somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধ গবেষণাগারের গিনিপিগ!

১৮ ই এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১০:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যুদ্ধ গবেষণাগারের গিনিপিগ!
মৃণালকান্তি দাস

আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছি, আমাদের পাশে দাঁড়ান।
বিশ্বের কাছে কাতর আবেদন প্যালেস্তাইনের কমিউনিস্ট পার্টির।
১৯৬৭ সাল থেকে প্যালেস্তাইন দখল করে রেখেছে ইজরায়েল। গোটা ভূখণ্ড দখল করতে আকাশ পথ, স্থলপথ এবং সমুদ্রপথে জায়নবাদী রাষ্ট্র সব রকমের অস্ত্র নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়ছে অসহায় প্যালেস্তাইনের মানুষের ওপর। স্বাধীন প্যালেস্তাইন এবং প্যালেস্তাইনের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে জনগণের প্রতিরোধকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে মানবতাকে উপেক্ষা করেই চলছে এই অভিযান। স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মসজিদসহ আরো অনেক নাগরিক প্রতিষ্ঠান আজ ধ্বংসস্তূপ। দীর্ঘ সময় ধরে এই এলাকাকে ১৫লক্ষ প্যা লেস্তিনীয়ের বন্দীশিবিরে পরিণত করেছে। আজ মাত্র ৩৬৫বর্গ কিলোমিটারের গাজা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলির মধ্যে একটিতে পরিণত হয়েছে। গোটা গাজাকে ঘিরে দ্রুত তৈরি হয়েছে অসংখ্য বন্দুকবাজদের টাওয়ার, কাঁটাতারের বেড়া। এই টাওয়ারগুলি থেকে গাজার ভেতরে এবং বাইরে প্যাখলেস্তিনীয়দের চলা-ফেরা ইজরায়েলী সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করছে। ইজরায়েল সরকার গাজায় সমুদ্র বন্দর তৈরি করতে দেয়নি। এমনকি, গাজার আকাশপথও আজ ইজরায়েলের নিয়ন্ত্রণে।

মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের একটি দীর্ঘ পরিকল্পনার ক্ষুদ্র অধ্যায়। বলছে লেবানানের কমিউনিস্ট পার্টি।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই হামলা। বিস্তারবাদের নীতির ব্যাপক প্রচলন। যাতে জনগণের সংগ্রাম এবং উন্নত জীবনধারণের ন্যায্য অধিকার কেড়ে নেওয়া সহজ হয়। ফলে গাজায় এই আক্রমণ।
সমস্ত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের প্রশ্নে এবং প্যালেস্তাইনে আগ্রাসন ও দখলদারির ক্ষেত্রে আমেরিকাই ইজরায়েলের সবচেয়ে বড় মদতদাতা। সেই ১৯৪৮ সাল থেকে তারা ইজরায়েলকে ১০ হাজার ১০০ কোটি ডলার অর্থ সাহায্য দিয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেক অর্থ সামরিক অস্ত্রশস্ত্র দিতে খরচ করা হয়েছে। পরবর্তী ১০ বছরে তারা আরো ৩হাজার কোটি ডলার দেবে বলে ইজরায়েলকে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। তারমধ্যেও বেশিরভাগ অর্থ সামরিক সাহায্য হিসাবে দেওয়া হবে। আমেরিকার দেওয়া এফ-১৬ যুদ্ধবিমান এবং অ্যাপাচি হেলিকপ্টারে করে গাজার মানুষের উপর আমেরিকারই তৈরি মিসাইল এবং বোমা ফেলছে ইজরায়েল। পশ্চিম এশিয়ার তেলসমৃদ্ধ এই অঞ্চলের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার জন্য আমেরিকার শিখন্ডী হলো ইজরায়েল। আমেরিকা যদি সাহায্য দেওয়া বন্ধ করে তাহলে একরাতের মধ্যেই ইজরায়েলের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। একবার ২০০৬ সালে লেবাননে এবং সম্প্রতি ফের গাজায় গণহত্যার অপরাধ ঘটানোর অবশ্যম্ভাবী পরিণতির হাত থেকে ইজরায়েলকে বাঁচাতে নিরাপত্তা পরিষদে বারে বারে ভেটো দিতে হয়েছে আমেরিকাকে। ইজরায়েলকে আরো সময় দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নেওয়ার বিষয়েও অযথা কালক্ষেপ করিয়েছে আমেরিকা। আমেরিকা বেআইনীভাবে তার পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার থেকেও ৩০০অস্ত্র ইজরায়েলের হাতে তুলে দিয়েছে। ইজরায়েল যে আজ দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, তার কারণ অবশ্যই আমেরিকার প্রশ্রয়। আমেরিকা এখনো ইজরায়েলকে সেই প্রশ্রয়ই দিয়ে চলেছে।
২০০৬ সাল থেকে প্যালেস্তাইন সীমান্তের প্রতিটি বিন্দু ইজরায়েলীদের নিয়ন্ত্রণে। গোটা প্যালেস্তাইনে এখন খাবার নেই, পোশাক নেই, ওষুধ নেই, মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, দু’মুঠো খাদ্যের সংস্থানের মতো কোনও কাজ নেই, আর যারা কাজ করে তাদের পারিশ্রমিক নেই। গাজা এখন অবরুদ্ধ, অসহায়, শেষ দিনের অপেক্ষায়। একটানা ১৮ মাস ধরে চলা দীর্ঘ অবরোধের ফলে গাজায় বসবাসকারী ১৫ লক্ষ প্যালেস্তিনীয় আজ কার্যত অনাহারে। সমস্তরকম সরবরাহ সার্বিকভাবে বন্ধ করে দিয়ে এখনও অবরোধ চলছে। এটা প্যালেস্তাইনের মানুষকে গণহত্যা করা ছাড়া আর কিছুই নয়। আজকের গাজা এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি।
গোটা দুনিয়া আর কত সহ্য করবে? মানবাধিকার সংস্থাগুলো এখন কোথায়? কোথায় মুখ লুকিয়েছে তথাকথিত শান্তিপ্রিয় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মানবতাবাদী বিশ্ব সমাজ? আর কত রক্তপাতে এ যুদ্ধ থামবে? আর কত মৃত্যু হলে তাদের এ লোলুপ তৃষ্ণা মিটবে?

ইজরায়েলের কাছে প্রতিটি হিংস্র আক্রমণই নাকি ‘আত্মরক্ষা’! কখনই সে আক্রমণকারী নয়, বরং আক্রমণের ‘শিকার’! ওরা শুধু ‘প্রতিরোধ’ করে, কখনো ‘আক্রমণ’ করে না! আর সেকারণেই তাদের হিসাবে, গত দশ বছরে আল কাশিম রকেটের আক্রমণে মাত্র দশ জন ইজরায়েলী মারা গেলেও তার বিনিময়ে হাজার হাজার প্যালেস্তিনীয়কে খুন করা সম্পূর্ণ ন্যায়সঙ্গত বিষয়! প্রখ্যাত লেখক ও সমালোচক জন বার্জার সে কারণেই এই ঘটনাকে ‘জাতিদাঙ্গাকারীদের বিকৃত যুক্তি’ বলে চিহ্নিত করেছেন।
যখন থেকে ইজরায়েল প্যালেস্তাইনের দখলিকৃত ভূমিতে তল্লাশি চৌকি ও দেওয়াল তুলেছে, তখন থেকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, প্যালেস্তাইন হলো এক ছাদখোলা কারাগার। কিন্তু ইজরায়েলের অস্ত্র ব্যবসার বিপুল বৃদ্ধি দেখার পর মনে হতেই পারে, প্যালেস্তাইন আসলে এমন এক পরীক্ষাগার, যেখানকার বন্দী মানুষের ওপর আমাদের মতো রাষ্ট্রের সন্ত্রাসী অস্ত্রগুলো পরীক্ষা করে দেখা হয়। গাজা বা পশ্চিমতীর যেখানেই প্যালেস্তিনীয়রা থাকুক, তারা এখন আর কেবল আক্রমণের নিশানা নয়, তারা এখন গিনিপিগ।
ইজরায়েল সাধারণ মানুষদের লক্ষ্যবস্তু করে, এমনকি গাজাতে অবস্থিত রাষ্ট্রসঙ্ঘের ত্রাণ ও র্নিমাণ সংস্থা(ইউ এন আর ডব্লিউ এ)-র প্রধান দপ্তরের এলাকাতেও সাদা ফসফরাসযুক্ত গোলা নিক্ষেপ করেছে। একমাত্র ধোঁয়ার আচ্ছাদন তৈরি করা ছাড়া অন্য সবক্ষেত্রে এই ধরণের অস্ত্রের ব্যবহার রাষ্ট্রসঙ্ঘের জেনেভা কনভেনশন থেকেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। সাদা ফসফরাসের আগুন নেভানো যায় না, সে কারণেই মারাত্মক দহনের কারণ হয়। ইজরায়েল আরো অনেক নতুন অস্ত্র ব্যবহার করছে - যেমন, ডেন্‌স ইনার্ট মেটাল এক্সপ্লোসিভস্‌ (ডি আই এম ই), যা আক্ষরিক অর্থেই হাড় থেকে মাংসকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দেয়। এই বিস্ফোরকগুলি প্রায় পাঁচ হাজার তীক্ষ্ণ ধাতব শলাকা বিশাল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে দেয়, যা অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে ওঠে।
গাজাতে যে কোনো পণ্য ঢুকতে গেলে ভেতরে-বাইরে তাকে কমপক্ষে ছয়খানা ইজরায়েলী চেকপোস্ট পেরিয়ে আসতে হবে। এমনকি এইসব পণ্যের লেন-দেনের জন্য কর আদায়ও করে ইজরায়েল। তথাকথিত ‘বিভক্তিকরণ পরিকল্পনা’(ডিস্‌এনগেজমেন্ট প্ল্যান)-র পর ইজরায়েল গাজার অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। এখানকার ৯০ শতাংশ শিল্প বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে, কারণ তারা কোনো প্রয়োজনীয় জিনিস আমদানিও করতে পারছে না, তাদের উৎপাদিত দ্রব্য রপ্তানিও করতে পারছে না। গাজায় বেকারীর হার বাড়তে বাড়তে এখন ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে। এখানকার ৮০শতাংশ মানুষ সম্পূ্র্ণভাবে খাদ্য সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল।
ফ্রিডম্যান যেমন বলেছেন, ইজরায়েল তার ‘তেলসম্পদ’ আবিষ্কার করে ফেলেছে। সেটা হলো সন্ত্রাসের পক্ষে যুদ্ধ। যে যুদ্ধে সর্বক্ষণের ভীতি তৈরি করা হয়, দুনিয়াব্যাপী এমন সব যন্ত্রপাতির চাহিদা তৈরি করা হয়, যা দেখে, শোনে, আটকে রাখে, ‘সন্দেহভাজন’ চিহ্নিত করে এবং ভয় উৎপাদন করে।
কী পরিমাণ অস্ত্রের ঢল ইজরায়েলে ঢুকছে, এতদিন সেটাই ছিল ইজরায়েলের সামরিক ব্যবসা প্রসঙ্গে আলোচ্য বিষয়। বলা হতো, পশ্চিম তীরে ঘরবাড়ি ধুলোয় মেশাতে ব্যবহৃত হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত বুলডোজার। ব্রিটিশ কোম্পানি পাঠাচ্ছে এফ সিক্সটিনের অংশবিশেষ। কিন্তু ইজরায়েল যে আগের থেকে অনেক বেশি হারে সমরাস্ত্র রপ্তানি করছে, তা দেখেও দেখা হতো না। ১৯৯৯ সালে ইজরায়েল আমেরিকায় বিক্রি করে ২৭০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র, এখন বিক্রি করে ২.২ বিলিয়ন ডলারের। এর ফলেই ইজরায়েল আজ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। আর আমেরিকাকে টপকে সেই ইজরাজেলী অস্ত্রের এখন সর্ববৃহৎ ক্রেতা ভারত। সম্প্রতি সিবাট-এর প্রধান মেজর জেনারেল ইয়োসি বেন-হান্নান, জেরুজালেম পোস্ট-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন যে ‘১৫০ কোটি মার্কিন ডলার ক্রয় করে ভারত এখন ইজরায়েলের সবচেয়ে বড় খরিদ্দার’। তিনি আরো উল্লেখ করেন, ৪৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বারাক ন্যাভাল অ্যান্টি-মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম ক্রয় করে ইজরায়েল থেকে কোনো একটি দেশে এককভাবে সবচেয়ে বেশি মূল্যের কোনো সামগ্রী বিক্রয়ের ক্ষেত্রেও ভারত যুক্ত। ২০০২ থেকে ২০০৫সাল পর্যন্ত ভারতে ইজরায়েলের অস্ত্র রপ্তানির পরিমাণ মোট ২৭৬ কোটি মার্কিন ডলার। আর শুধু ২০০৬ সালেই ভারত ১০৬ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের রেকর্ড পরিমাণ অস্ত্র ইজরায়েল থেকে কেনে। গত পাঁচ বছরে ভারত ইজরায়েল থেকে ৫০০কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের অস্ত্র ক্রয় করে ইজরায়েলের সামরিক সামগ্রীর সবচেয়ে বড় ক্রেতায় পরিণত হয়েছে।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমস-এ টমাস ফ্রিডম্যান তাঁর নতুন তত্ত্ব পেশ করেছেন। বলেছেন, রাজনৈতিক কোন্দল ইজরায়েলের অর্থনীতিকে বরং এগিয়েই দিচ্ছে। এ উন্নতির শুরু নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিতে। তখনই এই দেশ তথ্য প্রযুক্তি বিপ্লবের দিশারি হয়ে ওঠে। কিন্তু ২০০০ সালে সেই ডটকম বুদবুদ ফেটে যাওয়ার পর দেখা গেল, তারা আবার ১৯৫৩ সালের দুঃসময়ের মুখে দাঁড়িয়ে। তারপরই এলো ৯/১১-এর ঘটনা, হঠাৎ অনেক কোম্পানির মুনাফার রাজপথ খুলে গেল। তারা দাবি করলো, তারা ভিড়ের মধ্যেও সন্ত্রাসবাদীকে চিনতে পারে, নিরাপদ রাখতে পারে সীমান্ত, পারে জেদী বন্দীদেরও পেটের কথা বের করে আনতে।
তিন বছরের মধ্যেই ইজরায়েলের প্রযুক্তিগত অর্থনীতির বড় অংশই আবার দম ফিরে পেলো। ফ্রিডম্যানের ভাষায়, ইজরায়েল ‘সমতল দুনিয়ার’ মধ্যে যোগাযোগের কলকাঠি আবিষ্কার থেকে বর্ণবিদ্বেষী দুনিয়ায় ঘৃণার বেড়া বিক্রির কাজে লেগে গেল। দেশটির সবচেয়ে সফল ব্যবসায়ীদের কাছে ইজরায়েলের দুর্গরাষ্ট্রে পরিণত হওয়া বরং সুবিধাজনক। চারদিকে ‘শত্রু পরিবেষ্টিত’ এবং সব সময় যুদ্ধংদেহী হওয়ায় ২৪ ঘণ্টাই দেশটিকে অস্ত্রসম্ভারের প্রদর্শনী বানিয়ে রাখার সুবিধা রয়েছে। নিরন্তর যুদ্ধের মধ্যেও কীভাবে তুলনামূলক বেশি নিরাপত্তা উপভোগ করা যায়, ইজরায়েল তার জীবন্ত নমুনা। অস্ত্র ব্যবসার জন্য আর কী চাই! ওইসব অস্ত্র কোম্পানি এখন বিশ্বের দেশে দেশে এই মডেল রপ্তানি করে চূড়ান্ত মুনাফায় ভাসছে।
এ ব্যবসার বেশিরভাগই হয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা খাতে। অথচ ৯/১১-এর আগে একে শিল্প বলার অবকাশ ছিল না। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে মূলত নিরাপত্তা বেড়া, জৈব পরিচয়পত্র,মনুষ্যহীন বিমান, ভিডিও ও অডিও নজরদারি যন্ত্র, বিমানযাত্রীদের সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধান ও বন্দীদের জেরা করার ইলেকট্রনিক ব্যবস্থা। এসব কিছুই ইজরায়েল বানিয়েছে ও বিকশিত করেছে দখলাধীন প্যালেস্তিনীয় জনগণকে দমিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে। প্যালেস্তাইন আসলে ইজরায়েলের ল্যাবরেটরি আর প্যালেস্তিনীয় জনগণ তার যুদ্ধ গবেষণার গিনিপিগ। এ কারণেই গাজা বা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা ইজরায়েলের নিরাপত্তার জন্য কোনো বিপদ নয় বরং ব্যবসার সুযোগ বাড়ানো। অন্তহীন যুদ্ধ পরিস্থিতিকে ইজরায়েল এখন তার ব্র্যান্ড-পুঁজিতে পরিণত করেছে। ৫০ বছর ধরে একটি জাতিকে উচ্ছেদ করা, দখলদারি চালানো ও বন্দী করতে করতে এখন সে তাদের দেহকে ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে’ হাত পাকানোর নিশানা বানিয়েছে। প্যালেস্তাইন তার খেলার মাঠ ছাড়া আর কিছু নয়।
কানাডার অধ্যাপিকা এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাওমি ক্লেইন লিখছেন, ইজরায়েলের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা এখন হোমওয়ার্ক হিসেবে নিখুঁতভাবে নানারকম অস্ত্রের নকশা বানায়। তারা এখন শত্রু চিহ্নিত করা ও সেগুলো এড়ানোর বীজগণিত আবিষ্কার করে। গত ছয় মাসে সেখানে ৩০টি নতুন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কোম্পানি চালু হয়েছে। সরকারী ভরতুকিতে ইজরায়েলের সেনাবাহিনী এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মারণাস্ত্র তৈরির ইনকিউবেটরে পরিণত হয়েছে। গত বছরে এসব কোম্পানি প্যারিসের এয়ার শোতে অংশও নেয়। কি আশ্চর্য, এই শো নিয়ে প্যারিসের বিখ্যাত ফ্যাশন সপ্তাহের সমান্তরাল প্রচার করা হয়। একটি কোম্পানি ঐ প্রদর্শনীতে দেখায়, কজিটে ১০০২ নামে একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম, যা বিমানযাত্রীদের কয়েকটি প্রশ্ন করে তার শরীরের স্পন্দন থেকে বুঝে নেবে যে,সে ‘সন্দেহভাজন’ কিনা। আলাদা আলাদা দেশের মানুষের জন্য তারা বানিয়েছে আলাদা আলাদা প্রশ্ন। এ যন্ত্র ভুল করে না। প্রমাণ?
প্রমাণ প্যালেস্তিনীয়রা।
ইজরায়েলের গোয়েন্দা পুলিস দীর্ঘদিন এটিকে প্যালেস্তাইনের রাস্তাঘাটে প্রয়োগ করে দেখেছে। এটা কেবল পশ্চিমতীরের জন্যই প্রযোজ্য নয়, ইজরায়েলে হাজারখানেক আত্মঘাতী বোমারুর ওপর গবেষণার ভিত্তিতে এটা তৈরি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০০৯ বিকাল ৫:৩২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×