somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনি কি ই-মেইল আসক্ত?

২৩ শে এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৫:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেইলটা পেয়েছিলাম আমার অফিস হেডকোয়ার্টার(মলয়েশিয়া) থেকে। ভাল লেগেছে বিষয়টা তাই সবার সাথে শেয়ার করলাম। হুবুহু না লিখে একটু এদিক ওদিক করে তুলে দিলাম ।

১৯৯০ সালে জন্ম হওয়ার পর থেকে ইমেইল নিঃসন্দেহে মানুষকে সুবিধাদি দিয়ে আসছে বিস্তর । গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা, অনুরোধ, উত্তর প্রভৃতি আমাদের ইনবক্সে জমা হয়ে থাকে দলিল হিসাবে। আপনার ব্যবসায়িক কিংবা দূর, সুদূর প্রবাসে থাকা বন্ধু-বান্ধব কিংবা পরিবারের সাথে খুব সহজে, দ্রুত এবং কম খরচে যোগাযোগ করার মাধ্যম এটি। এখন কে আর টেলিফোনের রিসিভার টা তুলে কথা বলে কিংবা পাশের রুমের সহকর্মীর কাছে হেঁটে গিয়ে আলাপ করে যদি না তার অফিসে আগুন লাগে? জন্মের ২০ বছরের ও কম সময়ের মধ্যে ই-মেইল এবং ইন্সট্যান্ট ম্যাসেজিং(আই.এম) ব্যবসায়িক যোগাযোগের ক্ষেত্রে একছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছে। কিন্তু আমাদের এই অতি ই-মেইল নির্ভরতা কে আজ অনেকেই মনে করছে ক্ষতির কারণ হিসেবে।

নিচের বৈশিষ্ট গুলো পড়ে দেখুন তো আপনি ই-মেইল আসক্ত কি না?
ই-মেইল চেক না করে ১৫ মিনিটের বেশী কোন কাজ মনোযোগের সাথে করা আপনার কাছে কি কঠিন মনে হয়?

মাত্র কয়েক ঘন্টা যদি আপনি ইমেইল চেক করতে না পারেন তাহলে কি আপনি ভীত হয়ে পড়েন? (সর্বনাশ কি না জানি কি হয়ে গেল, ভেবে?)

অফিসে মধ্যাহ্ন বিরতির পর ফিরে যদি কোন মেইল না পান তাহলে কি আপনি একাকিত্ব বোধ করেন?(কেউ একটু মনে করে না আমাকে, ভেবে?:()

প্রতিদিন সকালে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অন্ততঃ একবার ইনবক্সটা চেক করেন?

কেন এটা ক্ষতিকর?
গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাদ দিয়ে ই-মেইলের প্রতি এই সময়ের অপচয় আসলে মানুষকে তার কর্মদক্ষতা/উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয়। একইভাবে রাত জেগে এর পেছনে সময় নষ্ট (ওয়াইফাই স্পট খুঁজে বেড়ানো) কিংবা অবসর সময়ে এটা আপনার পরিবার কিংবা বন্ধু বান্ধবের সাথে একটু রিলাক্স করা থেকে বিরত রাখে আপনাকে।

মোকাবেলা করবেন যেভাবে
এই ব্লগ পড়তে পড়তে যদি আপনার মনে হয় ইনবক্সটা এখনই একবার দেখা দরকার, থামুন, আপনার এই আসক্তিটা থামাতে এই চারটি টিপ্স পড়ে নিন।

১. তৈরি করুন ভার্চুয়াল কারফিউঃ
কাজের সময়টার বাইরে আপনার এবং আপনার প্রিয়জনদের উপর ই-মেইলের ক্ষতিকর প্রভাবটা কমিয়ে আনা দরকার আপনার। ইনবক্স নিয়ে পড়ে না থেকে তারা চায় অন্ততঃ আপনি তাদের সাথে একটু সময় দিন। কাজ থেকে (অফিস থেকে) ফেরার পর সত্যিই যদি এটার পেছনে আপনার একঘন্টা সময় দেওয়া প্রয়োজন হয় তবে দিন। কিন্তু এর ঠিক পর পরই বন্ধ করে ফেলুন আপনার কম্পিউটার। বিশ্রাম নিন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আর অন লাইন্ড হবেন না যেন। এমনকি সপ্তাহে অন্ততঃ একটি ই-মেইল ফ্রি দিন কাটান।

২. কথা বেশী, টাইপ কমঃ
অধিকাংশ সময় আমরা এমন মেইল পাঠাই যা মেইল গ্রহীতার কাছে উত্তরের চেয়ে বরং বেশী প্রশ্নের জন্ম দেয়। কাজেই এই দূর্বোধ্য মেইল না পাঠিয়ে বরং একটু ফোন করে আপনি আপনার সময় বাঁচান।

৩. চিঠি লিখুনঃ
অনেকদিন হয়ত চিঠি লেখেন না। আপনার আঙ্গুলগুলো হয়তবা ভুলে গেছে কিভাবে কলম দিয়ে লিখতে হয়। মাঝে মাঝে চিঠি লিখুন এবং উপভোগ করুন চিঠি লেখার মজা। চিঠি পাওয়ার মজাই কিন্তু আলাদা। বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মীদেরকেও এই বিষয়টায় উদ্বুদ্ধ করতে পারেন, অন লাইনের বাইরে জীবনে আরো কিছু আছে।

৪. ঘুরে আসুন কোথাওঃ
ছুটির দিনে সাথে ল্যাপটপ না নিয়েই বেরিয়ে পড়–ন কোথাও। ই-মেইলের কথা ভুলে যান। ফেরার পর আশ্চর্য হয়ে যাবেন আপনি, দেখবেন আপনাকে ছাড়াও পৃথিবী চলে!

পরিশেষেঃ ইনবক্স নামক এই ছোট্ট জিনিষটি আপনার সময় অপচয়ের একটা বড় কারণ হতে পারে। আরো বেশী কর্মক্ষম/উৎপাদনশীল, এবং জীবনটাকে উপভোগ্য করার জন্য আপনার ঐ ইনবক্সের বাইরে অন্য কিছু নিয়ে ভাবুন।

এতক্ষণ যে বিষয়টি আলোচনা হলো তা হয়ত আমাদের জনবহুল এই দেশের সীমিতসংখ্যক লোকজনের জন্য প্রযোজ্য হতে পারে। তবে আমার মনে হয় এই ই-মেইল শব্দটির স্থলে ব্লগিং বললে তা সামুর কিছু ব্লগারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে:)। তখন প্রশ্নটি হবে এরকম, আপনি কি (সামু) ব্লগ আসক্ত? কারণ কিছু ব্লগারকে দেখি তারা বোধ হয় ২৪ ঘন্টাই লগডইন থাকেন। যাক, যা বলছিলাম, কেউ যদি প্রশ্ন তোলেন তাহলে এই বাস্তবতা বিবর্জিত ব্লগ কেন? উত্তরটা তো সবার জানা, বাংলাদেশ তো ডিজিটাল হতে চলছে। কোন এক রাজনীতিবিদ নাকি বলেছেন, বাংলাদেশের কৃষকের কাধেঁ থাকবে লাঙ্গল আর হাতে থাকবে ল্যাপটপ। কিন্তু এই কৃষককুল যদি উৎপাদনশীল কাজ বাদ দিয়ে মাঠে যেয়ে চ্যাটিং করে, ব্লগিং করে আর মেইল চালাচালি করে সময় নষ্ট করে তাহলে কি হবে এই দেশের অবস্থা একবার ভেবেছেন?:(

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৫:১৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×