somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাড়ে তিন (মুক্তিযুদ্ধ)

২৫ শে মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
কৃষ্ণকান্দা গ্রামের উত্তর প্রান্তে আগুন লেগেছে। দখিন সমীরণে সে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। অগ্নিতে ঘৃত সংযোগ হয়েছে। অথচ এ গ্রামেরই কতিপয় বালক তার খুব কাছেই ডোবা সেচে মাছ ধরছে। তাদের এ বিষয়ে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা মাছ ধরছে বড় খাল সংলগ্ন সড়কটার পাশের ডোবায়। এলাকার সবচেয়ে বড় সড়ক এটাই, হাট হয়ে গঞ্জে গিয়ে মিশেছে। হাটের কিছু আগে মধ্য বিরতি হিসেবে রেল লাইনটাও বয়ে গিয়েছে এই সড়কের উপর দিয়েই। একই সাথে এটি সড়ক এবং বড় খালের বাধ হিসেবে কাজ করছে। খাল পার্শ্ববর্তী খাস জমি কেটে এই সড়ক তৈরী হয়েছিল বছর খানেক আগে, যে মাটির অভাবে এই সকল ডোবা আজও অপূর্ণ। গত বর্ষায় তাদের বুকে তরল জমেছিল, হয়েছিল অগুনতি প্রাণের বিচরণ। তবে শীতের শৈত্য শুষে নিয়েছে জলাধার, মাছেরা কিন্তু ঠিকই রয়ে গেছে বসন্তের ভোগের জন্য। বালকেরা তাই এখন কাদা উপভোগ করছে, মাছ ভোগের আশায়। পেয়েছে দু'টো বড় শোল, কিছু টাকি পোনা, মলা আর পুটি এবং ছ'টা কই। চিংড়ি পেয়েছে দু'রকম। বাগদা আর কিছু হরিনা। তারা নিশ্চিত এই ডোবায় কিছু বাইম মাছও লুকিয়ে আছে। প্রতিটা ডোবায়ই থাকে। তাদের দলনেতা ইতিমধ্যে পুরো ডোবায় বাটি চালন করেছে। বাইম মাছ ধরার এটাই জুতসই উপায়। পুরো ডোবার কাদা তাই সমান হয়ে আছে। এর মধ্যেই কোন অংশ হঠাৎ উঁচু হয়ে গেলে ধরে নিতে হবে সেটাই বাইম মাছ। সবাই রুদ্ধশ্বাসে ওত পেতে আছে।

এই বালকেরা বড় হয়ে বিশেষত যেখানটায় আড্ডা দিবে সেখানেই আগুনটা লেগেছে। কৃষ্ণচুড়ার ডালে। প্রতিটা বসন্তেই লাগে, কাজেই ভ্রুক্ষেপ না করায় বালকদের খুব একটা দোষ দেয়া যায় না। তখন দখিনা বাতাস বইতে থাকে আর ডালে ডালে আগুনের হলকা ওঠে। কৃষ্ণ এই গায়ে না জন্মালেও গ্রামের নাম কেন কৃষ্ণকান্দা তা যে কোন আগন্তকই চট করে ধরে ফেলতে পারে।

কৃষ্ণচুড়া গাছের নিচেই সোমেদ আলীর দোকান। গ্রামের একমাত্র পঠশালাটাও এখানে। বিকেল বেলায় গ্রামের এই কোনাটায় বয়স্কদের ভীড়ে জমে যায়। যুবকেরা দোকানের বেঞ্চিতে বসে, প্রৌঢ়রা বসে পাঠশালার মাঠে। দোকানী সোমেদ আলী প্রৌঢ় সারির লোক। তবু যুবকেরা তাকে ধন্য করে তার এখানেই বসে। বিড়ি ফোঁকার জন্য তার দোকানে বিশেষ আড়াল আছে। যুবকদের আড্ডায প্রৌঢ় দোকানী সাধারণত প্রধান বক্তা নন, সাধারণ শ্রোতা এবং 'আল্লাহ জানে' কিংবা 'সবই তার ইচ্ছা' ধরণের আধ্যাত্মিক মন্ত্যবকারী। তবে আজ কিন্তু তিনিই বলছেন। তার কাছে তাজা খবর আছে, ঢাকার খবর। মাল আনতে যখন হাটে গিয়েছিলেন তখন মহাজন চন্দ্রশীলের কাছে তিনি শুনে এসেছেন। চন্দ্রশীলের ছেলে শংকর গত রাতের ট্রেনে ঢাকা থেকে ফিরেছে। তাজা খবর সেই বয়ে এনেছে। সোমেদ আলী বলছেন
- শেখ সাইবে তো বিশাল একখান ভাষণ দিয়া ফালাইছে। ইয়াহিয়া এইবার মুইতা দিব
- কি কইছে?
- যুদ্ধের ইঙ্গিত। দা, কুঠার নিয়া নাকি রেডি হইতে কইছে
আজকাল শহর জুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। অনেকেই আশংকা করছেন, যুদ্ধ এবার লাগল বুঝি। তাই যুদ্ধের আলোচনা শহরের মতই গ্রামকেও মাতিয়ে তুলেছে। সে আলোচনা গরম থেকে গরমতর হয়। যুবকদের কন্ঠনালী ফুলেফুলে উঠতে থাকে। ঢাকার অবস্থা যে বিশেষ সুবিধার নয় তার প্রমাণ স্বরূপ তারা চন্দ্রশীলের পরিবার নিয়ে কথা বলে। শংকরের আগমন তবে কি ইন্ডিয়া ভাগার জন্য?

আদারু অবশ্য এসব কিছুই শুনছিল না। সে যুবকদের সাথেও বসে নেই। সে বসে আছে দোকানের পিছনে দ্বিতীয় কৃষ্ণচুড়ার মূলে। ঠিক এইখানটাই তার অত্যন্ত প্রিয় জায়গা। সে খুবই আধ্যাত্মিক মানুষ, তাই সুযোগ পেলেই নিজর্নতায় মগ্ন হতে চায়। বাইরে থেকে এ জায়গাটায় বেশ আড়াল পাওয়া যায়। ভাবনারা আপন পাখা মেলতে পারে। কেউ প্রাকৃতিক কর্ম না সারতে এলে তাকে চোখে পড়ার কথা নয়। এখানে বসে বসে সে জগৎ সংসার ইত্যাদি নিয়ে ভাবে। মানুষের জন্ম, মৃত্যু, কর্ম এবং আকাশ তার প্রিয় ভাবনার বিষয়। ঠিক এই মুহূর্তে সে ভাবছে পাতা নিয়ে। জটিল ভাবনা। পাতারা কচি থাকতে একরকম হালকা সবুজ রং ধরে। একটু বয়স বাড়লেই তারা গাঢ় হয়। বুড়ো হলে শুকিয়ে যায়। তখন আবার অন্য রং ধরে। মানুষের জীবন এবং মনের রঙের সাথে কি চমৎকার মিলে যায়! দোকান থেকে ভেসে আসা গরম কথা তার এমন গভীর ভাবনায় কোন ছেদ ফেলে না।

আদারু পেশায় একজন গোর খোদক। এর বাইরে সে আর কিছু করে না। এই পেশার প্রতি অগাদ সম্মানই তাকে অন্য কিছু করা থেকে বিরত রাখে।
ঠিক এই মুহূর্তে বালকেরা কাদা ছাড়াতে যদি নদীতে ডুব দেয়, যদি সেখানে রহিম মিযার ঝাউয়ের মাঝে মাছের বদলে লাশ ভেসে ওঠে, যদি কোন এক বালক হাঁপাতে হাঁপাতে এসে সেই খবর দেয়, তবে থানা পুলিশের পর যে মানুষটার পেশাগত কার্যক্রম শুরু হবে, সেই মানুষটিই আদারু। বাস্তবে সেরকম কিছু হয়নি। যুবকেরা তাই উচ্চকন্ঠে গরম বক্তব্য রাখতে পারছে, এমনকি আদারুর ভাবনায় কোন ছেদও পরছে না। তবে এই আদারু জানেনা, কিছুদিন পর ঠিক এখানটায় বসেই তাকে তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি নিতে হবে।


২.
আদারুকে দশ গায়ের লোক এক নামে চেনে। এমন বিচিত্র নামকরণ তার একটা কারণ। আর দশটা গ্রাম্য কথার মতই তার জন্ম নিয়েও বিয়োগান্তক গল্প আছে। তার মা ছিলেন মৃত-প্রসবা। একবার কোন এক ফকির এসে তৃতীয়বারের মত সন্তান সম্ভাবা তার মাকে বলেছিল সন্তানের কুৎসিত কোন নাম আগ থেকে ঠিক করে রাখলে এ যাত্রা তার সন্তান বেঁচে যাবে। ফকির নিশ্চিত ছিল এবার তার একটা ছেলেই হবে। আদারুর মা মান বরু অনেক ভেবেচিন্তে তার এই নাম রাখেন। যথারীতি ফকিরের কেরামতি বাড়িয়ে সে দিব্যি বেচে-বর্তেই জন্মাল আর মাটা গেল মরে। তার বাবা তার বছর দুয়েক পর হঠাৎই নিরুদ্দেশ হন। তবু এবাড়ি সেবাড়ি করে সে ঠিকই টিকে রইল। আদারু নিজে তার এই গল্প বেশ রসিয়ে রসিয়ে করে।
- বাপ ব্যাটার মনে হয় সন্নাসী হওনের শখ হইছিল
হ্যা, গল্প বলতে বা বানাতে তার কোন জুড়ি নেই। অদ্ভুত অদ্ভুত তার চিন্তা আর অদ্ভুত তার গল্প। এবাড়ি সেবাড়ির মানুষ তো আর এমনি এমনি তাকে পালবে পুষবে না। তার এই অদ্ভুত অদ্ভুত ভাবনার কারণেও সে কিছুটা বিখ্যাত।

কিছুটা বিখ্যাত তার পেশার কারণেও। গোর খোদা তো আর আর সব সাধারণ কোন পেশা নয়!
তখন আদারুর কিশোর বয়স। ভাইস চেয়ারম্যান হাবিব খার মার শরীরে পচন রোগ ধরল । গন্ধে তার পাশে বসা মুশকিল। এই আদারুই তখন তাকে খাওয়াতে যেত। সেই মহিলা মারা গেলে আদারু তার জীবনের প্রথম শাবল ধরে। সেই তার প্রথম গোর খোদা। এরকম কঠিন একটা কেস হ্যান্ডেল করার পর তার বেশ নাম ডাক ছড়িয়ে পরে। কেউ মারা গেলেই তার ডাক আসতে শুরু করে। সমাজই তাকে এই বিচিত্র পেশা নির্বাচন করে দেয়। আস্তে আস্তে এই পেশা ঘিরেই তার এক ধরণের উচু স্বপ্ন এবং আধ্যাত্মিক ভালবাসা তৈরি হয়। ভবঘুরে আদারু হয়ে যায় পেশাদার গোর খোদক।

তবে তার শীর্ষ খ্যাতি আলস্যে। একটা সমর্থ পুরুষ মানুষ সারাদিন কিছু না করে কাটিয়ে দিতে পারে তা আদারুকে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। তাও একলার জীবন হলে বিষয়টা মানা যেত। কিন্তু তিনটি বাচ্চা ও একটি বউ নিয়ে তার যে ঘরকন্না।
বউ আর বাচ্চাদের সে বড় ভালবাসে। যদিও সংসার কিভাবে চলে সে বিষয়ে তার বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। সে পড়ে আছে তার আপন ভূবন নিয়ে। তা আশপাশে ক'টাই বা গ্রাম, আর ক'জনই বা মরে? তবু সে অন্য কিছু করে না, এমনকি করার চেষ্টাও করে না। সারাদিন ঘুমায়, নয়ত শুধুই ভাবে, নয়ত মানুষ পেলেই গল্প জুড়ে দিয়ে পৃথিবীর বিস্ময় সম্পর্কে মানুষটিকে জ্ঞানী করে তোলার চেষ্টা করে। এ হেন আদারুকে না চেনাটাই বরং অপরাধ। গ্রাম ছেড়ে বনবাসী হবার মত অন্যায়।

তা এরকম একজন মানুষকে তার স্ত্রী আসতে যেতে কথা শোনাবে এতে আর আশ্চর্য কি? আদারুদের বাড়ি তাই সব সময় সরগরম থাকে, একতরফা আছিয়ার চিৎকারে।
-এমন মানুষও নি মাইনষে বিয়া করে। আগে জানলে বিয়ার নাম মুখে নিলে ঝাটা মারতাম।

বলাই বাহুল্য আছিয়া আদারুর বউয়ের নাম। এবং আদারুর আলস্য জেনেশুনেই সে বিয়েটা করেছে। প্রেমের বিয়ে।
আদারুর গল্পের ফাঁদেই আছিয়া পরেছিল। বিয়ের আগে ভাইস চেয়ারম্যান হাবিব খার বাড়ি কাজ করত সে। হাবিব খা আদারুকে বেশ প্রশ্রয় দিতেন। সেই সূত্রে মাঝেমাঝেই আদারুর খাওয়া দাওয়া হত তার বাড়িতে। তা তারমত হরিজনকে তো আর হাবিব খার চতুর্দশী কন্যা বিউটি ভাত বেড়ে দেবে না! দিত এই আছিয়াই। সেই ফাঁকেই গালগল্প, সেই ফাঁকেই মন দেয়া নেয়া।

কিছুদিন পর এক দুপুরে হাবিব খাঁ লুঙ্গি-গামছা নিয়ে নাইতে গেলেন পুকুরঘাট।তিনি ঘাটে বসে বদনা দিয়ে গোসল করেন। পুকুরে নেমে গোসল করতে তার খুব ভয় হয়। জামরুল গাছটায় সবে লুঙ্গি আর গামছাটা রেখেছেন অমনি কোত্থেকে যেন আদারু এসে তার পায়ে আছড়ে পড়ল।
- মিয়া ভাই আপনার হা করনই লাগব
হাবিব খা ব্যস্ত হন
- আরে করস কি? করস কি? কি হইছে?
- আগে কন আপনে অপরাধ নেবেন না।
তা হাবিব খাঁ অপরাধ নেননি। এ বরং তার জন্য ভালই হল। তার বাড়ির কাজের মেয়েকে সে বিয়ে না দিলে গাঁয়ে কথা উঠত খুব। তা জেনেশুনে যখন আদারুর মত মানুষকে আছিয়া বিয়ে করতে চাচ্ছে তাতে তার আর আপত্তি কেন?
গ্রামের শেষ মাথায় তার একটা পোড়াবাড়ি আছে। রায়টের সময় লোকনাথ মাঝির কাছ থেকে খুব অল্প টাকায় কিনেছিলেন। বাড়িটা পোড়া হলেও বেশ ফলবতী। এ বাড়ির ডাবের পানির মত অমন স্বাদু পানি এ অঞ্চলে নেই, অমন কাঠালও ফলে না কোথাও। তা পোড়া বাড়ি বলে ডাব, কাঠাল হাবিব খাঁর আর ঘরে ওঠে না। আদারু আর আছিয়াকে তিনি ওই বাড়িতেই মাটি আর ছন দিয়ে ঘর তুলে দিলেন। এতে তার অনেক কূল রক্ষা হল। আছিয়া রাত বাদে আগের মতই বহাল রইল। আদারুর মত বিনোদনধর্মী লোকও তার সংগ্রহে থাকল। এতে তার রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সুবিধা হয়। সবচেয়ে বড় কথা অনিয়মিত হলেও ডাবটা, কাঠালটা এখন তার ঘরে আসে।

তা আছিয়াও বা আর কত সহ্য করবে! ভেবেছিল, পুরুষ মানুষ, বিয়ের আগে একটু গা ছাড়া থাকেই। ঠিক মত লাগাম পড়লে সব ঠিক হয়ে যাবে। আর মানুষটার পরিবার বলতেও তো আর কিছু নেই। তা বিয়ে হল, তিন তিনটা ছেলেপুলে হল কিন্তু আদারু বদলালো কই? ভাইস চেয়ারম্যান সাবের দয়ায় তাদের না খেয়ে থাকতে হয় না ঠিকই, তাই বলে জোয়ান একজন পুরুষ মানুষ কিছু না করে বসে থাকবে এটাই বা চোখের সামনে কতক্ষণ সহ্য করা যায়?

আদারুর অবশ্য কাজ না করার কারণ আলস্য নয়। পেশাগত বৈচিত্র এবং আধ্যাত্মিকতা। তার ধারণা পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর পেশার একটি হল গোর খোদা। দাইমারা যেমন মানুষকে পৃথিবীতে আনেন তেমনি গোর খোদকরা তাদের বিদায় জানায়। অন্য কাজ তো সে হর হামেশাই করতে পারে এবং অন্যরা তা করেও। কিন্তু কবর খুড়ে মৃতকে সমাহিত করার মধ্যে যে আধ্যাত্মিকতা তা আর কোথায়? এমন মহান পেশা যার ব্রত তাকে কি অন্য কিছু করলে চলে? রাত্রি কালে তার এই পেশাগত গর্ব সে তার শিশুদের মাঝেও ছড়াতে চেষ্টা করে।
- শোন, মাইনষের একদিন না একদিন মরতে হইবই। এই যে আমি, তুই, তোরা সবাই একদনি মরবি। তোর মাও একদিন মরব।
বোধকরি `মাও মরবে’ এ কথাটা একটু জোড়েই বলে ফেলে আদারু। তাই ভিতর থেকে আছিয়া চ্যাচায়
- হ আমি মরলেই তো শান্তি। দেখুমনে, সব আইলসামি ছুইট্যা যাইব
বাচ্চারা অবশ্য বাবার পক্ষ নেয়
- মা চুপ যাও। বাপজানের কাছে গপ শুইন্যা লই
আদারু শুধরে দেয়
- গপ না, এ হইল গিয়া তত্ত্ব কথা। সাধারণ মানুষ এইগুলান জানে না। জানবো ক্যামনে? হ্যারা করে ধান চাউলের ব্যবসা। খালি দুনিয়াদারির কাম। সিজন শ্যাষ তো হ্যাগোর ব্যবসাও শ্যাষ। কিন্তু মরার তো কোন সিজন নাই। ক আছে?
বাচ্চারা এক যোগে মাথা নাড়ে। না আসলেই মরার কোন সিজন নাই
- তাইলেই বোঝ। আমার খাতির সব সময়। যখন যেখানে মরন সেইখানেই আমার ডাক।
আদারুর দ্বিতীয় সন্তানটা মেয়ে। বয়স আড়াইয়ের মত। সে বলে
- কিন্তু আপনের তো বেশি ডাক পড়ে না। মানুষ এত কম মরে ক্যান?
আদারু বলে
- এইগুলান হইল ডাক্তারগো চক্রান্ত। আগে মরক লাগলে আমগো ছাড়া কোন গতি আছিল কারো? তা তাগোও তো ওষুদপত্তর ব্যাচোন লাগব। তয় চিন্তা করিস না মা। দিন দিন মানুষ যেমন বাড়তাছে, রোগশোগও বাড়তাছে। আমগো সুদিন আবার আইব।
সুদিনের আশায় বাচ্চারা ভুলে থাকলেও আছিয়া ভুলে থাকতে পারে না। কারণ ঝিগিরি করে তাকেই সংসার চলাতে হয়। কিন্তু একার চেষ্টায় হয়ত কোনরকম খাওন জুটে যায় কিন্তু ছেলেমেযের একটা ভবিষ্যত আছে না! মেয়েটাকেও তো বিয়ে দিতে হবে! তাছাড়া অসুখ বিসুখের কি আর ঠিক ঠিকানা আছে? তাই আদারুকে সব সময় সে তাগাদা দেয়, কিছু একটা করেন।

এই কিছু একটা করা নিয়ে আদারুকে কম ঝামেলায় পড়তে হয়নি। গ্রামের মুরুব্বিরা যারা আড়ালে তাকে নিযে হাসে, তারাও সামনে পেলে উপদেশ দিতে ছাড়েন না। ‘কিছু একটা কর’
গায়ের একমাত্র দোকানের অধিকারি সোমেদ আলীও একই কথা বলেন
- তুই তো কবর খুড়তে পারিস। তার মানে মাটিও কাটতে পারবি। তাইলে পুকুর বা রাস্তার জন্য মাটি কাটলে সমস্যা কি? এই যে বড় রাস্তাটা হইল তখন তুই রহিম মিয়াগো লগে ভিরতে পারতি না? তাইলে তো ঘরে কিছু আইত? বউয়েরও কথা শোনন লাগত না।
এ সকল পার্থিব কথোপকথনে আদারু সাধারণত চুপ থাকে। সোমেদ আলী চালিয়ে যায়
- শুনতাছি যুদ্ধ লাগব। তখন তো সব কিছুর দাম চাইরগুণ হইব। খাবি কি?
সোমেদ আলী আরো কিছু হয়ত বলত। কিন্তু এই সময় পাঠশালার কোনা দিয়ে হাবিব খাঁকে আসতে দেখা যায়। সে কাছে এলে দুজনই সালাম দেয়। হাবিব খাঁ হাত উঠিয়ে উত্তর দেন। তারপর আদারুর দিকে তাকিয়ে বলেন
- আছিয়ার শরীর যেন কেমন করতেছে। আমি বাড়ি পাঠায়ে দিছি। তুই একবার বাড়ি যা।
আদারু কথা না বলে বাড়ির দিকে হাঁটা দেয়। ওর গমন পথের দিকে তাকিযে হাবিব খাঁ মন্তব্য করেন
- আইলস্যা হইলেও পোলাডা ভাল। ওরে দেখলেই আমার ছোয়াব হয়।
সোমেদ আলী বিস্মিত হন।
- মিয়া ভাই, ক্যাম্নে কি?
- আরে ওয় কবর খোড়ে না? সেইজন্য ওরে দেখলেই মরনের কথা মনে হয়। হাদীসে আছে- প্রত্যেকদিন একবার কইরা মরার কথা মনে করলে ছোয়াব হয়।
কথাটি বলেই হাবিব খাঁ মুচকী হাসেন। সোমেদ আলী জোরে জোরে হেসে ওঠে।

৩.
বাড়িতে রওয়ানা হবারও ঘন্টা খানেক পর আদারু বাড়ি পৌঁছে। পথে শেফালীর মায়ের সাথে দেখা। আর আদারু তো কথার ভান্ডার। আছিয়া এমনি এমনি চ্যাচায় না। বাড়িতে প্রবেশ করেই আদারু নিমাই কবিরাজের গলা শুনতে পায়। রমিজই তাকে ডেকে আনে। সে আদারুর লতায পাতায় প্যাঁচানো ভাই। গোরের কাজে আদারুকে সাহায্য করে। সেও সারাদিন আদারুর মত টইটই করে ঘুরে বেড়ায়। লোকে তাকে 'ছোট আইলসা' বলে ক্ষ্যাপায়। তবে খ্যাতিতে আদারুর ধারে কাছেও সে পৌঁছাতে পারেনি। আদারু তার জীবন দর্শনের কিছুটা হলেও ওকে শেখায়।
- আমি কাজকাম করি না এইটা নিয়া তো মাইনষের হাসনের কিছু নাই। আরে এই যে মিয়া ভাই, এত এত তার বিষয় আশয়, এত তার মান্যি গন্যি! তা তারও তো একদিন সব ছাইড়া ফুটুস হইতে হইব। আমার কিছু নাই আমারও একদিন ফুটুস হইতে হইব। তা মিয়া ভাইর লগে আমার ফারাকটা কই? বিষয় আশয় হইল দুই দিনের বাহাদুরি।
এই সমস্ত তত্ত্ব কথার মাঝে উপদেশ দিতেও সে ছাড়ে না
- শোন, গোর খোড়নের কাম অত সহজ না। অনেক গুঢ় তত্ত্ব আছে। দেখস না, মানুষ ঘুমাবার আগে বিছনাটা কেমন পরিপাটি কইরা গুছায়। মরন হইল অনেক দিনের ঘুম আর কবর হইল বিছানা। তাই খুব খিয়াল কইরা ....
তবে রমিজ কতটা আদারুর তত্ত্ব কথা শোনার জন্য আর কতটা ভাবীজানকে দেখার জন্য এই বাড়ি আসে তা রমিজ নিজেই বলতে পারবে না। ভাবীর জন্য তার বিশেষ দরদ আছে।

সামনের বারান্দায় ঢুকতে না ঢুকতেই কবিরাজ বলল
- সুখবর আদারু। আবার তো বাপ হইতাছ। চাইর চাইরখান । সামলাবা ক্যামনে? এখনও সময় আছে কিছু একটা কর।
আদারু খুশি হয়। তারপর স্বলজ্জ হাসি দিয়ে বলে
- যেই পেশায় আছি সেইখানেই তো আয় উন্নতি করতে পারতাম। তা আপনারা ডাক্তাররাই তো আমাগো ভাত মারছেন।
নিমাই কবিরাজ হাসতে হাসতেই বিদায় নেন। আদারু অনেক মজা করে কথা বলতে পারে। রীতিমত কথার শিল্পী সে।
কিছু পরে রমিজও বিদায় নিলে আছিয়া একটা শাবল এনে আদারুকে ধরিয়ে দেয়। এখন সে কিছুটা সুস্থ্য। তবে মুখ বেশ থমথমে। ভীষণ বিরক্তি নিয়ে বলে
- কতবার নিষেধ করনের পরও আবার উনি একখান পয়দা করলেন। আমি আর পারুম না। এই নেন। কবর দেন আমারে।
আদারু ভেবেছিল একটু আনন্দ-টানন্দ করবে তা না বউটা কি শুরু করল? সে বলল
- তুমি জান না আমি মরা মানুষ ছাড়া কবর দেই না।
কিন্তু এই রস আছিয়াকে স্পর্শও করল না। সে মুখ আরো গম্ভীর করে শাবলটা রেখে এসে একটা বটি নিয়ে ফিরল।
- তাইলে এইটা নেন। আগে নিজ হাতে মাইরা লন
আদারু কিছু না বলে বটিটা ঘরে রেখে আসল। আর আছিয়া বসল মরণ কান্না কাঁদতে।

রাতেও অবস্থা বেশ থমথমেই থাকল। আছিয়ার চিন্তা আরো একটা পেট নিয়ে। কি হবে? এই পোয়াতি অবস্থায় সে তো চাইলেও কাজ করতে পারবে না। এর মধ্যে শহরে নাকি খুব গ্যাঞ্জাম। যুদ্ধ নাকি যখন তখন লেগে যেতে পারে। কি করবে আছিয়া?

তারও দুদিন পর আছিয়া তার চাকরিটা হারাল। আগের বারের মতই সে চুরির পরিকল্পনা নিয়েছিল। বিউটির গলার একটা চেইন। তা তার পোয়াতি হবার খবর শুনে ও বাড়ির মহিলারাও বোধহয় তক্কে তক্কে ছিল। এর আগে তাকে দোষারোপ করা হলেও ধরতে পারেনি। কিন্তু এবার ধরা পরে গেল সে। হাবিব খাঁ আসার আগেই তার বউ দূর দূর করে তাড়িয়ে দিল তাকে। আদারু তখনও ঘুমাচ্ছিল।

চুরির অপমান, তাড়িয়ে দেয়া, এতদিনকার জমানো ক্ষোভ, ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যত ইত্যাদি সকল রাগ এসে জমা হল আছিয়ার মনে। মুহূর্তে কান্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলল। হাতের কাছের মাটির হাড়িটা ছুড়ে মারল আদারুর কপালে।
আদারুর ঘুম ভাঙল মাথায় আঘাত নিয়ে। সামান্য কেটে গিয়েছে। ওদিকে আছিয়া চিৎকার করছে
- বাইর হ তুই। তোর মত আকাইম্যা স্বামী আমার লাগবে না। বাইর হ একখুনি
আদারু ঘটনা কিছুই বুঝতে পারছে না। সে কিছুক্ষণ ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকল। তারপর মিনমিন করে বলার চেষ্টা করল
- কি হইছে?
- কি হইছে তোর শোনন লাগব না। বাইর হ
ছোট ছেলেটা আছিয়ার অগ্নিমূর্তি আর চ্যাচামেচিতে কেঁদে উঠল। আছিয়া গিয়ে তার গলা টিপে ধরল। তারপর আদারুকে বলল
- যা, একখুনি। নাইলে কইলাম ওরে খুন কইরা আমি জেলের ভাত খামু।
ছেলেকে বাঁচাতেই যেন আদারু বাড়ির বাহির হল। ঘটনা শুনল সোমেদ আলীর দোকানে। লজ্জায় তার মাথা হেট হয়ে এল। গিয়ে বসল সেই কৃষ্ণচুড়ার মূলে। তারপর ঘন্টাখানেক ঠায় বসেই থাকল। থম মেরে।

৪.
তারও কিছু পরে আদারুকে বড় সরকটায় হাঁটতে দেখা গেল। উদ্দেশ্য রেল লাইন। গত এক ঘন্টায় সে তার সব পিছুটান ছিন্ন করতে পেরেছে। তার গ্রাম, সংসার বাচ্চাকাচ্চা। সব। সব। না সে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে না। সে ঢাকা যাবে। সে শুনেছে ঢাকায় অনেক মানুষ। আর যেখানে অনেক মানুষ, সেখানে মানুষ মরার সমভাবনাও বেশি। সে কিছুতেই তার পেশা পরিবর্তন করবে না, বড়জোড় স্থান পরিবর্তন করবে। বর্তমান পেশায়ই সে সেখানে কর্মোদ্যমী হবে। সে ঠিক করেছে ঢাকায় গিয়ে সে তার রেট বাড়িয়ে দেবে।

সে যখন হাঁটছিল তখন তার কাছে একটা পয়সাও নেই। ঢাকাও সে চেনে না। শুধু জানে এই রেল লাইন ঢাকায় গিয়েই শেষ হয়েছে। সে ভেবেছিল ঢাকা পৌঁছাতে তার হয়ত দু'দিন লাগবে কিন্তু বাস্তবে তার লাগল সাড়ে তিন দিন। হাঁটতে হাঁটতে যখন আর পা চলে না তখনই কেবল সে গাছের ডাল ভেঙে শুয়ে পড়েছে। অবসাদে ঘুম নামতেও দেরী হয়নি। খাদ্য বলতে ছিল মূলত পানি আর রেল লাইনের পাশে বারোমাসী নয়টা বুনো আমড়া।

সব কিছুই যেমন একদিন শেষ হয় তেমনি আদারুও পথ চলাও শেষ হল। এক সকালে সে ঢাকায় পৌছাল। সূর্য তখন সগৌরবেই তার অস্তিত্তের জানান দিয়েছে।

তবে ঢাকাকে সে যতটা জনাকীর্ণ ভেবেছিল ঠিক তার সাথে মিল পেল না। কারণ সকাল সাতটা আটটা বাজে অথচ লোকজন নেই একদম রাস্তায়। ঢাকায় সবাই নিশ্চয়ই দেরী করে ঘুম থেকে ওঠে। কিন্তু তার তো কোন গোরস্থানের ঠিকানা চাই। ঢাকায় তার এলাকার মত বাড়ি বাড়ি আলাদা কবর হয় না। খোঁজ নিতে এক বাড়িতে ঢুকে পরে সে। এবং ঢুকেই খুশি হয়ে ওঠে। মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। বাড়িতে তিনটা লাশ পরে আছে বেশ অবহেলায়। আর কাউকে অবশ্য দেখা গেল না।
আদারু আসলেই খুশি হয়। ঢাকায় তার কিসমত খুলে গেছে। শহরে প্রবেশমাত্রই কাজ। গোরের অর্ডার নেয়ার জন্য পাশের বাড়ি লোক খুঁজতে যায়। কিন্তু সেখানেও একই অবস্থা। অনেকগুলি লাশ। বাড়ি ছিন্ন-ভিন্ন। এবার একটু সে ভয় পায় এবং বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে।

তবে আর কিছু পরেই সে জানতে পারবে বড় ভুল দিনে, ভুল সময়ে, ঢাকায় এসেছে সে। গত রাতেই ব্যাপক তান্ডব হয়েছে। এই শহরের বুকে তখন আর্মি নেমে এসেছিল। ঘুমন্ত, সাধারন, নিরীহ নাগরিক যাকে যেখানে পেয়েছে মেরে ফেলেছে তারা। লাঠি সম্বল নিরাপদ বৃদ্ধ হরিবাবু, বদলে দেবার মত স্বপ্নবাজ তরুণ কামরুল, আট মাসের গভর্বতী রাহেলা কিংবা শুধুমাত্র 'মা' বুলি শেখা অপাপবিদ্ধ শিশু গোলাপী কাউকে ছাড়েনি ওরা।
আর আজ সকালে সারা শহর জুড়ে কেবল তাদের লাশ আর লাশ। একা মানুষ আদারু, কটা লাশকে কবর দিবে?
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×