somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জন্ম যদি তব বঙ্গে...

১৫ ই মার্চ, ২০০৯ রাত ২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফোর ক্রেডিটের শেষ পরীক্ষাটা দেবার দুদিন আগে থেকেই মনপুরা দেখবার জন্য মন তড়পাচ্ছিল। কারণটা ছোটবেলায় খেলার সাথীদের মধ্যেকার রোজা রাখতে পারা না পারার মত-“তুই রোজা নেই? অ! ভুজা! ভুজা! ।“ আত্মীয় ফেরেন্ডদের কাছে বিজ্ঞের মতো মত প্রকাশের পার্টটা মিস না দেয়ার জন্যই একজাম শেষের দুদিন পরেই গিয়ে হাজির চিনেকমপ্লেক্স এ। সংগে জিগরী দোস্ত ট্যাজ্জ। অখানে গিয়ে কোনটা কোন ছিনেমার লাইন আন্দাজ না পেয়ে একটাতে ট্যাজ্জকে খাড়া করিয়ে খোদ সুললনাদের দেখার জন্য কলিমেশন লাইন ঠিক করতে লাগলুম। হঠাৎ মাইকে বলল টিকেট শেষ। কালকের মানে জুম্মাবারের জন্য নেওয়া যাবে। অগত্য টিউশ্যনিটা বতিল করে মনপুরা দেখাই সাব্যস্ত করলুম। টিকিট কিনে বিজয়ী ভাব নিয়ে নেবে দোস্তকে ঠিক সময়ে ক্যাম্পাসে পৌছতে বলে চলে এলুম।

পরদিন জুম্মাবার। জামাত শেষ হল ১:৩৫ এ। আমি আগে ভাগলেও বন্ধু পরে বের হল। রিকশা নিয়ে যেতে যেতে ঠিকানা চিলাইট মিস্টেক বলে ফেলায় ফাও গেল আরও দশ মিনিট। শুরুর টাইম দিয়েছে ১:৪৫। পৌছুলুম ২:১০ এ।হল ভর্তি দর্শক চঞলের ছাগু ধরা দেখতে ব্যস্ত। অতো বড় সেমি কাছা মারা দৈত্য দেখে একটু ভিরমি খেলুম। তার উপর দিনের আলোতে আমি প্রায়ই উস্টা খাই ওখানে তো অন্ধকার এবং নারী! তবে নিজেদের সিটে বসতে গিয়ে দেখি উস্টা খাওয়ার সরঞ্জাম রেডি! জলজ্যান্ত এক দম্পতি আমাদের সিট দুখানায় সংসার পেতে বসেছে! চেকার টিকিট চেকটেক করে দেখলেন! আমাদের রাইট ওনারস হিসেবে মত দিলেন। তবে উনারা, যারা আমাদের ছিট কব্জা করে রয়েছেন তারা নাছোড় বান্দা! মহিলাটি বললেন আমাদের টিকিট নিয়ে গেল যে! কথাটার সত্যতা জানিনা। তবে তারা টিকিট দেখাতে পারেননি। মহিলা এবার দেখি আরও এককাঠি করুনাকামী! আমাদের বললেন, ভাই আমরা বাচ্চকাচ্চা নিয়ে আসছি। পুরা রিলেটিভ নিয়ে আসছি। বলেই সামনের রো ইংগিত করলেন। আপনারা অন্য কোন সিটে গিয়ে বসেন। এটা ঠিক যে তারা দলে এসেছিলেন। তবে অই দম্পতি বোধহয় টিকিট কাটার সময় একসাথে টিকিট কাটেননি! আমরা চুপচাপ। ওনাদের এক আত্মীয এবার তাদের পক্ষে ওকালতি করতে লাগলেন। ভদ্দরনোকটি উচ্চ গলায় কথা বলছিলেন। চেকার দেখলাম একটু বিরক্তই হলেন ওনার কথায়। একটু সামনের দিকে এসে আমাদেরকে বারকয়েক সরি বললেন ও সেই সংগে পাব্লিক প্লেসে এম্বায় চিল্লাবার জন্য স্টুপিড বলে লোকটাকে সম্বধোন করলেন। ভাগ্যিস বৈধ ছিলুম! চেকাররা একে ডাকে ওকে ডাকে। একবার এক্কেবারে সামনে দিয়ে আমাদেরকে নেয় ত আবার আমাদের সিটের কাছে নেয়। শেষটায় প্রবেশের এককোনায় দাড় করিয়ে চেকাররা বললেন একটু অপেক্ষা করেন চেয়ার আনছি!!! আমাদের বেক্কল টাইপ গ্যালারী তাওয়াফ করা দেখে রমনীকুল ত ধুর, উফফ ইত্যাদি শব্দ সহকারে বিরক্তি প্রকাশ করা বিগিন করলেন।
মেজাজ খারাপ হবার জোগাড়! পেলাসটিকের চেয়ারে বসে দুজনকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখলুম ঠিক আমার পাশেই। খানিক পরেই দেখি চেয়ার নয় দ্রুত পদে কর্তাগোছের কেউ ভিতরে ঢুকলেন। এরপর তারা মোট তিনজন এসে আমাদের পক্ষ নিলেন। এবং দখলমুক্ত করে আমাদের বসতে দিলেন। বসলুম।
দেখলুম…স্হানে স্হানে বিমুগ্ধ হলুম…বড় পর্দায় পাতার কাপন…নায়িকার নৌকো নিয়ে সোনাইয়ের খোজে আসা…নায়কের পরীর পেছন পেছন হাটা… দুজনার মাঝে ব্যবধান…উপর থেকে দেখান ঝোপের আড়ালে সোনাই পুলিশের লুকোচুরি…মশাল হাতে পরীর ঠায় দাড়িয়ে থাকা… আমি আমার ছিলাম নাকি তুমি কোথাও নাই?...শেষের দৃশ্যাবলি সবই ভাল লেগেছে। মিউজিক ভিডিওগুলো তো কালেকশনে রাখবার মতো। তবে সত্যি সত্যিই কাহিনী স্লো এবং যথেষ্ট দূর্বল। বাংলার চিরাচরিত ট্র্যাজেডিধর্মী প্রেমোপাখ্যানই উঠে এসেছে এখানে। বেরিয়ে এসে ট্যাজ্জকে খালি এটাই বলেছিলুম আমি অবশ্যই টাকা দিয়ে সিনেমা দেখতে আসব আনন্দ পাবার জন্য, ভাগ করে নেবার জন্য। তবুও হ্যাটস অফ টু গ্যাছু সেলিম। ভাল কিছু দেখলুম। চলচ্চিত্র নিয়ে আশার কিছু দেখলুম।


সেই বিসি কমপ্লেক্স পুড়তে দেখে খুব খারাপ লাগল। আমার মত অতি ক্ষুদ্রেরও সেখানে কিছু স্মৃতি আছে বলে মনে প্রাণে চাচ্ছিলুম নিচের আটটি তলা যেন টিকে থাকে। প্রার্থনা কবুল হল। ভূমিদস্যুদের প্রতি চপেটাঘাতও হল। মাঝখান থেকে কিছু মানুষের কিছু প্রিয়জন হারানো গেল।
ঘটনা য়খন ঘটছে আমি তখন ঘটনাচক্রে সাতক্ষীরা। খুলনা সাতক্ষীরা মহাসড়কটি কপোতাক্ষের পানিতে অনেকদিন যাবত তলিয়ে ছিল। এখান সেখানে গভীর গর্ত। শুনেছি নৌকো ছাড়া ওটুকু পেরোনো যেত না সেসময়। এখনও পেরোতে বেগ পেতে হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য রুগী খুলনায় আনাও কষ্টকর তার কথা ভেবেই। অথচ কর্তৃপক্ষ চোখেই ঠুসি পরে রেখেছে।


রাস্তা দুধার জুড়ে দিগন্ত বিস্তৃত কচি ধানক্ষেত…যেখানে কপোতাক্ষের পানি উপচে পড়েছিল সেখানেও। আবহাওয়া ভাল থাকলে ফলন ভাল হবে ইনশাল্লাহ…


অনেক তো মন পুড়েছে এবার একটু মন জুড়াক…







সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০০৯ রাত ৩:২৯
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শৈল্পিক চুরি

লিখেছেন শেরজা তপন, ০১ লা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭


হুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×