ধীরে ধীরে সবকিছুতেই স্হবিরতা আসে। ব্লগটাও আগের মতো টানে না। যেখানে শত ব্যস্ততায়ও ব্লগের অনেকের লেখা মোটামুটি রুটিন করে পড়া হতো। সেখানে কয়েক সপ্তাহ লগইনই হয় না।
ইকনোমির এই অবস্হায় নিজের কামলা জীবন নিয়ে সবার মতো টেনশন। অনেকের খারাপ খবর কানে আসছে। নিজের ফাকিবাজি কমিয়ে চাকরী বাঁচাও প্রজেক্টের অংশ হিসেবে এক সপ্তাহের সেমিনারে অংশগ্রহন করতে হলো। অবশ্য সেমিনারের পুর্ব অভিক্ষতায় বলা যায় ওখানে শেখার চেয়ে সময়েরই অপচয় হয় বেশি। কিন্তু ম্যানেজার চাইলে তো আর না করতে পারি না। সেমিনার মানেই ফাকিবাজি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কোন কাজের ঝামেলা নেই। চান্সে পুরো সপ্তাহ শেরাটনে সকালের নাস্তা থেকে রাতের খাবার। কিন্তু ঐসব পঞ্চতারাযুক্ত হোটেলের খাবার কতো সহ্য হয়। এতো বিরাট বিরাট প্লেটে ২/৩ পিচ সালাদ, কাচা মাছ, মাংস, বিভিন্ন রকমের স্যস। বুফেতে অনেক রকমের আইটেম থেকে কোনমতে ১/২টা পদ পাওয়া যায় খাবার জন্য । সেমিনার শেষের পর কোনমতে দৌড়ে বাসায় ভাত দিয়ে রাতের খাবার। আহ, কি শান্তি। অবশ্য এতো ভেতো বাঙালী আমি না। সপ্তাহের পর সপ্তাহ ব্রেড-বাটার দিয়েই চালিয়ে দিতে পারি। ছুটির দিনেও সাধারনত একবেলা ভাত খাওয়া হয়। পরপর দুইবেলা ভাত খেতে ভালো লাগে না। ফাউল খাবার দেখলেই শুধু ভাতের কথা মনে পড়ে বেশী।
কয়েকদিন পর নিজের টেবিল গোছাতে গিয়ে এখানে সেখানে বিভিন্ন রকমের চকলেট চোখে পড়ে। ছোটবোনের কাজ তাই চিল্লাফাল্লা করে লাভ নাই। উনি বিভিন্ন রকমের চকলেট বিভিন্ন সময় খেয়ে অবশিষ্টগুলো আমার রুমেই ফেলে রেখে যান। আমার বিছানার আশেপাশেও কিছু পাওয়া যায়। ভাগ্য ভালো যে পিপড়ের উপদ্রব নেই। কোন একসময় নিজেই চকলেটের পোকা ছিলাম। বিদেশ থেকে কেউ দেশে গেলেই আমার জন্য চকলেট নিতে হতো। আর মা-বাবা গেলে তো কথাই ছিলো না। সেই আমি আপাতত চকলেট কেনা পর্যন্তই দৌড়। চকলেটগুলো দেখে হঠাত ইউনির কথা মনে পড়ে গেলো। তখন মনেহয় কিটকাটের রমরমা সময়। তিন বন্ধু ঘুরতে গিয়ে আইসক্রিম খেয়ে চকলেট কিনতে গেলাম। টিভিতে বিঙ্গাপনের দেখে কিটকাট কিনতে ইচ্ছে হলো কিনার পর দাম জিঞ্জেস করে পকেট হাতড়িয়ে টাকা দিতে হলো। খেয়ে দেখা গেলো ঐটার ভিতরে তো বিস্কুট টাইপ ওয়েফার আর উপরে চকলেটের আবরন। তিনজন কান ধরেছিলাম ভবিষ্যতে আর এই চকলেট কিনবো না।
বন্ধুদের এখনো দেশে ওদের পছন্দমতো চকলেট পাঠাতে হয়। একজনের পছন্দ ব্লাক, একজনের স্নিকার, একজনের টুইস্ট। নাম দেখে দেখে কিনে প্যাকেটিং। অধিকাংশ চকলেট আমি নিজেও খেয়ে দেখিনি টেষ্ট কেমন।
ডেভোলপমেন্টে কাজ করি বিধায় রিসেশনের প্রভাবটা কোম্পানিতে কতোটুকু সরাসরি কানে আসে না। শুধুমাত্র চাকরী যাওয়ার সময়টাতেই বুঝা যাবে।সময় করে পুরনো বসের সাথে আলাপ করে কিছু আপডেট জানা গেলো। কোম্পানি অলরেডি এফেক্টেড। মার্সিটিজ, বি,এম, ডব্লুউ, থেকে শুরু করে অনেকেই প্রজেকটগুলোর টাইম পেছানো জন্য অনুরোধ করছে। প্রজেক্টের সংখ্যা কমে গেছে। নতুন নিয়োগ বন্ধ। এক্সটারনালদের বিদায়। ননপোডাক্টিভদের পোডাক্টিভিটির সাথে যুক্ত। এইসব কাজ পেছনে চলছে। যেকোন সময় যে কারো চাকরী চলে যেতে পারে।
সপ্তাহান্তে ইউটিউভে গান দেখতে গিয়ে হঠাত করে নাটকের একটা লিঙ্ক দেখে দেখতে ইচ্ছে হলো। কয়েকবছর থেকে বাংলা নাটক দেখা হয় না। ছাত্রাবস্হায় মাঝে মাঝে ছুটিরদিনে ঘটা করে দেখা হতো। একদিনে ২৫/৩০ পর্ব একসাথে। কয়েকজন একসাথে দেখলে মজাই লাগে। সিরিজ নাটক দেখা আর নতুন বই শুরু করা দুটোই আমার কাছে ভয়ের। শুরু হলে শেষ না করে উপায় নাই। ৩৫ পর্ব শেষ হলে দেখলাম রাত ৩:৩০ বাজে। অবশ্য শনিবার রাতে একঘন্টা সময় অতিরিক্ত যোগ হয়েছে। সেটাও দেখা হলো। রাত ১:৫৯ মিনিট পর ঘড়ির কাটা ডাইরেক্ট ৩:০০ এর ঘরে এসে স্হির। দিনের স্হায়িত্ব দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে। ঘুমের দিন শেষ
শীত যাই যাই করেও যাচ্ছে না। হঠাত করে তুষারপাত, ঝড়, বৃষ্টি। তাপমাত্রাও মাঝে মাঝে মাইনাসে চলে যায়। গাছগুলো এখনো উলঙ্গ অবস্হায়। পার্কের ভেতর দিয়ে অনেকদিন হাটাহাটি হয় না। সাইকেলটা ঠিকঠাক করা হয়নি। পেট্রোলের দাম প্রত্যেকদিন কয়েকবার করে উঠানামা করে। কমদামে কিনবো কিনবো করে শেষপর্যন্ত বেশী দামেই কিনতে হয়। পার্কিংয়ের জায়গার অভাবে রাস্তার পাশে গাড়ি রাখার জন্য টিকেট খাওয়া। ম্যানেজারের বারবার বলার পরও বছরের ছুটির প্লান এখনো জমা না দেওয়া। বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করেও সাপোর্টের অভাবে সমাধান করতে না পারা। আনমনে গাড়ি চালাতে গিয়ে ১০০ কি.মি বেগে গাড়ি চালানো পরিবর্তে ৬০/৭০ কি.মি তে গাড়ি চালিয়ে পেছনের পে পো হর্ন শোনা। কারেন্ট ভোল্টেজের হিসেবে অনেক অনেক গড়মিল। ২০ বছর আগে ডেভোলপ করা সফটওয়্যার বুঝতে যাওয়া। সবকিছুই কিরকম যেনো হযবরল অবস্হা
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ৮:৪৪