আমরা সব সময় আগুনে পুড়ছি।
বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স আগুনে পুড়ে এই চরম সত্যটি আমাদের শিখিয়ে দিল।
এই ভবনটির নিজস্ব অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা আছে। সেই অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা অব্যবস্থার কারণে কাজ করেনি। বরং খবরে প্রকাশ বসুন্ধরা গ্রুপের অগ্নি নির্বাপক বিভাগের কর্মকর্তা কাজী গোলাম মোস্তফা আহত হয়ে হাসপাতালে। তাকে উদ্ধার করেছে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার, তাদের কোন উদ্ধারকারী দল নয়।
এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের সবচেয়ে বিলাসবহুল ভবন এটি। ৭০০ কোটি টাকা খরচ করে ৬ বছরে তৈরি করা হয়েছে। এতে ১৫০০ দোকান আছে যার মধ্যে ১০০টি খাবারের দোকান। দুটি জিমনেসিয়াম, একটি সুইমিং পুল ও তিনটি সিনেমা হল সম্বলিত সিনেপ্লেক্স আছে। এটার পার্কিং এরিয়ায় ১০০০ গাড়ি পার্ক করা যায়। ৯০টি ক্লোজ সার্কিট টিভি ক্যামেরা আছে। ২০০ নিরাপত্তা কর্মী সব সময় দায়িত্ব পালন করে। ২১টা লিফট আছে যেগুলো ২৪ ঘণ্টা চালু থাকে। ৬৫টা আছে চলন্ত সিঁড়ি। এটি কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ন্ত্রিত একটি ভবন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার উদ্বোধনের সময় জানানো হয়েছিল এটির সর্বাধুনিক আগুন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে।
২০০৪ সালের ৫ আগস্ট এই শপিং মল উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এই অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ও তৎকালীন গণপূর্ত মন্ত্রী মির্জা আব্বাস। সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেছিলেন এই শপিং কমপ্লেক্স ৩০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করবে।
এত সব আয়োজন সব নষ্ট হয়ে গেছে আমাদের অব্যবস্থাপনার কারণে। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যবসায়ীরা যে ভবনে বিনিয়োগ করেছে সেই ভবনটি আগুনে পুড়ছে। কারিগরী অক্ষমতা এবং সেই অক্ষমতা দূর করার ইচ্ছা না থাকার কারণে আমরা এখন অসহায়। আগুনের সাথে লড়ার ক্ষমতা সেই ভবনের অগ্নি নির্বাপন দলের নেই। নেই আমাদের সারা দেশের দমকল বাহিনীরও।
আসলে কোন আগুনে পুড়ছি আমরা ? আমরা কি প্রতিনিয়ত পুড়ছি না দ্রব্যমূল্যের আগুনে ? অব্যবস্থাপনার আগুনে ? দুর্নীতির আগুনে ? সিদ্ধান্তহীনতার আগুনে ? দীর্ঘসূত্রিতার আগুনে ? সর্বগ্রাসী এসব আগুন থেকে আমাদের কে রক্ষা করবে ?
Click This Link
যে আগুনে পুড়ছি আমরা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৭১টি মন্তব্য ১২টি উত্তর
পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন
আলোচিত ব্লগ
অপরূপের সাথে হলো দেখা
আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমরা কেন এমন হলাম না!
জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অভিমানের দেয়াল
অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি
২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১
তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন