ঘুর্ণিঝড় বিজলী উপকূল অতিক্রম করার সময় কক্সবাজারে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে একজন। এছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘড়বাড়ি বিধ্বস্ত ও গাছ উপড়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, ঝড়ের সময় উপজেলার পূর্ব জালিয়াপাড়া গ্রামের আবদুর রহিম (৯) গাছ চাপা পড়ে মারা যায়। তার বোন জামিলা খাতুন (১২) আহত হয় এসময়।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় 'বিজলী' শুক্রবার দিনের শেষভাগে আরো উত্তর-পূর্ব দিকে সরে গিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ভাটার সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে ওই সময় কর্নফুলি নদীতে ভাটার সময় ছিল। জোয়ারের সময় ছিল রাত ১২ টা ৪২ মিনিট।
এছাড়া স্থলভাগে উঠার পর এটি আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। স্থলভাগে আসার আগে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটাররের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৭০ কিলোমিটার, যা ঘন্টায় ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চট্টগ্রামে ঘন্টায় ৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝড়ের গতি রেকর্ড করা হয়েছে।
রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম শুরু করে। এটি আরো উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝড়িয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে সাত, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ছয় এবং মংলা সমুদ্র বন্দরকে পাঁচ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ঘুর্ণিঝড় 'বিজলী'র প্রভাবে চট্টগ্রামে রাত আটটার পর থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। রাত ১০টার দিকে বৃষ্টি থেমে গেলেও দমকা হাওয়া বইতে থাকে।
পতেঙ্গা থেকে ফিরে এসে রাত সাড়ে ১০টায় রেড ক্রিসেন্টের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডাঃ শফিউল আজম বলেন, এখন পর্যন্ত কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙ্গে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করার সময় সাগরে ভাটা থাকায় জলোচ্ছাসের উচ্চতা কম ছিলো। তবে সন্দ্বীপ ও এর আশপাশের এলাকায় কয়েক ফুট পর্যন্ত পানি উঠে।
কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকা থেকে ২০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়।
ভোলার চরফ্যাসনে ঝড়ে প্রায় ২০০ ঘড়বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
সূত্র