somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা ভাষার বিকাশ

৩০ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ৯:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

--শুরুতেই বলি, যদি কোনো বেয়াদপি হয় তাহলে মাফ করবেন।

একটা চিন্তা আমার মাথায় বেশ অনেকদিন ধরেই ঘুরছে। সেটা হলো, বাংলা ভাষাতে যেসব ব্যাকারনিক প্রনালি আছে, তার যৌক্তিকতা কতখানি।
আমি নিশ্চিত, ব্যাকারন যখন লেখা হয় বা হয়েছিলো তখন নিয়মের অনেক যৌক্তিকতা ছিলো। কিনতু এ যুগে হয়তো সেগুলো আর যৌক্তিক নেই।

যেমন:
১।চন্দ্রবিন্দুর ব্যাবহার
২। ই-কার (ি) ও (ী) কার এর ব্যাবহার
৩। উ-কার (ু) ও (ূ) কার এর ব্যবহার
ইত্যাদি

এগুলো নিয়ম আমার মতে এযুগে এসে অযৌক্তিক হয়ে গেছে।
আমার মনে হয়, আমাদের এখন বের হয়ে আসতে হবে এসব পুরোনো ব্যাকারনিক নিয়ম থেকে।

১, আমাদের ভাষা থেকে এসব জড়তা দুর করতে হবে। ভাষাকে আরো গতিশিল করতে হবে।

২, ভাষার মুল লক্ষ্য হলো দ্রুত ও সহজে এবং unambigous ভাবে, মনের ভাব প্রকাশ করতে দেওয়া।

তো এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলা একাডেমি বেশ কিছুদুর আগিয়েছে:
Click This Link

বলা বাহুল্য যে নিয়ম গুলো হয়তো তাদের পুরবোসুরির তুলনায় আধুনিক, সরল ও সহজবোধ্য। কিন্তু তারপরেও বরতোমান যুগের বিচারে আধুনিক এনাফ(enough)
নয়। যেসব জিনিষকে ভিত্তি করে ব্যাকারনের নিয়ম করা হয়েছে সেগুলোর কোনোটাই এ যুগে যৌক্তিক না।
একসময় রাস্তায় ঘোড়াগাড়ি চলতো, তাই স্পিড লিমিট ছিলো ২০ কিমি।
এখন রাস্তায় চলে গাড়ি। অথচ তারপরেও যদি আমরা স্পিড লিমিট ২০কিমি রাখি তাহলে সেটা যৌক্তিক হবে না।

কোন শব্দ সংষ্কৃত থেকে এসেছে আর কোনটা বিদেশি, তাতে আমি একজন সাধাড়ন ভাষা ব্যাবাহারকারি, তাতে আমার কি এসে যায়।
ভাব প্রকাশের জন্য আমারতো জানার দরকার নাই যে কোন শব্দ কোথা থেকে এসেচে। আজকের যুগে যেটা সঠিক উচ্ছাড়ন সেটাকে প্রকাশ করতে পারলেই হলো। ৫০ বছর পরে যেয়ে যদি উচ্ছারং হয় তাইলে তখন তাই-ই হবে।

না করলে কি হবে:
ভাষার যেসব জড়তা থাকে, সেই ভাষা ও ভাষা ব্যবহারকারিরা হয়ে যাবে অচল। যেমন ধরুন: ইংরেজি You এর কথা। এটাকে অনেকে বলেন যে ইংরেজি ভাষার সিমাবদ্ধতা, যে তাদের আপনি তুমি তুই নেই।
কিন্তু আমি বলি এটাই তাদের বিরাট একটা শক্তি।
কিভাবে?
You এসেছে Thou, Thee ইত্যাদি থেকে।
You দ্বারা কিন্তু সব সময় একটা সমান পরিমান সম্মান প্রকাশ পায়।
(সবাইরে আপনি করে বললে মন্দ হতো না কিন্তু । ছোটোবড় সবাই। এমনকি কাউকে শালা বলে গালি দিতে যেয়ে বলতে পারেন - এই শালা। আপনাকে আমি আস্ত রাখবোনা। ;) )

এতে করে শ্রেনি বিভাজন কম হয়। মানুষের মইদ্যে সহযোগিতা বাড়ে। তাই ইংরেজি ভাষাভাষিরা অনেক আগেই সমান অধিকার, সমান সম্মান ব্যাপারটা গ্রহন করে নিতে পেরেছে, (যদিও কনসেপ্ট গুলো "আবিষ্কার" করেছে অন্যেরা - যে ভাষায় তু, ভু ইত্যাদি আছে-ফ্রেন্চ আর কি। )

অন্যদিকে বাংলারও শক্তি আছে।
বাংলা ভাষায় আছে "সে"। আমরা "সে" বলার সময় লিঙ্গ ভেদ করি না। কিন্তু ইংরেজিতে করে। ইংরেজি রুপ হলো he/she
তার ফলে, আমরা আইজকে হাসিনা ও খালেদার শাসন মহাআনন্দে মানতেছি পিরায় ২০ বছর অথচ আমেরিকানরা এখোনো মহিলা প্রেসিডেন্ট বানাতে পারলো না।

--আমি জানি এগুলো খুব বেশি ভালো যুক্তি নয়। কিন্তু এটা অনস্বিকার্য যে
ভাষা যে ধরনের শব্দ সিলেক্ট করতে ও বাক্য গঠন করতে অনুমতি দেয়, সেই গঠন পদ্ধতি মানুষের চিন্তাভাবনাকেও প্রভাবিত করে।

একটা ভাষাকে বিকাশ হতে না দেওয়া হলো একটা বাচ্চাকে বড় হতে না দেওয়ার মতো।
"গুজবে শুনেছি" - হলিউডে নাকি অনেক চাইল্ড স্টার আছে, তাদেরকে নাকি ওষুধ খাইয়ে ১৮/১৯ বচ্ছর পর্যন্ত বাড়তে দেওয়া হয় না।
আমরা এসব হাজার বছরের পুরোনো নিয়মের ধার ধরে ঠিক ঐ কাজটাই করছি ভাষার বেলায়। আমরা এই ভাষাটা বাচিয়ে রাখার জন্য রক্ত দিয়েছি, যেটা দুনিয়ার ইতিহাসে কোনো ভাষার জন্য কখোনো হয় নি। এখন সেই ভাষাটাকে কি আমরা নিজেরাই বাড়তে না দিয়ে ধিরে ধিরে শেষ করে ফেলবো?


ধন্যবাদ
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ১০:৩০
১০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×