somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দীর্ঘদিন ধরে ফয়সালের ওপর নজর রাখছে ব্রিটিশ গোয়েন্দারা

২৮ শে মার্চ, ২০০৯ ভোর ৫:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার ছেলে সন্ত্রাসী হতে পারে না: গোলাম মোস্তফা

রবিউল ইসলাম: ২০০২ সালে আলকায়েদা সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ব্রিটেনে গ্রেফতার হয়েছিলেন ভোলায় জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনারত মাদ্রাসার অর্থের যোগানদাতা ফয়সাল মোস্তফা। সেসময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছিল। মামলা থেকে খালাসের পরও ফয়সাল ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের আগ্রহের ব্যক্তি ছিলেন। ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-৫ এরপর থেকেই তার ওপর নজর রাখছিল। নজরদারির ওই অপারেশনটির নাম ছিল লার্জ (বড়)।

এদিকে ফয়সাল মোস্তাফার বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন তার ৭৩ বছরের বৃদ্ধ বাবা গোলাম মোস্তফা। গতকাল তিনি স্টকপোর্টে তারা বাসায় ব্রিটেনের টাইমসকে জানান, তার ছেলে বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ অতিরঞ্জিত। তিনি সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তার বিশ্বাস হচ্ছে না যে তার ছেলে সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।

ফয়সালের বাবা বলেন, ফয়সাল শুধু এতিমদের সাহায্য করতে চেয়েছে। তিনি আরো বলেন, সে একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং ব্রিটেনকে ভালবাসে। ১৯৬৯ সাল থেকে সে ব্রিটেনে বসবাস করে আসছে। ডেইলি এক্সপ্রেস ইউকে জানিয়েছে, ফয়সালের পরিবার থেকে জানানো হয় ফয়সাল এসব অস্ত্র শিকারের জন্য ব্যবহার করে কারণ সে শিকার করতে ভালবাসে। আমাদের ছেলে সন্ত্রাসী নয়। বাংলাদেশে জš§গ্রহণকারী ফয়সাল ৫ বছর বয়সে তার পরিবারের সঙ্গে ব্রিটেনে আসে।

স্টকপোর্টভিত্তিক চ্যারিটি হিউম্যান অ্যাপিল ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান সায়ীদ মাহমুদ জানিয়েছেন, ফয়সাল মাত্র কয়েকমাস আগে বাংলাদেশে মূল প্রজেক্ট নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, চ্যারিটি কমিশন থেকে নিবন্ধন করে আমরা শুধু মাত্র দাতব্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছি। সুতরাং এ ধরনের অভিযোগ সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। এ সংগঠনটি বিশ্বব্যাপী চ্যারিটি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। হিজবুত তাহরীরের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক আছে বলে ব্রিটিশ মিডিয়ায় উল্লেখ করা হয়। ব্রিটেনভিত্তিক বিশিষ্ট ইসলামী ভাষ্যকার এবং লেকচারার হামজা আন্দ্রিয়াস ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলান হন। গ্রিন ক্রিসেন্টের ট্রাস্টি তালিকায় তার নামও রয়েছে। হিজবুত তাহরীর-এর সঙ্গে তার রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এছাড়াও গ্রিন ক্রিসেন্টের সঙ্গে দুবাই ভিত্তিক হিউম্যান অ্যাপিল ইন্টারন্যাশনালের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। হিউম্যান অ্যাপিল ইন্টারন্যাশনাল ইরাকে এবং ফিলিস্তিনে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে বলে ব্রিটিশ মিডিয়ার সন্দেহ।

ম্যানচেস্টার পলিটেকনিক থেকে ধাতুর অবক্ষয় সম্পর্কিত বিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রি সম্পন্ন করা ফয়সাল মোস্তাফাকে ১৯৯৬ সালে প্রথম কেমিকেল বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাকে আটক করা হয়। সেসময় তার বাসা থেকে ডিটোনেটর এবং টাইমার উদ্ধার করা হয়। বিস্ফোরক নিয়ে বই লেখার কারণে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। এছাড়াও অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে তাকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় এবং আজীবন তার অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ করা হয়। ২০০০ সালে বার্মিংহামে আবারো তার বাসায় বিপুল বিস্ফোরক পাওয়া যায়। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দাযের করা হয়। ব্রিটেনে আল কায়েদা সংশ্লিষ্টতার সেটিই প্রথম মামলা। কিন্তু ২০০২ সালে তিনি ছাড়া পেয়ে গেলেও তার সহযোগী মইনুলের ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়। ওই মামলায় সেসহ-বিবাদী ছিলেন বাংলাদেশি মইনুল আবেদিন।

ফয়সাল ব্রিটিশ আদালতকে জানিয়েছিলেন, তিনি কেমেস্ট্রিতে পিএইচডি করেছেন এবং কীভাবে বিপজ্জনক রাসায়নিকসমূহ নিরাপদে পরিবহন করা যায় সে বিষয়ে ব্রিটেনের একটি কোম্পানিতে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন।

এদিকে দাতব্য কর্মকাণ্ডের নামে জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত থাকা এবং বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দি চ্যারিটি কমিশন। কমিশনের প্রধান নির্বাহী এন্ড্র- হাইন্ড জানান, তারা বিষয়টি তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছে। বিষয়টি গভীর উদ্বেগের। চ্যারিটির অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনার ব্যাপারেও তারা অনুসন্ধান করবে, বিশেষ করে ব্রিটেনের বাইরের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে।

গ্রিন ক্রিসেন্টের আনুষ্ঠানিক নাম গ্রিন ক্রিসেন্ট বাংলাদেশ ইউকে। ম্যানচেস্টারের স্টকপোর্টের গ্রিন প্যাশ্চারসে তাদের অফিস। স্টকপোর্টেই বসবাস ফয়সাল মোস্তফার। অস্ত্র উদ্ধার ও তাকে গ্রেফতারের খবরের পর ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান ফয়সালের বাসায় ফোন করলে বাসার লোকজন তাকে জানায়, ফয়সাল এখন ব্রিটেনে নেই।

ব্রিটেনের কাউন্টার টেররিজম থিঙ্কট্যাঙ্ক দি কুইলিয়াম ফাউন্ডেশনের একজন মুখপাত্র জানান, যদি গ্রিন ক্রিসেন্ট জঙ্গি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকে তবে তা চ্যারিটি কমিশনের ভাবমূর্র্তি বিনষ্ট করবে।

২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×