somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘুরে এলাম কাঁকড়া নদীর রাবার ড্যাম।

২৭ শে এপ্রিল, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি থাকি দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলায়।
চিরিরবন্দর দিনাজপুর জেলার আর একটি উপজেলা। পার্বতীপুর উপজেলা থেকে পশ্চীমে চিরিরবন্দর এবং চিরিরবন্দরের দক্ষিনে ভারতের পশ্চীমবঙ্গ।

ব্রিটিশ আমলে এই উপমহাদেশে যে কয়েকটি বানিজ্যিক স্থান উল্ল্যেযোগ্য তার মধ্যে চিরিরবন্দর একটি। এর প্রধান নদী ছোট যমুনা ও আত্রাই। এই নদী বন্দর দুটিই ছিল সেই সময়ের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি প্রধান বানিজ্যিক কেন্দ্র।

চিরিরবন্দর উপজেলার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে আরও আনেক ছোট ছোট নদী। সব নদীই মরে গেছে। খুঁজে পাওয়া যায়না ছোট যমুনা বা আত্রাই নদীকে। মহাসড়কের সেতুর গায়ে লেখা নদীর নাম দেখে বুঝি এটা ছোট যমুনা নদী বা আত্রাই নদী।

চিরিরবন্দর উপজেলার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত নদীর নাম কাঁকড়া। এই নদী চিরিরবন্দর উপজেলাকে দুই ভাগ করেছে। এখানকার মানুষ কৃষি নির্ভর। কিন্তু নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে কৃষিকাজ প্রায় বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছিল। চাষযোগ্য জমির মাত্র ৩১হেক্টর আবাদ হত বাকি সাড়ে চার হাজার হেক্টর জমি আনাবাদি পরে থাকত । আথচ আমাদের দেশের চাল উৎপাদন হয় বৃহত্তর দিনাজপুরেই বেশি।

কাঁকড়া নদীর উপর রাবার ড্যাম তৈরি করে, সম্পুর্ন উপজেলা জুড়ে দেখা যায় শুধু ফসলের মাঠ , ধান ক্ষেত আর ধান ক্ষেত । আজকাল নিথুয়া পাথার খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু চিরিরবন্দরে এলে মাইলের পর মাইল যত দূর চোখ যায় শুধু ধান ক্ষেত আর ধান ক্ষেত। নদী মরে যেয়ে আমাদের দেশ যে মরুভূমীর মত হয়ে যাচ্ছে তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু নদীতে বাঁধ দিয়ে, আমরা যে সবুজের বিপ্লব ঘটাতে পারি তার জলন্ত উদাহরন হল,এই বাঁধগুলি। ওখানে যেয়ে জেনেছি এই ধরনের মোট দশটি বাঁধ আছে সারা দেশ জুরে।

রাবার বাঁধ একটি রাবারের টিউব। বাস বা ট্রাকের চাকার টায়ারের মত যা প্রয়োজন মত বাতাস দিয়ে উঁচু নীচু করে পানি কে সংরক্ষন করা ও ব্যাবহার করা। রাবারের যে টিউবটা ব্যাবহার করা হয়েছে তা নদীর প্রস্তের অর্ধেক মাপের । আর্থাৎ, নদীর প্রস্থকে দুই ভাগে ভাগ করে দুইটি টায়ার ব্যাবহার করা হয়েছে। একপাশে টায়ারকে বাতাস দিয়ে ফুলিয়ে উঁচু করে পানি আটকান হয় , আবার অন্য পাশের টায়ারের বাতাস বের করে দিয়ে টায়ার টা নীচু করে পানি ছেরে দেয়া হয়। যে পাশে আটকানো হয় সেই পাশে টিউব টা পানির সমন্তরাল থেকে উঁচু করা হয়। মাঝে মাঝে দুই পাশের টিউব নিচু করে দেয়া হয়। তা করা হয় পানির প্রয়োজনিয়তার উপর।


খুব ভাল লাগল দেখে যে এই শুকনা মৌসুমেও নদীতে থৈ থৈ করছে পানি। আর বাধের উপর দিয়ে ঝরনার মত গড়িয়ে পরছে পানি। কি পরিস্কার আর স্বচ্ছ পানি। জায়গাটা দেখতে অনেকটা ঢাকার আরশুলীয়ার মত। পার্থক্য হল , নেই কোন কলাহল, যান্ত্রিক শব্দ, নেই ফুচকা চটপটি ওয়ালাদের চিৎকার। নেই কোন ভীর লোকজন।

নদীতে জেলেরা মাছ ধরছে। ছোট ছোট নৌকায় করে। কিছু গ্রামবাসী তাদের মত ঝিনুক, শামুক কুড়াচ্ছে হাঁস কে খাওয়াবে বলে। এখানে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। কিছু দূরেই রয়েছে হাট।

আমরা নদীর পাড় বেয়ে বেয়ে নেমে এলাম নদীতে। যেদিকে পানি কম সেই দিকে। পানি এত পরিস্কার যে নীচের বালি, কাঁকড়, নুড়ি, শামুকের খোল সবই দেখা যায়।

মাছের পোনারা খেলা করছে, আমাদের পায়ের কাছে। পায়ের নীচে চিকচিক করছে বালি। আর আমাদের পাশে ঝরনার মত হইচই করতে করতে কলকল শব্দে পানি পরছে ঝরঝর করে।
আমরা নদীতে নামলাম । নেমে ভাবছি আর যাব কি না? পানি কতটুকু আছে। কারন সাঁতার তো জানি না আমি ও আমার ছেলেমেয়েরা ।

;)দেখি হাঁসগুলো তো হেঁটেহেঁটেই যাচ্ছে নদীর মাঝ দিয়ে । আমাদের আর ভয় কি ? আতএব শুরু করলাম হাঁটা। আমার পিছন পিছন আমার পরিবারের সদস্যরা। আমিই ওদের বললাম আসতে । পানিই তো নাই। কি মজা! কিছু্টা হাঁটলাম ।

:-*কিছু দূর যেয়ে আমি পরম নিশ্চিন্তে বাড়িয়ে দিলাম এক পা সেই পা পেল না কোন মাটি। যখন পেল তখন আমি কোমর পর্যন্ত পানির তলে। তাকিয়ে দেখি আমার চার বছরের ছেলে তার বাবার কলে চড়া আবস্থায় চিৎকার করছে বাবা তুমি বসছ কেন ? আর আমার ছয় বছরের মেয়ে আমার গাড়ীর ড্রাইভারের কোলে। কারন ড্রাইভার ওর পাশে ছিল। ড্রাইভার নিজে যেই কোমর পানিতে পরেছেন সাথে সাথে তিনি আমার মেয়েকে কোলে তুলে নিয়েছেন। তা না হলে বেচারা মেয়েটা আমার এক ঢোক পানি খেয়েই ফেলত।

:Pএখানে বলে রাখা ভাল যারা যারা কোমর পানিতে আমরা ডুবেছি তাদের মধ্যে আমি ছারা সবার ই পরনে ছিল জিন্সের প্যান্ট।

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১০:৩১
১৫টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×