িয়ে কাদছে আর সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে....কি হাস্যকর ব্যপার!!X( বাড়ি ফেরার পথে বার বার গত ১৫ দিনের স্মৃতি নাড়া দিতে থাকল মনের ভেতর বিশাল এক শুন্যতা নিয়ে।

আপনাদের সাথে সিংগাপুর আর অদীতিকে শেয়ার করলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০০৯ সকাল ৯:৪১
৭২টি মন্তব্য ৭১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×