ক'দিন আগে একটা আলোচনায় কথা হচ্ছিল নারীদের সামাজিক অবস্থান নিয়ে। তারা কি ঘরে বসে থাকবে? এমন প্রশ্ন উঠেছে৷ কোনো নারী যদি তার স্বাধীন সিদ্ধান্তে ঘরে থাকতে চায়, তার সেটা করার অধিকার আছে৷ পুরুষের ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য৷ কিন্তু আল্লাহ কোথাও বলেন নাই যে, নারীদের ঘরে বসে থাকতে হবে , বাইরের কাজ নারীরা করতে পারবে না৷ বরং আল্লাহ মূল দায়িত্ব নারী-পুরুষের একই দিয়েছেন৷ সূরা ' তওবা' র ৭১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে, নারী পুরুষের দায়িত্ব ৬টি৷ আয়াতটি এরকম: মোমেন পুরুষ এবং মোমেন নারী একে অপরের অভিভাবক (ওয়ালী) , একে অপরের বন্ধু, একে অপরের সাহায্যকারী (এই আয়াত কোরআন শরীফের সর্বশেষ সূরাসম হের একটি৷ উল্লেখিত বিষয়ে আগে যে সকল আয়াত আছে সেগুলোকে এই আয়াতের আলোকে ব্যাখ্যা করতে হবে)৷ এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, নারী পুরুষ একে অপরের অভিভাবক, গার্জিয়ান৷ অনেকে বলে যে, নারী গার্জিয়ান হতে পারে না৷ কিন্তু আল্লাহ বলেছেন, নারী গার্জিয়ান হতে পারবে৷ মূল কোরআনে এ ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য নেই৷ নারী-পুরুষের নির্ধারিত ৬টি ডিউটি হলোঃ
ক. তারা ভালো কাজের আদেশ দিবে৷
খ. মন্দ কাজের ব্যাপারে নিষেধ করবে৷
গ. উভয়ে নামাজ কায়েম করবে৷
ঘ. যাকাত দিবে৷
ঙ. আল্লাহকে মানবে৷
চ. রসুলকে মানবে৷
এসব কথার মাধ্যমে আল্লাহ নারীদের সকল ভাল কাজে অংশগ্রহণের কথা বলেছেন৷ এটাই ইসলামের নীতি৷ এ বিষয়ে আল্লাহ বলেছেন যে , যারা এই ৬টি দায়িত্ব পালন করবে তাদের ওপর আল্লাহ তায়ালা রহমত করবেন৷ কোরআনের তফসির পড়ে এবং ইস লামে নারির অবস্থান বিষয়ক বেশ কিছু অধ্যয়ন ও গবেষনা করে, পবিত্র কোরআন ও সুন্নাতে রাসুলে পুরোপুরি বিশ্বাসী একজন মানুষ হিসেবে আমি বিশ্বাস করি যে, এই ছয়টি দায়িত্বের মধ্যে নারী পুরুষ সবাই সমান৷ রাজনীতি , সমাজসেবা ইত্যাদি সব কাজই এ ৬টির আওতায় পড়ে৷
আজকাল ইসলামের মূল গ্রন্থ বাদ দিয়ে দেখছি ইসলামি বিষয়ে জানার জন্য মানুষের তৈরী বিভিন্ন কিতাবের ওপর নির্ভর হয়ে যাচ্ছে অনেকেই ৷ শেষে একটি কথা বলি , ইসলামকে যদি আপনারা অন্যের মাধ্যমে শেখেন , তবে কখনোও সঠিক ও নির্ভর যোগ্য understanding পাওয়া যায়না৷ কোরআনের তাফসির নিজে পড়তে হবে৷ অনেকে অনুবাদের মধ্যে তাদের নিজেদের কথা ঢুকিয়ে দেয়৷ ফলে একাধিক তাফসির এবং বই পড়লে বোঝা যায় কোথায় মানুষের কথা ঢুকছে; আর আল্লাহর কথাটা কি৷ কয়েক রকম ব্যাখ্যা পড়লে আপনি ঠিক করতে পারবেন কোন ব্যাখ্যাটা ঠিক৷ মেয়েদের মধ্যে বড় কোন তাফসিরকারক এখনও হয়নি জেনে খুব আফসোস হল ৷ এটা নারীদের ব্যর্থতা, নাকি পুরুষ শাষিত সমাজের নির্মম বাস্তবতা? যেটিই হোকনা কেন Islamic Scholar এবং তাফসিরকারকদের মধ্যে নারীদের অবস্থান থাকলে হয়তো কিছু typical হুজুরদের gender bias ওয়াজ করার সুযোগ কমে যেত৷
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০০৯ সকাল ৮:০১