somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জানার মাঝে অজানারে: ১.গ্রামের মেঠো পথে

২১ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যেখানে আমার জন্ম। একেবারে অসহায় অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের দিকে বড় হয়ে ওঠা। সেই যায়গায় যাওয়ার কথা উঠলেই বুকের মধ্যে কেমন যেন চিনচিনে ভাবের সৃষ্টি হয়। শত ব্যস্ততার মাঝেও ছুটে যাই তীর্থ স্থানের দিকে যাত্রার মত। কেননা সেখানেই আমার শিকড় পোতা। মাঝে মাঝে মানুষকে অম্ভুদ উদ্ভিদ বলে মনে হয়। এক যাযগায় শিকড় গেড়ে রেখে সারা বিশ্বময় দাপিয়ে বেড়ায়। সাথে সাথেই আবার বুকের খাচার ভিতর লুকিয়ে থাকা প্রাণিজ স্বত্মাটি ব্যঙ্গ করে ওঠে। হায়রে কি নির্বোধেরে আমি বয়ে বেড়াই। যে কিনা উদ্ভিদ আর প্রাণির পার্থ্ক্যও ভালো করে বোঝে না। সাথে সাথে আবার মানবিক বোধটি প্রতিবাদি হয়ে ওঠে। আরে বাবা উদ্ভিদের সাথে প্রাণির তুলনা । একজন প্পৃথিবীকে বাচায় আর একজন প্রতিনিয়ত ধ্বংস করে বেড়ায়।
এই ভাবনাকে বুকে লালন করে মার্চের এক সোনা ঝরা সকালে বাস যোগে বেড় হলাম শিকড়ের গোড়ায় মিলিত হয়ে জীবনের গতিবেগ একটু হলেও বাড়িয়ে নিতে। বাসের সিটে বসে বাইরের রোদটাকে অনেক ভালো লাগছিল। মনে হচ্ছিল যেন মুঠো মুঠো করে ধরে এনে হীরার মত জ্বলজ্বলে রোদগুলোকে বাক্সবন্দী করা যাবে। যা দেখে কবিগুরু বলতেন, অপলক নয়নে তাকিয়ে থেকে যেন জানার মাঝে অজানারে পাওয়ার এক স্বর্গীয় শক্তি অনুভব করছিলুম। তবে সম্পূর্ণ বিপরিত ভাবের জন্ম হল যখন বাস থেকে নামা হল। এ যেন লেজার গানের গুলি বৃষ্টি এসে আমাকে ঝাঝড়া করে দিচ্ছে। লেজার গানের গুলি বৃষ্টির রক্ত চক্ষুকে হেলায় উপেক্ষা করে রিকশাযোগে রওনা হলাম গ্রমের মেঠো পথে। পথ চলতে চলতে নিজেকে চিড়িয়াখানার মানুষ ভাবতে কিন্তু বেশ ভালোই লাগছিল। নিজের অবর্তমানে বেড়ে ওঠা গ্রামের কচি কাচার দল তাকিযে তাকিয়ে তাদের চেনা চেহাড়াগুলোর সাথে মিলিয়ে নেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছিল । কিন্তু না তাদের এবং আমার পূর্ব ও এ জন্মে যে দেখা হয়নি সে ব্যপারে মোটামোটি নিশ্চিত হয়ে শুধু তাকিয়ে থাকা ছাড়া কোন কাজ পাচ্ছিল না । যদিও এ বয়সের শিশুেদর খুব বেশি একটা কাজ থাকে না ।
আর অবাক হচ্ছিলাম সেই সব চাচি,খালা , ভাবি;বুবু, ফুপু (গ্রাম্য) দের পালিয়ে যাওয়া দেখে। যারা এক সময় দেখলেই কোলে টেনে নিতো । তখন অবশ্য নিজেকে বেশ বড় মনে হচ্ছিল। তবে কষ্ট পাচ্ছিলাম তাদের আদর না পাওয়ার তাড়নায। যদিও সে কষ্ট মুছে গিয়েছিল তাদের আপ‌্যায়নের প্রতিযোগিতায়।
বিকেলে গ্রাম দেখতে বের হয়ে আবার দ্বন্দ্বে পতিত হলাম। আসলেই গ্রাম কি মুন্দর। নাকি শহরের ইট পাথরের খাচায বন্দী থেকে নদীর ওপারের সবুজ ঘাসের গ্রামের প্রতি সুন্দরের ধাধা । গ্রামের গোবর মাখা কাদা ও নি:শব্দহীন ভৌতিক পরিবেশ আমার এ ভাবনায ইন্ধন যোগাচ্ছিল বেশ আনন্দের সাথে। আর কাজহীন ঘুমিয়ে কাটানো রাত আমার সাথে বেশ ব্যঙ্গ করছিল। বেশ তো আমাকে ফাকি দিয়ে চলো। এখন দেখো মজা । আজ তোমাকে সারা রাত জ্বালাব আমার িনজের মত করে । কিন্তু রাত আমার সাথে পারেনি। বরং আমি রাতকে কাচকলা দেখিয়ে সকালের আলোয় প্রবেশ করেছি। যদিও সেখানে কাজ করেছে রাতকে নিবিড় করে কাছে না পাওয়ার বেদনা। সকালের গ্রামকে অবশ্য একেবারেই অন্যরকম ভালো লাগছিল। মনে হচ্ছিল এ গ্রাম ছেড়ে আর যাবই না। তবে সকাল তো আর চিরন্জীব নয়। সূর্য্ এক সময় তাকে তাড়িয়ে দিল নির্মমভাবে। আমিও মনের দু:খে গ্রাম থেকে চলে এলাম চিরচেনা শহরের পানে। তবে এবার আর রবী ঠাকুর আমাকে বলতে পারবে না - দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া , ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শিশের উপর একটি শিশির বিন্দু।
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×