somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঃ ভূমি মন্ত্রনালয়ের একটি সিদ্ধান্তে আটকে আটছে ৬ লক্ষাধিক লোকের সাস্থ্যসেবা

১০ ই এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ৯:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটি গোয়াল ঘর কোন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে পারে না। গরু ছাগলকেও আরো ভালোমতো করে থাকতে দেয়া হয় অথচ এখানে যেভাবে মানুষের চিকিৎসা দেয়া হয় তা অমানবিক। ৩ বছর ধরে চলছে আর কতদিন এভাবে চলবে তা বলেতে পারবো না। বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্তমান বেহাল অবস্থা সম্পর্কে এমন মন্তব্য এক কর্মচারীর।
বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ৬ একর ভূমি বরাদ্দের প্রস্তাব ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না পাওয়ায় পর্যাপ্ত লোকবল থাকা স্বত্ত্বেও উপজেলার ৬ লক্ষাধিক জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা নিতে হয় মাতৃমঙ্গল কেন্দ্রের ১০শয্যার হাসপাতালে। স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয়ের প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও প্রস্তাবিত জমি বরাদ্দ না হওয়ায় ৩১ শয্যা বিশিষ্ট বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগটি থমকে আছে দুই বছর ধরে। কবে নাগাদ ভূমি বরাদ্দের জটিলতা নিরসন হবে তা কেউই বলতে পারে না।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বেগমগঞ্জ উপজেলার বজরা ইউনিয়নে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপিত হয়। ২০০৫ সালে বগমগঞ্জ উপজেলার উত্তরাঞ্চলের ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে সোনাইমুড়ি উপজেলা গঠিত হওয়ার পর অবস্থানগত কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নবগঠিত উপজেলায় পড়ে। বেগমগঞ্জ উপজেলার জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে ২০০৬ সালের ৮ মার্চ বেগমগঞ্জ মাতৃমঙ্গল কেন্দ্রের ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থানান্তরিত হয়। তখন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ৬ একর জমি বরাদ্দের প্রস্তাব ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু প্রস্তাবটি অধ্যবধি অনুমোদন পায়নি। ইতোমধ্যে গত বছর ভূমিমন্ত্রনালয় থেকে ফাইলটি চুরি হয়ে যায়। পরবর্তীতে এ প্রস্তাবের ডুপ্লিকেট ফাইল পুনরায় ভূমি মন্ত্রনালয়ে সরবরাহ করা হয়।
এরই মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে ঐঘচঝচ কার্যক্রমের সংশোধিত চওচ এর আওতায় ৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের সিদ্ধন্ত গ্রহণ করে। তখন ৫ একর জমি নির্বাচন পূর্বক নির্বাচিত জমির স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রস্তাব মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করতে বলা হয়। কিন্তুদীর্ঘ দুই বছরেও বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনুকূলে জমি বরাদ্দ দেয়া হয়নি। এ অবস্থায় একদিকে যেমন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বেগমগঞ্জের ৬ লক্ষাধিক মানুষ তেমনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের বিষয়টি নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় সর্বত্র শুধু সমস্যা আর সমস্যা। দন্ত বিভাগের জন্য সরবরাহকৃত যন্ত্রপাতি বসানের জায়গা না থাকায় বারান্দায় পড়ে আছে বাক্সবন্দি যন্ত্রপাতি। ১০ শয্যার হাসপাতালে গাদাগাদি করে দুটি ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছে ১৬জন। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আউটডোরে রোগী এসেছে ২৪৯জন। কিন্তু ওষুধের সংকট থাকায় সবাইকে ওষুধ দেয়া সম্ভব হয়নি। ছোট্ট একটি কামরার মধ্যে বসে ডিউটি করতে হয় ৬জন কনসাল্টেন্টকে। একই অবস্থা ল্যাবরেটরি, জরুরী বিভাগ ও আউটডোরেরও। পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের অবস্থাও নাজুক। ডায়ারিয়া বা অন্যকোন মহামারি দেখা দিলে রোগীদের জায়গা দেয়া যাবে না।
পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন তোতামিয়া জানান ৬ এপ্রিল এখানে ভর্তি হয়েছেন ডাক্তারদের পাওয়া গেলেও ওষুধ নেই নিয়মিত। যে পরিবেশে চিকিৎসা চলছে এটি কোন হাসপাতাল হতে পারে না।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়, মার্চ মাসে জরুরী বিভাগে রোগী চিকিৎসা নেয় ৩৩৯জন রোগী এবং আউটডোরে চিকিৎসা দেয়া হয় ৫ হাজার ২৭৭জন রোগীকে। ইনডোরে ভর্তি হওয় রোগীর সংখ্যা ছিলো ১৩৫জন। অথচ ওষুধ দেয়া হয় আগের ১০ শয্যা হাসপাতালের নিয়মেই। তাই বিপুল পরিমান রোগীকে ন্যুনতম পরিমান ওষুধ দেয়া দুরূহ হয়ে উঠেছে। এছাড়া অপারেশন থিয়েটার নেই এবং ইপিআই ষ্টোর ও মেডিসিন ষ্টোরের জন্য কোন জায়গা নেই।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাঃ আহসান উল্যা খান মন্ত্রনালয় থেকে ভূমি বরাদ্দের ফাইল হারিয়ে গেছে উল্লেখ করে জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত জমি তাঁদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছে কিন্তু মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে ও ভূমি বরাদ্দ দিলেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজটি শুরু করা যাবে।
ওষুধ সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন ১০শয্যার হাসপাতালের পরিমান ওষুধ দেয়া হয় তা দিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চলবে কিভাবে। তাছাড়া অবকাঠামোও ১০ শয্যার হাসপাতালের তাই রোগিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়াও সম্ভব হয়ে উঠে না।
#
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×