somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাঠ প্রতিক্রিয়া

২১ শে জুন, ২০০৯ সকাল ৮:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কবিতার কথকতা
জীবনের খণ্ড খণ্ড ছায়াগুলো যেভাবে ছায়াছবিতে ফুটে ওঠে, তেমনি জীবনের বর্ণিল কথকতাগুলোকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে ফ্রেমে বেঁধে রাখা আত্মহনন-আত্মলব্ধির জাল খুঁটে খুঁটে কল্পকথাগুলোকে ছেনে-সেঁনে দেখার একটি নিরন্তর চেষ্টা থেকেই কি জন্মে এক-একটি কবিতা? তবে এটাই সত্য যে- সব লেখা বা বলার পদ্ধতি এক নয়; হওয়াও কখনো সম্ভব নয়। পাঠানুভব পাঠক ভেদে ভিন্ন হয়। আর আমি জীবনের ভেতর লুকোচুরি খেলতে খেলতে কবিতায় নিজেকে খুঁজি জীবনানন্দ যখন বলেন- কবিতা আর জীবন একই জিনিষের দুই রকমউৎসরণ; ফজলুররহমান বাবুল যখন লিখেন- কিন্তু কবিতা কি? কেন কবিতার গহন-যাত্রা জীবনে-জীবনে ? জয়গোস্বামী নিজেকে উপলব্দি করে যখন বলেন- জীবন নিয়ে এক লাইনও লিখা অসম্ভব... বুদ্ধদেব বসুর ‘শীত রাতের প্রার্থনা’র’ শেষ স্তবক থেকে যদি বলি- শূন্যতার অজ্ঞাত গহব্বর থেকে নবজন্মেও জন্য প্রার্থনা করো, প্রতীক্ষা করো, প্রস্তুত হও।...

‘কবিতা সময়ের পাঠ নাকি সময়কে পাঠ করা?' কবিতা দ্বিধার আড়াল থেকে প্রাণের ভেতর একরৈখিকতায় ঘুরে ফেরে ঘোর সময়কে আবদ্ধ করে, বৃত্তের ফাঁকে সীমাবদ্ধ করে রাখে তাও বলা যাবে না; হতে পারে না-বলা কথা ও কল্পনা। যদি বলি-একটাই তো জীবন তাকে আর কতটুকু ভেঙে ভেঙে দেখলে নিজেকে হবে জানা, বিপরীত হতে পারে, না-হলে বিরহকাত দিনটিও কেটে যাবে একেলা, মোহ ধরে বেঁচে থাকার বাতুলতা।

আসলে কবিতা কী? শুধুই নিজেকে ভেঙেচুরে দেখা কিংবা প্রাণের অতলে ডুবে নিজেকে উপলব্দি করার প্রাণান্তর চেষ্টা... তারচে’ বেশি জানি না। কবিতাহীন জীবন মনে হয় স্পর্শহীন নিঃসঙ্গী; যেন অকাতরে ঠেলে যাচ্ছি জীবন, কিছুই জানে না মনভোলা সময়, শোকপাখি।

কবিতা কাকে টানে? কবিতা কাকে খুঁজে? কবিতা কাকে গ্রেফতার করে? কেনো করে? কবিকে না পাঠককে? সে প্রশ্ন কাকে করবো? আমার আসা-যাওয়া, আমার পথ চলা আমার আহার-তন্দ্রা, কে আমাকে বেশি ভালোবাসে, কে আমাকে কাছে টেনে হিমের ভেতর ঘুম পাড়িয়ে রাখে, যদি বলো উত্তর পাবেন কবিতা!!! কবিতা মনের ঘরে হাসে, কাঁদে, কথা বলে, ঘুমোঘোরে আমাকে জাগিয়ে রাখে। কবিতা কখনও জ্বালায়, কখনও পোড়ায়, কখনও-বা নিঃসঙ্গ করে রাখে!!! কবিতা মাথা ব্যথার কারণও হয়! কবিতা রোগমুক্তির কারণও হয়, আবার কবিতা আমাকে শান্তি দেয়, তৃপ্তি দেয়, দীর্ঘশ্বাসের ভেতর আত্নকথা লুকিয়ে রাখি, সে আমার ভেতর হাসে-কাঁদে আমাকে ঘুমের বড়ি পাঠায়।

কবিতার ভেতর কি এমন মায়া আছে যা পাঠককে কাছে টানে, কবিরা মনের কথা গেঁথে সাজিয়ে রাখে কবিতার পরতে পরতে…। আমি কি জানি কবিতা কিভাবে পাঠককে টেনে রাখে? জানিনা। কবিতা মনের না বলা কথা তাও বলা যাবে না। কবিতার তুমি-টা কে? সে রহস্য আজো অজানা। কবিতার গতি আছে, প্রকৃতি আছে।কবিতা রূপসী হয়, কবিতা জানালায় উঁকি দ্যায়, কবিতা কখনো জ্বলে, কখনো নিভে, কখনো দ্যোতনা ছড়ায়। কবিতা আমাকে পথে নামায়, বে-পথেও ছড়ায়! কবিতা শ্রেষ্ট সময়ের অভিব্যক্তি, শ্রেষ্ট সময়ের ধারণা।

রাত্রি গভীর হলে নিঃসঙ্গতা জানালার শিক বেয়ে ওঠে, আহ্লাদ তার নিকট যাবার তীব্রকাঙ্কা চাখে প্রেসারকুকারে; ইচ্ছেকথা একারে থাকে না হরনিয়া চোখে; তখনই প্রতিযোগিতা শুরু… আলো-অন্ধকার যদি জলতেলহীন ফ্রাই হত তবে বলতাম ধরো দেওয়াল নাও,খোলো গোপন টান; রসাবেগ সুনসান হলে আমাকে বলো নিঃসঙ্গকাহন। কার ইচ্ছে আমাকে দাঁড়িয়ে রাখে? কতদূর এগুলে ব্যথা নাক সিঁটকে ওঠে মনবাগানে। কার ইশারা নিজের ভেতর সম্পর্কশূন্যতা বাড়ায়… টানা অন্ধকারে তারাগুলো নাই ফুটুক আমি ঢেকে ফেলবো শেষরাত্রিকে দেহের বল্কলে।চেতনা আমাকে অন্ততঃ টেনে নিয়ে যাক দংশনের দিকে।

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১১ ভোর ৫:১৫
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×