somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্ধের হাতি দর্শন, অতঃপর..

১৩ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা গল্প বলবো। ছোট করে। অন্ধদের গল্পতো আপনারা জানেন। তারা হাতি দেখতে গিয়েছিল। কেউ বলেছি- হাতি কুলার মতো। কেউ বলেছিল- হাতি দেয়ালের মতো। আবার কেউ বলেছিল- হাতি গাছের মতো। আসলে হাতি ছিল হাতির মতোই।
২০০৭ সাল। ধানের কোল্ডইনজুরিতে ক্ষতির সন্মুখীন হাওর এলাকার কৃষকরা। অন্যান্য এলাকার কৃষকদের আগাম সতর্ক এবং কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কৃষকের একটি জনপ্রিয় অনুষ্ঠানে উঠে আসে বিষয়টি। 'আতঙ্ক' শব্দটা ব্যবহার এখানে কতুটুকু যুক্তিসঙ্গত তা শুধু লেখকই জানেন। তখন যে চালের দাম বেড়ে গিয়েছিল এটা নিতান্তই কল্পনাপ্রসূত ছাড়া আর কিছুই না।
২০০৭ সালের কথা আজ উঠছে ২০০৯ সালের মার্চে এসে। যেখানে সেকেন্ডকে ভাগ করে মানুষ কাজ করছে। আসলে খোঁড়া খুঁড়িয়ে চলে, দৌড়াতে পারে না। এখন দৌড়ানোর যুগ। প্রতিযোগিতার যুগ। সময়ের সাথে তাল না মেলাতে পারলে রাস্তার আস্তাকুঁড়েই পড়ে থাকতে হবে অবর্জনার মত।
২০০৮ সাল। শিলাবৃষ্টিতে মুন্সিগঞ্জেরে অনেক আলুক্ষেতের আলু নষ্ট হয়ে যায়। ঘটনাটি মিথ্যে নয়। দিনের আলোর মতো সত্য। কৃষকের মাঠের ফসল নষ্ট হবে আর গণমাধ্যম চুপ করে বসে থাকবে এটা কারো কাম্য নয়। তাই ক্ষতির সন্মুখীন হওয়া কৃষকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছিল ওই অনুষ্ঠানটি। ওখানে আলুর ফলন নেমে আসবে বা ফলন শূন্যের কোঠায় আসবে এমন কোন কথা প্রতিবেদনে বলা হয়নি।
'সবাই মনে করেন এবার আলু উৎপাদনে ধস নামবে' -এই সবাই বলতে লেখক কাদের কথা বুঝাতে চেয়েছেন ২০০৯ সালের ১০ মার্চ তারিখে এসে তা বোধগম্য নয়?
গোবিন্দগঞ্জ থেকে আলু এনে কোল্ডস্টোরেজে ভরার কথা লেখক বলেছেন। এটা প্রতিবেদন প্রচারের আগেই শুরু হয়েছিল। দেশের দুঃসময় হাতেগোনা কিছু ব্যবসায়ী সুযোগ গ্রহণ করে এটা মনে হয় বিজ্ঞ লেখক জানেন না।
কোল্ডস্টোরেজের অভাবে আলু নষ্ট হয়েছিল সে চিত্রও ধারণ করে প্রচার করেছিল অনুষ্ঠানটি। হাস্যকর তথ্য পরিবেশন করে কখনও পাঠককে বিভ্রান্ত করা যায় না। বুঝতে হবে আমরা এখন বাস করছি ইন্টারনেটের যুগে। চোখের পলকে যেখানে প্রচার হয়ে যায় এক দেশ থেকে অন্য দেশের খবরা-খবর।
২০০৯ সালে এসে আজিজ ফর্মূলার প্রসঙ্গে কথা বলেছেন লেখক। প্রতিবেদনটির কোথাও কিন্তু কৃষককে বলা হয়নি এই ফর্মূলা ব্যবহারের কথা। বার বার বলা হয়েছে বিষয়টি গবেষণার দাবি রাখে।
ভালো কাজের ফল দেয়া হয় কীভাবে? স্বীকৃতি দিয়ে। অনুষ্ঠানটি শুধু তুলে ধরতে চেষ্টা করেছে আজিজসহ সে গ্রামের অনেকেই যখন এই ফর্মূলাতে ভাল ফল পাচ্ছে তখন কর্তৃপক্ষ বিষয়টা নিয়ে ভাবুক। যদি আজিজ ফর্মূলা সঠিক হয় তাহলে আমাদের বেঁচে যাবে অনেক টাকা। এই চাওয়াটা কি উদ্ভট কিছু?
গবেষণা ছাড়া লেখক কি করে আজিজ ফর্মূলাকে বাস্তববিবর্জিত ও অবৈজ্ঞানিক বললেন তা বোধগম্য নয়।
লেখকের পরের অংশের সাথে আমি একমত পোষণ করছি। 'মানুষ যখন বিপদে পড়ে তখন নানা রকম বিকল্প খোঁজে'।
বাংলাদেশের এমন কোন কৃষক নেই যিনি ওই মাটির কারিগরকে চেনেন না। কি কাজের জন্য তাঁকে চেনেন তাও এক বাক্যে বলে দিতে পারবেন। পক্ষান্তরে, লেখককে বাংলাদেশের কজন চেনেন তার কাজের জন্য একবার ভাববেন কি? কথায় আছে- বৃক্ষ তোমার নাম কি ফলে পরিচয়।
লেখক পরের অংশের চিন্তা-ভাবনা দেশের কল্যাণের জন্য হলেও প্রথমাংশের খোঁড়া যুক্তিগুলো এবং আক্রমণাত্মক একটা ভঙ্গি সে চিন্তা-ভাবনাকে ম্লান করে দেয়।
১৯৮২ সাল। অনুষ্ঠানটির যাত্রা শুরু। যখন এমন একটা অনুষ্ঠানের কথা কেউ ভাবতেও পারতো না। একটানা ১৪ বছর প্রচারিত হয় অনুষ্ঠানটি। এ সময়ের মধ্যে দেশের কৃষি, পল্লী উন্নয়ন ও গ্রামীণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক নীরব বিপ্লবের জন্ম দেয়। গতানুগতিক ধারার বাইরে মাটি ও মানুষ উপস্থাপনা সাংবাদিকতায় অনুসরণীয় এক মডেল হিসেবে দাঁড়িয়ে যায়। দুরদর্শীতাসম্পন্ন ও শক্তিশালী উপস্থাপনায় এক এক করে প্রচারিত হয় অনুষ্ঠানটির -এর ৫৮৮টি পর্ব। মাটির কারিগরই একমাত্র ব্যক্তি যিনি কৃষি ও কৃষকের অনুষ্ঠানকে ভদ্র সমাজের ড্রইং রুমে নিয়ে যান। কৃষকের নানা সমস্যা সমাধানকল্পে পালন করেন অগ্রণী ভূমিকা।
কৃষি ও কৃষকের জন্য তিনি ছুটে গেছেন দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। কৃষকের সুখ-দুঃখ ধারণ করেছেন ক্যামেরাতে। তাদের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট থেকেছেন সব সময়। কী করলে দেশের উৎপাদন বাড়বে এবং কৃষকের উন্নতি হবে তার জন্য বারবার ছুটে গেছেন বিদেশের মাটিতে।
মাটির কারিগরই দেশের সবগুলো গণমাধ্যমে কৃষি সংবাদ প্রচারে নিয়েছেন অগ্রণী ভূমিকা। কালার চার্ট, ড্রাম সিডারের কথা যখন তিনি ভেবেছেন তখন আমাদের দেশের কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠানের উপস্থাপকরা কল্পনা করতেও পারিনি বিষয়টি। কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠানের জন্ম যাঁর হাত ধরে তাঁকে নিয়ে এ ধরনের সংবাদ প্রচার জাতি আশা করে না।
যে মানুষটি জীবন উৎসর্গ করেছেন কৃষি ও কৃষকের জন্য তাঁকে নিয়ে কল্পনাপ্রসূন সংবাদ প্রচার আজ নানা কৃষকের মনে প্রশ্ন জেগেছে। একজন কৃষকের সন্তান হিসেবে তাঁর কাছে দায়বদ্ধ অনেকখানি। ঋণ শোধের স্পর্ধা আমার নেই। শুধু একটি প্রশ্ন- এ ধরনের সংবাদ প্রচারে যে গণমাধ্যম অনুপ্রাণিত করে তার বস্তুনিষ্ঠ কতটুকু, গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু তা নিয়ে!

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:২২
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অলীক সুখ পর্ব ৪

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৫

ছবি নেট

শরীর থেকে হৃদয় কে বিচ্ছিন্ন করে দেখতে চেয়েছি
তুমি কোথায় বাস করো?
জানতে চেয়েছি বারবার
দেহে ,
না,
হৃদয়ে?
টের পাই
দুই জায়গাতে সমান উপস্থিতি তোমার।

তোমার শায়িত শরীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চলুন দেশকে কীভাবে দিতে হয় জেনে নেই!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৫১

চলুন দেশকে কীভাবে দিতে হয় তা জেনে নেই৷ এবার আপনাদের সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ঘটনা শেয়ার করবো৷ আমি কোরিয়ান অর্থনীতি পড়েছি৷ দেশটি অর্থনৈতিক উন্নয়নে ১৯৭০ সালের পর থেকে প্রায় আকাশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৮

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ২৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪


আজকের গল্প হেয়ার স্টাইল ও কাগজের মোবাইল।






সেদিন সন্ধ্যার আগে বাহিরে যাব, মেয়েও বায়না ধরল সেও যাবে। তাকে বললাম চুল বেধে আসো। সে ঝটপট সুন্দর পরিপাটি করে চুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×