somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসা - সফলতা ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি-০২

১৫ ই মে, ২০০৯ বিকাল ৩:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :







অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসা-সফলতা ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি-০১



মানুষের দেহ নিখুঁত এক যন্ত্র বিশেষ। খাদ্যের স্বাভাবিক রীতি-নীতি, শ্রম ও বিশ্রামের দ্বারা তা আপনা আপনিই নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।। আমরা যখন এই স্বাভাবিক নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করি তখনই দেহে বিষ ক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং দেহ তখন সেই বিষ প্রক্রিয়া থেকে মুক্তি পেতে চায়। ব্যথা, অস্ব¯িহ, মাথা ঘোরা বা অন্য কোন উপসর্গ নিয়ে দেহ সেটা জানিয়ে দেয়। এটাই হল রোগ বা অসুখ। বিভিন্ন রকমের উপসর্গ অনুযায়ী এর বিভিন্ন রকমের নাম দেয়া হয়। অসুখ হলে আমরা বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহন করি। যেমন : এ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, হাকিমী, বনাজী বা হার্বাল, কোন কোন ক্ষেত্রে মেডিটেশন (ধ্যান) ইত্যাদি। (মেডিটেশনের মাধ্যমে বহু মানুষকে সুস্হ্য হতে আমি নিজে দেখেছি) যার যার নিজের বিশ্বাস ও সুবিধামত এক বা একাধিক চিকিৎসা পদ্ধতি মেনে চলেন। তবে যা প্রয়োজন তা হলো বিশ্বাস।

আমাদের জীবনে সব সুখানুভূতির মধ্যে সবচেয়ে আনন্দময় বস্তুটি হচ্ছে সুস্বাস্হ্য অর্থাৎ চিন্তামুক্ত নিরোগ শরীর। সেই শরীর বিগড়ে গেলে পৃথিবীর সকল প্রাপ্তিই শূণ্যতায় পরিণত হয়। আজকের যন্ত্র নির্ভর যুগে এমন কোন যন্ত্র খুঁজে পাওয়া যাবেনা যা সৃষ্টিকর্তা মানব শরীরে রাখেননি। এইসব কোমল অথচ শক্তিশালী শারীরিক যন্ত্রগুলি বছরের পর বছর অবধি নিরবিচ্ছিন্নভাবে ও অবিশ্বাস্য পারস্পরিক সমন্নয়ের সাথে কাজ করে যায়। সবচেয়ে বড় কথা এই মানব শরীর নিজেই সব রোগ নিরাময় করতে সক্ষম। অ্যাকিউপ্রেশার এই রোগ নিরাময় বিষয়ে শরীরকে সাহায্য করে এবং সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও অন্তঃস্রাবী অনালগ্রন্তি যথাযথ সক্রিয় রাখে যার ফলে আমরা নিখুঁত স্বাস্হ্যের অধিকারী হই।

আমাদের দেহের গঠনতন্ত্র খুবই জটিল হলেও তাকে রক্ষা করা খুবই সহজ। প্রকৃতি আমাদের দেহে এমন অর্ন্তনিহিত ব্যবস্হা রেখে দিয়েছে যার দ্বারা এই যন্ত্রগুলির দেখাশোনা ও প্রয়োজন হলে মেরামতও করা যায়। এই অর্ন্তনিহিত ব্যবস্হার উপযোগ করে যে চিকিৎসা পদ্ধতি সেটাই অ্যাকিউপ্রেশার। ষোড়শ শতকে এই চিকিৎসা পদ্ধতি আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ানদের মধ্যে প্রচলিত ছিল বলে জানা যায়। পাঁচ হাজার বছর পূর্বে ভারতবর্ষে অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। বর্তমানে এই সহজ-সরল পদ্ধতি বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হার দৃষ্টিও আকর্ষণ করতে পেরেছে।

”অ্যাকিউ” মানে সূঁচ এবং ”পাংচার” মানে বিদ্ধ করা। অ্যাকিউপাংচার মানে হলো দেহের বিশেষ বিশেষ জায়গায় সূঁচ বিদ্ধ করে যে চিকিৎসা করা হয় সেই চিকিৎসা প্রণালী। অ্যাকিউপ্রেশার মানে হলো দেহের বিন্দুগুলোতে বৃদ্ধাঙ্গুলি, কলমের ভোঁতা অংশ কিংবা অন্য কোন ভোঁতা বস্তুর সাহায্যে চাপ দিয়ে দিয়ে রোগ দূর করার চিকিৎসা প্রণালী। আমাদের দেহ স্বল্প মাত্রার বিদ্যুৎ শক্তি (Bio-Electricity) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অপরিবর্তনশীল জীবন ব্যাটারী থেকেই আসে বিদ্যুৎ প্রবাহ বা চেতনা। ভ্রুণাবস্হাতেই এই ব্যাটারী দেহে জন্ম লাভ করে। এই জীবনী শক্তির আধার থেকে যে বিদ্যুৎ প্রবাহ (চেতনা) বয়ে চলে তা “মেরিডিয়ানস” নামে পরিচিত। এই মেরিডিয়ানস প্রবাহ ডান হাতের প্রতিটি আঙ্গুলের ডগা থেকে শুরু হয়ে সর্বাঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে এবং অবশেষে ডান পায়ের আঙুল অবধি পৌঁছায়। দেহের বাঁ দিকেও ঠিক একইভাবে বিদ্যুৎ প্রবাহ চলাচল করে। যতক্ষন পর্যন্ত দেহে এই বিদ্যুৎ প্রবাহ ঠিকমত সার্কুলেশন হয় ততক্ষন শরীর সুস্হ্য ও সমর্থ থাকে। কোনও কারনবশতঃ এই বিদ্যুৎ যদি দেহের কোন অংশে পৌঁছতে না পারে তখনই সেখানে বিকল অবস্হার সৃষ্টি হয় এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যথা-বেদনাও হয়। যদি সেই অংশে পুনরায় ঠিকমত বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা যায় তাহলে রোগমুক্তি হয়।

অ্যাকিউপাংচার, সিয়াৎসু কিংবা পয়েন্টেড প্রেশার চিকিৎসা প্রথা অনুযায়ী আমাদের শরীরে মেরিডিয়ান রেখাগুলির উপর ৯০০টি বিন্দু আছে। :-/ রোগ দূর করার জন্য এই বিন্দুগুলির উপর সূঁচ বিদ্ধ :(( করে অথবা চাপ দেয়া হয়। তবে অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসা পদ্ধতি খুবই সহজ ও সরল এমনকি ১০ বছরের শিশুও শিখে নিয়ে তা প্রয়োগ করতে পারে। অ্যাকিউপ্রেশার চিকিৎসায় রয়েছে ৩৮টি বিন্দু। হাত ও পায়ের তলায়, পার্শ্বে বিশেষ পদ্ধতিতে চাপ দিয়ে দিয়ে রোগাক্রান্ত এলাকাতে বিদ্যুৎ প্রবাহ চালু করে এর চিকিৎসা করা হয় বলে ইউরোপের অনেক দেশে এটাকে ”রিফেক্সোলজি” (Reflexology) বলে।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×