somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিয়ের পরের খুটিনাটি.....

১৯ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ১:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

''দোস্ত তুই আমারে আগে কবি না, আগে জানলে বিয়া করতাম না'' সদ্য বিবাহিত আমার বন্ধুর এহেন কথা শুনে আমার চোখ কপালে উঠে গেল, অবশ্য আর ওঠারও সুযোগ ছিল না কারন ওপর্যন্তই ওটার দৌড়।
আরে ঘটনা কি খুলে বল ? বিজ্ঞের মত প্রশ্নে বন্ধুর যা বর্ননা তা অনেকটা এরকম:
বিয়ের পর থেকেই নানা সমস্যা। পাত্রীদের বাসার অবস্থা অনেক ভাল। তার দাবী দাওয়া অনুযায়ী বন্ধুকে যে শাড়ী কিনে দিতে হবে তার মূল্য ১২০০০ টাকা, যেখানে আমার বন্ধুর বেতন প্রতি মাসে ৭০০০। এর পর নানান চিন্তা তো লেগেই আছে। রাতে ঘুমাতে পারেনা ঠিকমত। আমার দোস্তের সুন্দর ভুড়িখানা সমেত তার চর্বিময় মুখখান এখন আর তেলে চকচক করেনা। দু:শ্চিন্তায় ওজন কমে যাচ্ছে আর সবচেয়ে প‌্যাথেটিক যে বিষয় তা হল আজ সকালে ও যথারীতি দাত ব্রাশ করতে গেছে। তো পেষ্ট লাগিয়ে ব্রাশ করছে কিন্তু কোন কাজ হচ্ছেনা। কিছুক্ষন আরও চেষ্টা করল না ফেনা বের হচ্ছে না। এমন তো হবার কথা নয় নামি দামী ক্লোজ আপ টুটপেষ্ট বলে কথা। কিছুক্ষন পর সবেধন নিলমনি বুঝতে পারল ও যেটা টুথপেষ্ট মনে করে ব্রাশ করা হচ্ছিল ওটা আসলে তিব্বত স্নো। বিয়ের পর বেচারার এমনি অবস্থা। বন্ধু দু:খ পেলেও হাসলাম প্রানখুলে। তিব্বত স্নো দিয়ে দাত ব্রাশ এমন কথা জীবনেও শুনিনি।

জীবনের কথাই বা আবার কি বলব। আরেক বন্ধুর অনেক শখের বৌ নিয়ে যা কান্ড হল তা না বললেই নয়। বেচার বিয়ে করেছে, খুব এক্সাইটেড। মধু রাতে গাদা ফুলের মালা নিয়ে আমাদের গাধাটা ঢুকেছে বাসর ঘরে। বৌ দেখে কি করবে একেবারে দিশাহারা অবস্থা। ওমা যেই না বউকে ফুলের মালা পড়াতে গেছে বউএর তো নিশ্বাস বন্ধ হয়ে নাভিশ্বাস উঠে গেল। বউ এর ফুলে এলার্জি আছে। সেই রাতে পাড়ার ডিসপেনসারীতে গিয়ে রক্ষা হলেও দুদিন পর আমাদের গাধাকে সেই হাসপাতালে দৌড়াতে হল। কদিন বাদে শহরের কোন ডাক্তারও আর বাকি রইল না। বউ এর কেবল এলার্জি নয় হেন রোগ নেই, যে তার নেই। বেচারা ভেবেছিল বউ আসলে কিছুটা কাজ কর্মে সহায়তা হবে। সহয়তা হয়েছে ঠিকই আগে নিজের কাপর ধুতে হত এখন বউএর টাও ধুতে হয়, শখের বউ কিনা। বউ বেশীরভাগ সময় শুয়েই কাটায়, রোমান্টিক আলাপ বলতে তার বাল্যকালের নানানরোগের সুললিত বর্ননা। বেচারার কিছু না হলে কি হবে এই বউ আসার পর পাড়ার লোকের ডাক্তারের খরচ বেচে গেছে। ঔষধ আনতে আনতে আমার দোস্তর হাজার রোগের উপসর্গ এবং তার দাওয়াই জানা। এলাকার লোকজন এখন তার কাছেই রোগ শোকের পরামর্শ নেই। পাড়ার দুটো ডাক্তারের চেম্বারে এখন রোগীরা আর ভীর করেনা।এহেন অবস্থায় একদিন গাধাটাকে দেখার প্রয়াসে আমি ওর বাড়িতে গেলাম।

তাকাতেই দেখি একটা সবুজ রঙ্গা পেটিকোট। ভাল করে চোখ রগরে তাকাতেই দেখি দোস্ত ওর ভিতরেই আছে। ভূল দেখলাম বলে মনে হল।


না সত্যি গাধাটা ওর মধ্যেই আছে, কিন্তু পেটিকোট পরে কেন ? নিজেকেই প্রশ্ন করলাম। ব্যাটা আবার কাপড় আয়রন করছে। জোরে হাঁক দিলাম
'' কিহে দোস্ত তুমি মনে হয় লিঙ্গ ভূল করে পেটিকোট পড়ে রয়েছ ?''

'' তাইতো বলি পাজামার তো দুটো পা থাকে এটার আরেকটা পা সেই সকাল থেকেই খুজে পাচ্ছিনা।'' বন্ধুর উত্তর

ব্যাটার জন্য খুব মায়া লাগল। আহা বেচারার সেই মধু চন্দ্রিমার রাত থেকেই এই অবস্থা।

মধুচন্দ্রিমার কথা আসতেই মধূরাতের এক গল্পের কথা মনে পরে গেল
'' এক মুরগী আর এক মশার বিবাহ হয়েছে। তো মধূরাতে দুজন দুজনকে চুমু খেয়েছে সকালে উঠে দেখা গেল মশাটা বার্ড ফ্লুতে আর মুরগীটা ম্যালেরিয়ায় মরে গেছে।''

তো বিয়ে তো দিল্লকা লাড্ডু কদিন আগে খেয়েছি, এখনো পস্তাইনি তবে ভবিষ্যত পস্তাবো কিনা জানিনা। তো বিয়ে করার পর এলাকার সবচেয়ে বোকা হিসেবে পরিচিত কাইংষ্টাইন ( ও নিজেকে আইনষ্টাইন হিসেবে মনে করলেও এটা এলাকায় ওর নিক নেম ) এসে আমাকে জানাল সেও বিয়ে করবে।

''বিয়ে তো ছেলে খেলা নয় যে করবি যখন তখন'' ওকে বোঝালাম যদিও নিজে মাত্র ২৬ বছর বয়সে বিয়ে করেছি।

উত্তরে ব্যাটা বলে কিনা ''ছেলে মেয়ের জন্যইতো ওই খেলা, খেলা হয় দাদা''

বুঝতে পারলাম ব্যাটার ঘাড়ে আরেকটা মাথা গজিয়েছে। বিনা বাক্য ব্যায়ে প্রস্থান করলাম ব্যাটা আবার না কি বলে ফেলে।



বি: দ্র: চরিত্র সমূহ নারায়নগঞ্জ গাবতলী, খানকা শরীফ সংলগ্ন এলাকা থেকে সংগৃহীত ইচ্ছে করলে কেউ দেখা করে আসতে পারেন।
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×