somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আম্মা, আপনি সুস্থ্য হয়ে উঠেন!

১৫ ই মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আম্মা ব্যাপারটা যে কি সেটা বুঝতে আমার আঠারো বছর লেগেছে।
এবং বাসা ছেড়ে সাড়ে তিনশ মাইল দূরে আসতে হয়েছে।

আমার মা মোটেও অসাধারন কোন মহিলা নন, বাংলাদেশের আর বাকী লাখ লাখ গৃহিনীর মত মোটাসোটা ভদ্রমহিলা যিনি তার জীবনের বিশাল অংশ রান্নাঘরে স্বামী আর সন্তানদের রান্না বান্না করেই কাটিয়েছেন। আব্বা সারাদিন অফিসে থাকতেন তাই শাসনের কাজটিও তাকে করতে হতো। এবং এ কারনে আমাদের চরম শত্রুতে পরিনত হয়েছেন ছোটবেলায়। তাই বলে অন্যায় আবদার করতে কখনো পিছপা হইনি এবং তিনিও তার সাধ্যমত মান সম্মান বজায় রেখে তা পূরন করার চেষ্টা করে গেছেন।

আম্মার সাথে মারামারি কমে গিয়ে শূন্যের কোঠায় দাড়াল যখন স্কুল পাশ করলাম। রাগারাগি বন্ধ হলো না, ষাড়ের মতো চিৎকার করে ঝগড়া করেছি বহুদিন। তারপর একদিন চলে এলাম বাসা থেকে। দুমাস ছ'মাসে একবার করে বাসায় যাই। দুদিন চারদিন করে থেকে আসি, সারাদিন বাসায়ই কাটাই, কোথাও যাই না। আম্মার অধিকার আদায়ে সাহায্য করি। প্রতিদিনই একবার ফোন করে কথা বলার চেষ্টা করি, মাঝে মাঝে অনুযোগ - "কি আম্মা, কোন খোজ খবর নেন না!" আম্মা হাসেন, আমিও হাসি!

ছোট ভাইটিকে বলি আমার উপলব্ধির কথা, সে এখন আমার সেই স্টেজ পার করছে। বলি, একবার বাসা ছেড়ে বের হয়ে আস, তারপর বুঝবি। ছোট একটি খালাতো বোন আছে, তাকে বোঝাই, কেউ বুঝে না, আমি তাদের সঠিক সময়ের অপেক্ষায় থাকি।

আম্মা সারাজীবনই অসুস্থ্য। নানা সমস্যায় জর্জরিত হতে হতে নিজের দিকে তাকাননি, নানা রকম রোগকে বাসা বাধতে দিয়েছেন সযত্নে। এখন প্রতিদিনই কোন না কোন প্রবলেম থাকে, আজ মাথা ব্যাথা তো, কাল প্রেসার হাই, পরশু মাজায় ব্যাথা, নয়তো মাথা ঘুরায় ইত্যাদি ইত্যদি। এখন ভুগছেন এপেন্ডিক্সের ঝামেলায়। ওষূধ দিয়ে দমিয়ে রেখেছেন ডাক্তার। সামনে অপারেশনের ডেট। প্রতিদিন একবার করে কথা হয়, তিনি ঘুমের জন্য কথা বলতে পারেন না। পাওয়ারফুল ঘুমের ওষুধ খেয়ে পেটের ব্যাথা কমান।

আমার খুব ভয় লাগে, হাবিজাবি স্বপ্ন দেখি ঘুমের ঘোরে। নানা আজেবাজে চিন্তা মাথায় ঘোরে। আম্মার জন্য একটা সিল্কের শাড়ি কিনেছি মাসখানেক আগে, এখনো দেয়া হয় নাই, বাসায় যেতে ইচ্ছে করে, সময় পাই না। আর ভয় লাগে। আম্মার জন্য দোয়া করি, তিনি যেন সকল শংকা কাটিয়ে উঠেন।



আমার মেজ ভায়ের পচিশ বছর লেগেছিল মা কি জিনিস সেটা বুঝতে। যেদিন আম্মা বাসা ছেড়ে বাসে উঠেন, সে তখন সারা পৃথিবীকে কাপিয়ে চিৎকার করে কেদেছিল।
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×