somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সোসাল মিডিয়া ও রাজনীতি

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেসবুক, টুইটার ও ব্লগ এসময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে নিজেদের অবস্থানকে করেছে সুসংহত । যোগাযোগের এই মাধ্যমগুলোর প্রতি কিশোর, তরুন ও যুবকদের আশক্তি এবং অংশগ্রহনের মাত্রা সুপারসনিক গতিকে পেছনে ফেলে দিয়েছে । দেশে দেশে ইন্টারনেটের ব্যাপ্তি ও সহজ লভ্যতা এবং সেল ফোন দিয়ে অতি সহজে ব্যবহার উপযোগীতা এইসব যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয়তাকে নিয়ে গেছে অন্যরকম এক উচ্চতায় যা দিন দিন ক্রমবর্ধমান গতিতে উর্ধ্বমুখে ছুটে চলছে ।
দেশে দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে জনগণের অংশগ্রহন দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে । উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনুন্নত দেশ সমুহে এইসব মাধ্যমের জনপ্রিয়তা অনেক অনেক গুন বেশি । তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে বিরাজমান স্বৈরতান্ত্রিক ও নিষ্পেশন মূলক সরকার ব্যবস্থা, প্রচলিত গণমাধ্যমের উপর সরকার কর্তৃক কঠোর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রনের কারনে মুক্তমত প্রকাশে উপযুক্ত প্লাটফর্মের অভাব, প্রকাশ্যে মতামত ব্যক্তকারীর নিরাপত্তাহীনতাসহ নানাবিদ কারনে স্বাধীন মত প্রকাশের সহজ ও নিরাপদ প্লাটফর্ম হিসেবে, সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতাকে জন সম্মুখে তুলে ধরার মাধ্যম হিসেবে এবং সর্বোপরি পারস্পরিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে এখানে জনগনের অংশগ্রহন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে যা এসব গণমাধ্যমের জনপ্রিয়তার পারদকে উর্ধ্বমুখী করছে ।
জনমত সৃষ্টিতে এইসব গণমাধ্যম এখন অপ্রতিদ্ধন্দী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে । চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে প্রচলিত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতি । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আবির্ভাবের ফলে সময় বদলে গেছে আগে যেখানে প্রচলিত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াগুলো জনমতকে নিয়ন্ত্রণ করত এখন সেখানে জনমতই প্রচলিত গণমাধ্যমের লাগামকে নিয়ন্ত্রণ করছে ।
দুনিয়া কাঁপানো “আরব বসন্ত” সংগঠনে এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা কারো অজানা নয় । মিশরের এপ্রিল সিক্স মুভমেণ্ট আজ বিশ্ব ইতিহাসের অংশে পরিণত হয়েছে যা মূলত ফেসবুক ভিত্তিক একটি গ্রুপ । মিশর বিপ্লব আরবের অন্যান্য দেশে বিদ্যমান স্বৈরাচারী সরকারগুলির উপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করেছে যার পেছনে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর শক্তিশালী ভূমিকা ।
বাংলাদেশের সরকার ও সেকুলার শ্রেণীর সমর্থন পুষ্ট বিতর্কিত শাহবাগ আন্দোলন ও এর বিপরীতে আপামর জনগুষ্ঠির অংশগ্রহনে গড়ে উঠা হেফাজত আন্দোলনের পেছনেও রয়েছে সামজিক মাধ্যমগুলির অসামান্য অবদান । এই দুই আন্দোলন বাংলাদেশের জনগুষ্ঠিকে প্রবলভাবে নাড়া দিয়েছে । পরিস্থিতির বাধ্যবাদকতায় বর্তমানে আগ্নীয়গিরির তীব্রতা স্থিমিত মনে হলেও ছাইয়ের নীচে উদ্দত লাভা এখনো প্রবাহমান । বড় নদীর স্রোতের তীব্রতা থাকে তার গভীরে ঠিক তেমনিভাবে হেফাযত আন্দোলনের প্রভাব এদেশের তৃণমূলে বিপুল শক্তি নিয়ে প্রবাহমান বিপরীতে শাহবাগ আন্দোলন তার বিতর্কিত নেতৃত্বের কারনে গণমানুষের কাছে ধিকৃত ও বিতর্কিত হয়ে আজ মৃতপ্রায় । নাস্তিকতার চর্চা ও প্রচার প্রসারের অভিযোগের পাশাপাশি আল্লাহ, মহানবী, উম্মুল মুমীনীন, কুরআন-হাদীস ও ইসলামি শরীয়ার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরচারের অভিযোগে শাহবাগ আন্দোলনের নেতৃত্ব অভিযুক্ত হয়েছে ।
বাংলাদেশের ভবিষ্যত গতিপথ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এই দুই আন্দোলন ও এর সাথে জড়িত পক্ষগুলো এখনো সক্রিয় ভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে যদিও একটি পক্ষ ইতিমধ্যে বিতর্কিত হয়ে পড়েছে । এ থেকেই স্পষ্ট এই দুই পক্ষের কোন একটির বিজয়ের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হবে বাংলাদেশের ভবিষ্যত গন্তব্য । তাই বলা যায় আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি বরং এখন এটি স্নায়ু যুদ্ধের স্তর অতিক্রম করছে মাত্র । কোন একটি পক্ষের চূড়ান্ত পরাজয় ও ধ্বংসের মধ্য দিয়েই কেবল এর সমাপ্তি প্রত্যাশা করা যায় ।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×