somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের অগোছাল সংসার (একটি সম্পুর্ন আজাইরা পোষ্ট)

২৩ শে এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৪:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ কেন যেন আমাদের এই সংসারটা সম্পর্কে লিখতে ইচ্ছা হলো।

এই বাসাতে আমরা ৫ জন ছেলে থাকি। বাসাটা কবে কে প্রথম ভাড়া নিয়ে ছিলো কেউ জানেনা। অবাক হচ্ছেন? আসলে এটাই সত্যি। ব্যাক্ষা করি একটু। প্রথমে হয়তো কেউ বাসাটা ভাড়া নেয়, সে তার সাথে কয়েকজন ছেলেকে নিয়ে এই বাসায় ওঠে। তাদের কেউ কেঊ এক সময় চলে যায়, নতুন ছেলেরা এসে ওঠে। একসময় যে প্রথম বাসাটা ভাড়া নিয়েছিলো, সে নিজেও চলে যায়, নতুনদের মধ্যে কেউ বাসার লিজটা নিজের নামে নিয়ে নেয়। যে চলে যায়, সে সাথে করে তার নিজস্ব জিনিসপত্র নিয়ে যায়, সংসারের জন্য কেনা জিনিশ গুলো থেকেই যায়। আমি যাদের সাথে উঠেছিলাম তাদের কেউই আর নেই এখন। হারাধনয়ের সাতটি ছেলের মত একজন একজন করে পুরাতনরা সবাই চলে গেছে অন্য কোন বাসায়। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে কন্যাবিহিন এই সংসারটা তার নিজ গতীতে চলে আসছে, চলতে থাকবে জানিনা কতদিন।

সংসার, সেইটা একজনের ছোট্ট সংসার হোক অথবা ১০ জন সদসসের অনেক বড় সংসার, তার কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস থাকেই। আমাদের সংসারেও হয়তো সবকিছুই আছে, কিন্তু আমরা নিজেরাও জানিনা যে আমাদের কি কি আছে, কি নেই। যেমন কেউ রান্না করবে, সব কিছু রেডি, চুলায় পাতিল বসিয়ে দিয়ে দেখলো যে ঘরে একটাও পেঁয়াজ নেই। সবচেয়ে বড় সমস্যা হয় তেল আর চাল নিয়ে। মশলা প্রায়ই থাকেনা সবগুলো, যা থাকে তা দিয়েই রান্না হয়। সব গুড়া মসলা আর আদা, রসুন এর পেস্ট ব্যাবহার করি আমরা। পেয়াজ আর মরিচটা কেটে নিতে হয় শুধু। ফ্রিজে মাছ মাংস সব সময়েই থাকে, যার যেদিন রান্না থেকে, সে একটা কিছু বের করে নেয়। প্রায় সময়েই একটা তরকারি আর ডাল রান্না করা হয়। মাঝে মাঝে তরকারির সাথে শাকসবজি থাকে। দুপুরের রান্না প্রায় দিনই বিকেল ৫টার পর শেষ হয়, মাঝে মাঝে ৬টা ৭টাও বেজে যায়। ২৪ ঘন্টা ছেলেরা কিছু না কিছু খায়। কেউ দিনে কাজ করে, সন্ধায় ফিরে এসে খায়, কেউ সারারাত কাজ করে ভোরবেলায় ফিরে আসে। যাদের সকালে ক্লাস বা কাজ নেই, তারা দুপুরের খাবার খায় বিকেল ৬ টার দিকে, রাতেরটা খায় রাত ৩ টায়। গত ৪ বছরে ব্রেকফার্স্ট জিনিসটা সকালে খুব কম দিনই খেয়েছি, আমার নরমাল ব্রেকফার্স্ট টাইম দুপুর ২ টার পর। সিডনীতে অনেক বাসাতেই একবেলা বাসায় বসে খাবার নিয়ম। রান্নার ঝামেলার জন্য এমনটা হয়। সব বাসাতেই মাঝে মাঝে কোন খাবার থাকেনা। হয়তো কেঊ রান্না করতে ভুলে গেছে অথবা কাজে চলে গেছে, সেদিন আর সহজে বাসায় কিছু খেতে পাওয়া যাবেনা। বাসায় প্রতিদিন কমপক্ষে ১৮ ঘন্টা টিভি চলে। অনেক সময় কেউ না থাকলেও টিভি চলতেই থাকে। সমস্ত ঘরে ডিভিডি ছড়ানো ছিটানো। বসার ঘরে কম্পিউটার টেবিলে রাজ্যের কাগজপত্র, আগের দিনে খাওয়া পানিয়ের বোতল (হার্ড এবং সফট), কাপড় চোপড়, এমনকি কাঁথা বালিশ পর্যন্ত স্তুপ করা থাকে। প্রায় দিনেই টিভির রিমোর্ট খুজে পাওয়া যায় না। সেইটা খুজতে গিয়ে এলোমেলো জিনিসগুলো আবারো ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়।

আমাদের বাসার দেয়ালে একটা ওয়েল পেইন্টিং আছে। বাসাটার মালিক বলেছেন ঐ পেইন্টিংটা উনি বাসা কিনে নেবার আগে থেকে আছে, তার মানে প্রায় ১১ বছর হবে। ঘর পরিস্কারের ব্যাপারে আমাদের সবারই চরম অনীহা। শুধুমাত্র বাসায় গুরু‌ত্বপুর্ন কোন গেস্ট আসার কথা থাকলে অথবা বাসা ইন্সপেকশন থাকলে আমরা সবাই মিলে ঘর পরিস্কার করতে লেগে যাই। প্রতিটা ঘরের মেঝেতে আর বিছানার উপর কাপড় চোপড় এর স্তুপ পাওয়া যাবেই। আর একটা জিনিস বলতে ভুলে গেছি, আমাদের বাসায় মোট ৪৭ জোড়া জুতো আছে ! ৫টা মানুষের কি করে ৪৭ জোড়া জুতো থাকতে পারে সেইটা আমরা কেউ জানিনা। বাসায় ঢুকতে গেলে হঠাৎ করে কেউ ভাবতে পারে যে এখানে পার্টি চলছে ! আসলে সেটা না, আমরা এভাবেই থাকি।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০০৯ রাত ৮:০৬
৩৮টি মন্তব্য ৩৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×