আমার ছোট ভাইয়ের পর্যবেক্ষণ শক্তি খুবই প্রখর। তারই কয়েকটা ঘটনা নিয়ে আজকের পোস্ট।
কেস স্টাডি-১;(বিছানার ঝাড়ু):
কয়েকদিন আগে আমার বড় বোন একদিন বিছানার ঝাড়ু খুঁজছিল। তো একটা চিকন-চাকন ঝাড়ু পেয়ে আমার ভাইকে জিজ্ঞাসা করল: "এইটা বিছানার ঝাড়ু না?" আমার ভাই সেদিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে বলল,"উহুঁ এইটা ঘর ঝাড়ু, দেখনা এইটার আগাটা কেমন বাঁকা!" কথা শুনে আমার বোন ওর দিকে ভ্যাবদা মেরে তাকিয়ে থাকায় ও হতাশ ভঙ্গিতে মাথা নাড়তে নাড়তে বলে,"এইটাও বুঝ না ঘরের চিপা-চাপা ঝাড়ু দিতে গিয়ে এইটার আগা বাঁকা হয়ে গেছে!!"
কেস স্টাডি-২;টিকটিকির হাগু!:
আমার ভাই তখন আরেকটু ছোট। সে একদিন একটা কাগজে করে টিকটিকির হাগু নিয়ে আমার বোনকে দেখিয়ে বলে,"দেখ হাগুটার এক অংশ সাদা আরেক অংশ কালো!" উত্তর হিসেবে আমার বোন ক্যালসিয়াম কার্বনেট জাতীয় বর্জ্যের কারনে এমন হয় এই টাইপ হাবিজাবি কিছু বলতে যাচ্ছিল। তখন আমার ভাই ওকে থামিয়ে বলল,"আমি সেটা জিজ্ঞেস করিনি, আমি বলতে চাইছি যে তুমি কি দেখেছ টিকটিকি যখন হাগু করে তখন এই সাদা অংশটা সব সময় আগে বের হয়?:-& এইটা কেন হয় সেইটা বল!" আমার বোন তখন আর কী বলবে!
কেস স্টাডি-৩;সব দোগুনে জোড়!:
এটা আরো আগের ঘটনা, ভাই আমার সবে ওয়ানে ভর্তি হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষার জন্য নামতা শিখেছিল সেটাই আওড়াতে আওড়াতে আমাকে একদিন বলে বসল,"বুঝলা, আমি খ্যাল (ছোট বেলায় সে খেয়ালকে 'খ্যাল' বলত) করছি যে সব দোগুনে গুলাই জোড় হয়!" মানে হল, ২ এর গুণিতক যত সংখ্যা আছে সবগুলাই হল জোড় সংখ্যা।আমি একটু দীর্ঘশ্বাস ফেললাম, কারণ আমার যদি নোবেল প্রাইজ দেওয়ার ক্ষমতা থাকত, তাহলে হয়তো এই পিচ্চি বয়সে এই কথা বলার জন্য আমি তাকে নোবেল প্রাইজ দিতাম।
কেস স্টাডি-৪;জাহাজ আবিষ্কার:
এটা আরো আরো আগের ঘটনা। পিচ্চির বয়স সম্ভবত সবে চারে পড়েছিল। সেই সময় নতুন নতুন গল্প শোনা আর রাজ্যের প্রশ্ন করা ছিল তার অন্যতম প্রধান কাজ! আমার ছোট চাচ্চু একদিন তাকে প্লেন আবিষ্কারের গল্প শোনাচ্ছেন,"বুঝলে বাবা, প্লেন আবিষ্কার হয়েছে পাখির আকাশে ওড়ার ক্ষমতা দেখে....." বাচ্চাটা মনোযোগ দিয়ে কিছুক্ষণ গল্প শুনতে শুনতে হঠাৎ বলল, "আচ্ছা কাকু,প্লেন আবিষ্কার হয়েছে পাখির আকাশে ওড়া দেখে, তাহলে কি জাহাজ আবিষ্কার হয়েছে হাঁস দেখে!!!!!!!!" :>
যথারীতি আমরা আবার..... কিংকর্তব্যবিমূঢ়!