somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অযথা ০১

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কথাটা বিশ্বাস হয় নি প্রথমে,
তোমার ছেলের জন্য অনেক দাম দিয়ে কোনো খেলনা না কিনে ওর জন্য একটা বাক্স কিনে আনো। ওটাই ওর সবচেয়ে বড় খেলনা হবে। ওটাই হবে ওর কল্পনার রাজ্যপাট। সেই বাক্সই হয়ে যাবে কখনও দুরন্ত জাহাজ, কখনও প্লেন, কখনও প্রাসাদ।

স্যুটকেসের ভেতরে ঢুকে বসে আছে ছেলে। স্যুটকেসের ঢাকনা টেনে ভেতরে বালিশ রেখে শুয়ে আছে পরমানন্দে। জিজ্ঞাসা করলাম এইখানে কি করো?
উত্তর আসলো, এইটা আমার গাড়ী, বাবা গাড়ী চালায় নিয়ে চলো।
অদ্ভুত সব বাতিক আর ইচ্ছা এখন নিত্যদিনের। হঠাৎ হঠাৎ খেয়াল হলেই হলো, নিজের মতো উচ্চারণে সরকিছুই বলছে, প্রচলিত শব্দগুলোকে ভেঙে কিংবা বিকৃত করে নিজের মতো আনন্দ পাচ্ছে। এখন ইচ্ছা করে বলছে না এমন কোনো শব্দ যেটার শেষে হ্রস উ কার আছে, সব হ্রস উ কার ইদানিং হ্রস ই কার দিয়ে বদল করে কথা বলছে, সমস্যা হচ্ছে সামান্য কিন্তু খেয়াল বলে কথা। শখের তোলা আশি টাকা।

ভাবভঙ্গি বদলে গেছে, প্রতিদিনই প্রজাপতির খোলস ছাড়ার মতো ছেলেরা চোখের সামনে বদলে যাচ্ছে, একটা আলাদা চরিত্র তৈরি হচ্ছে, এটাও দেখে আনন্দ লাগে।

বাবা প্যান্ট পরো, বাবা প্যান্ট পরো, বিকেল বেলা এই আব্দারের কোনো মানে বের করা গেলো না। তবুও তার কথা শুনে উঠতে হয়- কোথাও যাবে?
না এইভাবে বলে না, বলো তুমি জুতা পড়ে আসো জলদি জলদি। তোমাকে নিয়ে মানিকের দোকানে নিয়ে যাবো।
না আমি তোমাকে নিয়ে মানিকের দোকানে যাবো না।
এইভাবে বলে না।
আচ্ছা বলবো না, কি হইছে সেইটা বল।
তুমি প্যান্ট পড়ো আগে, গেঞ্জি পড়ো। বলো যাও জামা বদলায় আসো।
আমি কথা শুনে মজা পাই, কিন্তু কোনো সম্মতি জানাতে পারি না। ইদানিং যে খেয়াল সেটা হয়ালভেশিয়াতে গিয়ে সেখানের প্লেকর্ণারে গিয়ে লাফালাফি করা।

কোথাও গিয়ে লাফালাফি করাতে আমার আপত্তি তেমন নেই, তবে হ্যালভেশিয়ার খাওয়ার আমার নিজের পছন্দ না। এবং ওদের চিলড্রেন'স মিল জিনিষটা দেখে আমার পছন্দ হয় নি। সেই রদ্দি ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের বাইরে এমন কিছু নেই যা খাওয়ানো যায়। যদিও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আমার নিজের ঠিক পছন্দের আইটেম না।

বাবা বাবা, বলো তোমাকে নিয়ে বলের দোকানে যাবো।
কেনো বাবা?
না এইভাবে বলে না। পচা কথা বলে না একদম।
আচ্ছা বলবো না, তুমি কোথায় যাবে?
বলো তুমি দিদার কাছে গিয়ে জামা বদলে জুতা পড়ে আসো। তোমাকে নিয়ে বল খেলতে যাবো।
আমি এই কথায় সম্মতি দিতে পারি না।
তে ছেলে পাল্টা বলে, একদম ফালতু কথা বলবে না। বলো তোমাকে নিয়ে যাবো।
আমি বললাম, তোমাকে নিয়ে আমি বাইরে যাবো, কিন্তু আজকে তোমার বলের দোকানে যাওয়ার দিন না। আজকে তোমার শুধু প্যাস্ট্রি খাওয়ার দিন। তোমাকে আমি বলছি না তোমাকে প্যাস্ট্রি এনে দিবো?
এই ভাবে বলে না বাবা, ফালতু কথা বলে না।

বলের দোকানে যাওয়ার আগ্রহে ঠান্ডা পানি ঢালতে খারাপ লাগলেও এখন অন্তত কিছুটা নিয়মতান্ত্রিকতা নিয়ে আসবার সময় হয়েছে। এত আব্দারের সবগুলো পুরণ করা কোনো কাজের বিষয় হতে পারে না। পৃথিবী যে এতটা সহজ জায়গা না এটা ওর বুঝা প্রয়োজন এখন। চাইলেই সব কিছু পাওয়া যায় না, বরং অপেক্ষা করলে, নিয়ম মেনে চললে আখেরে লাভ হয় এই সত্যটা উপলব্ধি করতে হবে ওকে।


গতকাল সন্ধ্যায় গিয়েছিলাম সিপিবি অফিসে, স্ল্যামডগ মিলিয়োনিয়ার দেখতে, যদিও দেখা হয় নি, যখন শুরু হওয়ার কথা, তার অনেক আগেই শুরু হয়েছে ছবিটা। আর এমন ঘনঘোর অন্ধকারে বসে ছবি দেখার আগ্রহ আমার অনেক আগেই শেষ । আমি অনেক বিবেচনা করে দেখলাম, আমি আসলে ঠিক সিনেমাখেকো পর্যায়ে পরি না, এমন কি সাধারণ ছবির দর্শক হিসেবেও আমি অচল। ছবি দেখি না এমন বলবো না, উত্তরাধুনিক কেতায় ছবি দেখি, অন্য সবার হিন্দি চ্যানেলের ধারাবাহিক অত্যাচারের ভেতরে সামান্য সময়ের জন্য কোন ছবি দেখার সুযোগ মেলে, আমার নিজের আড্ডার সময়সূচি আর নিজের কাজ সব মিলিয়ে কোনো ছবিরও সম্পূর্ণটা দেখা হয় না। আর ছেলে হওয়ার পর থেকে ছবি দেখা নামক বিলাসিতা আমার শেষ।

মাঝে মাঝে একলা বাসায় থাকলে মনে হয় ছবি দেখবো, এইভাবেই গত ২ বছরে ড্যানজেল ওয়াশিংটনের ৬টা ছবি দেখা হয়েছে, আর লোড শোডিং আর ক্যাবলের ঝামেলার গ্যাপে গ্যাপে দেখা হয়েছে আরও কয়েকটা ছবি। এই অভিজ্ঞতায় আমি বলতে পারি আমি শেষ ছবি দেখেছি গত মাসে কিংবা তার আগের মাসে।
ছেলেকে নিয়ে গিয়ে লাভ হলো একটাই সিপিবি অফিসের বিশাল ছাদে সে দৌড়াদৌড়ি করে ক্লান্ত হলো, সেখান থেকে নীচে নেমে বললো বাবা খাবো?
পল্টনের আশেপাশে হোটেল আছে অনেক, তবে কুইক ফুড, যা মুখে রুচে এমন দোকান কোথায়? বায়তুল মোকাররমের নীচের দোকানটার প্যাটিস ভালো ছিলো, ভালো ছিলো ফুচকাও, কিন্তু ওরা ঋককে খাওয়ানো যাবে না। তার পাশের দোকানের লাস্যি খাওয়ানো যাবে না, ভীষণ রকম ঠান্ডা।

তবে রাস্তার পাশের দোকানের সামনে থামলো, থেমে বললো, বাবা এটা খাবো?
মার্বেলের মতো ডিম বিক্রি হচ্ছে, এত ছোটো ডিম পাড়তেও মুরগির খবর হয়ে যায় সেটা বুঝি, ডিমও তো তার পেছন দিয়েই বের হয়। তবে ফার্মের মুর্গি এই জিনিষ দেখলে হেসে ফেলবে কিংবা নিজেদের ডিমের দাম দুইগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।

ঠিক আছে একটা ডিম দাও।
১০ টাকা দিয়ে অপেক্ষা করি, আপনার কাছে ১ টাকা আছে?
আমি ভাবলাম ঠিকই আছে ফার্মের মুর্গির ডিমের হালি ২৮ টাকা, এই ডিমের যে সাইজ, এটা ২০ টাকা হালি বললেও কেউ কিনবে না। ৬ টাকা আসলে খারাপ না দাম হিসেবে।
ফেরত দিলো ২ টাকা।
আমি কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে বললাম কত দাম ডিমের?
৯ টাকা।
আমি আর কথা বাড়ালাম না।

দাম যেমনই হোক গত কাল দুপুর থেকে এই প্রথম আগ্রহ নিয়ে কিছু খাইতে চাইলো , সেটার দাম যতই হোক, সেটা আদতে ততটা মূল্যবান না। সেই ডিম নিয়ে বসে বসে খাচ্ছি, পাশে একটা পরিবার এসে বসেছে, একটা ছেলে, একটা মেয়ে, একটা মহিলা, এবং একটা বাচ্চা। বাচ্চাটা খুব বেশী হলে ৩ হবে, আরও কম হতে পারে বয়েস। মেয়েটা, চেহারা দেখে আন্দাজ করা গেলো যতটুকু, ১৭ হতে পারে খুব বেশী হলে, ছেলেটা কিংবা লোকটা কিংবা ছোকরাটা, যে ভাবেই বলি না কেনো, বয়েস হবে খুব বেশী হলে ২৭, মহিলার বয়েস ৪০ আর ৫০ এর মাঝামাঝি।
সিঁড়ির উপরে বসে আছেন। আমরাও বসে আছি, নীচে বাংলায় লিখা, স্বাধীনতার ৩৮ বছর পুর্তি উপলক্ষ্যে কিছু একটা।

বাবা ৮ এর কাছে যাই?
এইটুকু খেয়ে যাও।
নীচে নেমে আটের চারপাশে নাচছে হঠাৎ উঠে এসে বললো বাবা জুস খাবো।
বাকী ছিলো উপস্থিত, ওকে বললাম তুই একটু দেখে রাখ, আমি আসতেছি। ৫ মিনিটের ভেতরে আসতেছি দেখে রাখিস।
আমি পড়িমরি করে ছুটলাম, রাস্তার ফুটপাত বন্ধ করে দোকান বসেছে, সেখানে তেলে ভাজা হচ্ছে, পিয়াজু, চপ, পুরি, চা সবই তৈরি হচ্ছে, ফুটপাত বন্ধ। রাস্তায় রিকশা আর গাড়ী পাশ কাটিয়ে খুব দ্রুত যাওয়া যাচ্ছে না।

আমি নিশ্চিত ছিলাম ছেলে সিঁড়ি থেকে এক পাও নীচে নামবে না, ওকে বলে গেলে ও এমনটাই করে। যেখানে বসিয়ে রাখা হবে, সেখানেই বসে থাকবে পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত।
গিয়ে দেখলাম বাকী নিজের মতো আলোচনা করছে, ছেলে নিজের জায়গায় স্থির হয়ে বই পড়ছে।
পাশে সেই বাচ্চা।
আমি গিয়ে বসলাম, সেই ৩ বছরের বাচ্চা তেড়ে আসলো।
ঋক উৎফুল্ল হয়ে বলছিলো, বাবা বাবা দেখো বাবু এসেছে।
আমিও আগ্রহ নিয়ে বলতে শুরু করেছিলাম, হু বাবা বাবুর সাথে খেলবে?
সেই ছেলে শুরু করলো এ্যাঁই বেটা]
এ্যাঁই বেটা কি করিস?
আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। বিব্রত হলাম বলা যায়, এই টোনে কোনো বাচ্চা কথা বলছে দেখলে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হয়, একটা চটকানা মেরে উড়িয়ে ফেলি, পরের কথা পরে ভাবা যাবে। এইটা কোনো বিষয় হলো।

আমার প্রায় সব কাজিন আমার ১০ থেকে ১৫ বছরের ছোটো। আমার এলাকায় অন্তত আরও ৫০টা বাচ্চার সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ, তবে কোথাও এমন অভব্য বাচ্চা দেখি নি আমি। এটা রীতিমতো অশালীন লাগলো, আরও অশালীন লাগলো এটা দেখে, সেই মহিলা, ছোকরা এবং মেয়েটা বিন্দুমাত্র অবাক হলো না।

ঋক কখনও কোথাও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় নি, ও ভয়ে জড়সরো হয়ে আমার বুকের পাশে লুকিয়ে আছে। আমি ঠান্ডা রাগ নিয়ে তাকিয়ে ভাবছি কড়া একটা ধমক দিবো কি দিবো না।
সেই সময় সেই ছোকরা এসে বললো, ও খেলতে চেয়ে না পেলে এমন করে।
আমার চোয়াল ঝুলে গেছে এটা আমি আয়না না দেখেও বলতে পারি, তার সাথে আমার কোনো সংলাপ বিনিয়ম হয় নি, ছেলের সাথেও কোনো সংলাপ বিনিময় হওয়ার কথা না, খেলতে চাওয়ার সূচনা যদি হয় এমন অশোভন ভঙ্গিতে তাহলে তার সাথে খেলতে চাইবে না ঋক এটাই সবচেয়ে স্বাভাবিক।

সেখান থেকে নিউমার্কেট, তখন মনে হয়েছে প্যাস্ট্রি খাওয়া প্রয়োজন। নিউমার্কেটের কোন দোকানে প্যাস্ট্রি পাওয়া যায় সেটা আমার জানা নাই, বেশ কয়েকটা দোকানে ঘুরে, কিংস এ গিয়ে পেলাম প্যাস্ট্রি, তবে সেই প্যাস্ট্রি দেখে ছেলে বললো, এটা খাবো না, এটা পঁচা জিনিষ।
আমি আর কোনো উপায় খুঁজে পেলাম না, বললাম বাবা এটা প্যাস্ট্রী।
না এটা প্যাস্ট্রি না এটা কেক।এটা খাবো না।

মিঃ বেকারের কারুকার্য্যমন্দিত প্যাস্ট্রি আপাতত প্যাস্ট্রি হয়ে উঠেছে, অন্য যেকোনো দোকানের প্যাস্ট্রি ইদানিং সেই মর্যাদা পাচ্ছে না। চারকোণা যেকোনো প্যাস্ট্রি আদতে কেক এখন।

ঠিক আছে এটা প্যাক করে দাও।
দাম মিটিয়ে যখন গেলাম কাউন্টারে দেখলাম একটা কাগজের প্যাকেটে কোনো মতে প্যাস্ট্রি মুড়ে হাতে ধরিয়ে দিলো।

গত ২ বছরে আসলে যেসব দোকান থেকে প্যাস্ট্রি কিনেছি, সেখানে অন্তত একটা চার কোনা বাক্সে দিতো, সুতরাং এটা দেখে এমনই মেজাজ খারাপ হলো, বললাম তুমি খাও এটা।

আজকে বিকালেও দেখি বেশ আয়েশ করে কাছে এসে বললো বাবা বাবা তুমি প্যান্ট পড়ে নাও।
বাবা বাবা বলো জুতা পড়ে নাও তো। বলো তোমাকে নিয়ে বাইরে যাবো।

তুমি কোথায় যাবে?
না এইভাবে বলে না। বলো জুতা পড়ে আসো, আমি প্যান্ট পড়ে তোমাকে নিয়ে বাইরে যাবো। বলো।
কোথায় যাবে সেইটা বলো
এভাবে বলে না।
আচ্ছা যাও জামাটা বদলে আসো।
দিদার কাছে গিয়ে জামা বদলাও।

আমিও প্যান্ট পড়ে বাবু সেজে বললাম ঠিক আছে চলো।
আমাকে জুতা পড়ায় দাও।
জুতা পড়ে রাস্তায় নামলাম বাপ ছেলে। একটা রিকশা থামাও। বলো ডাক্তারের কাছে যাবো।
আমিও ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম, ডাক্তারের কাছে যাবো কেনো?
রিকশা থামিয়ে ভাবছিলাম কোথায় যাবো, কার্জন হল, রমনা, গেন্ডারিয়া, সব দিকে চাইলেই যাওয়া যায় না, বন্ধুর বাসায় যাওয়া যায়, তবে ওর কিংবা ওর বৌ কারো ফোন নাম্বার আমার কাছে নাই।
ঠিক আছে চলো পরীবাগ।
সেখান থেকে রমনায় ঢুকে হেঁটে হেঁটে গেলাম, শিশুপার্কের গেটের কাছে। আব্দার, চিপস খাবো
চিপস পাওয়া গেলো না, পাওয়া গেলো কলা, সেটা নিয়ে লেকের পাশের বেঞ্চীতে বসতে গিয়ে দেখলাম একটা প্যাডেল নৌকা চালিয়ে একজন আসছে, নৌকায় চড়লে খুব একটা খারাপ হয় না। নৌকায় চড়বা তুমি?
নৌকায় চড়ে কলা খাবো।
আগে দেখি ব্যবস্থা করা যায় কি না, কলা খাও তার পরে নৌকায় চড়ি। না নৌকায় চড়ে কলা খাবো।
চাচা যাইবেন?
নৌকায় উঠলাম অনেক সাহস নিয়ে, রমনা লেকের গভীরতা জানি না, সাঁতার জানি না, তবুও শখের তোলা ৮০ টাকা।
খুব একটা খারাপ লাগলো না, এক চক্কর শেষে নিলো ৬০ টাকা। নৌকা, মাছ, সাপ, কাক, টিয়া পাখী, মানুষের গোসল, যমুনা নদীর নৌকা, ইত্যকার বইয়ে পড়া শব্দের সাথে বাস্তবের মিল খুঁজে খুঁজে সন্ধ্যা কাটলো ভালো।
সেখান থেকে নেমে নৌকা ভাড়া দিয়ে, দেখলাম রমনায় এক লোক শক্তি পরীক্ষার যন্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ২ টাকা দিয়ে বাঙালী নিজের শক্তি পরীক্ষা করছে।

সেখান থেকে নেমেই তার মনে হলো আজকের তালিকায় ছিলো চিপস, সেটা এখনও আদায় করা সম্ভব হয় নি, বাবা চিপস খাবো।
চলো।

আমার ছেলে ত্রিভুজ দেখলেই উল্লসিত হয়ে যায়, অনেক অনেক দিন আগে, যখন নানা রকম সমস্যায় নিয়মিত ছিলাম না ব্লগে, তখন হঠাৎ একদিন কাঁচা ঘুম ভাঙলো ছেলের ডাকে, বাবা বাবা, ত্রিভুজ কোথায়?

প্রথম আলো ব্লগ তখন কেবল শুরু হয়েছে, তল্পিতল্পা গুটিয়ে ত্রিভুজ তখন এমন এক ব্লগে নির্বাসিত যেখানে কেউ কাউকে ছাগু বলা নিষেধ, তবে সমস্যা হলো সামহোয়্যারে ত্রিভুজ নেই এই গুরুতর সংবাদ তো ছেলের জানবার কথা না, সুতরাং ঘটনার আড়ালে অন্য কোনো ঘটনা আছে। জিজ্ঞাসা করলাম কোন ত্রিভুজ?
লেখার ত্রিভুজ নাই।
লেখার ত্রিভুজ বুঝতে সময় লাগে একটু, তারপর উপলব্ধি হলো ওকে কয়েক দিন আগে যেই বোর্ড কিনে দিয়েছি, সেটার মধ্যে একটা প্রজাপতি আর একটা ত্রিভুজ ছিলো, সাথে একটা কলম। আপাতত সেই ত্রিভুজ পাওয়া যাচ্ছে না।
সেই সময়ের পর থেকে অনেক সময় পার হয়েছে, আমার ছেলে দিন দিন ত্রিভুজভক্ত হয়েছে, ত্রিভুজ দেখলেই সেখানে যায়।

আজকে সন্ধ্যায় রমনায় হাঁটছিলাম যখন, তখন আমার হাত ছেড়ে বলল বাবা বাবা ত্রিভুজ। বাবা বাবা দেখো ত্রিভুজ।
আমি ত্রিভুজে যাবো।

পার্কের রাস্তায় তিন কোণা কেয়ারী করে রাখা, হয়তো ফুলের বাগান হবে, কিংবা অন্যকিছু, কে জানে, তবে সেটা ত্রিভুজ। ছেলে অনেক আগে থেকে ত্রিভুজ চিনেছে, এটা সুবিধার কথা।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:০১
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×