মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি, মেনেও নিচ্ছি আসলে, আমাদের চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ে নি এক মেগাওয়াটও, সুতরাং এই গ্রীষ্মে প্রায় চুল্লী হয়ে উঠা শহরে আমাদের অনেকটা সময় বিদ্যুতবিহীন কাটাতে হবে, দেশের সবারই বিদ্যুতের চাহিদা আছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, যারা সরাসরি বিদ্যুত সরবরাহের উপরে নির্ভর করে উৎপাদনে যায়, তাদেরও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ প্রয়োজন।
আমাদের মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হয়, তীর্যক রোদ এসে গায়ে লাগে, ফোস্কা পড়ে গেলেও মানিয়ে নেই, আমাদের বিদ্যুতের উৎপাদন কম। সারাদিন লোড শেডিং হলেও মেনে নি, দরকার আছে, আমাদের শিল্পোৎপাদনের জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন।
এই ভাবেই নিজের চাওয়াগুলো কেটে ছেটে বেঁচে আছি, পানি নেই, বিদ্যুত নেই, সবুজ নেই, একটু ফাঁকা জায়গা নেই, একটু অবসর নেই, এমন কি হারানো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এখন শহরে ৫ ঋতু খুঁজতে হবে, আমাদের ঢাকা শহরে একটাই ঋতু, গ্রীষ্ম, জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর, মাঝে মাঝে হঠাৎ হঠাৎ ভুল করে শহরে ঢুকে পড়া মেঘেরা শহরের আবর্জনা দেখে মুতে চলে যায় ছাদের কার্ণিশে, এটাকে বর্ষা বলে না।
শরৎ কিংবা হেমন্ত আমি অনুভব করি নি অনেক দিন, আর গত তিন বছরে আমি টি শার্টের উপরে শার্টও পড়ি নি। আমার জীবন থেকে ঋতু বৈচিত্রও হারিয়ে গিয়েছে, কিন্তু কায়ে ক্লেশে মানিয়ে নিয়েছি। কাটছাঁট করে নিয়েছি নিজের জীবন। আমাদের অবকাঠামোর সমস্যা আছে।
আমাদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য সবাইকে নিজের চাহিদা সামান্য ছাঁটতে হবে। আমরা মানিয়ে চলছি। তবে আর কতটুকু।
ঠিক বিকেল ৫টায় লোড শেডিং শুরু হলো, সেটা শেষ হলো ৭টায়, ৭টা ২৫এ আবার লোড শেডিং, শেষ হলো ৮ টায়, আবার শুরু হলো ৮টা ২০এ। শেষ হলো ৯টায়।
এই ৪ ঘন্টায় লোড শেডিং ৩ ঘন্টারও বেশী। মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে আছে। ভাবলাম কি করা যায় এই বিদ্যুত বিভাগের কর্মচারীদের নিয়ে, তারা বলেছে ১ ০ ১ ০ ১ ০ ১ ০ এভাবে চলবে আমাদের বাইনারি জীবন, সেখানে নিয়ম ভেঙে ২ ০ ০.৫ ০.৪ ০.৫ এমন একটা ব্যতিচারের জন্য তাদের কি করা যায়।
অনেক ভেবে দেখলাম আমি আসলে যা করতে চাইছি, বাজার থেকে মোটামুটি প্রমাণ সাইজের একটা মোমবাতি এনে, বিদ্যুত বিভাগের কর্মচারীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখে তাদের হোগায় মোমবাতি ভরে আগুণ জ্বালিয়ে দেখবো। সারা দিনে যতবার লোড শেডিং ঠিক ততটা মোম বাতিই শেষ হবে এই মোমবাতি স্ট্যান্ডে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ৯:৩৪