somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কখনো শ্রাবন , কখনো বসন্ত , আমি সেই তোমাকেই খুঁজি

১৩ ই এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[ ইহা একটি পাঁচমিশালী স্মৃতিকথা, অনুভব , রাগাবিতা পোস্ট -- সংক্ষেপে, যেই সব পোস্টের কোন আগা মাথা থাকে না ]

সবাইকে ১৪১৬ বঙ্গাব্দের অনেক অনেক শুভ কামনা । আমার উপস্থিতি অনিয়মিত । ১৪১৫ বঙ্গাব্দের অন্তে ব্লগের সমস্ত শুভাকাঙ্খী , বন্ধুদের জানাই অশেষ কৃতজ্ঞতা । ১৪১৫ আমার জন্য ঘটনা বহুল বছর । এই বছর বিয়ে করেছি । এই বছরেই চাকরী ছেড়েছি । নতুন করে গবেষনায় যোগ দিয়েছি । বিয়ের সাথে সাথে নিজের চিরচেনা বাড়িটি ছেড়েছি । পুরানো অনেক কিছু বদলে গেছে । দিন যাপনের রুটিন যেমন বদলেছে , বদলে গেছে সারাক্ষণ সাথে থাকা বেশ কিছু সঙ্গী সাথী । বাড়িতেই বেশির ভাগ সময় কাটে বলে মুঠোফোন এর ফাঁস থেকে মুক্ত । বিশাল একটা রাবনের সংসার ধরনের ব্যাগ বাদ দিয়ে হাতে এখন বই , খাতা, বাজারের ব্যাগ থাকে । রাতের ঘুম - অঘুমের সময় এখন আরেক জন মানুষের সাথে সামঞ্জস্য করে নিতে হয়েছে ।

রান্না বান্নায় পি এইচ ডি করার তুমুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে । লেখা লেখি মুমুর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে আর গান বাজনা , টিভি একেবারেই বাদ । আব্বুর হার্ট এটাকটা সবচেয়ে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা । তারপরেও খুশি আব্বু এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো । নিয়মিত অষুধে ভালো কাজ হয়েছে । চাকুরী ছেড়ে দিয়ে একটা ভালো হয়েছে , নতুন গবেষনা কিংবা কাজের দরকারে এদিক ওদিক যাওয়ার সুযোগটা বেড়েছে । যদিও , খুবই টাইট সময় , তার উপর টাইট অর্থনীতি ।

ব্যস্ততার সীমা ছিলো না । মন খারাপের সময় নেই । কিন্তু তারপরেও মন সারাক্ষণ পড়ে থাকে আব্বু, আম্মু , ভাই -বোন , আপুর বাচ্চাদের কাছে । স্বামী তাঁর কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমার মনের উন্নয়ন কাজে সক্রিয় সহযোগিতা করেন । আমাদের বাড়িটা একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে । আমার বাড়ি ছেড়ে আমাদের বাড়ি হচ্ছে । একটু খুন্সুঁটি , একটু বিবাদ আর অনেক ভালোবাসা । সোনালী রঙের রোদ মাখা ঘরটাতে প্রিয় মানুষের হাতে কফি তুলে দিতে দিতে নিজেই চমকে যাই ,

" ওম্মা ! সে কি গো ! বছর পেরিয়ে গেলো নাকি ?"
----------------------------------------------------

শল্য চিকিৎসকদের কাছে রাজমিস্ত্রী ভাই আসিফের এই গানটি আমাদের পড়ুয়াকালে বেশ জনপ্রিয় হয়েছিলো ।

" কখনো বাগান, কখনো দিগন্ত
কখনো শ্রাবন , কখনো বসন্ত
আমি সেই তোমাকেই খুঁজি" ।

চির আকুতির এই খোঁজাখুঁজি আমার কিছুতেই বন্ধ হয় না ।

কি যে খুঁজি , নিজেই পাই না বুঝে
হেলায় ভুলে
খেয়াল খুলে
দেয়াল মরি জুঝে ।
আমার দিন কেটে যায় খুঁজে !

এর চেয়ে প্রিম্যাচিউরড চাইল্ডের শিরা ধমনী খুঁজে পাওয়া সহজ । কিন্তু নিজের শিরায় শিরায় যে পাগলামি দৌড়ে বেড়ায় , তার আশ্রয় মিললো না , স্টেশন পেলো না মন গাড়ি । মনাঞ্চলে রাত পেরিয়ে সূর্য আসবে , এমন প্রতিশ্রুতিতেই কিনা কে জানে , মাস্টার গাড়ি থামায় না । আমার বুকের অতল থেকে তাই কেবল ধোঁয়া ওঠে , চোখ ভরে যায় ধোঁয়ায়। আমি মরচে পড়া ইঞ্জিন খুলে কেবল চেতনার কয়লা দেখি ।

ভালোবাসার অঙ্গার গুণি অঙ্গীকারের লাশে ,
আমার দিন কেটে যায় অলীক বীজের আশে !

"বীজ"

আমার অঙ্গনে একটা বীজ বুনে দাও ।
অনেক দিন খালি পড়ে আছে ।
চৈত্র সংক্রান্তির পূর্ণিমায় শূন্য উঠোন জুড়ে কেবল ধু ধু ! হাহাকার বাজে।


উত্তুরে হিম হাওয়ায় নিষ্ফলা ধুলোর দাগে
কত্ত গল্প লেখা হয় !
আলু থালু সূর্যেরও আগে ।

আমার মাটি প্রতিবাদ করে ।
তাজা তরল রক্তে ভেসে প্রতিবাদ করে ।
এক নদী জল চেয়ে প্রতিবাদ করে ।
বিজয় দেখিনি, দালাল দেখেছি ।
জীবন দেখিনি , প্রাণ দিয়েছি ।
আজ হিংস্র পশুর নখরে নখরে , ছিঁড়ে খুড়ে যায় উঠোনের বুক
তবুও আগুন । তবু উন্মুখ,
চাতকী উঠোন ঝরা শিউলির ফুল টুকু চায় ।
এলোমেলো নিয়মের হাটে বিকিয়ে যাওয়া ভুলটুকু চায় ।

কত বিজয়ের আলোহীন রাত কেটে গেলো কারো দীর্ঘশ্বাসে
হু হু কান্নার বিষ নিঃশ্বাসে স্বপ্নহীন ফাঁপা জড়দেহের উৎপাত ।
মায়ের জায়নামাযে ছায়া, বাপের লাঙলের ধার
জংলার শূকরে মেরে খেলে , শিরোনামে " অপঘাত" !

আর নয় -
এবার মাটি মানুষ চায় ।
উল্টোপথের উলটো হাটা প্রতিবাদী মুখ ,
এত শক্তি , ক্ষমতা , এত প্রাণ উন্মুখ
এবার জমিতে লাঙল দেবে।
অসঙ্গতির বুক চিরে ভালোটুক
কাঁদা মাটির কালি মেখে আলোটুক
তুলেই নেবে , তুলেই নেবে ।
তারার আলোতে জোনাকীর সাথে ফোঁপানো কথন আর নয় ।
অমেরুদন্ডী হীন চেতনাতে সহবাস বিষ আর নয় ।

এবার জমিতে নতুন প্রভাতে আগুন দেব , আগুন জ্বালা !
সবুজ আগুনে ভরবো গোলা , আগুনা জ্বালা লাঙল চালা !
প্রাণে প্রাণ , সুর ও লিপিতে
গীতি, নাট্যে , নৃত্যে , মেলায়
লাঙল চালা , আগুন জ্বালা , লাঙল চালা , লাঙল চালা !

মনুষ্যত্বের মহোৎসবে
শিমুল পলাশ কদমের ঘাট
আউশ, আমন, সোনালী পাট
কামার, কুমোর , জেলেদের হাট
শাপলা শালুক , আবার হবে ।

শুধু একবার বীজ বুনে দাও, মানুষের বীজ !


(প্রথম পাঠ , বর্ষ বরণ ১লা বৈশাখ , ১৪০৮ বঙ্গাব্দ । সামান্য পরিবর্তিত , পূনঃপ্রকাশ ১লা বৈশাখ ১৪১৬ বঙ্গাব্দ , সামহোয়ার ইন ব্লগ।

ছবি কৃতজ্ঞতা , আন্তর্জাল - আমাদের প্রযুক্তি ওয়েব সাইট)

[ মূল পোস্টে উপরের লাইনটা ছিলো । ব্লগার বিপ্র ভাইজান না বুঝেই আমার উপর খেপ্লেন , তাই সরাসরি তার মন্তব্য থেকে কুপি জ্বালানো হইলো ঃ
ছবিটি চারুকলার তমাল বড়ালের তোলা। তার অনুমতিক্রমে প্রথমে আমাদের প্রযুক্তি-তে এখানে গত নববর্ষে প্রথম পোস্ট করা হয়েছিল অনলাইনে।]

সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা ।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১২:০৪
১৪টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এমপি আনারের মৃত্যু এবং মানুষের উষ্মা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:২৯


সম্প্রতি ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পর আনোয়ারুল আজীম আনার নামে একজন বাংলাদেশি এমপি নিখোঁজ এবং পরবর্তীতে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার মরদেহের হাড়-মাংস আলাদা করে হাপিত্যেশ করে দেওয়া হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

দোয়া ও ক্রিকেট

লিখেছেন শাহাবুিদ্দন শুভ, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৪


দোয়া যদি আমরাই করি
তোমরা তাইলে করবা কি?
বোর্ডের চেয়ারম্যান, নির্বাচকের
দুইপায়েতে মাখাও ঘি।

খেলা হচ্ছে খেলার জায়গা
দোয়ায় যদি হইত কাম।
সৌদিআরব সব খেলাতে
জিতে দেখাইত তাদের নাম।

শাহাবুদ্দিন শুভ ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে “বাঘ” বলা বন্ধ করুন!!

লিখেছেন অন্তর্জাল পরিব্রাজক, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:২১



দয়া করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে “বাঘ” বলা বন্ধ করুন!! X( এরা ছাগলের দলই ছিল, তাই আছে, তাই থাকবে :-B !! এরা যেমন ধারার খেলা খেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বকুল ফুল

লিখেছেন নীল মনি, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৪

বকুল ফুলের মিষ্টি গন্ধে ভরে থাকে আমার এই ঘর। আমি মাটির ঘরে থাকি। এই ঘরের পেছন দিকটায় মা'য়ের হাতে লাগানো বকুল ফুলের গাছ৷ কী অদ্ভুত স্নিগ্ধতা এই ফুলকে ঘিরে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেট্রোরেল পেয়েছি অথচ হলি আর্টিজানে নিহত জাপানিজদের ভুলে গেছি

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৫ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১১

জাপানে লেখাপড়া করেছেন এমন একজনের কাছে গল্পটা শোনা৷ তিনি জাপানে মাস্টার্স করেছিলেন৷ এ কারণে তার অনেক জাপানিজ বন্ধু-বান্ধব জুটে যায়৷ জাপান থেকে চলে আসার পরেও জাপানি বন্ধুদের সাথে তার যোগাযোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×