আমরা যখন কথা বলি তখন এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করি যার প্রতিষ্ঠিত কিছু মানে আছে এবং তার ফলে যার সাথে কথা বলি তিনি কিছু একটা বুঝতে পারেন। বলতে পারেন এ আবার কি তত্ত্ব হলো, এটা তো সবাই জানে। যদিও সবাই জানে তার পরও বলছি কারন কখনো কখন উল্টোটাও হয়।
যেমন, ছোট একটা শিশু যখন কথা বলা শিখেনি তখনো সে কিছু শব্দ করে, কিছু একটা বুঝাতে চায়। যদিও শুরুতে তার সে কথা কেউ বুঝতে পারে না। তবে অনেক বার শোনার পর বাবা মা সেই কথারও একটা মানে তৈরী করতে পারেন, শিশু কি বুঝাতে চেয়েছিল তা বুঝার পর। তবে শিশু যখন পরিপূর্নভাবে কথা বলতে শিখে তখন সে প্রচলিত শব্দই ব্যবহার করে মনে ভাব প্রকাশ করার জন্য।
এখন আসা যাক, কেন এই অতি পরিচিত কথাগুলো বলছি সেই প্রসংগে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কথাটা প্রথমে যখন আমি শুনি তখন এর কোন মানে বুঝতে পারিনি। এখনো ঠিক বুঝতে পারি না।যদিও ডিজিটাল এবং বাংলাদেশ শব্দ দুটোই অতি পরিচিত। ছাত্র জীবনে ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্স, ডিজিটাল টেলিকমুনিকেশান, ডিজিটাল সিগনাল প্রসেসিং ইত্যাদি পড়ে পড়ে ডিজিটাল সম্পর্কে একটা ভালোই ধারনা হয়েছিল। কিন্তু এই ডিজিটাল এর সথে বাংলাদেশ জুড়ে গিয়ে আমার সর্বনাশ হল। আমার ছাত্র জীবনের সকল সাফল্য ভুল প্রমানিত হল, আমি এর কোন মানে বুঝতে পারলাম না।
যাই হোক, আসলে আমার ধারনা কেউই এর সঠিক মানে জানেন না, কারন এর আসলেই কোন মানে নেই। তবে এই কথা দিয়ে একটা কিছু বুঝনোর চেষ্টা করা হয়েছে। এটাদিয়ে কি ধরনের ভাব প্রকাশ করার চেষ্টা করা হয়েছে, তা নিয়ে অনেকে কিছু একটা অনুমান করার চেষ্টা করছেন এখন। আবার এই কথাটার কি ব্যাখ্যা দিলে তা সর্বাঙ্গ সুন্দর হয় তা নিয়েও ভাবা হচ্ছে।
শুনলাম বিসিএস পরিক্ষায় নাকি এটা নিয়ে রচনাও লিখতে দেয়া হয়েছে। এখান থেকে একটা ধারনা হয়তো পাওয়া যাবে অধিকাংশ মানুষ, ডিজিটাল বাংলাদেশ কথা দিয়ে কি বুঝতে পারছে। এটা শিশুর তৈরী করা অজানা শব্দের মানে করার মতোই মনে হচ্ছে। বাবা মা তার সন্তানের প্রতি চরম ভালোবাসা থেকেই এ চেষ্টা করেন। আমরাও তাই করছি।
এখন অপেক্ষায় থাকার পালা, কখন শিশু প্রচলিত শব্দ ব্যবহার করে মনের ভাব প্রকাশ করা শিখে তার জন্য। তার পরই এ ব্যাপারে তার একটা স্পষ্ট ধারনা হতে পারে। তখনই কেবল আমরা আশা করতে পারি ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্যে আমাদের পথ চলার সূচনা।
(যদিও আমার এই লিখাটা বিশেষ কারও বিরুদ্ধে গেছে, তবুও আমার উদ্দেশ্য বিশেষ কাউকে আহত করা নয়। আমি মনে করি এটা আমাদের জাতীয় সমস্যা। আমি নিজেও এই জাতির অংশ। সেখান থেকেই এই লিখার প্রেরনা পেয়েছি)