somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাচা চৌধুরী B:-/

০৮ ই মে, ২০০৯ রাত ১০:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার দাদা খুব কড়া টাইপের মানুষ ছিলেন, দাদী সারাক্ষন ভয়ে তটস্থ থাকতেন। বড়চাচা তার মাকে গিয়ে বলেন,
“মা তোমার এত কষ্ট আমি তো আর সইতে পারি না।” /:)

দাদী পুত্রের মনের কথা বুঝতে পারেন, পুত্র বিবাহ করতে চায়। তিনি বলেন,
“বাবা, তুই তো চাকরী-বাকরী কিছু করলি না। এখন ব্যবসা-বানিজ্য কিছু কর। নাইলে বিয়ে করাই ক্যামতে?” :|

“মা, আপনে খালি কিছু পয়সা দেন আমারে। দেখবেন কয়দিনের মধ্যেই বস্তায় বস্তায় টাকা আইনা আপনার পায়ের কাছে ফালামু।” :D

দাদী সেই জামানায় পয়সা পাবেন কই? তিনি তার অতি আদরের পুত্রকে কিছু সোনাদানা দিলেন। বড়চাচা সত্যি সত্যি রাতারাতি আদম ব্যবসা করে ভালো টাকা বানালেন, বিয়ে করে বউ নিয়ে শহরে স্থায়ী হলেন। নবাবী কায়দায় চলাফেরা শুরু করলেন। নামকরা লোকজনের সাথে তার ওঠাবসা, চেহারাও মাশাল্লা ভাল। কবরীর বিপরীতে সিনেমার অফার পেয়ে গেলেন, শুধু সিনেমা বানানোর কিছু খরচ চাচাকে দিতে হবে এই যা। :-* কি কারনে জানি পরে আর চাচার হিরো হওয়া হয়নি, তবে হিরো হাবভাবে চলাফেরা চলতে থাকল। কয়েক বছরের মধ্যেই ব্যবসায় মার খেয়ে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসলো। দাদীর দুঃখ-কষ্টের কোন গতি হল না।


বড়চাচার অর্থকড়ি কমে গেলেও আরাম আয়েশে কোন কমতি হলনা, বরং আরো জেঁকে বসল। স্থানীয় কলেজে লাইব্রেরীয়ান এর দায়িত্ব নিলেন, শুয়ে বসে যে চাকরী করা যায়। তবে একটা ব্যাপারে পরিবর্তন আসল। বেশ ধার্মিক হয়ে গেলেন তিনি। সকাল দশটায় ঘুম থেকে উঠে নাস্তা সেরে প্রতিদিন ফযরের নামাজ আদায় করেন এবং এ সিস্টেমে কোন সমস্যা নেই বলেও সবাইকে জ্ঞানদান করেন। :#)


বড়চাচা নিজেকে বেশ বুদ্ধিমান লোক বলে মনে করেন। তিনি তার ছেলেমেয়েদের সবসময় বলেন, “আমি তোদের টাকা-পয়সা ধন-সম্পদ তেমন কিছুই দিতে পারবনা। তবে আমি তোদের ভাল ভাল বুদ্ধি দিতে পারব।” :P :P


একবার তার বুদ্ধির খেসারত দিতে হল বাবাকে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাবা ছিলেন ক্লাশ নাইনের ছাত্র। যুদ্ধ শেষে ১৯৭২ সালে চাচার হঠাৎ ধারনা হল দেশের সব ভাল ভাল চাকরী সবাই পেয়ে যাচ্ছে। তাই তার ছোটভাইকে উপদেশ দিলেন সেবারেই মেট্রিক পরীক্ষা দিয়ে দিতে। কারন তাড়াতাড়ি পড়াশোনা শেষ না করলে দেশে কোন চাকরী আর বাকী থাকবে না। B:-) বড়ভাইয়ের কথা শুনতে গিয়ে বাবা খারাপ রেজাল্ট করে বসলেন। এখনো সুযোগ পেলেই বাবা সেই আফসোস করেন।


খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে চাচার খ্যাতি দারুন, এই প্রায় ষাট বছর বয়সে তিনি আমাদের মত দু-তিনজন ইয়াং যুবকদের চেয়ে বেশী খেতে পারেন। কুরবানীর ঈদের পরদিন দুপুরে পারিবারিক আড্ডায় হঠাৎ বললেন, “আজ সকালে খাসীর পায়া দিয়ে যে নাস্তাটা করলাম এত সুস্বাদু হইসে যে কি আর বলবো! বেহেস্তেও এই খাবার পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।” =p~


ড্রিঙ্কসের উপর তার মারাত্মক টান, একসময় অনেক রকমের পানীয় খেয়েছেন বলেই হয়ত। এখন সেভেন-আপ দিয়ে চাহিদা মেটাতে হয়, একদিন আমাকে দিয়ে টাইগার এনার্জি ড্রিংক আনিয়ে খেলেন, বললেন,
“শরীরটা তো আগে ঠিক রাখতে হবে, কি বলিস?” ;)

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০০৯ রাত ১০:৫৩
২৫টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ড্রেনেই পাওয়া যাচ্ছে সংসারের তাবৎ জিনিস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫০



ঢাকার ড্রেইনে বা খালে কী পাওয়া যায়? এবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর) একটি অভুতপূর্ব প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তাতে ঢাকাবাসীদের রুচিবোধ অথবা পরিচ্ছন্নতাবোধ বড় বিষয় ছিল না। বড় বিষয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×