somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এদেশে যুদ্ধাপরাধীদের ভোট নাই....

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাহাত্তরের দালাল আইন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে সাজাপ্রাপ্তরা ভোটার হতে পারবেন না। এতে তারা দেশের সকল নির্বাচনেও অযোগ্য হবে। এ লক্ষ্যে ভোটার তালিকা (দ্বিতীয় সংশোধন) আইন, ২০১৩ চূড়ান্ত করেছে মন্ত্রিসভা। সচিবালয়ে সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া দেশের সকল নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এতে ১৮ বছরের নিচের যে কোন নাগরিকও জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে পারবে।
ভোটার তালিকা আইন সংশোধন হলে দেশে দালাল আইন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে সাজাপ্রাপ্তরা চিরদিনের জন্য ভোটার হওয়ার যোগ্যতা হারাবে। আর সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে যারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে তারাও বাদ পড়বে। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী বাংলাদেশের জাতীয় বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলে অবশ্যই ভোটার তালিকায় তার নাম থাকতে হবে। ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে বা ভোটার হওয়ার যোগ্যতা হারালে তাঁরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। সে হিসেবে দালাল আইন বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে সাজাপ্রাপ্তরা আর কোন দিন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে ভোটার তালিকা আইনটি নিয়ে আলোচনা উঠলে পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, দালাল আইন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে সাজাপ্রাপ্তদের নাগরিকত্ব বাতিলের দাবি জানান। তাঁর এই বক্তব্য ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাদের নাগরিকত্ব হরণ করলে বাংলাদেশে তাদের আর কোন অপরাধের বিচার করা যাবে না। তাই তারা এদেশের নাগরিক থাকবে কিন্তু ভোটার তালিকায় তাদের নাম থাকবে না। এতে তারা যেমন ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না, তেমনি কোন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের বলেন, এ আইন কার্যকর হলে বাংলাদেশ বাহাত্তরের দালাল আইন (কোলাবোরেটর স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল এ্যাক্ট-১৯৭২) এবং ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম এ্যাক্টে দ-প্রাপ্তরা বাংলাদেশের ভোটার হতে পারবেন না।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতেই দালাল আইনে দ-িতদের ভোটার হওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এতে বলা হয়, কোন ব্যক্তি সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকাভুক্ত হতে পারবেন, যদি তিনি ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন কোন অপরাধের জন্য দ-িত না হয়ে থাকেন। আর সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রেও তাদের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ভোটার তালিকা আইনে এ বিষয়টির উল্লেখ না থাকায় নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবে আইনটি সংশোধনের জন্য মন্ত্রিসভায় তোলা হয়।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১৯৭২ সালের দালাল আইনে দ-িত ৪৭ জনকে বাদ দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রকল্প অফিসে নাম পাঠানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়। রায়ে এ পর্যন্ত ছয়জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, যাদের চারজন মৃত্যুদ- পেয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা গোলাম আযম, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, কাদের মোল্লা, মোঃ কামারুজ্জামান ও আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের মধ্যে শেষ ব্যক্তি ছাড়া সবাই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেছেন। আপীল বিভাগে ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল থাকলে তাদের আর ভোটাধিকার থাকবে না।
অনুমতি ছাড়া পরিচয়পত্রের তথ্য প্রকাশ নয় ॥ ১৮ বছরের কম বয়সীদেরও জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে ‘জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন (সংশোধন) আইন, ২০১৩-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ ছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬ মাস আগে পুনর্নিবন্ধন করার নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এক্ষেত্রে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বা পরে জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়ন করা যাবে।
কোন ব্যক্তি বা নির্বাচন কমিশনের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী বিনা অনুমতিতে ভোটার তালিকা বা জাতীয় পরিচয়পত্রসংক্রান্ত্র তথ্য বা উপাত্তের বিষয়ে গোপনীয়তা লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদ- ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে। তবে আইন মেনে নির্ধারিত পদ্ধতিতে কমিশন থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা যাবে বলে সচিব জানান।
পাশাপাশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করার প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের বলেন, গত আগস্টে এ অধ্যাদেশে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। এই অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করার প্রক্রিয়ায় সংসদে পাঠানোর জন্য এবার ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন,২০১৩’-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
গত ২৯ আগস্ট অধ্যাদেশ অনুমোদনের সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছিলেন, এ আইনে শাস্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করে ন্যূনতম ৭ বছর এবং সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে সর্বোচ্চ ১০ বছর সাজার বিধান ছিল। এছাড়া নতুন আইনে কিছু অপরাধ জামিন অযোগ্য করা হয়েছে। আগের আইনে সব অপরাধ জামিন যোগ্য ছিল বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান। খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে তথ্য নষ্ট করা, অনুমতি ছাড়া ডেটা হস্তান্তর, হ্যাকিং, ইলেকট্রনিক্স মাধ্যমে অশ্লীল ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশের মতো অপরাধ এ আইনের আওতায় পড়বে।
ব্লগার মশিউর রহমান বিপ্লব, সুব্রত অধিকারী শুভ, রাসেল পারভেজ ও আসিফ মহীউদ্দিন; আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এবং মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান শুভ্রকে এ আইনের মামলাতেই গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এদের মধ্যে প্রথম চারজন বর্তমানে জামিনে আছেন।
আগের আইনে শাস্তির বিধান অপর্যাপ্ত ও অস্পষ্ট ছিল উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ‘অপপ্রয়োগ’ রুখতেই এ অধ্যাদেশ করা হচ্ছে।
‘আগের আইনে কিছু অপরাধ নন-কগনিজেবল ছিল। কিন্তু নতুন আইনে এটি হবে কগনিজেবল অর্থাৎ ওয়ারেন্ট ছাড়াই পুলিশ আসামিকে গ্রেফতার করতে পারবে।’
আগের আইনে মামলা করতে হলে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হতো। কিন্তু নতুন আইনে পুলিশ অপরাধ আমলে নিয়ে মামলা করতে পারবে।
ডিএনএ-সংক্রান্ত মিথ্যা তথ্যে সাজার বিধান ॥ ডিএনএ আইন-২০১৩-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর মাধ্যমে অপরাধী, ভাই-বোন শনাক্ত, বিচ্ছিন্ন মৃতদেহ শনাক্ত করার কাজ করা হবে। এ ব্যাপারে মিথ্যা তথ্য দিলে সাত বছরের কারাদ- ও দুই লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
বিনা নিবন্ধনে ট্র্রাভেল ব্যবসায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ॥ বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৩-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদনও দিয়েছে মন্ত্রিসভা। খসড়া অনুযায়ী, বিনা নিবন্ধনে ব্যবসা চালালে দুই মাসের কারাদ- ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।
এগুলোসহ মন্ত্রিসভার বৈঠকে মোট ১৩টি বিষয় নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্যগুলো হলো পল্লী বিদ্যুত বোর্ড আইন-২০১৩-এর খসড়া, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) আইন-২০১৩-এর খসড়া, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) আইন-২০১৩-এর খসড়া, অটিজমসংক্রান্ত আইনের খসড়া, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ (দ্বিতীয় সংশোধন) আইনের খসড়া।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×