somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাতুড়ে গদ্য (অসংলগ্ন)

৩০ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ৯:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আলফেসানী ভোর পাহারা দিতে চেয়েছিলো। ও জানতো না ভোর পাহারা যারা দেয় তাদের নিশিকালীন সঙ্গমে বেশী সময় খরচ করা নিষেধ।

কত অজানারে বলে, যখন ঢুলতে ঢুলতে আলফেসানী পাবলিক বাস থেকে 'নামছিলো' ঠিক তখনই রাতজাগা কয়েকটা উদ্ভট শুকর তাদের মোটা ঘাড় গর্দান নিয়ে ঘোঁৎ ঘোঁৎ করতে করতে পেট্রোলে টানা গাড়িতে করে বাড়ি 'ফিরছিলো'। যেখানে তাদের হরিণ চোখের অর্ধাঙ্গীনীরা বিছানাকে পরম ভালোবাসায় জড়িয়ে শুয়ে আছে। হয়তো সারারাত তারাও কোনো উদ্ভট শুকরকে আনন্দ দিয়েছে, নিজেরাও আনন্দিত হয়েছে। হয়তোবা দেয়নি, সারারাত সতী-সাধ্বী নারীর মতো ভাতের থালা আগলে রেখেছে উচ্ছিষ্ট লোভী পোকা আর পশুদের কাছ থেকে।
যাহোক, পেট্রোল টানা গাড়ির আরোহীদের চোখে আরো রঙধনু জড়ানো 'ছিলো'। যার ফলশ্রুতিতে তারা রাস্তা পেরুতে থাকা আলফেসানীকে মেটে, রোমসর্বস্ব একটা বেজী 'ভেবেছিলো'। কতদিন বেজী দেখিনা বলে তারা যখন আলফেসানীর লেজের উপরে উঠে পড়ার উপক্রম 'করছে', তখনই সিগনালের লাইটটা একচোখা সাইক্লপের মতো লাল চোখে তাদের বাহনের পথ আগলিয়ে দাঁড়িয়ে 'গেলো'।
উদ্ভট শুকরগুলো আর যাই হোক অমানুষ না। তারা একটা বেজীকে পিষতে রাজী আছে, কিন্তু সাইক্লপসের সাথে তাদের ভয়ানক দোস্তি। তাই লালচোখ সাইক্লপকে বাঁচাতে তারা লাফ দিলো রাস্তা থেকে আধাফুট মতন উঁচু নদীতে। যেখানে কয়েকটা পোকামাকড় ঘুমিয়ে থাকে অন্য ভোর গুলোতে।

আলফেসানী যখন দেখতে পেলো একটা মুশকো কালো গাড়ি তার পায়ের কাছে আসার পাঁয়তারা 'করছে' তখন সে সহজাত পাশবিক প্রবৃত্তির বশে একটা লাফ দিয়ে উঠে 'পড়লো' রাস্তার পাশের ফুটপাথ নামের জঙ্গলা জমিতে। এই জঙ্গলায় কিছু পোকামকড় (এইখানে আলফেসানী আর উদ্ভট শুকর গুলোর চিন্তা একই রকম) পলিথিনের পাতা মুড়ি দিয়ে সারারাত অবৈধ মেলামেশা করে, আর ভোরে এসে ভোঁস ভোঁস করে নিশ্বাসের কসরত করে।
আলফেসানী একবার পলিথিন মোড়া একটা পোকার সাথে রাত-বৌ 'খেলেছিলো'। সেদিন নিজেকে তার খুব পোকা-পোকা মনে 'হয়েছিলো'। আর যখন সে নিজের শরীরের উত্তপ্ত শুয়োপোকা গুলোকে ছেড়ে দিতে 'পেরেছিলো', তখনকার মতো আনন্দ আর কোনোদিনও পায়নি বলে তার মনে 'হচ্ছিলো'।

এখন আমরা এই দুই গ্রুপের কাছ থেকে একটু দুরে সরে যাই। সেখানে একটা ঝাপসা চশমা পড়া বুড়ো কুনো ব্যাঙ ড্যাবড্যাব করে যেই ঘটনাটা কেবলি ঘটে গেলো সেটা দেখছিলো। বহু বছর আগে ব্যাঙ টার বাড়ি ছিলো নদীর ধারের কোনো গ্রামে। একটা নৌকাও ছিলো। অবশ্য সে তখন ব্যাঙ হিসেবে পরিচিত ছিলোনা। তখন তার পরিচয় ছিলো তাগড়া মোষ হিসেবে। মোষ আর মোষনী সারাদিন নানা কাজে ব্যাস্ত 'থাকতো'। আর রাতের বেলা তৃপ্ত সঙ্গম সেরে সকালের জন্য প্রস্তুত 'হতো'।
সেই গ্রামে কিছু সাপ আর শেয়াল ছিলো। তারা ভরভরন্ত মোষনীর দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতো কিন্তু কাছে আসার সাহস করে পারে নি মোষের জন্য। একদিন গ্রামে কয়েকটা গলাছিলা শকুন 'আসলো'। শকুন সাপ আর শেয়ালের মিলিত পরিকল্পনায় একটা মেয়ে বাছুর মারা 'পড়লো'। দোষ পড়লো মোষের উপর। মোষটাকে ধরে খোয়াড়ে পাঠানো হলো। মোষনীকে ছিবড়ে বানিয়ে দিলো শকুন, সাপ আর শেয়ালেরা।
মোষ খোঁয়াড় থেকে যখন তার গোয়ালে ফিরলো তখন আর সে মোষ নেই। হয়ে গেছে ঝাপসা চশমা পড়া কুনো ব্যাঙ।

ব্যাঙটা এখানে অনেক কিছুরই সাক্ষী। যেমন সাক্ষী আজকের ফুটপাথের উপর আলফেসানীর হুমড়ী খেয়ে পড়ে যাবার, একটা কালো গাড়ীর আলফেসানীর মাথার উপর দিয়ে চলে যাবারও।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:৩৬
৩০টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×