জনৈক ছাত্রকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, “নিউটন বসে ছিলেন এবং ঠিক তার পাশের গাছ থেকে একটা আপেল পড়ল, এতে কী প্রমাণ হলো?” ছাত্রটির বিন্দাস জবাব, “প্রমাণ হলো, গাছটি আপেল গাছ ছিল”। দুরন্ত ঝড়ে এদিক-ওদিকে গাছ পড়ে শহর জীবন লন্ডভন্ড করে দেবার পর কলকাতার মেয়র ঠিক একই ভঙ্গিতে বললেন, “প্রমাণ হলো, কলকাতায় প্রচুর গাছ আছে”। নিশ্চিত থাকুন, এ সব শুনলে ‘মোদি’-ফায়েড আই.পি.এল. এর অন্যতম মহাতারকাও মিহি গলায় বলে উঠতেন, “আইলাআআআআ”। তথাকথিত ‘--জীবি’রা, তা সে যে পক্ষেরই হোক না কেন, অকাতরে এমন সব অমৃত বাণী বিতরণ করেন আর প্রকৃত জি.বি.(গ্র্যাজুয়েট বেকার)রা ওই জি.বি. (জলবৎ )ব্যাখ্যায় ‘জিয়া জ্বলে’র মুখরায় ফাঁটা রেকর্ডের মতো আটকে থাকেন প্রতিদিন। ওদের অবস্থা, এককথায়, আমাদের দু’টাকার নোটের মতন। আছি অথচ নেই।
দিনকয়েক আগের কথা। ভুবনেশ্বরের রাস্তায় ছাত্রদের একটা মিছিল। খুব কৌতুহল হলো, ওদের মিছিলে ঠিক কী বলে শোনার জন্য। মিছিলের মধ্যমণি এক ছাত্র। ইন্টারন্যাশনাল রোগা। পকেটে নির্ঘাৎ পাঁচ টাকা বাড়তি রাখে। ওর থেকে রোগা আর কাউকে দেখলে ওই পাঁচ টাকা হাত বদল হবার কথা। আর ঝড় উঠলে পকেটে পেপার ওয়েট। সে গলার আওয়াজ যথাসম্ভব তুলে, “পাঠো করিবো, পাঠো করিবো, পাঠো করিবার সুযোগ দিও”। সঙ্গে সাথীরা একযোগে, “হে মোর দাবী”। এর পর, “মাতৃভাষা মাধ্যমো শিক্ষানীতি চালু করো”, “হে মোর দাবী”। একদম শেষে, “শিক্ষা শেষো নকোরী দিও” এবং “হে মোর দাবী”। শেষ স্লোগানটায় স্পষ্ট হলো, জি.বি.র কষ্ট ওখানেও একই রকম। মনে পড়ল কলেজ জীবনে মজা করার জন্যে, এলগিন রোড ধরে গল্প করতে করতে চলা একঝাঁক উড়িষ্যাবাসীর একজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “ভায়না, সে এলগিন রোডো কৌটি পড়িব?” ঝটপট উত্তর ছিল, “সে মু কই পারিব নি”। আজ বুঝি, ওই উত্তরে একটা স ত্যি কথা লুকিয়ে ছিল/আছে। আমরা যে রাস্তা ধরে হাঁটছি, কেউই বোধহয় তার সঠিক নাম জানি না।