somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসার পাশেই (গল্প)

২০ শে এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছেলে-মেয়ের একটা ছোট্ট দল হৈ-হুল্লোড় করে সমুদ্রের তীরের দিকে এগিয়ে চলেছে।গত ভোর রাতে বাসে করে একসাথে ঢাকা থেকে কক্সবাজার এসেছে তারা।গত রাতের ক্লান্তি কাটিয়ে সকাল সাতটা বাজতে না বাজতে আবার সমুদ্রের তীরে বেড়াতে যাচ্ছে।যেন মনে হচ্ছে সমুদ্র তাদেরকে চম্বুক দিয়ে টানছে। হয়ত কেউ কেউ প্লান করেছে এই সকাল বেলাতেই সমুদ্রে নিজেকে একটু ভিজিয়ে নেওয়ার।কারো কারো উদ্দেশ্য ছবি তোলা।আবার কারো বা শুধুই ভ্রমন।আসুন আমরা আগে তাদের সাথে পরিচিত হয়ে নেই।

দলটিতে মোট লোকজনের সংখ্যা এগার জন।হ্যাঁ ওরা এগার জন।ওরা সবাই বাংলাদেশের বিখ্যাত এক ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের ছাত্র-ছাত্রী।ওদের মধ্যে সাতজন ছেলে আর চার জন মেয়ে।ইউনিভার্সিটিতে পড়তে আসার পরই তাদের বন্ধুত্ব।একে অপরকে খুব ভাল করে চিনে মনে হয়।একে একে তাদের পরিচয় দিচ্ছি।আপনার সর্বডান দিকে যে দুজনকে দেখতে পারছেন, ওরা হল শিমুল ও কনা।ওরা সবসময় একসাথেই থাকে।ভালবাসার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে একে অপরকে।দ্বিতীয় যে জুটি রয়েছে এ দলে তারা হচ্ছে সুমন ও ঈশিতা।ওদের মধ্যে কোন না কোন বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি চলছেই সবসময়।দেখে বুঝার উপায় নেই যে সত্যি তারা একে অপরকে ভালবাসে।শিমুল ও কনার পরই দুজন হেঁটে আসছে।যথারীতি তারা কি বিষয় নিয়ে যেন তর্ক করছে।কি বিষয় নিয়ে কথা বলছে এত দূর থেকে বুঝা যায় না অবশ্য।এর পরে আছে যথাক্রমে রবিন,পান্থ,মাসুদ,মিম,বিপাশা,মামুন ও নিয়ন।রবিন ও পান্থ হচ্ছে ছেলে জুটি।যেখানেই যাক না কেন তারা দুবন্ধুর একসাথে যাওয়া চাই।হোস্টেলে দুজন একসাথে থাকে।দুজনই ভাল গীটার বাজায় আবার দুজনই ভাল গানও গায়।বেড়াতে এসেও ওরা গীটার আনতে ভুল করেনি।এদের পাশেই আছে মাসুদ।সবসময় চটপটে আর হাইটে একটু ছোট।সবসময় মজা করে বেড়ায় আর মানুষকে হাসিয়ে বেড়ায়।মাসুদ থাকবে অথচ সেখানে মানুষ না হেসে থাকবে তা হয় না।ঠিক এইজন্যে বন্ধুমহলে সে হানিফ সংকেত নামে পরিচিত।ওদের পাশেই রয়েছে মিম ও বিপাশা।রবিন ও পান্থ যদি ছেলে জুটি হয় তবে বলতে হয় মিম ও বিপাশাও সেরকম মেয়ে জুটি।তাদের আচার ব্যবহারে বোঝা যায় দুজনই সবকিছুর ব্যাপারে বেশ চুজি।এরপরই আছে মামুন ও নিয়ন।দুজন একেবারে দুই প্রকৃতির।মামুন খুব বেশি স্টাইলিশ।মেয়েদেরকে তেমন পাত্তা দেয় না।অনেক মেয়ের সাথেই ঘুরেছে সে।কিন্তু ভালবাসার ব্যাপারে সে সবসময়ই উদাসীন।সে নাকি শহরের মেয়েদের কাছে গেলেই খালি পারফিউমের গন্ধ পায় যা তার একটুও ভাল লাগে না।আর মেয়েরা বলে, তার সুদুর্শন চেহারায় নাকি এসব অহংকারের কারন।আর নিয়নকে উঠতি কবি বলে পরিচয় করিয়ে দেয়া যায়।স্বাস্থ্য একটু মোটা, সবসময় চুপচাপ আর কোন কিছু দেখলেই অভিভূত হয়ে কবিতার লাইন আওড়াতে থাকে।তার কবিতা শুনে অনেকেই ভুল করে যে এগুলো কার লেখা।কিন্তু সত্য হচ্ছে এই যে, ওগুলো নিয়নের ইনস্ট্যান্ট কবিতা।একান্ত নিজের বন্ধু ছাড়া এ কথা অনেকেই প্রায় সময়ই ধরতে পারে না।যেমন এখনকার কথাই ধরেন।সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করেছে,

হে সমুদ্র, ভিজব তোমার কোলে
আমার দেখা স্বপ্নের আলিঙ্গনে
আত্না হবে আজ নির্মল
হাসির বন্যা আজ অবিরল।


মামুন নিয়নকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-ওই ব্যাটা দাঁড়া।এসেই শুরু করে দিছিস।কবিত্ব অন্য জায়গায় গিয়ে দেখাগা যা।

নিয়ন কিছুই বলল না।এসব ধরনের কথা তাকে প্রায়ই শুনতে হয়।এসব কথায় সে রাগও করে না।কবিতা ছাড়া অন্যকিছু তার মুখ দিয়ে বের হয় না অনেক সময়েই।

দলটা প্রায় সমুদ্রের কাছাকাছি চলে এসেছে।তাদের কথাবার্তা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। এতক্ষনে বুঝা গেল সুমন ও ঈশিতা কি নিয়ে কথা কাটাকাটি করছিল।ঈশিতা বলছে,
-সুমন তোর এত ভুলো মন কেন?আমি তোকে কতবার করে বলছি যে ক্যামেরাটা নিয়ে আয়।তোর মন কোথায় থাকে শুনি।
সুমন বলল,
-আমি মনে রাখতে পারি না তো তুই ক্যামেরা নিয়ে রাখতে পারিসনি।সবসময় আমার দোষ।
-তো কি?সামান্য একটা কাজ করতে পারিস না।পারিসটা কি?
-আমি কিছু পারিনা।তুই পারিস?
-চেষ্টা করি।তুই তাও করিস না।অকর্মার ঢেঁকি!
-আমি অকর্মার ঢেঁকি!আমি? তুই কি?
-আমি কি?
-তুই হইলি অপদার্থ আর আমার চোখের বালি।
-আমি অপদার্থ? আমি তোর চোখের বালি?
-হ্যাঁ।
-তাইলে আমার পাশে এসে মরছিস কেন?দূরে গিয়ে মরগা যা।ঢ্যাঙ্গা ঢ্যাঙ্গা কতগুলা মেয়েমানুষ আছে না, ওদের কাছে যা।
-তাই যাব।
-তাই তো যাবি।তোর উদ্দেশ্য কত খারাপ তা আমি জানি না ভাবছিস।
-তোর উদ্দেশ্য মনে হয় খুব সৎ তাইনা? তুই কেন এসব জিন্সের প্যান্ট আর শার্ট পড়ে ঘুরিস আমি জানি না?তুই এত বোকা ভেবেছিস আমাকে? আমি এতই বোকা?
-মুখ সামলে কথা বল সুমন।নাহলে...
-নাহলে কি?কি করবি তুই?
-তোর মুখে চুনকালি মাখাই দিব।

কথাকাটাকাটি যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে তখন রবিন বলল,
-উফ্।এই সকালবেলাতেই তোরা কি শুরু করলি বল তো। তোদের জন্যে কোথাও গিয়া শান্তি নাই।মাথাটাই খারাপ হয়ে যাই।

পান্থ মাথা নাড়ে।মনে হল রবিনের সাথে একমত প্রকাশ করছে।

সুমন ও ঈশিতা একসাথে বলে উঠে,
-আমাদের পাশে থাকতে না পারলে দূরে গিয়া মরগা যা।
রবিন বলল,
-আজিব তো!এখনি ঝগড়া করছিলি আর এখনি দুজন একসাথে আমারে ঝাড়ি মারছিস।

রবিন অবাক হওয়ার ভান করে।আসলে ওদের কাছে এ ব্যাপার অনেক পুরনো।ওরা সবাই খুব ভাল করে জানে সুমন ও ঈশিতার ব্যাপারে।
রবিনের কথায় পান্থ আবারো মাথা নাড়ে।মনে হয় যেন রবিনের সব কথাই ঠিক।কিন্তু এবার মাথা নাড়ানোতে সুমন ও ঈশিতা দুজনেই পান্থর উপড় রেগে যায়।

ঈশিতা বলল,
-মাথা নাড়াবি না।একদম মাথা নাড়াবি না।মাথা নাড়ালে ইট দিয়া মাথা ফাটায় দিব।আমারে চিনিস?

পান্থ এবার কথা বলে উঠল,
-চিনব না কেন? তুই সেই মহিলা সন্ত্রাসী না।খালি মানুষের উপড় ঝাপায়া পড়িস।ছেলে মেয়ে কিছুই বুঝিস না।মেয়ে হইছিস বইলা ছাইড়া দিব ভাবছিস?

ঈশিতে এবারে চূড়ান্ত পরিমাণে রেগে গেল।বলল,

-কি বললি?কি বললি তুই?আমি মহিলা সন্ত্রাসী।তোরে যদি না খাইছি।সুমন তুই কিছু বলবি না?

সুমন বলল,
-আমি কি বলব?ঠিকই তো বলেছে।
-কি?ঠিক আছে তোরে কিছু বলা লাগবে না।কিছুই বলা লাগবে না।তোরে পরে আমি দেখব।আগে ঐ পান্থর বাচ্চাটাকে শেষ করব।
এই কথা বলে ঈশিতা পান্থর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।সুমন ও রবিন ঈশিতাকে ধরে ফেলে তা নাহলে পান্থর আজকে খবরই ছিল মনে হয়।দুজনে হাসতে থাকে।হাসতে হাসতে রবিন বলে,

-তুই মাঝে মাঝে যা ছেলেমানুষি করিস না।দুইদিন পর ইউনিভার্সিটি পাশ করবি আর এখনও...
রবিন হাসতে থাকে।সুমনও হাসতে থাকে।পান্থ প্রথমে ভয় পেলেও পরে হাসিতে যোগ দেয়।ঈশিতা যেন একটু লজ্জা পেল।শান্ত হয়ে সুমনের পাশে দাঁড়ায়।চুপ করে হাটতে থাকে।

এদিকে বিপাশা ও মিম দুজনেই খুব ক্লান্ত হয়ে গেছে এইটুকু হাটাতেই।বিপাশা মিমকে বলে,
-আজকে সান রাইজ দেখতে পারলাম না।কি লাভ হল এত তাড়াতাড়ি এসে?নাস্তাটা করেই আসতাম।খিদার জন্যে আমার পেট চোঁ চোঁ করছে।
মিম বলল,
-আমারও।কিন্তু কি করি বল।সবগুলা মাথামোটা।আগে সমুদ্রে চল পরে নাস্তা করব।মনে হচ্ছে নাস্তা করে আসলে সমুদ্র কোথায় পালায় যাবে।অসহ্য বুঝছিস।
-ঠিক বলেছিস।নাস্তা করে আসলে কি হত?অথচ আমরা ছাড়া নাস্তা করতে আর কেউ রাজি ছিল না দেখছিলি।
-হুম। তাই তো দেখলাম।মেজাজ গরম হয়ে আছে আমার।বুঝলি?
-হুম।আমারও।
-বিস্কুট খাবি?
-বিস্কুট এনেছিস?
-হ্যাঁ কালকে রাত্রে কিনলাম না।এখনো দুই প্যাকেট আছে।ব্যাগে করে এনেছি।
-দে খাই। কিন্তু পানি আছে তো?
-হুম।আছে।

দুজনে বিস্কুট খেতে খেতে হাঁটতে থাকে।পাশ থেকে মাসুদ বলে উঠল,

-তোরা দুজনে খুবই হিংসুটে।একা একা খাচ্ছিস?লজ্জা করে না তোদের? তোদের গলার ফাঁক এত বড় জানতাম না।

কথা বলেই হাসতে থাকে ও যেন কি এক মজার কথা বলেছে।এদিকে মিম ও ঈশিতা দুজনেই তেলেবেগুনে রেগে আগুন।

ঈশিতা বলল,
-তোর লজ্জা করে না ফকিরের মত চাচ্ছিস।আসার আগে কত করে বললাম নাস্তা করে যায়।তা না, এখুনি চল।

কনা বিপাশাকে বলল,
-ফকিরের মত কিরে? ওত ফকিরই!
তারপর মাসুদের দিকে বিস্কুট বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
-ধর ফকির তোকে একটা বিস্কুট দিলাম।
মাসুদ আবার বলল,
-দে দে বিস্কুট দে।বিস্কুট খাওয়ার জন্যে আমি ফকির হতে রাজি আছি।

মাসুদ হাসতে থাকে।মিম ও ঈশিতাও হাসতে হাসতে বলে,
-নির্লজ্জ কোথাকার!

এদিকে শিমুল ও কনা একটু যেন দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।বুঝাই যায় অন্যদিকে তাদের তেমন কোন মনোযোগ নেই।হাত ধরে হাঁটছে একেবারে শরীর ঘেঁষে যেন একে অন্যকে অনুভব করছে।দুজন ছাড়া পৃথিবীর সবকিছু অনর্থক তাদের কাছে এখন।এরই নাম হয়ত ভালবাসা।কনা শিমুল কে ফিসফিস করে বলল,
-সমুদ্রের তীরে এসে আমি তোমাকে ঐ কথাটা বলব বলেছিলাম।মনে আছে?
শিমুল ফিসফিসিয়ে উত্তর দেয়,
-কোন কথাটা?
-মনে নেই?
শিমুল হেসে ফিসফিসিয়ে আবার বলে,
-আছে।থাকবে না কেন।
কনা মিটিমিটি হাসতে থাকে।একদম ফিসফিসিয়ে যেন কেউ শুনতে না পায়, কনা বলল,
-আই লাভ ইউ।
-আই লাভ ইউ টু।
-শিমুল, আমি তোমাকে খুব ভালবাসি।খুউব।
-আমি জানি কনা।আমিও তোমাকে খুব ভালবাসি।
-ছাই ভালবাস!আরেকটা সুন্দরী মেয়ে দেখলে এখনি দৌড়াবা।
শিমুল হাসে।বলে,
-তোমার তাই মনে হয়?
কনা যেন একটু লজ্জা পেল।মাথা নিচু করে বলে,
-না।
-তাহলে বললে যে?
-বলবনা। পুরুষ মানুষের বিশ্বাস আছে নাকি?
-হুম।আমিও অন্য পুরুষের মত।
-না।
-তাহলে এ কথা কেন বলছ?
কনা মুখ তুলে তাকায়।শিমুল দেখতে পায় কনার চোখে পানি জমেছে।শিমুল বলল,
-কাঁদতেছে কেন কনা?আমি কি কোন বিষয়ে দুঃখ দিয়েছি তোমাকে?
-না শিমুল।তুমি কোন দুঃখ দাওনি।আমি জানি তুমি আমাকে অনেক ভালবাস। তারপরও ভয় হয়।
-কেন কনা?
-কেউ যদি তোমাকে আমার কাছ থেকে নিয়ে যায়?
-কে নিয়ে যাবে?
-জানিনা।সেই ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছি।তাই ভয় হয়।খুব ভয় হয় শিমুল।মনে হয় যেন কোথায় হারিয়ে যাবে।তখন খুব কষ্ট হয় শিমুল।
-ধুর পাগলি কোথাকার!আমি কোথায় যাব? আমি কোথাও যাব না তোমাকে ছেড়ে।

শিমুল আলতো করে চাপ দেয় কনার হাতে।কনাও একটু যেন চাপ দেয় শিমুলের হাতে। তারা লোকজনের মধ্যে না থাকলে হয়ত দৃশ্যটা একটু অন্যরকম হত।তবে বুঝা যায় বাস্তবতা আজও তাদেরকে স্পর্শ করতে পারেনি।মনের আবেগের সবটুকু দিয়ে তারা একে অপরকে ভালবাসে।

নিয়ন সবার থেকে একটু সামনে এগিয়ে গেছে।আবার সে উচ্চস্বরে কবিতা বলতে শুরু করে।শিমুল ও কনা ছাড়া সবার দৃষ্টি আকর্ষন করতে সমর্থ হয় সে।

হে ঈশ্বর!তুমি এক নিপুণ কারিগর
বানিয়েছ এ ধরনী অসম্ভব সুন্দর।
তারই এক নিদর্শন এই সমুদ্র
আজ বুঝেছি জীবনের সব মন্ত্র।

ঈশিতা বলে উঠল,
-বাহ্ নিয়ন বাহ্।অতীব সুন্দর।

মামুন বলল,
-ওই ব্যাটা তোরে কইলাম না চুপ থাকতে।আবার শুরু করছিস।

ঈশিতা ছাড়া সবাই একমত হয় মামুনের কথাই। নিয়ন মিনমিন করে বলে,
-তোরা সব সময় এরকম করিস কেন?আমি তোদেরকে কখনো ডিস্টার্ব করি?

ঈশিতা বলল,
-ঠিকই তো। ও তো কখনো কাউকে ডিস্টার্ব করে না।শুধু শুধু তোরা ওকে জ্বালাস।

ঈশিতাকে পাত্তা না দিয়েই মামুন আবার বলে নিয়নকে,
-ডিস্টার্ব করিস না মানে? সবসময় ডিস্টার্ব করিস।যখনই তুই বক বক করে কবিতা বলিস তখনই আমরা সবাই ডিস্টার্ব ফিল করি।এইটা বুঝিস না?

নিয়নকে একটু আহত দেখায়। সে যে কাউকে ডিস্টার্ব করে এটাই মনে হয় প্রথম জানল সে।ভাল ছেলে বলে সবজায়গায় ওর একটা সুখ্যাতি আছে।সবাই এবার নিয়নের পক্ষ নেয়।

রবিন বলল,
-এইভাবে না বললেও পারতি মামুন।নিয়ন তো কাউকে শুনিয়ে কবিতা বলে না।আপন মনে বলতে থাকে।

পান্থ মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়।বিপাশাও বলে,
-হুম।ও তো ভালই কবিতা বলে।তোদের সবার ভাগ্য ভাল যে নিয়নের মত কবির সাথে তোরা ঘুরে বেড়াস।

মিম বলল,
-ঠিক।আমারও ওর কবিতা শুনতে ভাল লাগে।

মামুন এবারও তেমন কাউকেই পাত্তা দেয় না।বরং নিয়নকে শাসিয়ে বলে,
-আমার পাশে যখন থাকবি খবরদার তখন কবিতা বলবি না।কাঁচা খেয়ে ফেলব বলে দিলাম।

হঠাৎই পরিবশ গুমোট হয়ে উঠে।কেউ কোন কথা বলে না।সবাই জানে মামুন একটু গুয়ার টাইপের।ওর সাথে কথা বলে লাভ নেই।সবাই চুপ করে দাঁড়িয়ে যায় একটু।তারপর আবার হাঁটতে থাকে।

এই মৌনতা ভাঙল মাসুদের কারনে।শিমুল আর কনাকে এতক্ষন খেয়ালই করেনি কেউ।মাসুদ ওদের দিকে তাকিয়ে সবাইকে বলে উঠে,
-দেখ দেখ।আমাদের লাভার জুটিকে দেখ।কি ভালবাসা।আহা!

গুমোট ভাবটা কেটে যায়।শিমুল ও কনা দুজনে দুজনের হাত ছেড়ে সবার কাছকাছি আসতে থাকে।

রবিন বলল,
-কিরে? আমরা যে তোদের সাথে আছি সেটা মনে আছে তো।

কনা লজ্জা পায়।শিমুল বলল,
-কেন থাকবে না?

মাসুদ হাসতে হাসতে বলে,
-তাই না?

তারপর এমন ভঙ্গি করল যে সবাই হা হা করে হাসতে থাকে।

বিপাশা বলে,
মাফ কর তুই। তুই পারিসও।

তারপর আবার হাসতে থাকে।সবাই আবার ওর হাসির সাথে যোগ দেয়।হাসতে হাসতে পান্থ বলল,
-কনা দোস্ত।আমাদের দিকে একটু খেয়াল রাখিস নাইলে শিমুলকে...
এই পর্যন্ত বলে পান্থ নিজের গলার কাছে ছুরির মত চালিয়ে দেখায়।আবার সবাই একচোট হেসে নেয়।

কনা চোখ কটমট করে বলে,
-গাট্টা খাবি পান্থ।
-গাট্টা?তুই মারবি।হি হি।মারনা।আহা...

কনাও এবার ফিক করে এসে ফেলে পান্থর কথায়। ঠিক এসময় তাদের চোখে মুখে এসে লুটোপুটি খেতে থাকে সমুদ্রের বাতাস।

মিম বলে উঠল,
-চলে আসছি সমুদ্রে।

রবিন ইয়াহু বলে একধরনের শব্দ করে।মাসুদ আবার সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বলল,
-হি হি।দেখ দেখ।শিশুটা কি করে দৌড়াচ্ছে।মাটা ধরতেই পারছে না।

সবাই তাকিয়ে দেখে হাসতে থাকে।মাসুদ হঠাৎ করে দৌড়াতে থাকে বালুর উপড় দিয়ে।ক্যামেরা বের করে ছবি তুলতে থাকে।মাসুদকে দেখে সবাই তখন বালুর উপড় থেকে দৌড়াতে থাকে শুধু শিমুল ও কনা ছাড়া।তারা আসতে আসতে হেঁটে যেতে থাকে।হাসির রোগে ধরেছে তাদের এখন।কারনে আকারনে হাসছে।এই সেই সমুদ্র।কতদিন ভেবেছে তারে এখানে আসবে।কত আনন্দ তাদের।ইস্ লাইভটা যদি সবসময় এরকম হত?



০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×