somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেশ্যা

২০ শে মে, ২০০৯ রাত ১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক
তরুনীটি তার এপার্টমেন্ট বিল্ডিং থেকে বের হয়ে আসে। তারপরে সোজা হেঁটে থার্ড এভিনিউতে গিয়ে একটি ক্যাব থামায়। ক্যাবে উঠে বসে।

ক্যাবচালক আয়নায় আড়চোখে যাত্রীটিকে দেখে নেয়। "কোথায়? মাদমোয়াজল।"

তরুনীটির ভালো লাগে এবং সে মিষ্টি করে হাসে। সে নিউ ইয়র্কের ক্যাবচালকদের পছন্দই করে, তারা সবসময়ই মজার এবং অদ্ভুদ স্বভাবের হয়। "পশ্চিম সেন্ট্রাল পার্ক। হোটেল আমাজান"।

ক্যাবচালক কৃষ্ণাঙ্গ। সে কোন একসেন্টে কথা বলে- তরুনীটি সহসা তা বুঝে উঠতে পারে না। "তুমি কোথা থেকে এসেছো?"

"আমি? সেনেগাল থেকে, মাদমোয়াজল"।

"ওহ! তাই নাকি!! তোমার কি এখানে ভালো লাগে?" ক্যাবচালকের সাথে কথা বলতে তরুনীটির ভালো লাগে। সে যে পন্থায় রোজগার করে তাতে আসল মানুষের সাথে তার কদাচ কথাবার্তা হয়।

ক্যাবচালক আয়নায় আবার তরুনীটির দিকে তাকায়। হঠাৎ করেই ক্যাবটি দ্রুত বাক নেয়, নিয়ে একটি বাইক আরোহীকে সাইড দেয়- যে প্রায় হঠাৎই তার সামনে এসেছিল। বিড় বিড় করে বাইক বাহককে একটা গালি দেয়। তারপরে আবার আয়নায় তার যাত্রীর দিকে তাকায়। "ভালো লাগে, মাদমোয়াজল। ভালো লাগে"।

"তুমি সেনেগালকে মিস করো না?"

"ওহ, হ্যাঁ। অবশ্যই আমি সেনেগালকে খুব অনুভব করি। আপনি জানেন এটা আমার দেশ!"

"তুমি নিজেকে কি আমেরিকান মনে করো না?"

"ওহ! হ্যাঁ মাদমোয়াজল- আমি আমেরিকান, কিন্তু আমি সেনেগালিজও বটে। আপনি যেখানটিতে জন্মিয়েছেন সেটিকে কখনো ত্যাগ করতে পারবেন না, আপনি জানেন?"

তরুনীটি বিষয়টি নিয়ে একটু ভাবে। মিশিগানের জ্যাকসন শহরের কথা মনে পড়ে- মোটর পার্টসের শূন্য কারখানাগুলো চোখে ভেসে ওঠে। "আমিও তাই মনে করি। যতই তুমি চেস্টা করো না কেন"।

ক্যাবচালক তার আয়নায় তরুনীর দিকে আবার তাকায়, তাকিয়েই থাকে। "ক্ষমা করুন, মাদমোয়াজল। আপনি একজন কল গার্ল, না? আমি খারাপ কিছু বুঝাতে চাইছি না। কিন্তু আপনি তো তাই, না?"

কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত মনে হয় তরুনীটিকে, কিন্তু পরক্ষণেই সে বুঝতে পারে যে ক্যাবচালকের কোন কুমতলব নেই। "আমার ধারণা, আমি বরং এসকর্ট বলতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করি"।

"আ হ্যা, এসকর্ট! আপনি দেখেছেন? আমি আপনার পোশাক দেখেই কেমন বলে দিলাম! খুব সেক্সি। কিন্তু বনিকী নয়"। ক্যাবচালকের ঠোটে একচিলতে হাসির ঝলক ফুটে ওঠে। "ঠিক আছে। এতে কোন লজ্জা নেই। আমরা সবাই বেশ্যা, তাই না? আমি বেশ্যা, ধনী সাদাদের জন্য ট্যাক্সি চালাই। আমার মেয়ে। ম্যাকডোনাল্ডসে কাজ করে, সে বেশ্যা। আমি পছন্দ করি না, কিন্ত এটাই জীবন, তাই না?"

Oui, c'est vrai. (হ্যাঁ, সেটা সত্য)

Oh, parlez vous francais? (ওহ, তুমি ফরাসি বলতে পারো?)

Oui, un peu. Uh, j'ai etudié uh, dans l'école. (হ্যাঁ, অল্প একটু- আধটু। উহ! আমি কলেজ পর্যন্ত পড়েছি।)

Tr`es bien, Mademoiselle. (খুব ভালো, মাদমোয়াজেল।)

"কিন্তু তোমার মেয়ে কি স্কুলে যেতে পারে না?"

"আহ না! C'est tres difficile (সেটা খুব কষ্টকর)। আপনি হয়তো বলবেন যে, আমেরিকায় যে যেটা চায় সেটা করতে পারে। কিন্তু এটা গরীবদের জন্য সত্য না। আপনি দেখুন, এই কারণে আমরা সবাই বেশ্যা। আমরা গরীব এবং ধনীরা আমাদের বেশ্যা বানিয়েছে। আমি আমেরিকাকে পছন্দ করি। আপনি যেভাবেই বলেন, অসংখ্য সুযোগ। অনেকই করি। এবং আমরা আমাদের দেশ সেনেগালের চেয়ে এখানে ভালো আছি। কিন্তু আপনি জানেন, আমি সেনেগাল ছেড়েছি- কারণ সেখানে কোন কাজ নেই। একটি বড় আমেরিকান কোম্পানী আছে, এনরন। আপনি এর নাম শুনেছেন?"

"আমার ধারণা শুনেছি, তারা গ্যাস বেঁচে"।

"গ্যাস? না, পেট্রোল?"

"মনে হয়, গ্যাস"।

"তারা এটাকে গ্যাস বলে কেন?"

"ঠিক আছে, গ্যাসোলিনের সংক্ষিপ্তরূপ"।

"কিন্তু তারা এটা বলে কেন?"

"আমার ধারণা, তাদের তেল কোম্পানী বলা হয়"।

"তেল! হ্যাঁ। কিন্তু আপনি জানেন, এই কোম্পানী আমাদের দেশে আসে, আমাদের শহরে আসে। বড় কারখানা বানায়। তারা চাকুরীর প্রতিশ্রুতি দেয়। তারা অনেককে তাদের সাথে নিয়ে নেয়, এবং তারা চাকুরীও পায়। কিন্তু আমরা গরীব থেকে যাই"।

"এটাকে ভালো মনে হচ্ছে না"।

"না, এটা ভালো না। এবং আপনি জানেন যে, এই কারখানা ধোঁয়া তৈরী করে। দূষিত করে ফেলছে। এর ধোঁয়া আমাদের ঘরে আসে, যা ঘরের ভেতরেও দুর্গন্ধ তৈরী করে। আমাদের সন্তানেরা এই ধোঁয়ায় শ্বাস নিচ্ছে। এবং রাতে আমরা আকাশে কারখানার আগুন দেখি, আমরা তারা দেখি না।"

"নিউ ইয়র্কেও আমরা তারা দেখি না"।

"মাদমোয়াজল! একই ঘটনা এই নিউ ইয়র্কেও ঘটছে। ধনীরা অবিরত গরীবদের সঙ্গম করে যাচ্ছে, ভাষার জন্য আমায় ক্ষমা করবেন, কিন্তু এটাই সত্য"।

"হ্যাঁ, আমি জানি"।

"আহ মাদমোয়াজল! আমি সেটা বুঝাতে চাইনি, কিন্তু এটাই সত্য যে ঠিক এ কারণেই আমরা সবাই বেশ্যা। আমার লোকেরা এনরন এর বেশ্যা। আমি আপনাকে বলছি, আমি যদি পারতাম, যদি আমার বন্দুক থাকতো, আমি দেশে ফিরতাম, এনরন এর বস, এনরন এর প্রেসিডেন্টকে খুঁজে বের করতাম এবং গুলি করতাম। আপনারা আমাকে সন্ত্রাসী বললেও আমি পরোয়া করিনা। সন্ত্রাসী কে? যে নিষ্পাপ মানুষকে খুন করে সেই নয় কি? এই কোম্পানী আমার লোককে খুন করেছে"।

ক্যাব হোটেলে পৌঁছে। তরুনীটি তার পার্স খুলে, ভাড়া দিয়ে দেয়, সাথে ২০ ডলার টিপস। "um tr`es intérressant parler avec toi. (এখানে তোমার সাথে কথা বলে আমার বেশ ভালো লেগেছে)"।

"Oui Mademoiselle. (ওহ মাদমোয়াজল)! Merci beauco (অনেক ধন্যবাদ)। শুধু এটাইতো আমাদের সম্বল। এবং যা দিয়ে আমরা একে অপরের বন্ধভাবাপন্ন"। তরুনীটি একবার হাসতে চায়, বদলে সে ক্যাব থেকে নেমে পড়ে। মাথাটা আস্তে করে ঝাকায়, ক্যাবচালক চলে যায়। কি তার নাম? সে একবারো জিজ্ঞেস করেনি।

হোটেলের দ্বাররক্ষী তাকে ভেতরে ঢুকায়, মাথার হ্যাট আলতো খুলে আবার যথাস্থানে রাখে- কিন্তু কিছুই বলেনা। লিফট অপারেটরও একই আচরণ করে। এদের দৃষ্টিকে উপেক্ষা করতে পারা সে অনেক আগেই শিখেছে। তারা জানে কেন সে এখানে। কিন্তু তাতে কি? আমরা সকলেই বেশ্যা। তরুনীটি ভাবে, লিফট অপারেটর হওয়া কতই না ভয়ংকর কাজ, সারাটা সময় একটি বদ্ধ বাক্সে বন্দী থাকা! বেশ্যা!!

দুই
লোকটি, মানে তার ক্লায়েন্ট দরজা খুলে দেয়। নিয়ন্ত্রিত হাসিতে স্বাগত জানায়। "আহ! চমৎকার, খুবই চমৎকার। প্রিয়! তুমি দেখতে দারুন সুন্দর!" অবশ্যই তিনি বৃদ্ধ, তার মাথায় পাতলা চুলের প্রলেপ বৃত্তাকারে মাঝখানের ফাকা অংশের চারপাশে ঘিরে রেখেছে। তরুনীটি তার অভিজ্ঞ চোখে লোকটিকে দেখে এবং মেপে নেয়। পরণে মসৃণ পরিপাটি ডিনারের বস্ত্র। ডান হাতে উজ্জ্বল সোনার আংটি।

"ভিতরে এসো, আমার সুইট হার্ট! কি নাম তোমার? আহ! খুব সুন্দর। তুমি জানো, তোমার এজেন্সিরই সবচেয়ে সুন্দর-দর্শন মেয়ে আছে। যখনই আমি এ শহরে থাকি- তখনই আমি তাদের ডাকি। আমি আসলে হাউস্টনে থাকি। তুমি কি কখনো হাউস্টনে গিয়েছো? বের হওয়ার আগে কিছু পানীয় চলবে? কোকেন? আমার নিজের জন্য এটার দরকার হয়না, তবে দেখেছি অনেক মেয়েই পছন্দ করে। তুমি জানার কথা, আমি সবসময়ই আমার অতিথিদের খুশী রাখতে পছন্দ করি"।

তরুনীটি আবেদনময়ী একটি হাসি দিয়ে জানায় যে তার পানীয় লাগবে না। লোকটি তার পোর্টেবল ফোন থেকে ডায়াল করে। শেফারকে নীচে লিমু প্রস্তুত রাখতে বলে।

"আমি তোমার হাতখানি নিতে পারি? ওহ! অপূর্ব! তোমার পোশাক আমার পছন্দ হয়েছে। তোমার ফিগার অসাধারণ। আমার সাথে তোমার ভালো সময়ই কাটবে বলে আমার আশা। পুরুষেরা অন্ধকার দূর করে এবং পুরোটাই করতে পারে"।

তারা নীচে নামে এবং লিমুতে উঠে। তিনি তরুনীটির ঠিক পাশেই বসেন, আলতো করে তার হাত তরুনীটির উরুতে রাখেন। "তুমি কিছু মনে করো না, করেছো কি? করোনি? চমৎকার"।

কেননা, তরুনীটি এটার জন্য প্রস্তুত ছিলো। এবার সে আলোচনা জমানোর চেস্টা করে। "আপনি হিউস্টনে কি করেন?"

"অনেক কিছুই। প্রাথমিকভাবে একটি তেল কোম্পানীর জন্য কাজ করি"।

"সত্যি? কোনটি?"

"এনরন"

"অবাক ব্যাপার! কিছুক্ষণ আগেই এক ক্যাবচালকের সাথে আপনার কোম্পানী নিয়ে কথা হচ্ছিল!"

"সত্যি?" তিনি জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকান। "এইতো আমরা এসে গেছি। দেখ, এটা খুব বেশী দূরে নয়"।

তারা নেমে যায় এবং তিনি তরুনীটিকে নিয়ে একটি মাঝারি আকারের ঘরে প্রবেশ করেন। ঘরটি বেশ কিছু মানুষে পূর্ণ, অভিজাত বস্ত্র পরিহিত সবাই। অনেকের সাথেই যুবতী বাহুলগ্না, তরুনীটির মত। তরুনীটি জেনীকে চিনতে পারে, জেনী তাদের এজেন্সীরই একজন। জেনী তাকে দেখে এক চিলতে হাসি উপহার দেয়, তরুনীটিও মাথাটা একটু কাত করে সোজা করে নেয়। জেনীও। লোকটি তাকে কিছু বন্ধুর মাঝখানে নিয়ে উপস্থিত করে। সে তার শরীরে উপর থেকে নীচ পর্যন্ত লোকগুলোর দৃষ্টি অনুভব করতে পারে। তিনি তাকে তার ডেট হিসাবে পরিচয় করে দেন।

কিছু সময় পরে তরুনীটি নিজেকে কিছু সময়ের জন্য বিচ্ছিন্ন করতে সমর্থ হয় এবং সে সুযোগে জেনীর কাছাকাছি হয়। তারা দুজন দুজনের হাত ধরে, উষ্ণ চাপ দেয়। "কোনজন তোমার সঙ্গী?"

"ঐ যে ওখানে যে জাপানীটাকে দেখছো, সে"। জাপানী পুরুষেরা সবসময়ই সোনালী চুলের মেয়েদের চায়, তা নাহলে লালচুলো।

তারা কথা বলার জন্য বেশী সময় পায় না। ডিনার পরিবেশিত হয়। তরুনীটি তার ক্লায়েন্টের কাছে ফিরে যায়।

খাবারের সময় হাসি হাসি মুখে সে লোকটির সামনা-সামনি বসলো, যাতে যখনই তিনি কোন কৌতুক বলবেন, সে তাতে হাসতে পারে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ক্লায়েন্ট আরেক লোকের সাথে যুক্তি-তর্কে অবতীর্ণ হয়। তারা কি নিয়ে আলোচনা করছে, তা অনুসরণ করা তরুনীটির পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু হঠাৎ করেই সাথের লোকটি মজা করার উদ্দেশ্যে তার ক্লায়েন্টকে বলে ওঠে, "ভালো! কেন তুমি এ ব্যাপারে তোমার ডেটের মত শুনছো না?" তরুনীর দিকে তাকিয়ে বলে, "আর্কটিক অঞ্চলে খনন কাজ নিয়ে তুমি কি মনে কর?"

তরুনীটি অনুভব করতে পারে যে, সবাই তার দিকে তাকানো আরম্ভ করেছে, এবং তাকিয়ে হাসছে। "ঠিক আছে! আমি জানি না। কিন্তু যদি তারা আফ্রিকার সেনেগালে যে আচরণ করেছে, একই আচরণ সেখানেও করতে চায়; তবে সেটা মোটেও ভালো হবে না"।

কিছু সময়ের জন্য ঘরে আকস্মিক নিস্তব্ধতা নামে। তারপরে প্রত্যেকেই হেসে ওঠে। তার ক্লায়েন্টকে একজন জিজ্ঞেস করে, "একে আপনি কোথায় পেয়েছেন? বার্ণার্ড এ?"

তার ক্লায়েন্ট তার দিকে ঘুরে তাকায়। "ওহ প্রিয়! তুমি আমার স্ত্রীর মতই কথা বলছো"। হাসির পরিমাণ বেড়ে যায়।

ডিনার শেষে পুরুষেরা আরেক কক্ষে যায়, সিগার টানে। ইত্যবসরে আরেকবার জেনীর কাছাকাছি হয়। "আমার বিশ্বাস হচ্ছে না যে তুমি এমন কথা বলেছো! তোমার কি মনে হয় না, তিনি এজেন্সীকে বলে দিতে পারেন?"

"জানি না। আমার সাথে এক ক্যাবচালকের কথা হয়েছে, এবং সে সেখান থেকে এসেছে"।

"সে কি কৃষ্ণাঙ্গ? আমি একবার একজনকে পেয়েছিলাম। সেও সোনালী চুলো মেয়ে পছন্দ করতো। তুমি যেন কি বলছিলে?"

"না কিছু না। মানে, তোমার সঙ্গী কি করে?"

"জানি না। জিজ্ঞেস করিনি"।

তারা হোটেলে ফিরে আসে। তিনি তাকে নিয়ে উপরে তার রুমে নিয়ে আসেন, দরজা লাগিয়ে দেন। "তুমি কি নিশ্চিৎ যে তুমি কিছু ড্রিঙ্ক করবে না? কোক চলবে? না? ঠিক আছে, চল তাহলে শুরু করা যাক"।

তরুনীটি পরণের কাপড় খুলে ফেলে। "অদ্ভুদ! দারুন! অপূর্ব!" লোকটিও জলদি তার জামা খুলে ফেলেন। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে পা ও জুতার সাথে প্যান্ট জট পাকিয়ে ফেলেন। কাপড়-চোপড় ছুড়ে ফেলে তিনি বিছানায় বসেন। এটাই রাতের কঠিনতম অংশঃ ক্লায়েন্টের দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে প্রশংসা করা, এমনকি আকার-আকৃতি কোন দিক থেকেও প্রশংসার যোগ্য না হলেও।

একইভাবে তরুনীটিকেও হাসতে হয়। তাকিয়ে বারবার বলে “ওহ! ওয়া!!”, পুরুষেরা এটা পছন্দ করে। এবারে সে লোকটির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে, নিজ হাতে তাকে তুলে নেয় এবং অর্থ উপার্জন আরম্ভ করে। আমরা সবাই বেশ্যা

“তুমি কি কখনো আফ্রিকা গিয়েছো?”

“ওহ! হ্যা! ওহ ইশ্বর! তুমি আমার ছোট পরী, তাই না? তুমি কালো পছন্দ করো, তাই না- আমার ছোট পরী? আমি তোমার ঐ ছোট মুখখানির জন্য ১০০ ডলার খরচ করেছি”। তিনি তার মাথা ধরে নিচে নামিয়ে দেন। আমরা সবাই বেশ্যা

“আমি বসকে খুঁজে বের করবো, তুমি জানো এবং আমি তাকে গুলি করবো- তোমরা আমাকে সন্ত্রাসী বললেও আমি তার পরোয়া করিনা”।
সে তার দাঁতের কথা চিন্তা করে। ভাবে সেটি কত নরম! কামড় বসিয়ে দিতে কতখানি শক্ত হতে হবে তাকে? তাকে কি গ্রেফতার করা হবে? তিনি কি চিৎকার করে উঠবেন? আসলেই মারা যাবেন? ক্লায়েন্ট তরুনীটিকে অনেক কাছে টেনে নেন। দাঁত দাঁতের জায়গায় থেকে যায়। তার ধোয়ার কথা মনে পড়ে। ঘন ধোয়া, তৈলাক্ত ধোয়া। আকাশ ছেয়ে ধোয়া এবং একটি মেয়ে সেই ধোয়ায় শ্বাস নিচ্ছে!

একসময় শেষ হয়, তিনি একটু কাশেন। “সব খেয়ে ফেলো, আমার ছোট পরী”।

তিনি উঠে বাথরুমে যান। সে কাপড় পরে নেয়, আয়নার সামনে দাঁড়ায়। তিনি বাথরুম থেকে উলঙ্গই বের হন, কাপড় পরার কোন তাড়া নেই। তিনি তার ওয়ালেট হাতে নেন। “এই যে তোমার টাকা, খুব ভালো মেয়ে হওয়ার জন্য সাথে ১০০ ডলার এক্সট্রা। তুমি যা বলেছিলে আসলেই সেটা আমি পছন্দ করেছি। আমি স্বীকার করছি, একজন কালোর সাথে তোমার ঘনিষ্ঠতা দেখতে আমার ভালোই লাগবে, সেটা হবে দারুন এক্সাইটিং। পরেরবার শহরে আসলে তোমাকে আবার ডাকবো। তখন না হয় একজন কালোকে জুটিয়েও ফেলা যাবে। শহরতলীতে গেলে পাওয়া যাবে। না? ঠিক আছে”। তিনি তরুনীর পেছনে গিয়ে দাঁড়ান এবং পশ্চাদ্দেশে হাত রাখেন। “এদিকে হবে?”

সে তার পার্সটি ক্ষিপ্র গতিতে তুলে নেয়, আবার রেখে দেয়। আগের মত মুখে হাসি বজায় রাখতে না পারলেও সে কাঁদে না। মুখোমুখি থাকলে এ অবস্থাতেও হাসিমুখ রাখার অভ্যেসও এতদিনে নিশ্চয় হয়ে যেত! আমরা সবাই বেশ্যা


তিন
লিফটে অপারেটর তাকে দেখে কি যেন বলে।

“তুমি কি কিছু বললে?”

“আমি বললাম, তুমি কি একটি সুন্দর রাত্রি কাটিয়েছো?”

“Shut up, just shut up….”


মূলঃ John Yohe এর "What You Are?"
ফরাসী কথোপকথনের বাংলা অনুবাদঃ আহসান হাবিব শিমুল
প্রথম প্রকাশঃ ২৪ জুলাই- ২০০৮, সামহোয়ারইন- মাদারি নিক থেকে
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০০৯ রাত ২:৩৩
১০টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্টে যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×