আমাদের চোখ জুড়ে স্বপ্ন ঠেঁসে দেওয়া হয়নি। স্বপ্ন নামক শব্দটি আমরা নিজেরাই চিনে নিতে হয়েছে- বুঝে নিতেও। বড়বেশী অদ্ভুত ভাবে উল্লেখিত শব্দটি আমরা আবিষ্কার করি বালিকা ইস্কুল মোড়ের একটি বিলবোর্ড দেখে- একটি সোনালী হাত কাঁপছিল; আর আমরা দুইটি লিপষ্টিকস্নাত ঠোঁট লক্ষ্য করে এগুচ্ছিলাম। আমাদের পূর্বজরা যে এ রকম দৃশ্য দেখেননি, এমন নয়, বরঙ অনেক লিপষ্টিকাতর ঠোঁট তারাও নির্বিচারে রক্তাক্ত করে উত্তেজিত হয়েছিলেন। এবং লিপষ্টিকের কৃত্রিমতায় বিরক্ত হয়ে বিধান দিয়েছিলেন- স্বপ্ন বলে আসলে কিছু নেই; স্বপ্ন শয়তানের প্রলোভন মাত্র। আমরা মানতে পারিনি। ফলশ্রুতিতে অভিযুক্ত হতে হলো বিধিবদ্ধ নিয়ম ভঙ্গের গুরুতর অপরাধে।
#
অভিযুক্ত কয়েদীর চোখ থেকে খন্ড খন্ড ত-এরা উড়ে চলে গেলে যে যে দৃশ্যর অবতারনা হয়:
১) আশু সমাধানের আশায় সালিশি কর্মকান্ড শুরু হয়
২) চাঁদ থেকে চন্দ্রবিন্দু খসে গিয়ে নাসার টেলিস্কোপে ধাক্কা খায়
৩) মেয়েদের চোখে আশ্চর্য বোধক চিহ্ন পুনরায় প্রতিস্থাপিত হয়
৪) একজন বন্ধু তার শত্রুর জন্য চোখের জলে নাকের একাকার হয়ে ওঠে
৫) শাড়ীর প্যাচের মধ্যে মহিলারা আরো বেশী ঘনায়মান হতে থাকে
৬) দর্শনের সুত্র সমূহ থেকে একে একে বেরিয়ে আসেন আমাদের প্রিয় অপ্রিয় দার্শনিকগণ
৭) নায়কের পরাজয় দৃশ্যে দর্শকেরা হাত তালি দিয়ে ওঠে
৮) কেউ কেউ চোখ মোছে
৯) যে গান গায় সে মারা যায়, যে বেচে থাকে সঙ্গীত তাকে ছুতেও পারেনা
১০) সাহানার চোখের জল আশাবরিতে রূপ নেয়
#
আর এদিকে আমি ভালোবাসা পেতে পেতে বিরক্ত হয়ে উঠি এবঙ এক বৃষ্টি তাড়িত সন্ধ্যায় দিপু দা'র টি স্টল সংলগ্ন চেয়ারে বসে তিনটি ভেজা পাথর, কিম্বা স্বপ্ন অথবা নির্জলা মিথ্যা সিগারেটে অগ্নি সংযোগ করতে করতে অনন্ত নাস্তিতে ভরে ওঠে। সেখানে এক গাঢ় দৃশ্য থেকে জন্ম নিতে থাকে অস্তিত্বশীল মেঘ। পৃথিবীর আয়ানষ্ফিয়র থেকে যারা দেখে গলির অন্ধকারে শিউলি ফুলের ক্রমাগত নিঃস্পেশন, গাভীর পা বেয়ে বাঁটের দিকে ধাবমান দুধরাজের ক্ষিপ্রতা, মহিলা হোষ্টেলের পাশ দিয়ে রাতভর বনরাজের নিঃশব্দ পায়চারী, তারা আসলে কিছু নয়; আমাদেরই সংলগ্ন জীবন থেকে বিতাড়িত কিছু মেঘস্বর। ....
পাথরের অথবা স্বপ্নের শরীর থেকে শববাহী মানুষের গন্ধ নিয়ে জন্ম নেয় এই মেঘঘন কথারাশি। যার নাম কবিতা হলে কোন ক্ষতি ছিল না।