পত্রিকা মারফত জানতে পারলাম মেহদী হাসান দীর্ঘদিন ধরে রোগশয্যায়। এখন তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। অথচ, এই গুণী শিল্পীর যথার্থ চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসার ব্যয় ভার শিল্পীর পরিবার বহন করতে পারছে না। গজলসম্রাট ধুঁকছেন হাসপাতালের বেডে। ছবিতে দেখলাম বিবর্ণ মুখচোখ।সঙ্গীতের মতন এক পবিত্র ভাবের সাধনা যিনি করলেন তার এমন পরিনাম-স্বর্গমর্ত্য কি অলীক মনে হয় না।
এই মহান শিল্পীর জন্য সরকারি সাহায্যও নাকি তেমন জুটছে না। ভারত সরকারও উদাসীন। অথচ মেহেদী হাসানের জন্ম ভারতের রাজস্থানের এক গ্রামে ১৯২৭ সালে। মুসলিম পরিবারে জন্ম বলে দেশবিভাগের পর পাকিস্তান চলে যেতে হয়েছিল। তারপর পাকিস্তানেই এই গুণী শিল্পীর প্রতিষ্ঠা।
কিন্তু, শিল্পীর কি কোনও দেশ থাকে?
আমার শৈশবে মেহদী হাসান সম্পর্কে আমাকে সচেতন করেছিলেন একজন কমিউনিষ্ট নেতা। তখনই বুঝেছিলাম প্রকৃত মহৎ শিল্পীদের কোনও দেশ থাকে না। তাঁরা দেশও কালের সংকীর্ণ সীমারেখার বহু উর্ধ্বে।
শ্রদ্ধেয় মেহেদী হাসান। আপনার কাছে আমাদের বাঙালিদের অনেক ঋন। আপনি না থাকলে আমরা নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীর মতন গুণী শিল্পীকে পেতাম না- আরও অনেককেই পেতাম না। এদেশে যারা মার্গ সঙ্গীতের চর্চা করেন-তারা এ সত্যটি জানেন। বাংলাদেশের ক্লাসিকাল মহলে আপনার ঈশ্বরতুল্য সম্মান।
মেহদী হাসান। আপনি, আমাদের ক্ষমা করবেন। আপনি অসুস্থ হয়ে রোগশয্যায় । অর্থের অভাব আপনাকে গ্রাস করেছে। আর, পাকিস্তান কোটি কোটি ডলার পাচ্ছে আমেরিকার কাছ থেকে কথিত জঙ্গি দমনের নামে। কেবলমাত্র বসবাস করার জন্যই মুম্বাই শহরে অনিল আম্বানিদের ৬০ তলা বহুতল উঠছে ।
আর আপনি ধুঁকছেন! ভুগছেন অর্থকষ্টে!
মেহদী হাসান: আপনি আমাদের ক্ষমা করুন
পাকিস্তান সরকার ও পাকিস্তানি জনগনের উদ্দেশে বলছি-আমরা আমাদের প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে তাঁর শেষ জীবনে যেভাবে বুকে আগলে রেখেছিলাম-যেভাবে বিদ্রোহী কবির সেবাশুশ্রুষা করেছিলাম-আপনারাও ঠিক সেভাবেই মেহেদী হাসানের পাশে এসে দাঁড়ান।
আর, তেমনটা না হলে-
মেহদী হাসান: আপনি আমাদের ক্ষমা করুন।
গানের লিঙ্ক