somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি হু হু করে কেঁদেছি, স্লোগানের মাঝে চিৎকার করে কেঁদেছি, আমার ভাই, আমার মা, আমার বোন, আমার বাবা কে খুঁজে পেয়েছি লাখো জনতার মুখের মাঝে।

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শরীরটা খুব খারাপ। জ্বর এসেছে, গলায় প্রচন্ড ব্যথা, দুই পায়ের গোড়ালি ও হাঁটুতে চাপা ব্যথা, পা ফেলতেও কষ্ট হচ্ছে। তবু দ্রোহের আগুনে, মানুষের ভালোবাসায়, গন জাগরনের ঊৎসবে পথ চলি।

বিপ্লবের কথা শুনেছি মানুষের মুখে, আন্দোলনের কথা বলেছেন অগ্রজেরা; শুনেছি আর ভেবেছি এমন কি মাহাত্ম্য এই শব্দের মাঝে? লাল বিপ্লব, নীল বিপ্লব, হলুদ বিপ্লব, কালো বিপ্লব... কতো না রঙ্গ, রূপ, রস বিপ্লবের। আমি দেখেছি সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির এক বিপ্লবের রূপ। প্রজন্ম চত্ত্বরের প্রতিটি রাত পেরিয়ে ভোরের যে সূর্য ওঠে, তার প্রখর, কিন্তু মিষ্টি আলোর মাঝে আজ হারিয়ে গেছে সকল রঙ। এই বিপ্লবের কোন রঙ নেই, আছে শুধু অনুভূতি, আছে চেতনার ঊদ্ভাস।

মহাসমাবেশের পরের দিন, একজন আমাকে সামনে পেয়ে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলেন আবেগে। চট্টগ্রাম থেকে এসেছিলেন মহাসমাবেশের দিন সকালে। একদিনের প্রস্তুতি নিয়ে আসলেও তাঁর এই গনজাগরনের রাজপথ ছেড়ে যেতে মন চাইছে না। তিনি বললেন-

"আমি যাবোনা ঘরে ফিরে, আমি থাকবো আপনাদেরই মাঝে, আপনাদের একজন হয়ে, এ যে আমার অস্ত্বিতের লড়াই"

রংপুর থেকে এসেছিলেন একজন বীরাঙ্গনা, বাজারের ব্যাগের ভেতর টিফিন ক্যারিয়ারে খাবার নিয়ে। নিজের হাতে লেখা একটি পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছেন জনতার মহাসমূদ্রে, ঢেঊয়ে ভেসে গিয়েছিলো তাঁর ব্যাগটি, ভলান্টিয়ার টা পরে সেটা খুঁজে দিলেও টিফিন ক্যারিয়ারটি পাওয়া যায় নি। আমরা মায়ের মমতা দিয়ে নিয়ে এসে খাইয়েছিলাম তাঁকে, সে যে কি গর্ব, সে যে কি অন্তরের মাঝে অভিঘাতের পদধ্বনি!

ভোর রাতের দিকে যখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমিয়ে যাবার ঊপক্রম হয়, ঘরে ফিরতে শুরু করি। দেখি কাগজ জ্বালিয়ে ধোঁয়ার বাতাবরনে রাস্তার ঊপরেই শুয়ে আছে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছেলেটি, যার ফেসবুকে পলিটিক্যাল ভিউতে লেখা আছে, I Hate Politics!

ভীড়ের মাঝে ঘুরে ঘুরে ছোটছোট দলগুলিকে খুঁজে বের করছিলাম। দশজন বন্ধু মিলে একটা ব্যানার বানিয়ে নিয়ে চলে এসেছে, ২০ জন সহকর্মী মিলে একটি পতাকা ও কিছু ফুল, মোমবাতি কিনে এনে বসে পড়েছেন রাস্তায়। আমি যেয়ে শুধালাম, আপনারা রাতে কিছু খেয়েছেন? না খেয়ে থাকলে আমাকে বলেন, খারাব আর পানি পৌঁছে দিচ্ছি। চিৎকার করে তাঁরা বললেন, তাঁদের খাবার লাগবেনা, তাঁরা আন্দোলনে এসেছেন। আমাকে বললেন, খাবার আপনারা খান, যারা যুদ্ধটাকে পরিচালনা করছেন! যাদের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছি, তাঁদের চোখের কৃতজঙতার ভাষা বার বার আমাকে ঋদ্ধ করেছে।

আমি হু হু করে কেঁদেছি, স্লোগানের মাঝে চিৎকার করে কেঁদেছি, আমার ভাই, আমার মা, আমার বোন, আমার বাবা কে খুঁজে পেয়েছি লাখো জনতার মুখের মাঝে।

আমি স্বপ্ন দেখি, আমি স্বপ্নাহত... দেশ জেগেছে, জাতি জেগেছে, জয় আমাদের হবেই!

জয় বাংলা!

@বাঁধন স্বপ্নকথক (Blogger and Online Activist Network -BOAN) পেইজ থেকে
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×