somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কল্কি অবতার কে ? মহানবী (সাঃ) ? - ৩

১৩ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সর্বশেষ প্রত্যাশিত অবতার শেষ নবী (সাঃ) আর্বিভূত হয়েছেন । তিনি-ই পুরাণ শাস্ত্রে উল্লেখিত কল্কি অবতার । কবীর বলেছেন-

'তাকে খোজ কর তবেই মুক্তি মিলবে নতুবা পথভোলা পথিকের মত ঘুরপাক খেতে থাকবে, আর এ ধরনের বেচে থাকা ছেড়ে দাও ।' (শ্রী-সান্ত গাঁথা)


#..৪. শ্রীমদ্ভাগবতের ১২/২; ১৯ এবং ২০ নং শ্লোকের অর্থ হলোঃ-
কল্কি অতি দ্রুত গমনশীল অশ্বপৃষ্ঠে আরোহণপূর্বক বিচরণকারী । তার দৈহিক গঠন অত্যন্ত কান্তিময় এবং তিনি অসি বা তরবারী ধারণপূর্বক দুষ্টের দমন করবেন ।

বিভিন্ন বর্ণনা থেকে জানা যায়, হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কাবার চত্বর থেকে রাত্রিযোগে আল্লাহপাকের দিদার উদ্দেশ্যে 'বোরাক' নামীয় অতি দ্রুতশীল অশ্ব বাহনে সপ্তাকাশ পরিভ্রমণ করেন । পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেন-
"পবিত্র ও মহীমাময় তিনি, যিনি তার বান্দাকে (মুহাম্মদ সাঃ) রাত্রিযোগে ভ্রমণ করিয়েছিলেন । আল-মসজিদুল হারাম (কাবা) থেকে আল-মসজিদুল আকসা (বাইতুল মোকাদ্দাস) পর্যন্ত । যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখাবার জন্য । তিনি-ই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা " [১৭/১]

ফলে ইসলামের নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) মিরাজের রাত্রে স্বর্গীয় বাহন 'বোরাকে' আরোহণ পূর্বক আল্লাহর সান্নিধ্য লাভে সপ্তাকাশ পরিভ্রমণ করেছিলেন, এ কথা সর্বজন বিদিত । 'বোরাক' আরবী শব্দ । এর মূল ধাতু 'বারকুন' শব্দের অর্থ 'তড়িৎ' বা বিদ্যুৎ । বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন, বিদ্যুৎ বা আলোকের গতি প্রতি সেকেন্ডে এক লাখ ছিয়াশি হাজার মাইল । ফলে সম্পূর্ণ বিদ্যুতের তৈরী বা সৃষ্ট বোরক কত দ্রুতগামী অশ্ব ছিল, তা সহজেই বোধগম্য ।

উপরোল্লিখিত শ্লোকে কল্কি অবতার তরবারী ধারণ পূর্বক দুষ্টদের দমন করবেন । একথাও বর্ণিত আছে । মহানবী (সাঃ) অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে অনেক যুদ্ধে নিজে স্বয়ং অংশগ্রহণ করেছেন । তিনি তরবারী , তীর ধনুক দ্বারা যুদ্ধ করেছেন ।

এছাড়াও তার দৈহিক গঠন অত্যন্ত কান্তিময় । শামায়েল-তিরমিযীর বর্ণনায় আমরা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর সুন্দর যে ছুরতে যে বর্ণনা পাই তা হল- অতীব লাবণ্যময়, নূরানী, পূর্ণিমার চাদের মত শুভ্র দুধে ও আলতা মিশ্রণে যে রং হয় প্রিয়নবী (সাঃ) রং ছিল তেমনি । হযরত আলী (রাঃ) মহানবী (সাঃ) এর আকৃতি সম্পর্কে বলেন যে, খুব লম্বাও নয়, খুব বেটেও নয়, মধ্যম আকৃতির ছিলেন তিনি । তার আগে বা পরে কখনো তার মত সুপুরুষ দুনিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন নি । উনার মাথার চুল ছিল কানের লতি পর্যন্ত । কখনো কখনো কোঁকড়ানো ঢেউ খেলানো বাবরী চুল ঘাড় পর্যন্ত থাকতো । মাথা মোবারক আকারে বড় ছিল । তার ললাট ছিল প্রশস্ত । চক্ষুযুগলের মণি খুব কালো ছিল । তার উচ্চ নাসিকা অতীব সুন্দর দেখাতো । উনার দাতগুলো ছিল অতীব সুন্দর রজত-শুভ্র যা ছিল সামান্য ফাঁক এবং হাসির সময় মুক্তার মত চমকাত । দীর্ঘ মনোরম সুঠাম কাধের হাড় অল্প পরিমাণ ছিল । স্কন্ধদ্বয়ের মাঝে ডিম সাদৃশ মোহরে নবুয়ত নামে একটা উচ্চ মাংস ছিল, যেখানে কালিমা তায়্যিবাহ (লা ইলাহ ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাছূলুল্লাহ) খচিত ছিল । মোহরের উপর তিল ও পশম ছিল এবং ঈষৎ লাল ছিল । তার লম্বা ঘন দাড়ি প্রায় বুক পর্যন্ত প্রসারিত ছিল । নবীজীর বক্ষ ছিল বীর বাহাদুরের মত প্রশস্ত ও কিছুটা উচু । বক্ষস্হল হতে নাভি পর্যন্ত চুলের সরু রেখা ছিল । এছাড়া সর্বশরীর পশমে ভরা ছিল । মহানবীর শরীরের চামড়া রেশম থেকেও অধিক মসৃণ ও নরম ছিল । শরীরের ঘামের কণাগুলো মোতির মত থাকত যা ছিল অত্যন্ত সুগন্ধিযুক্ত । মহানবীর শরীর অত্যন্ত স্হূল ও ছিলোনা আবার অতিরিক্ত ক্ষীণও ছিল না । তার পবিত্র দেহে নবুয়তের যাবতীয় লক্ষণ-ই বিদ্যমান ছিল ।

তাছাড়াও উক্ত শ্লোকে বলা হয়েছে, তিনি ক্ষৌণাং অর্থাৎ খতনাকৃত বা লিঙ্গাগ্র ত্বকচ্ছেদ বিশিষ্ট অবস্হায় থাকবেন । হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) খাতনাকৃত অবস্হায় জন্মগ্রহণ করেন । তার ফুফু হযরত সুফিয়া (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, "তিনি ভূমিষ্ঠ সময় খাতনাকৃত অবস্হায় ছিলেন ।"
খোদ মহানবী ইরশাদ করেছেন যে, "আমার পরওয়ার দিগার আমাকে এক বিশেষ সম্মান এ দিয়েছেন যে, আমি খতনাকৃত অবস্হায় ভূমিষ্ঠ হয়েছি । "

........অতএব, এসব লক্ষণগুলির মিল থেকে-ও এটা প্রমাণ হয় যে মোহাম্মদ (সাঃ) -ই কল্কি অবতার বা প্রতিশ্রুত শেষ নবী ।

......চলবে .....


সূত্র-সমূহঃ
১. জগৎগুর মুহাম্মদ (সাঃ) [১ম খন্ড] রেনেসাঁ পাবলিকেশন্স
২. বেদ - পুরাণে আল্লাহ ও হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) - ধর্মাচার্য অধ্যাপক ড. বেদপ্রকাশ উপাধ্যায়, ইসলামী সাহিত্য প্রকাশনালয়, ৪৫, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০.
৩. আল-কুরআন ।
৪. মাসিক মদীনা, সীরাতুন্নবী সংখ্যা,মার্চ-২০০৯

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:৫৪
২৬টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার মায়ের চৌহদ্দি

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১২ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৫



আমার মা ভীষণ রকমের বকবকিয়ে ছিলেন। কারণে-অকারণে অনেক কথা বলতেন। যেন মন খুলে কথা বলতে পারলেই তিনি প্রাণে বাঁচতেন। অবশ্য কথা বলার জন্য যুতসই কারণও ছিল ঢের। কে খায়নি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

জমিদার বাড়ি দর্শন : ০০৮ : পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২৪


পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

বিশেষ ঘোষণা : এই পোস্টে ৪৪টি ছবি সংযুক্ত হয়েছে যার অল্প কিছু ছবি আমার বন্ধু ইশ্রাফীল তুলেছে, বাকিগুলি আমার তোলা। ৪৪টি ছবির সাইজ ছোট করে ১৮ মেগাবাইটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×