somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ফকির ইলিয়াস
আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

বারাক ওবামার কায়রো ভাষণ ও পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্টতা

১২ ই জুন, ২০০৯ ভোর ৬:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বারাক ওবামার কায়রো ভাষণ ও পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্টতা
ফকির ইলিয়াস
========================================
বারাক ওবামার মধ্যপ্রাচ্য সফর নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। আমেরিকা কি বদলে যাচ্ছে? নাকি বারাক ওবামা নিজ প্রচেষ্টার একটা শান্তি প্রক্রিয়ার শুরু করতে চাইছেন। প্রেসিডেন্টের কথায় দৃঢ়তা বেশ স্পষ্ট। 'চলুন-আমরা শুভকাজের শুরুটা করি'। হাঁ, শুরু তিনি করতে চাইছেন। এতে সন্দেহ নেই কারও। তারপরও তার সীমাবদ্ধতা আছে, তাও সবার অজানা নয়।
ওবামা সৌদি আরবে প্রাণঢালা সংবর্ধনা পেয়েছেন। কায়রো ভাষণ শুরু করেছেন আরবি ভাষায় সালাম জানিয়ে। উদাহরণগুলো মনে রাখার মতো তো বটেই, নতুন যাত্রা শুরুর এই মহানুভবতা, একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের মনের কথা হলে তা অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার দাবিদার। কায়রো ভাষণে প্রেসিডেন্ট ওবামা যে ক'টি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন তা নিয়ে কিছু পর্যালোচনা প্রয়োজন।
প্রেসিডেন্ট বলেছেন, সমস্যা সমাধানে খোলা সংলাপ প্রয়োজন। পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা করে উদার মন নিয়ে বসে আলোচনা করতে হবে। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সব উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আগ্রহী। তাই প্রয়োজনে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের অবশ্যই রক্ষা করে এগুবে। এ ব্যাপারে যেসব মুসলিম দেশ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছে তাদের সঙ্গে পার্টনারশিপ গড়েই যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে যেতে চায়।
ওবামা বলেছেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই বলে আমরা আমাদের মত চাপিয়ে দিতে বিশ্বাসী নই। সেই দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে দেশটি তাদের ইচ্ছানুযায়ী কোন পদ্ধতিতে চলবে। তবে গণতন্ত্রই সর্বোত্তম পন্থা- তা আমরা সব সময় বলে যাব। তিনি আরও বলেছেন, বিশ্বশান্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে অবশ্যই। মনে রাখা দরকার, একটি যুদ্ধ শুরু করা সহজ। কিন্তু তা শেষ করা খুবই কঠিন কাজ। ঠিক তেমনি, না পারার জন্য অন্যকে দোষারূপ করা সহজ কিন্তু ভেতরের অবস্থা অনুধাবন করা দুরূহ কাজ। তাই বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার 'সহজ' পথের সন্ধান না করে 'সঠিক' পথের সন্ধান আমাদের করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই।
ওবামা যে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণটি দিয়েছেন, তা কি বিশ্বমানবের আস্থা অর্জনের সমর্থ হবে? এই প্রশ্নটিও আসছে পাশাপাশি। এ বিষয়ে আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্সের মুখপাত্র জিয়াদ রামাদান বলেছেন, ইসলাম যে প্রকৃত অর্থেই শান্তির ধর্ম, ওবামার ভাষণ সে কথা আমাদের আরও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। ইসলামের প্রকৃত মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার মাঝে শান্তি নিহিত।
ওবামার কায়রো ভাষণের বিভিন্ন বিশ্লেষণ হচ্ছে মুসলিম বিশ্বে। অভিজ্ঞ ইসলামী তাত্তি্বকরা মনে করছেন এই গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ উদ্ভূত সমস্যাগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টই চিহ্নিত করতে পেরেছে। কিছু দুর্বৃত্তের খারাপ কাজের জন্য গোটা মুসলিম জাতিকে দোষারোপ করা উচিত নয় বলে ওবামা যে বক্তব্য রেখেছেন তা ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে। মুসলিম বার এসোসিয়েশন অব নিউইয়র্কের সদস্য ব্যা. আজিম রেহমানের মতে, ওবামা যথার্থ বক্তব্যই দিয়েছেন বর্তমান সময়ের আলোকে। ইনার সিটি মুসলিম একশন নেটওয়ার্কের মুখপাত্র ইব্রাহিম আবদুল মতিন বলেছেন, এটা ওবামা প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী ভাষণ। এই বক্তব্য পারস্পরিক বিশ্বাস স্থাপনে সমর্থ হবে। তিনি বলেন, ওবামা তার বক্তব্যের মাধ্যমে বিশ্বমানবের সম্মান কুড়িয়েছেন। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে শান্তিময় করে গড়ে তুলতে হলে এরকম অংশীদারিত্বের কোন বিকল্প নেই। ইসলামিক সেন্টার অব নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির হারুন মোগলের মতে, ওবামা যে দরোজা উন্মুক্ত করতে চাইছেন এটাকে সবার স্বাগত জানানো দরকার।
দুই.
ওবামা সৌদি আরবের বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠক হয়েছে পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে। উভয় পক্ষই বলেছে, সৌদি-মার্কিন বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। তা বজায় রেখে দুটি দেশ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাবে। এই পারস্পরিক স্বার্থটি কি? এই স্বার্থটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি রাজ পরিবারের পরিবারতন্ত্র বহাল রাখতে সর্বপ্রকার সহযোগিতা দেবে। কিংডম অফ সৌদি আরবের ঝাণ্ডা সমুন্নত রাখতে সব সাহায্য করে যাবে। বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের কাছ থেকে পাবে খনিজ সম্পদ সস্তা মূল্যে। মনে রাখা দরকার বিষয়টা যতটা নৈতিক তার চেয়ে বেশি ব্যবসায়িক। মার্কিনি শীর্ষ নীতিনির্ধারকরা গণতন্ত্রের কথা বললেও সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান এর রাজ প্রথাকে সমর্থন করেই যাচ্ছেন। দেখা যাচ্ছে কমিউনিজম এই গণতান্ত্রিক প্রবক্তাদের যতটা চক্ষুশূল কিংডম তাদের কাছে ততটাই প্রিয়। ওবামা রাষ্ট্র পরিচালনায় সেই দেশের মানুষের মতের প্রধান্যের কথা বললেও রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে কোন কথাই বলছেন না- তার পূর্বসূরি মার্কিন প্রেসিডেন্টেদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে।
মধ্যপ্রাচ্য তথা মুসলিম বিশ্বের শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রধান অন্তরায় হচ্ছে ইসরায়েল-প্যালেস্টাইন যুদ্ধ। এটা সব নেতাই স্বীকার করেন এক বাক্যে। তারপরও দীর্ঘদিনের এই যুদ্ধের অবসানে আন্তরিক কোন উদ্যোগ নেই। জেরুজালেম মুসলমান এবং ইহুদি উভয় ধর্মাবলম্বীদের পুণ্য স্থান। সেই কারণেই এই ভূমিটি নিয়ে যুদ্ধ চলছে দুই পক্ষের আত্মসম্মানের প্রতীক হিসেবে। এই সমস্যাটির স্থায়ী সমাধান করতে হলে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমঝোতা দরকার। সে জন্য সুমলিম ধনী দেশগুলোরও সহযোগিতা এবং সুবিবেচনা প্রয়োজন। এখানে স্মরণ রাখা দরকার বারাক ওবামা বললেই যে মধ্যপ্রাচ্যের সহিংস গ্রুপগুলো আক্রমণ বন্ধ করবে তা ভাবার কোন অবকাশ নেই। বিন লাদেনের আল-কায়দা অন্য যেসব গ্রুপের নৈতিক সমর্থন পাচ্ছে সেই সম্পর্ক ছিন্ন করার প্রয়াস নিতে হবে। আর তা সম্ভব হবে আঞ্চলিক সমস্যাগুলো সমাধানের মাধ্যমে।
এটা অত্যন্ত সত্য, যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে সরাসরি সমর্থন করছে এরা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটি অংশ। এদের জনপ্রিয়তা নেই তো বটেই বরং মুসলমানদের কাছেই তারা ঘৃণিত। ওবামা তার কায়রো ভাষণে বিশ্ব সভ্যতার দ্বার উন্মোচনে ইসলাম ধর্মের আলোকিত ভূমিকার কথা স্মরণ করেছেন। এই সত্য যে কোন বিশ্ব নেতাকে করতেই হবে। কারণ কট্টরবাদিতা ইসলাম কখনই সমর্থন করেনি, করবেও না।
এখানে যে কথাটি বলা প্রয়োজন তা হচ্ছে এটা বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে, যুক্তরাষ্ট্র গোটা বিশ্বে একটা স্থিতিশীলতা চাইছে। তারা চাইছে ক্ষমতার স্নায়যুদ্ধ বলবৎ থাকলেও পরস্পরের মধ্যে সম্মানবোধ এবং রক্তপাতহীন একটি সমঝোতা যেন প্রতিষ্ঠিত হয়। এই হাত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাড়িয়ে দিয়েছেন ঠিকই কিন্তু তা কার্যকর করা যাবে কতটুকু? এর মূল প্রতিবন্ধকতা হিসেবে যে বিষয়টি প্রধান তা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক। যুক্তরাষ্ট্রের মোট একশ'জন সিনেটরের মধ্যে সিংহভাগই অন্ধভাবে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করেন। এই বিষয়টির পরিবর্তন প্রয়োজন। কারণ ইসরায়েল কোন মতেই যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ কোন অঙ্গরাজ্য নয়। অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি এক ধরনের মধ্যপ্রাচ্যনীতি থাকলেও ইসরায়েলের প্রতি এর ব্যতিক্রম কেন? তারা যুক্তরাষ্ট্রে বড় বড় ব্যবসা, মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের মালিক সে জন্য তাদের প্রতি এত সমর্থন?
আমি স্পষ্টত মনে করি, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়ে গেলেই মধ্যপ্রাচ্য শান্তির সুবাতাস বইবে। আর তার ব্যাপকতার প্রভাব পড়বে গোটা মুসলিম বিশ্বে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তার পূর্ণ বাস্তবায়ন প্রয়োজন। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ফিলিস্তিনিদের হাতে পূর্ণাঙ্গভাবে ন্যস্ত করা উচিত। আর তা হলেই সহিংসতা অনেকাংশ হ্রাস পাবে সন্দেহ নেই।
নিউইয়র্ক, ৮ জুন ২০০৯
--------------------------------------------------------------------
দৈনিক সংবাদ।ঢাকা। ১২ জুন ২০০৯ শুক্রবার প্রকাশিত
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০০৯ ভোর ৬:০৬
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×