somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: স্বপ্নের নদীর পাড়ে

২২ শে মে, ২০০৯ রাত ৮:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শারমিনের মনের মধ্যে একটা সেলেট আছে । হয়তো প্রতিটি মেয়ের মনের ভিতরেই একটা করে সেলেট থাকে। মনের ভিতরকার ওই অদৃশ্য সেলেটে কতকালের কত যে আঁকিবুকি; ওসব আঁকিবুকি এখন মোছা দরকার-অথচ মুছতে পারছে না শারমিন! বাঁচার স্বার্থেই মোছা দরকার । নাজনীনও আজকাল সেই কথাই বলে। বলে-বাচ্চাটার কথা একবার ভাব মলি। ওরও তো বাবার আদর দরকার। আর জায়েদের মত ছেলে হয় না। বাচ্চা মানে শারমিনের পাঁচ বছরের মেয়ে শান্তা। আর জায়েদ মানে নাজনীনের বর আশরাফের জার্মান ফেরৎ অধ্যাপক বন্ধু । আশরাফও ও তাই বলে। বলে, জায়েদের মত ছেলে হয় না। বয়সটাই যা একটু বেশি। কতই আর। এই ধর বিয়াল্লিশ-তেতাল্লিশ। কথাটা শুনে নাজনীন বলে- সো হোয়াট রাফি? মলিরও তো পয়ত্রিশ ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা। (নাজনীন শারমিনকে কী এক কারণে মলি বলে ডাকে। )
নাজনীনের বর আশরাফ আছে অক্সফামে;- উচুঁ দরের চাকুরে সে। জায়েদের সঙ্গে ইকোনমিক্সে পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে; পাশ করে জার্মানির হাইডেলবার্গ চলে যায় জায়েদ। থিসিস শেষ করে জয়েন করে হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে । ছাত্র পড়িয়ে, বই লিখে দিনগুলি কাটছিল তার। বিয়ে করেনি। দেশে ফিরবে না একরকম ঠিকই ছিল । ফিরল-গভীর এক রহস্যের অনুসন্ধানে...
নাজনীনও ‘মানবী’ নামে একটা নারীবিষয়ক শীর্ষস্থানীয় এনজিও তে আছে। জাষ্টিস নজরুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে নাজনীন। ইকোনমিক্স মেজর নিয়ে পড়াশোনা করেছে অস্ট্রেলিয়ায়। নাজনীনের দুই মেয়ে। মেহেরিন ও বুশরা। ওরা জায়েদ আঙ্কেলকে দেখে আর সেই সঙ্গে নানারকম গিফট পেয়ে দারুন খুশি। সারাক্ষণই ‘আঙ্কেল’, ‘আঙ্কেল’ করছে। নাজনীনও খুশি। আসলে বিয়ের পর থেকেই আশরাফের মুখে জায়েদের কথা শুনে আসছে নাজনীন । বিয়ের পর ইউরোপের ক’টা দেশে বেড়ালেও- যাই যাই করেও কখনও জার্মানি যাওয়া হয়নি। শেষমেশ, গতবছর সবাই মিলে গেল জায়েদের ওখানে হাইডেলবার্গ। কত কত জায়গায় যে বেড়াতে নিয়ে গেল জায়েদ। আগে থেকেই নাজনীন জানত হাইডেলবার্গ বিখ্যাত জায়গা- ওখানেই ইউরোপের সবচে পুরনো মানুষের চোয়ালের হাড় পাওয়া গিয়েছিল। ৫ম শতাব্দীর কেল্টিক দূর্গটা দেখল ঝিরঝির বৃষ্টির দিনে। টাউন স্কোয়ারের ক্যাসলটা দেখার দিন অবশ্য ঝলমলে রোদ ছিল। তাছাড়া চার্চ অভ দ্য হোলি গোস্ট, সেন্ট পির্টাস চার্চ আর প্রোভাইডেন্স চার্চটাও ঘুরে ঘুরে দেখল। তবে বুশরা আর মেহেরিনের সবচে ভালো লাগল নেককার নদীর ধারে পিকনিক। জায়েদ বলল, এই নদীর উত্তর ধারেই জার্মান দার্শনিকরা হাঁটতেন। এই কারনে জায়গাটার নাম দার্শনিকের পথ। জায়েদই বলেছিল: হাইডেলবার্গ শব্দের অর্থ : সাধুদের পাহাড়।
নাজনীনের ভাই নেই-জায়েদের সঙ্গে ও ভাইবোন সম্পর্ক পাতিয়েছে। সেই ভাই এবার বেড়াতে এসেছে। নাজনীন তুলা রাশি- গ্রেইট এন্টারটেনার। প্রিয় অতিথিকে কাছে পেয়ে কত কী যে রাঁধছে। অফিসে ছুটি পাওনা ছিল। ছুটি নিয়েছে। হাইডেলবার্গে গতবছর বেড়াতে যাবার পর জায়েদ ওদের জন্য অনেক করেছে। জায়েদকে এবার যত্ন করে খাইয়ে শোধ করে নেবে।
কী মনে করে শারমিন আর শান্তার ছবিটা জায়েদকে দেখিয়েছিল নাজনীন। তখনই চার বছরের শান্তার ছবিটা দেখেছিল জায়েদ। ফুটফুটে শিশুর মুখটা মনে গেঁথে গিয়ে থাকবে ...নৈলে বাচ্চাটাকে কেন স্বপ্নে দেখবে...শান্তা তাকে ডাকবে? মৃত মা তো আজও ডাকে। মৃতা মা। এককালে জায়েদুল আলম মিলনের বাড়ি ছিল সাতকানিয়া। ছোটবেলাতেই মা-বাবাকে হারিয়েছিল। চাচার বাড়ি কষ্টেসৃষ্টে মানুষ। তারপর চাচাও মারা গেলে লজিং আর হোস্টেলে থেকে কোনওমতে ইন্টার পাস করেছে। মেধাবী ছাত্র বলেই টিকে গেছে । ঢাকা শহর অবধি এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকার গ্যেয়টে ইনস্টিটিউট থেকে জার্মান ভাষাটা শিখেছিল। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে একমাত্র আশরাফকেই পছন্দ করত জায়েদ। একই হলে থাকত দুজন। আশরাফ যশোরের ছেলে।
তারপর তো স্কলারশিপ নিয়ে জার্মানির উদ্দেশে দেশ ছাড়ল জায়েদ।



জায়েদ ঢাকা আসতেই নাজনীনের মাথায় বিদ্যুৎ চমকের মতো আইডিয়াটা এল। সারা জীবন শারমিন একা থাকবে নাকি। জীবন এত বড়। না হয় শারমিন বিধবা। কেন, বিধবাদের কি বিয়ে হয় না? নাজনীনের কলিগ শারমিন । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পাস করার পর ‘মানবী’-তে চাকরিটা হয় শারমিনের। শারমিন কিছুটা গোটানো স্বভাবের। যে কারণে নাজনীনের সঙ্গে শারমিনের সম্পর্কটা প্রথম প্রথম আড়ষ্ঠই ছিল। পরে সম্পর্ক অনেকটা সহজ হয়ে যায়। কথাবার্তায় নাজনীন প্রচন্ড আন্তরিক আর খোলামেলা; অসাধারন প্রাণশক্তি তার। শান্তা তখন শারমিনের পেটে; তখন শারমিনকে কত যে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে নাজনীন । শারমিনের বর হাসান ছিল সরকারি প্রকৌশল দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার। বছর দুয়েক আগে -শান্তার বয়স তখন তিন- বান্দরবানের রুমায় একটা কালভার্টের কাজ চলছিল ... তখনই কে বা কারা খুন করে হাসানের লাশ একটা ঝর্নার ধারে ফেলে রাখে - খুনিদের এখনও ট্রেস করা যায়নি। ...শারমিন বিধবা। কেন, বিধবাদের কি বিয়ে হয় না? শারমিনকে ফোন করে উত্তরায় আসতে বলে নাজনীন । এ এমন নতুন কিছু না। প্রায়ই নাজনীনদের উত্তরার বাড়িতে মেয়েসহ এসে বেড়িয়ে যায় শারমিন। হাসানের মৃত্যুর পর বাংলামোটরে বাপের বাড়িতে উঠেছে। ও বাড়িতে নানান ঝামেলা-তিন ভাইয়ের শরিকি। তবে বেতন ভালো বলে এখনও টিকে আছে। শান্তাকে প্লেগ্র“পে ভরতি করে দিয়েছে। কী রকম গুটিয়ে থাকা মেয়ে। কারও সঙ্গে ঠিক মেশে না। কারও কোলে যায় না।
শান্তাকে দেখে জায়েদ চমকে উঠেছিল। তার রিঅ্যাকশন শারমিন ছাড়া অন্যরা লক্ষ করেনি। ধীরে ধীরে শান্তার প্রতি কৌতূহলী হয়ে উঠতে থাকে জায়েদ। শান্তাকে কোলে টেনে নেয় জায়েদ। ভীষন আদর করে । ওর ভিতরের ঘুমিয়ে থাকা চিরকালীন পিতৃ আবেগ জেগে উঠতে থাকে। সে অবাক হয়। আসলে আমি এইরকম কিউট একটি মেয়েশিশুর বাবা হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, ঐ স্বপ্নটা? শান্তাও জায়েদকে দেখে এত খুশি। কী আশ্চর্য! শারমিন অবাক হয়ে যায়। শান্তা তো সহজে যায় না কারও কাছে। আশরাফ ভাইয়ের বন্ধুর কাছে কী পেল! জায়েদকে দেখে শারমিনও স্থির আর গম্ভীর হয়ে গিয়েছিল । জায়েদের প্রথমেই চোখে পড়ে স্বাস্থ্য। মেদহীন টানটান শরীর। পেশল বাহু। শারমিন মুগ্ধ হয়ে দেখে। লম্বা ফরসা একটা শরীর। হালকা বাদামী পাতলা চুল মাথায়-চোখে গোল্ডরিমের চশমা। হাতে সিগারেট। হাসানও সিগারেট খেতে খুব। বুয়েটে থাকতেই খাওয়ার অভ্যাস। মনের ভিতরের সেলেটে এসব লিখা থাকে। মোছা কি যায়?
শারমিন ঠিকই টের পেয়েছে নাজনীনের উদ্দেশ্য। এমন কী গত বছর ছবি দেখানোটাও আঁচ করেছে। আর যাকে হোক-নাজনীনকে কষ্ট দেওয়া যাবে না। কিন্তু হাসান?
সকাল বেলায় আশরাফ অফিসে চলে যায়। নাজনীনের মেয়েরাও স্কুলে চলে যায়। নাজনীন রান্না নিয়ে বসে। কখনও গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে যায়- পি কিউ এস কি আগোরা। সঙ্গে শারমিনও থাকে। (শান্তা মনের আনন্দে থাকে জায়েদের কাছে) শারমিনের রান্না চমৎকার। সিম আর আলু দিয়ে শুঁটকিমাছ রাঁধে। শারমিন শুনেছে জায়েদ চট্টগ্রামের ছেলে আর লইটক্যা শুঁটকি পছন্দ করে। হাসানরাও রাউজানের ...তো ...এভাবেই
উত্তরায় নাজনীনদের বাড়িটা পুরোটাই লাল রঙের সিরামিক ইটের। দোতলায় বেশ বড় টানা বারান্দা । ওখানেই একটা ডিভানে সারাদিন শুয়ে-বসে থাকে জায়েদ। কাপের পর কাপ দুধ-চা খায় আর সিগারেট টানে। এদিকটা এত নির্জন। নীচে ঘন বাগান। ঘাসের গন্ধ পাওয়া যায়। তারপর নারকেল গাছের সারি। দেওয়াল। দেওয়ালের ওপারে মাঠ আর গ্রাম দেখা যায়। বাংলাদেশ একইরকম। সাতকানিয়ার কথা মনে পড়ে। সাতকানিয়াও এমনই মাঠ ছিল। মাঠ আর গ্রাম।
এক ফাঁকে নাজনীন (সম্ভবত রান্নাঘর থেকে এসে) মুখোমুখি বেতের চেয়ারে বসে বলল, উহ্, মার্চেই এত গরম।
জায়েদ হাসল। ডেইলি স্টারে চোখ বোলাচ্ছিল । সরিয়ে রাখল পেপারটা। হাসল।
নাজনীন এবার জায়েদকে জিজ্ঞেস করল, আর কতকাল একা থাকবেন ভাইয়া?
জায়েদ সেটাই তো ভাবছি।
নাজনীন নাঃ। প্লিজ, এবার সিরিয়াস হন।
জায়েদ হলাম।
নাজনীন এবার শোনেন আমি কী বলি।
জায়েদ বলো। (জায়েদ জানে নাজনীন কি বলবে)
নাজনীন শারমিনকে তো দেখলেন।
জায়েদ হু।
নাজনীন কী ভাবছেন?
জায়েদ ভাবছি। ভেরি স্যাড।
নাজনীন হ্যাঁ। স্যাড। ওর বরটা এভাবে মরে গেল। আমরা ইচ্ছে করলে ওর স্যাডনেসটা কাটিয়ে দিতে পারি।
জায়েদ হুঁ।
নাজনীন যা করার জলদি করেন।
জায়েদ এসব কী চটজলদি হয়?
নাজনীন আমার মুখের দিকে তাকান অন্তত।
জায়েদ (সামান্য বিস্মিত হয়ে) কী বলতে চাও।
নাজনীন আপনার সঙ্গে না আমি ভাই পাতিয়েছি।
জায়েদ তো?
নাজনীন আপনার কাছে কী লুকাব। আমার বর, মানে আপনার বন্ধু শারমিনকে পছন্দ করতে শুরু করেছে ; মলিরও তৃষ্ণা আছে। আমি আর কত চোখে চোখে রাখব। ওদের কিছু হয়ে গেলে ব্যাপারটা আমার জন্য ইনসালটিং হয়ে উঠবে না?
জায়েদ (ভীষন গম্ভীর হয়ে) ওহ্।
নাজনীন তাই বলছিলাম-আপনি ... আপনি মলিকে বিয়ে করলে আমার বিপদ কাটে। ভাইয়া প্লিজ।
জায়েদ (দীর্ঘশ্বাস ফেলে) আমি তোমাকে জানাব। আসলে সব ঠিকই আছে। আমাদের বিয়ে হতেও পারে। কিন্তু আমার কেন যেন মনে হয় তোমার বান্ধবী ওর ডেড হাজব্যান্ডকে এখনও ভুলতে পারেনি। এখানেই আমার অস্বস্তি। প্রবল অস্বস্তি। তুমি সফিসটিকেটেড। তুমি বুঝবে নাজনীন।
নাজনীন (সামান্য ভেবে) ও। আচ্ছা। এবার বুঝেছি।
জায়েদ আমি এখানেই আটকে গেছি।যে কেউই শারমিনের মুখ দেখে বুঝবে ওর শোক কাটেনি। হয়তো ব্যাপারটা কিছুই না। এরকম কত হচ্ছে। কিন্ত আমার কাছে অনেক কিছু। আমি চাই না আমাকে কেউ রেপিষ্ট বলুক।
নাজনীন ওহ! বুঝতে পারছি। আমি জানি আপনার মন সেনসেটিভ। (সামান্য ভেবে) ঠিক আছে। আমি আপনাদের সুন্দর একটা দেশে নিয়ে যাব। তখন দেখবেন আপনার মনের সব অস্বস্তি কেটে গেছে।
জায়েদ (খানিকটা বিস্মিত হয়ে) সুন্দর একটা দেশে মানে?
নাজনীন মানে পরে বুঝবেন। (মুখ টিপে হেসে বলল) বলে নাজনীন উঠে চলে যায়।
বারান্দায় একটু পর গুটি গুটি পায়ে শান্তা আসে। জায়েদ ওকে কোলে টেনে নেয়। ওর ভালো লাগে বাদামি চুল আর শ্যাম্পুর গন্ধ। ওর ঘুমন্ত পিতৃ øেহ জেগে ওঠে। আশ্চর্য! আমি একে স্বপ্ন দেখেছিলাম। কেন? কী অদ্ভূত ছিল স্বপ্নটা। টিলার ওপরে একটা বাংলোবাড়ির চাতাল। সিঁড়ি নেমে গেছে। নীচ থেকে শান্তা ডাকছে। আকাশে অনেক ফানুস। শান্তা ভেসে যাচ্ছে। আর অনেক হরিণ নদীর ওপারে।
শান্তা টলটলে চোখে চেয়ে বলে- বল ত ম্যাও কই ম্যাও?
জায়েদ টেনে বলে-ম্যাও নাই।
তুমি কিচ্ছু জান না। ম্যাও ঘুমায়।
ও। তাইলে একটা গান বল তো।
শান্তা গান বলে-

নদীর ধারে পাখির বাসা
আমরা যাব ছেখানে -

অনেক গান আর কথার পর এক সময় শান্তা ঘুমিয়ে পড়ে। বারান্দায় এসে শারমিন বলে, দিন ওকে শুইয়ে দিয়ে আসি।
থাক না। জায়েদ বলে।
শারমিন ঝুঁকে পড়েছে। ফিসফিস করে বলে, বন্ধন তৈরি করছেন কিন্তু।
জায়েদ হাসে। বন্ধনই তো জীবন। ভাবল।
আলতো করে ঘুমন্ত শান্তাকে জায়েদের কোল থেকে নিয়ে যায় শারমিন।



অস্ট্রেলিয়া পড়ার সময় মার্লিন নামে এক অস্ট্রেলিয় মেয়ের সঙ্গে ঘনিষ্টতা হয়েছিল নাজনীনের। সম্পর্কটা এখনও আছে। (এই ইন্টারনেটের যুগে সম্পর্ক আসলে রাখতে চাইলেই রাখা যায়) মার্লিনের একটা ভিলা আছে পোখরায়-জায়গাটা নেপালে। নাজনীনরা ছুটিছাঁটায় বেড়াতে যায় পোখরায়। কাঠমুন্ডু পৌঁছে হেলিকপ্টার ভাড়া করে। কপ্টারটা ল্যান্ড করে ইউক্যালিপটাস গাছে ঘেরা মার্লিনের ‘দয়ারাম ভিলার’ সুপ্রশস্ত চাতালে।
পরিকল্পনামাফিক এবার জায়েদও এল। শারমিনকেও রাজি করাল নাজনীন। প্লেনে জায়েদের কোলেই ঘুমিয়ে ছিল শান্তা । নাজনীনের দুই মেয়ে- মেহেরিন ও বুশরার মুখটা খুশিতে ঝলমল করছিল। ওরা ভীষণআ ইনজয় করে পোখরায় মার্লিন আন্টির ভিলা।
মধ্য এপ্রিলের ঝলমলে দুপুরে দয়ারাম ভিলার চাতালে নামল লাল রঙের হেলিকপ্টার।
পোখরার উত্তরে একটা উঁচু টিলার ওপর ভিলাটি। নীচে সুবিশাল মনোরম উপত্যকা। আর কী এক নদী। নদীর পাড়ে পাথর আর দেবদারু গাছের বন। প্রশস্ত সাদা পাথরের সিঁড়ি নেমে গেছে উপত্যকায়। জায়েদ অবাক হয়ে যায়। শান্তার দিকে তাকায়। মেহরিন আর বুশরার পিছন পিছন শান্তাও রেলিংয়ের কাছে । আশরাফ ওদের হিমালয় দেখাচ্ছে।
অনেক রাতে - বাচ্চারা শুয়ে পড়েছে-ওরা চারজন বসে আছে চাতালে। দয়ারাম ভিলার চাতালে জোছনার বন্যা। আর উতল বাতাস। আজ আষাঢ়ি পূর্ণিমা। আলোচনা সেদিকে গড়াল। বাতাসে হুইশকির গন্ধ। আশরাফ যেহেতু স্কচ হুইশকির বোতল খুলেছে। শারমিন শাদা শাড়ি পরেছে। নীল পার। জায়েদ কালো প্যান্ট আর সাদা টিশার্ট। সিগারেট টানছিল। কেমন ঘোর ঘোর লাগছিল ওর । নাজনীনের নকিয়াটা বাজল। ওটা তুলে কার সঙ্গে কথা বলল। তারপর ফোনটা অফ করে বলল, মার্লিনের ফোন। সেভ দ্য চিলড্রেনের একটা ওয়ার্কশপের জন্য কাঠমুন্ডু আসছে মার্লিন ।
জায়েদ ওর দিকে তাকাল।
নাজনীন বলল, ওর, মানে মার্লিনের বর, রজত শর্মা, ইনডিয়ান-ব্যবসা করে। কাঠমুন্ডু আর দিল্লি মিলিয়ে থাকে ওরা।
ও। তারপর জায়েদ বলল, আমি আর জার্মানি ফিরছি না নাজনীন।
নাজনীন শিশুর মতন হাততালি দিয়ে বলল, তা হলে? আশরাফ জায়েদের দিকে তাকাল।
এখানেই থেকে যাব। জায়েদ বলল।
এখানে মানে পোখরায়?
হ্যাঁ।
জায়গাটা আপনার এতই ভালো লেগেছে জায়েদ ভাই?
জায়েদ মাথা নাড়ে।
নাজনীন বলল, ভালো। আমরা পোখরায় ‘মানবীর’ ব্রাঞ্চ খুলতে যাচ্ছি। দায়িত্বটা তাহলে শারমিনই পাবে।
শারমিন গাঢ় চোখে তাকালো জায়েদের দিকে।
এই নাজনীন?
জ্বী বলেন।
তোমার বান্ধবী এই ভিলাটা বিক্রি করবে?
নাজনীন বলল, বলে দেখি মার্লিনকে। গত মাসে বলছিল ওর হাজব্যান্ডের বিসনেস ভালো যাচ্ছে না। আর নেপালে মাওবাদীরা ক্ষমতা নিয়েছে। এই টেনশন। দেখি ওকে বলে ও কী বলে।
জায়েদ বলল, ভিলাটা কেনার পর নাম বদলে দেব।
কী নামে দেবেন শুনি?
স্বপ্ন।
আশরাফ কেন যেন হো হো করে হেসে ওঠে।
ঠিক সেই মুহূর্তে শারমিনের বুকের ভিতরে কী যে হয়ে যায়।
আশরাফ বলল, নামটা তারা না আবার বদলে দেয়।
কারা? শারমিন সামান্য বিস্মিত।
কারা আবার? মাওবাদীরা।
ও। ওরা কী নাম রাখবে বলে মনে হয়?
প্রচন্ড ভিলা। বলে হা হা করে হেসে উঠল আশরাফ। মদটা তাকে ধরেছে বোঝা গেল।
আরও কিছুক্ষণ পর নাজনীন আর আশরাফ উঠে চলে যায়। যাওয়ার আগে নাজনীন বলল, জায়েদ ভাই। যান না, শারমিনকে নিয়ে নিচ থেকে নদীর ধার থেকে ঘুরে আসুন না। আপনার সেই অস্বস্তিটা কেটে যেতেও তো পারে।



ওরা দুজন বসে থাকে। চাতালে এলোমেলো হাওয়া বয়। আর কেমন ইউক্যালিপটাস- ইউক্যালিপটাস গন্ধ। চাতালে অনেক শুকনো পাতা। বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যায়। ইউক্যালিপটাস পাতায় সরসর শব্দ তোলে বাতাস ।
জায়েদ সিগারেট টানতে থাকে। শারমিনের মাথার ভিতরে অনবরত ঘুরছে জায়েদের কন্ঠস্বর: ভিলাটা কেনার পর নাম বদলে দেব। জায়েদ শান্ত গলায় বলল, শান্তার কথা ভেবেই আমি নতুন একটা বন্ধন নিয়ে গভীর ভাবে ভাবছি ।
শারমিন চুপ করে থাকে।
জায়েদ বলে, তার আগে আপনার মনের সেলেটটা মুছতে হবে। যদি সম্ভব হয়।
শারমিন চুপ করে থাকে।
আমি খুব সেনসেটিভ। বন্ধুরা বলে র‌্যাডিকাল ফেমেনিস্ট।
শারমিন অসহায় ভাবে বলল, মুছতে পারি না যে।
জায়েদ এও বলল-স্পর্শ না-করে কি থাকা যায় না। চিরকাল। পাশাপাশি।
শারমিন ভাবল-স্পর্শের জন্যই তো সব।
মৃদুস্বরে জায়েদ বলে, সম্ভব হলে জানাবেন।
কী মনে করে শারমিন জিজ্ঞেস করল, আপনার ডেট অভ বার্থটা বলবেন?
২ জুলাই। জায়েদ বলে।
ওমাঃ আপনি কর্কট!
হু। আর আপনি?
আমিও তো। আমার জুলাই ৮।
আশ্চর্য!
আমি বুঝি-আপনি কি বলতে চান। আমি আপনাকে অসম্ভব শ্রদ্ধা করি। বলতে বলতে শারমিন পারলে কেঁদে ফেলে।
ওপাশে ভিলার দেওয়াল। জানালা। বাতাসে পর্দা সরে যায়। ভিতরে আলো। দেওয়ালে দুটো ছায়াশরীরের উত্থানপতন স্পষ্ট টের পাওয়া যায়।ওদিকে চোখ যায় শারমিনের। ও দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে। শারমিনের মুখটা আরক্ত হয়ে উঠেছে। দুধ দুধ আষাঢ়ি জোছনার আলোয় বোঝার কথা না। শারমিন উঠে দাঁড়ায়। চাতালের উত্তরপাশে সাদা রং করা রেলিং। নিচে নামার সিঁড়িটা ওদিকেই। সেদিকে যেতে থাকে। নাজনীন কি ইচ্ছে করেই ...ছিঃ ...ওর সুখটা বোঝানোর কী এত ...ছিঃ জায়েদ কি দেখেছে? দেখলেও -লোকটা এত ভদ্র ...কী করে টের পেল আমার মনের ভিতরে একটা সেলেট আছে। সেখানে কিছু আছে অমোচনীয়।
ওর পাশে জায়েদ। দূরে ছায়া ছায়া পাহাড় ও জোছনাপ্লাবিত উপত্যকা। উত্তরেই কোথাও হিমালয়। দূরন্ত বাতাসে শারমিনের সাদা শাড়ি উঠছে। শারমিন বলল, নীচে নামবেন?
চলুন।
ওরা সিঁড়ি দিয়ে নামতে থাকে।
কী বাতাস। যেন ফানুসের মত উড়িয়ে নেবে জোছনাøাত পোখরার আকাশে। এই দিনে বুদ্ধের জন্ম হয়েছিল?
হু।
আমি তাঁর সম্বন্ধে বেশি কিছু জানি না।
না জানাই স্বাভাবিক।
কেন?
তিনি দূরের তারার মতন।
ও। জানেন। শান্তার জন্ম আষাঢ়ি পূর্ণিমার রাতে। ওর বাবাকেও ওরা ধরে নিয়ে যায় আষাঢ়ি পূর্ণিমার রাতেই ...
আশ্চর্য!
সিঁড়ির শেষে মাঠ। মসৃন ভাবে ছাঁট ঘাস। দুপাশে মেহগনি আর দেবদারু গাছ। পাথর। আর সেই নদী। তার ছির ছির শব্দ। আকাষে ধবল চাঁদ। পূর্ণিমার আলো। আজ বিকেলেই সবাই মিলে এসেছিল নদীর পাড়ে। তখন নরম রোদ ছড়িয়ে ছিল। নদীর পাড়ে একটা হরিণ মরে পড়ে ছিল। পাশে কয়েকটা কাক। হরিণের পিঠে তীর বিঁধে ছিল। সবাই তো অবাক। কে এখানে তীরধনুক দিয়ে শিকার করে। কাকগুলি ‘হুশ’ করতেই উড়ে গিছল। নাজনীন দয়ারাম ভিলার কেয়াটেকার -জয়নাথকে ফোন করল। জয়নাথ এল। হলুদ রঙের নাক চ্যাপ্টা মধ্যবয়েসি থলথলে লোক সে। লোকটা অনায়াসে হরিণটা কাঁধে তুলে নিয়ে গেল।
নানরুটি আর সেই হরিণের মাংস খেয়েই ওরা চাতালে বসেছিল।
শারমিন আর জায়েদ হেঁটে হেঁটে ঘাসের জমিটুকু পার হয়ে যায়। নদীতে রুপার কুচি। ওপারে ঝাইবন। নদীর দুপারে অজস্র পাথর ও নুড়ি। কোন্ প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে পড়ে আছে। ওরা পাথরের ওপর বসল। মুখোমুখি। এবার কথা হবে। যে কথা হয়নি।
হঠাৎ ফিরলেন যে?
সেটাই তো আশ্চর্যের।
মানে।
ফিরলাম একটা স্বপ্ন দেখে।
স্বপ্ন?
হ্যাঁ। স্বপ্ন । স্বপ্নে একটা শিশুর মুখ দেখলাম। সেই শিশুটিকে সামনাসামনি দেখার জন্যই ফিরলাম।
শান্তার সঙ্গে শিশুটির খুব মিল কি?
হু।
আর তখনই কী এক রাত্রীকালীন পাখি উড়ে যায়। তার টী টী শব্দ ওঠে। বাতাস দূরন্ত হয়ে ওঠে। জোছনা গাঢ় হয়ে ওঠে। শারমিন মৃদুস্বরে বলে, আপনাকে ধন্যবাদ।
কেন? জায়েদ কিঞ্চিত বিস্মিত।
সিগারেট ধরাচ্ছেন না যে।
ও। বলে হেসে প্যান্টের থেকে সিগারেটের প্যাকেটটা বের করে নাম না জানা নদীতে ছুড়ে ফেলে দিল জায়েদ। দৃশ্যটায় কী ছিল- শারমিনের বুকটা ধক করে ওঠে। ওর হাসান কথা মনে পড়ে যায়। বিয়ের পর ওরা টেকনাফের রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের বাংলোর সামনে সেই নাফ নদীর সেই হাফ-ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়েছিল। রাতটি ছিল খুব বাতাসময় আর জোছনাসিগ্ধ । খুব সিগারেট খেত হাসান। তবে সেই রাতে ও সিগারেট খাচ্ছিল না। শারমিন মৃদুস্বরে বলেছিল, তোমাকে ধন্যবাদ। কেন? সিগারেট ধরাচ্ছ না যে। সিগারেটের প্যাকেটটা প্যান্টের পকেট থেকে বার করে নাফ নদীতে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল হাসান। এসব ভোলা যাচ্ছে না। কেননা, শারমিনের মনের মধ্যে একটা সেলেট আছে । সে জিজ্ঞেস করে আপনি কি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন?
জায়েদ বলল, হ্যাঁ। আবার না।
বুঝেছি। শান্তার বাবা মারা যাওয়ার পর আমার অসম্ভব কষ্ট হয়েছিল। আবার মেয়েটার মুখ দেখে মনে হল আমার জীবন তো এরই জন্য।
হঠাৎ জায়েদের মনে হয় নদীর ওপারের ঝোপে পাতার আড়ালে কারা যেন ওঁত পেতে আছে। মাওবাদী গেরিলা? কিন্তু,ওরা তো ক্ষমতায়। এ জীবনে সবই সম্ভব। কিন্ত তখন কারা হরিণটি মেরেছিল? তীর দিয়ে। সে কথা শারমিনকে বলে না।
শারমিন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, আমরা কী ভীষন অসুখী। সে কথা এই নদী জল আকাশ আর গাছ পাতারা জানে না। তাই না?
হুঁ।
সমস্ত উপাচার তৈরি; তারপরও পূজা আরম্ভ হচ্ছে না-একে কী বলে ?
সভ্যতা।
সভ্যতা? তাই হবে -
কী মনে করে জায়েদ বলল, গতবছর নাজনীনরা গেছিল ডুসেলডর্ফ-যেখানে আমি থাকি।
জানি।
তখনই আপনার আর শান্তার ছবি দেখিয়েছিল নাজনীন।
শারমিন চুপ করে থাকে। জায়েদ বলে, শান্তার ছবিটা আমার মনে গেঁথে গিয়ে থাকবে। নৈলে স্বপ্নে কেন শান্তাকে দেখব? ও আমাকে ডাকছিল।
কোথায়?
এখানে।
এখানে?
হ্যাঁ। এখানে। বলে চুপ করে থাকে জায়েদ। তারপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, নাজনীন সেদিন আমাকে বলল-আপনাকে সুন্দর একটা দেশে নিয়ে যাব। তখন দেখবেন আপনার মনের সব অস্বস্তি কেটে গেছে। আমি জানতাম আমি কোথায় যাচ্ছি।
স্বপ্নে কি দেখলেন?
দেখলাম: আমি চাতালের সিঁড়ির কাছে দাঁড়িয়ে। শান্তা নীচ থেকে আমাকে ডাকছে। আমি নেমে এলাম। আকাশে অনেক ফানুস। আর জোছনার ঢল। আমি এগিয়ে গেলে শান্তা সরে যায়। কী ভাবে যেন নদী পার হয়। আমি এখানে দাঁড়িয়ে-এই পাড়ে। শান্তা নদীর ওপারে। অনেক হরিণ নদীর ওপারে।
শারমিন চুপ করে থাকে। জোছনা আরও গাঢ় হয়ে ওঠে। বাতাসও আষাঢ়ি পূর্ণিমার আলোয় হয়ে ওঠে এলোমেলো।
কী-মোছা গেল না?
কী। শারমিন চমকে উঠল।
আপনার মনের সেলেটের আঁকিবুকি?
শারমিন চুপ করে থাকে।
আমি কাল চলে যাব। জায়েদ গাঢ় স্বরে বলল।
কোথায়? শারমিনের কান্না পাচ্ছে।
প্রথমে কাঠমুন্ডু ; তারপর দিল্লি ;তারপর কোলন। তারপর ... তারপর হাইডেলবার্গ।
আর শান্তা?
ও আমার স্বপ্নের মধ্যে থাকবে। আমার নিঃসঙ্গতার মধ্যে থাকবে।
ও। বলে শারমিন চুপ করে থাকে। পাথরের পাশে ওদের গাঢ় ছায়া। সেদিকে তাকিয়ে থাকে। একবার নদীর দিকে তাকায়। নদীতে রুপাগলা জল। ওপারে ঝাউবন। শারমিন মৃদুস্বরে বলে, কেমন?
কী কেমন?
যেখানে থাকেন।
ও। ভালো। জায়েদ বলল। নেককার নামে একটা নদী আছে। নদীর ধারে দার্শনিকরা হাঁটতেন। আমি যে শহরে থাকি তার নাম হাইডেলবার্গ; হাইডেলবার্গ শব্দের অর্থ : সাধুদের পাহাড়।
শারমিন বলে, আমি যতদিন বেঁচে থাকব একটা নদীর কথা ভাবব । নেককার। হয়তো স্বপ্নেও দেখব।
বিষাদ টের পায় জায়েদ। উঠে দাঁড়িয়ে বলল, চলুন ফিরি।
চলুন। শারমিন উঠে দাঁড়িয়ে বলে।
প্রবল বাতাস আর জোছনার ভিতর ওরা সিঁড়ির দিকে এগোতে থাকে।

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ৮:২৩
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×