somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘুমিয়ে নেই কেউ, খোলা আছে চোখ

২২ শে এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৪:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



৬ই এপ্রিল-সাচার কমিটির রিপোর্টে চোখ খুলে গেছে তাদেরই, যারা এতদিন ঘুমিয়ে ছিলেন। সাফ বললেন সালে আহ্‌মদ। মোমিনপুরের বাসিন্দা এই বৃদ্ধের কথা হলো, পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা তো ঘুমিয়ে নেই যে হঠাৎ একটা রিপোর্টে তারা জেগে উঠবেন!


প্রশ্ন করেছিলাম সাচার কমিটির রিপোর্ট নিয়ে, কিছুদিন হলো যা নিয়ে কিছু সংবাদমাধ্যম এবং তার পোঁ ধরে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা(যেটা তাদের স্বাভাবিক রীতি) মুসলিম মহল্লায় গিয়ে প্রচুর ঢোল-করতাল বাজানো শুরু করেছেন। কিন্তু এই প্রশ্নের যে এমন প্রতিক্রিয়া হবে তা ভাবিনি। আরো কড়া ভাষায় বললেন বেনিয়াপুকুরের বাসিন্দা, পেশায় ‌অ্যাডভোকেট নইমুদ্দিন সাহেব। বললেন, সারা ভারতে আর কোন রাজ্যে মুসলিমরা এমন আমনের সঙ্গে আছে, দেখান তো। জান-মাল-হেফাজত রয়েছে বামপন্থীদের জন্যই।


গুলপাড়ার শবনম বেগমের বক্তব্য, আমাদের ছোটবেলায় মুসলিম ঘরের মেয়েদের তালিম পাওয়ার কোনো সুযোগই প্রায় ছিল না। এখন তো মুসলিম মেয়েরাও ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে দেখতে পাচ্ছি। মেটিয়াবুরুজের তিনটে ওয়ার্ডের মধ্যে এখন কলেজ, হাইস্কুল, উর্দু হাইস্কুল, মাদ্রাসা-সব রয়েছে।


সাচার কমিটির রিপোর্টে অসঙ্গতির কথা বললেন মোমিনপুর রোডের মহম্মদ আব্বাস। তিনি বললেন, মুসলিমরা পিছিয়ে থাকার মূল কারণ লেখাপড়ায় জোর না দেওয়া, সুযোগ না থাকা। বামফ্রন্ট সরকার সেই বিষয়েই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। অসংখ্য মাদ্রাসা হয়েছে সরকারী সাহায্যে, সেখানে বিজ্ঞান ভিত্তিক পড়াশুনার ব্যবস্থা হয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষকরা সরকারী বেতন পাচ্ছেন, যা দেশের আর কোথাও নেই। কথায় কথায় জানা গেলো, এবারে শুধু আল-আমিন মিশন থেকেই ৩৭জন মুসলিম ছাত্র-ছাত্রী মেডিক্যালে জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কথাও উঠে এলো এই প্রসঙ্গে।


নইমুদ্দিন বললেন, মানুষে মানুষে শান্তি একটা বড় কথা। হিন্দু-মুসলিম-খ্রীশ্চান সকলেই এখানে সুখে-শান্তিতে বসবাস করছেন। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া, চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, রাস্তা-ঘাট-এলাকাগত উন্নয়ন সবারই সমানভাবে হচ্ছে। সাফল্য-অসাফল্য আমরা ভাগাভাগি করে নিচ্ছি। এখানে অশান্তি করার চেষ্টা যারা করছে, সংখ্যালঘু সাধারণ মানুষ কখনো তাদের মেনে নেবেন না।


কংগ্রেস-তৃণমূলের পক্ষ থেকে এরাজ্যে সংখ্যালঘুদের প্রতি বঞ্চনা, বৈষম্যের যে অভিযোগ করা হচ্ছে, সে সম্পর্কে জানতে চাইলে রীতিমতো উড়িয়ে দিলেন নইমুদ্দিন, আব্বাস, সালে আহ্‌মদরা। বললেন, দেখুন, যারা জানে না, তাদের এনিয়ে ভুল বোঝানো যেতে পারে। কিন্তু মানুষকে বেশিদিন ভুল বুঝিয়ে রাখা যায় না। নইমুদ্দিন বললেন, এই তো গত বছর পর্যন্ত দিল্লির কংগ্রেস সরকার গোটা দেশের সংখ্যালঘু মানুষের জন্য বাজেটে বরাদ্দ করেছিলো ১হাজার কোটি টাকা। আর সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বরাদ্দ করেছে ৪০০ কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য শুধু সংখ্যালঘু ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শেখার জন্যই ইতোমধ্যে ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। মুসলিম জনসংখ্যা বেশি এমন ১২টা জেলায় সংখ্যালঘু উন্নয়নে বিশেষ সরকারী ‌অফিস খোলা হয়েছে এরাজ্যে, যা দেশের অন্য কোথাও হয়নি।


মধ্য কলকাতার গুলপাড়া, বামনবেলি, গোরাচাঁদ রোড, লিন্টন স্ট্রিট, ওস্তাগর লেনের বাসিন্দা চপ্পল ব্যবসায়ী আবদুল কাদের, ক্যা মেরা মেরামতির কারিগর মহম্মদ নাসের ‌অথবা মুসারত খাতুন, শবনম বেগমরা একবাক্যে বললেন, পশ্চিমবঙ্গ গুজরাট হোক তা আমরা চাই না, আমরা চাই শান্তিতে থাকতে। বিরানব্বই সালে বাবরি মসজিদ ভাঙার পর এরাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার, সি পি আই (এম)-এর কর্মীদেরই দেখেছি বুক আগলে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে। গোটা দেশে আগুন জ্বললেও এরাজ্যে দাঙ্গা বাঁধাতে দেওয়া হয়নি। গতবছর ইদ্রিশ আলিদের দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টার ঘটনার উল্লেখ করে বললেন তাঁরা, আজ কংগ্রেস, কাল তৃণমূলের ওই নেতার বিরুদ্ধে তো একটা কথাও বলেননি কংগ্রেস-তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। এখন হঠাৎ তাদের দরদ উথলে উঠলো কেন? ভোট এসেছে বলে?

১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহর সাহায্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৫ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪০



দুই মেয়ের পরীক্ষা বিধায় আমার স্ত্রীকে লক্ষ্মীপুর রেখে আসতে গিয়েছিলাম। বরিশাল-মজুচৌধুরীর হাট রুটে আমার স্ত্রী যাবে না বলে বেঁকে বসলো। বাধ্য হয়ে চাঁদপুর রুটে যাত্রা ঠিক করলাম। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডয়েজ ভেলে'র প্রকাশিত এই প্রামাণ্যচিত্রটি বেশ উদ্বেগজনক

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৫ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন বাহিনী থেকে প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকান্ডে যুক্ত সৈনিকদের ইউ.এন. এর পিস কিপিং মিশনে পাঠানোর বিষয়ে ইউ.এন. এর কর্মকর্তাগণ বেশ উদ্বিগ্ন। এ বিষয়ে ডয়েচ ভেলে ক'দিন আগেই একটি প্রামাণ্যচিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুলের চিন্তার কাবা প্রাচ্য নাকি পাশ্চাত্য?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে মে, ২০২৪ ভোর ৫:০৫


কাজী নজরুলের বড় বিপত্তি তিনি, না গোঁড়া ধর্মীয় লোকের কবি আর অতিমাত্রায় বামের কবি, না হোদাই প্রগতিশীলের কবি। তিনি সরাসরি মধ্যপন্থীর। অনেককেই দেখি নজরুলের কিছু কথা উল্লেখ করে বলেন কাফের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘূর্ণিঝড় রিমাল সর্তকতা।

লিখেছেন কাল্পনিক_ভালোবাসা, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩

প্রিয় ব্লগারবৃন্দ,
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমাল প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলোর ব্লগারদের কাছে যদি স্থানীয় ঝড়ের অবস্থা এবং ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীতে চিরতরে যুদ্ধ বন্ধের একটা সুযোগ এসেছিল!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৬ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৩


মনে হয় শুধু মানুষের কল্পনাতেই এমন প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন সম্ভব- যদি বাস্তবে হত তবে কেমন হত ভাবুন তো?
প্রত্যেকটি দেশের সমস্ত রকমের সৈন্যদল ভেঙে দেওয়া; সমস্ত অস্ত্র এবং সমর-সম্ভার, দুর্গ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×